চলারপথে রিপোর্ট :
জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস ও সদরে মুহতামীম, দেশের শীর্ষ আলেমেদ্বীন আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:)’র স্বরণে আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বাদ আসর জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:) এর বর্ণাট্য জীবনীর উপর আলোচনা করেন জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা মুফতী মুবারকুল্লাহ, শায়খুল হাদীস আল্লামা সাজিদুর রহমান, মাওলানা শামসুল হক ছাতিয়ানী, মাওলানা আখতারুজ্জামান, মুফতী শামসুল হক, মুফতী মারুফ কাসেমী, মুফতী আবু বকর, মুফতী শরীফ উদ্দিন আফতাবী, মুফতী রাকিবুল হাসান, হাফেজ মাওলানা মহিউদ্দিন মাওলানা আনোয়ার বিন মুসলিম, মাওলানা শরিফুদ্দীন, ক্বারি বোরহান উদ্দিন, মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন, আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:) সারাজীবন ইসলাম, মাদ্রাসা, মসজিদ সহ দ্বীনের বহুমুখী কার্যক্রম অত্যন্ত নিষ্টার সাথে পরিচালনা করে গেছেন। তিনি অত্যন্ত সাদাসিধা জীবন যাপন করে গেছেন।
আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ:) এলেমের জগতে এক কিংবদন্তী আলেম ছিলেন, তার ইন্তেকালে এলেমের জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, যা পূরণ হবার নয়। সকলের সাথেই আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমীর ছিলো হাসিমাখা অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে তিনি সবসময় অবিভাবকের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার ইন্তেকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী একজন যোগ্য অবিভাবক হারিয়েছে।
আলোচনা শেষে আল্লামা আশেকে এলাহী ইব্রাহিমী (রহ 🙂 এর মাগফিরাত কামনায় মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট বিশেষ দোয়া করা হয়।
দোয়া মাহফিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শীর্ষ উলামায়ে কেরাম, তালিবুলইলম ও মুসল্লীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে পারভেজ মিয়া (২৭) নামের এক যুবক স্ত্রীর ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আজ ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুর ১টার দিকে জেলা শহরের ভাদুঘর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
পারভেজ আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের বোরহান মিয়ার ছেলে৷
হাসপাতাল সূত্রে ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পারভেজ প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীর মামা বাচ্চু মিয়ার বাড়ি ভাদুঘরে ভাড়া থাকতেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক তেমন ভাল ছিল না। পারভেজ হতাশাগ্রস্ত ছিল। প্রায় সময় দুজনের মধ্যে ঝগড়া হতো। ঝগড়ার জেরেই সোমবার দুপুরে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেছিয়ে সিলিংয়ের সাথে ফাঁস লাগিয়ে পারভেজ আত্মহত্যা করে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এক যবুক আত্মহত্যা করেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঐতিহাসিক ছয়দফা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজ ৭ জুন শুক্রবার বিকাল ৫ টায় শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো.হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু,আওয়ামী লীগ নেতা তানজিন আহমেদ,মো.মনির হোসেন,সুজন দত্ত,সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাহিদ সোহাগ,পৌর আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুল ইসলাম পিন্টু,জেলা শ্রমিকলীগ সাধারণ সম্পাদক আশরাফ খান আশা,জেলা মৎস্যজীবী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহপরান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন আলেম-ওলামারা।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের কাউতলি এলাকায় এ অবরোধ করেন তারা। এর ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরায় মহাসড়কের দুইপাশে যানজট তৈরি হয়। তবে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে এবং জনদুর্ভোগ বিবেচনায় তিন ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ ও ২০২১ সালে পৃথক সহিংসতার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ৭৫টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় ৩ হাজারেরও বেশি হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীসহ আলেম-ওলামাদের আসামি করা হয়। এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন আলেম-ওলামারা। এর ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। সরকারের তরফ থেকে আজকের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে অবরোধ চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন অবরোধকারীরা।
জেলা হেফাজতে ইসলামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকারিয়া ণমাধ্যমকে জানান, ৫ আগস্টের পর অনেক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হেফাজতে ইসলাম নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের নামে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় করা মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। আজকের মধ্যে মামলাগুলো প্রত্যাহারের ঘোষণা না এলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয় ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য আলেম-ওলামাদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীর ডেকো ফুডস্ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরীর পরিত্যক্ত পণ্য ক্রয় নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন ও বুধল ইউনিয়নের দুই নেতা ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায়-দফায় এই সংর্ঘষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, নন্দনপুর বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত ডেকো ফুডস্ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরী থেকে দুই থেকে তিন মাস পর পর কারখানার পরিত্যক্ত পণ্য নিলামে বিক্রি করা হয়। এসব পরিত্যক্ত পণ্য মাছের খাদ্য হিসেবে বিক্রি হয়। গত ১দশক ধরে এসব পণ্য কিনতেন সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিনের পক্ষের ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন এবং কৃষকদল নেতা মোরশেদ হাজারী।
গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর এই পণ্যগুলো ক্রয় করার জন্যে পাশের বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের সমর্থক আশরাফুল ইসলাম মাসুম পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আসেন।
সকালে আগের ব্যক্তিদের কাছে পণ্য বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এমন খবর পেয়ে সেখানে দলবল নিয়ে ছুটে যান আশরাফুল ইসলাম মাসুম। সেখানে গিয়ে তিনি নাসির উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের সাথে বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হন।
পরে নাসির উদ্দিন ও হারুনুর রশিদের পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এসময় ডেকো ফুডস্ ফ্যাক্টরীসহ বেশ কয়েকটি বাড়ী-ঘরে হামলা ও লুটপাট করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় খড়ের গাদা।
এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিনের পক্ষের মোরশেদ হাজারী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কারখানার রেইট অনুযায়ী কাজটি পায় মেসার্স মোরশেদ এন্ড নাসির খন্দকার নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি পাওয়ার পর বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও তার সমর্থক আশরাফুল ইসলাম মাসুম তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মঙ্গলবার সকালে তারা ৪০/৫০ জন লোক নিয়ে এসে তাদের উপর আক্রমণ করেন। এতে তাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এসময় বেশ কয়েটি বাড়ী-ঘর ভাংচুর করা হয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের পক্ষের আশরাফুল ইসলাম মাসুম বলেন, আমি ইতিপূর্বে এক সময় ওই কারখানায় চাকরি করতাম। সেই সুবাদে কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকে নিয়ে পরিত্যক্ত পণ্যগুলো ক্রয় করার অফার দেয়। আমিও তাদের কথামতো পণ্যগুলো ক্রয় করার জন্য কথা বলে আসি। মঙ্গলবার সকালে জানতে পারি এই পণ্যগুলো পূর্বে যারা ক্রয় করতেন, তাদের কাছেই কারখানা কর্তৃপক্ষ গোপনে বিক্রি করছেন।
এমন খবর পেয়ে আমার কয়েকজন বন্ধুকে সাখে নিয়ে সেখানে যাই। সেখানে যাওয়া মাত্রই সেখানে থাকা সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাছির উদ্দিন ও তার পক্ষের মোর্শেদ হাজারি দলবল নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমি সহ আমার সাথে থাকা বেশ কয়েকজন আহত হয়। আমি এই ঘটনা তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি মোঃ মফিজ মিয়া জানান, বিস্কুট ফ্যাক্টরির পরিত্যক্ত পণ্য নিয়ে দুই ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দলের জন্য বদনাম হয়েছে। তিনি বলেন, এদেরকে থামানো না গেলে দলের আরো বদনাম হবে।
এ ব্যাপারে বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন ভূইয়া জানান, ঘটনার পর পরই তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও ডেকো ফুডস্ ফ্যাক্টরীর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, সংর্ঘষের খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য ও র্যাব সদস্যরা ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
সংর্ঘষে আহদের মধ্যে পাঁচজনকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।