অনলাইন ডেস্ক :
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা একবার উদারভাবে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলাম। এখন সেই উদারতা দেখানোর আরো কোনো সুযোগ নেই।
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের জন্য আন্তর্জাতিক যে সাহায্য ছিল, সেটা অনেক কমে গেছে। এমন অবস্থায় এই বোঝা আমরা আর কতদিন বইব?
তিনি বলেন, এটা মিয়ানমারের নিজস্ব সমস্যা। আরাকান আর্মি তাদের দেশের সমস্যা। তাদের ইন্টারনাল বিষয় নিয়ে তারা কী করবে সেটা তাদের ব্যাপার। তাদের সমস্যার জন্য আমাদের এখানে যেন কোনো শঙ্কা বা উদ্বেগ না হয়, সে বিষয়ে যারা যারা সংশ্লিষ্ট তাদের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে গিয়েছেন। চীনের সঙ্গেও আমরা আলাপ আলোচনা করছি।
বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির মন্তব্য নিয়ে কথা বলার সময় আমার নেই। তাদের নিয়ে আমাদের চিন্তা করার কিছু নেই। তাদের মধ্যে ব্যর্থ আন্দোলন, নির্বাচনে অংশ না নেওয়া- এসব কারণে একটা হতাশা আছে। এ কারণে তারা বিরোধিতা করছে, করবে। তারা তো বিরোধী দল, তাদের কিছু তো বলতেই হবে। বললে সরকারের খারাপটাই বলতে হবে। কারণ তারা এখন কোনোকিছু ভালো চোখে দেখছে না। তারা হতাশার মধ্যে আছে। হতাশা থেকে তারা আবোল-তাবোল বলছে। এগুলোর কোনো বাস্তবতা নেই, এগুলো নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রামে শিশুকে অপহরণ করে বিক্রির অভিযোগে মামা-মামিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার নগরের কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে নরসিংদী থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতার তিনজন হলেন–ভোলার মনপুরা উপজেলার ভাসানখালী গ্রামের মুজিবুর রহমান মজিদ, তাঁর স্ত্রী আরজু বেগম এবং নরসিংদী সদর উপজেলার বগারগোত এলাকার আবুল কালাম।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার দুপুরে কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা ব্রিকফিল্ড রোড থেকে আপন বোনের শিশুপুত্রকে অপহরণ করেন মজিদ। সন্তান না পেয়ে সোমবার কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন মা নূপুর আক্তার। পুলিশ ওই দিন রাতেই কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে মজিদ ও আরজুকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবুল কালামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁর তথ্য অনুযায়ী নরসিংদী সদর উপজেলার বগারগোত এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবির জানান, শিশুটিকে অপহরণের পর আবুল কালামের মাধ্যমে এক লাখ টাকায় নরসিংদীর এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। মজিদ দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শিশুটিকে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত কতসংখ্যক শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়ে কর্মরত আছেন, তার তালিকা করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
২৫ আগস্ট রবিবার অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মো. লুৎফর রহমানের সই করা জরুরি চিঠিতে এ তথ্য জানাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশের সব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক পদে কতজন শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন, সে বিষয়ে সংযুক্ত পত্রের ছক মোতাবেক একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য আগামী ২৮ আগস্ট দুপুর ১২টার মধ্যে নিয়োগ শাখার ই-মেইলে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
ই-মেইল ঠিকানাটি হলো-ad.recruitdpe@yahoo.com। এই ঠিকানায় এক্সেল ফরম্যাটে সফট কপি ও পিডিএফ কপি মেইল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কোনো ভুল করে থাকলে, তার জন্য করজোড়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আজ ২ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে নাটোরে নিজ বাসভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের কাছে যদি আমার কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ইন্টারনেট ব্যাহত হওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
একই সঙ্গে জুনাইদ আহমেদ বলেছেন, তাঁদের কারও দায়িত্বকর্তব্যে অবহেলার কারণে তরুণ প্রজন্ম যদি তাঁদের ভুল বোঝে, ক্ষুব্ধ হয়, তাহলে সে দোষে যেন তাঁরা শাস্তি পান। যেকোনো সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিতে রাজি আছেন। কিন্তু তাঁদের ব্যর্থতার কারণে প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করা হলে তাঁরা কষ্ট পান। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভুল না বুঝতে আহ্বান জানান।
সরকারের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যে দূরত্ব হয়েছে, তাতে ছাত্রছাত্রীদের দোষ নেই। এটি আমাদের দোষ। এই দায় আমাদের, যারা আমরা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছি। এই ব্যর্থতা আমাদের এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই ব্যর্থতা আমারও।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, এটা কখনোই তাদের প্রতি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান সম্ভব নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান করতে হবে। কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে শাসনের পথ বেছে না নিয়ে আমরা যদি তাঁদের প্রতি সংবেদনশীল হই, স্নেহ–মমতা নিয়ে তাঁদের কাছে বসি, তাঁদের কথা শুনি, তাহলে আমাদের বিশ্বাস, অবশ্যই এই ভুল–বোঝাবুঝির দূরত্ব দূর হবে এবং ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারের সঙ্গে যে চেষ্টা করছে, তা সফল হবে না।’
শোকসভায় বক্তব্যের শুরুতে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে আমাদের এই শোকসভা, আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করছি, উপস্থিত হয়েছি, যখন আমাদের এই বাংলাদেশ, শিশু, কিশোর, কিশোরী, আমাদের সন্তানেরা একটি আন্দোলনে আছে। যখন আমাদের সরকারের সঙ্গে এই ছাত্রছাত্রী ভাইবোনেদের একটি ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সেই সময়ে দেশে–বিদেশে স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে অশান্ত করা ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতা এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার সব দায়ভার আমার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের যৌক্তিক কোটাবিরোধী আন্দোলন রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে করেছেন। তাঁদের এক মাস আন্দোলনে কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আওয়ামী লীগের বা ছাত্রলীগের কেউ তাঁদের কোনো জায়গায় কোনো আঘাত করেনি। তারাও কোনো বিশৃঙ্খলা করেনি। পুলিশ কোথাও শক্তি প্রয়োগ করেনি। কিন্তু মিথ্যা অপপ্রচার ছড়িয়ে ছাত্র মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে অশান্তির চেষ্টা করে বিএনপি–জামায়াত, ছাত্রদল–শিবির, জঙ্গি সন্ত্রাসীরা।
তবে সরকারের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেটা উল্লেখ করে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘যে দূরত্ব ও ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, সেটা আমাদের দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ঘর, প্রতিবেশী ও প্রতিষ্ঠান থেকে করতে হবে। ছাত্রছাত্রী ভাইবোনদের চোখের ভাষা আমাদের বুঝতে হবে। তাঁদের মনের কথা বুঝতে হবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক প্রাণহানি এবং দেশ টানা ৫ দিন ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকায় সরকারের পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রীও সমালোচনার মুখে রয়েছেন। সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করলেও তিনি বলেছেন, মহাখালীতে ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও ফাইবার কেবল কাটা পড়ায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী ইন্টারনেট বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশব্যাপী ইন্টারনেটের সেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য যদি কেউ দায়ী হয়, তাহলে সে আমি। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্যাহত হওয়ার দায় আমার। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হওয়ার জন্য যদি কারও শাস্তি হয়, তাহলে আমার হওয়া উচিত। কিন্তু কেন প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করা হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা করা হচ্ছে?’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশে হামিদ কারজাই মার্কা সরকার বসানোর জন্য কিছু মুখোশধারী, চক্রান্তকারী টিভিতে ভালো মিষ্টি কথা বলছেন। এ ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন করতে সময় লাগবে।
গুজব প্রতিরোধ করতে ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যদি তিনি ব্যর্থ হন, সে জন্য আওয়ামী লীগ ও সংযোগী সংগঠনের সদস্যরা প্রতিমন্ত্রীকে দোষারোপ করতে পারেন বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বহিরাগত শক্তির যেকোনো আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে। আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে (ইবিআরসি) ‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’ এর ‘দশম টাইগার্স পুনর্মিলনী’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু বহিঃশক্তির যেকোনো আক্রমণ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে পর্যাপ্ত সক্ষম করে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা আমাদের দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশে রুপান্তরিত করতে চাই। তাই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী সবসময় দেশ ও জণগণের পাশে আছে। যেকোনো দুর্যোগে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাদের পাশে দাঁড়ায়, শুধু দেশে নয় বিদেশেও।
শেখ হাসিনা বলেন, যখনই বন্ধুপ্রতীম কোনো দেশে দুর্ঘটনা ঘটে তখনই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সেখানে যায় এবং উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ ও সেবা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গৌরবজনকভাবে দায়িত্ব পালন করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে যাচ্ছে। তিনি সাম্প্রতিক তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার কাজে সফলভাবে অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেন।
‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট তার হৃদয়ের খুব কাছের। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে দুই ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল এই রেজিমেন্টের সদস্য ছিলেন’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পুনর্মিলনীতে যোগ দেওয়া একদিকে আমার জন্য বেদনাদায়ক, অন্যদিকে আনন্দের’।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং খোলা জিপে চড়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ তাঁর সঙ্গে ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। সূত্র- বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে বৈশ্বিক সম্প্রদায় বিশেষ করে আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের কাছে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে উদ্ভূত এই (রোহিঙ্গা) সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে হবে, সব বিকল্পের মধ্যে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনই সবচেয়ে কার্যকর।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ‘তারা কি আমাদের ভুলে গেছে?’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক ইভেন্ট আয়োজন করে। ইভেন্টটি সঞ্চালনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
শেখ হাসিনা তার প্রথম ও দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন বিষয়টি সমাধান করে এবং এই দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জীবন ধারণের জন্য আমাদের মানবিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এ বিষয়টিকে তাদের এজেন্ডার শীর্ষে রাখে।
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, এই জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত, নিয়মে পরিণত করা এবং ঘৃণ্য নৃশংসতাকারী অপরাধীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য চলমান এবং প্রচলিত আইনি ও বহুপাক্ষিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ছয় বছর ধরে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের মর্মান্তিক বিতাড়নের ঘটনা দেখে আসা বিশ্বকে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের স্থায়ী দুর্ভোগের কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে তারা আজ এখানে সমবেত হয়েছেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি নির্মম হত্যাকাণ্ডের কারণে কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর পর থেকে আমরা আমাদের মাটিতে তাদের আশ্রয় এবং তাদের মৌলিক ও মানবিক সেবা দিয়ে আসছি। আমি আমাদের সব অংশীজন এবং বন্ধুদের তাদের সংহতির পাশাপাশি মানবিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ইস্যুটি এখন স্থবিরতার পর্যায়ে পৌঁছেছে উল্লেখ তিনি বলেন, গত ছয় বছরে একজন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘ উপস্থিতি কেবল তাদের আরও হতাশার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে না, এটি কক্সবাজারের পরিস্থিতিকেও অনিশ্চিত করে তুলছে। আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় আজ তাদের উদারতার শিকারে পরিণত হয়েছে, বলেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের চাহিদার প্রতি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি মানবিক সহায়তা পরিকল্পনায় ক্রমবর্ধমান অর্থায়নের অভাব স্পষ্ট।
তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্ব অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য অনেক কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা যে, রেকর্ড পরিমাণ উচ্চতায় পৌঁছেছে সে বিষয়ে তারা অবগত আছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব রোহিঙ্গাদের ভুলে যেতে পারে না। কেননা, ২০১৭ সালে তাদের দেশত্যাগ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না এবং তারা কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিকারে এগিয়ে আসতে সবারই দায়িত্ব রয়েছে। তাদের ভরণপোষণের জন্য মানবিক সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটিই সব কিছু নয়। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা মিয়ানমারে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে পারবে এবং মর্যাদার সঙ্গে নিশ্চিত জীবনযাপন করতে পারবে। এবং এর জন্য আমাদের সমস্যাটির মূলে গিয়ে সমাধান করতে হবে, যা মিয়ানমারেই রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার দেশ জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং আমরা আইসিজে, আইআইএমএম এবং আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। আমি অন্য সব সদস্য রাষ্ট্রকে এই বিষয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার সাথে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানাই।