অনলাইন ডেস্ক :
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আগামী চার বছরে গ্যাসের শতভাগ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন এবং বঙ্গবন্ধু কর্নার ও প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের ডাটা সেন্টার উদ্বোধন শেষে একথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাস মিটার স্থাপন করলে অপচয় কমে যাওয়াসহ অনেক সুবিধা রয়েছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব প্রিপেইড মিটার স্থাপন শেষ করতে চাই। এখন বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ অনেকে অর্থায়ন করতে চায়। তারা প্রায় ৩০ লাখ মিটার কানেক্ট করবে।
জালালাবাদ গ্যাসের সার্ভিস দেখে তিনি বলেন, এখানে কোনো সিস্টেম লস নেই, কোনো অবৈধ সংযোগও নেই। ডাটা সেন্টার চমৎকার মনে হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাসের মোট ২ লাখ ২১ হাজার ১৪৫ গ্রাহকের মধ্যে আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন ২ লাখ ১৯ হাজার ৩৪৫ জন। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দেওয়া হয়েছে। আরও দেড় লাখ মিটার স্থাপনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড পরিদর্শনকালে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব ও কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নসরুল হামিদের সঙ্গে ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন নিয়ে সংবিধান বা প্রচলিত আইনে যা আছে, তার বাইরে কোনো সংলাপ হতে পারে না বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তার মতে, সংবিধান ও আইন মেনে যদি কেউ নির্বাচনে আসে, তাহলে আলোচনারও প্রয়োজন থাকে না।
আজ ১৫ অক্টোবর রবিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্ত জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থবহ সংলাপে বসতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সমন্বয়ে গঠিত মার্কিন প্রতিনিধি দলটি গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করে। পাঁচ দিনের মিশন শেষে মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশনসহ অংশীজনদের কাছে পাঁচটি সুপারিশ করেছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমতসহ বিভিন্ন সরকারের অবস্থান তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, তারা যে কথাগুলো বলেছেন, তার প্রায় সবই মেনে ফেলেছি। আরেকটি কথা, দেশে একটি সংবিধান আছে এবং সেই সংবিধানে বলা আছে নির্বাচন কিভাবে হবে। দেশে আইনও আছে। সংবিধান ও আইন মেনে নির্বাচন হবে। সংবিধানের বাইরে বা প্রচলিত আইনে যা আছে, তার বাইরে কোনো সংলাপ হতে পারে না। সংবিধান ও আইন মেনে যদি কেউ নির্বাচনে আসে, তাহলে কিন্তু আলোচনারও প্রয়োজন থাকে না।
‘গায়েবি’ মামলায় দ্রুত সাজা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে, যাদের কাজ হলো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও গায়েবি মামলার তালিকা করে নির্দিষ্ট কিছু মামলার দ্রুতবিচার করে সাজা দিতে আদালতকে নির্দেশ দেওয়া। এ কাজ শুরু হয়েছে। এ অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আশা করব বিএনপির মহাসচিব জেনেশুনে কথা বলবেন।
মামলা জটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহবান আইনমন্ত্রীর
এদিকে রোববার দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে একটি ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এখানে তিনি বিচার বিভাগের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মামলাজটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মেধা, দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তি দ্বারা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করার আহবান জানান। একই সঙ্গে তিনি বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষকে দ্রুত ও সহজে ন্যায়বিচার প্রদানের মাধ্যমে জাতিসংঘের এসডিজি ও সরকারের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার আহবান জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের অভিযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধাপে ধাপে সফলতার সাথে অগ্রসর হচ্ছে। প্রথম ধাপ রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের পথ ধরে এখন তার সরকার এসডিজি ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের পথে দুর্বার গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যার দেখানো পথে ২০৪১ সালে আমরা অবশ্যই নতুন আরেক বাংলাদেশ দেখতে পাবো, যে বাংলাদেশ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ-উন্নত বাংলাদেশ; আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী স্মার্ট বাংলাদেশ, যেখানে গড়ে উঠবে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ।
একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিগত প্রায় দেড় দশক যাবৎ জ্ঞান অন্বেষণ, জ্ঞানচর্চা, জ্ঞানসৃষ্টি ও জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্র বৃদ্ধির লক্ষ্যে বহু যুগান্তকারী ও অভূতপূর্ব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে বলে আনিসুল হক বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
আনিসুল হক বলেন, নব্য বিশ্বায়নের এ যুগে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারই জ্ঞান অন্বেষণ, জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্র বৃদ্ধির প্রধান মাধ্যম হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ নামক নতুন এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে প্রবেশে কোনো শ্রেণি-ভেদ নেই, নতুন এই বাংলাদেশে প্রতিটি নাগরিকের সমান প্রবেশাধিকার রয়েছে। স্মরণ রাখা প্রয়োজন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ২০৪১ সালে যে স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে জ্ঞানই হবে সবচেয়ে বড় শক্তি। যার জ্ঞান থাকবে স্মার্ট বাংলাদেশে সেই সমাজের উঁচু স্তরে পৌঁছে যাবে, তার বংশ পরিচয় যাই-হোক না কেন?
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যতবেশি দক্ষ হবেন, যিনি যত দ্রুত মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারবেন, স্মার্ট বাংলাদেশে তিনি ততবেশি এগিয়ে যাবেন। সেই কারণে বিচারকদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া একটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম উপায় হলো সুষম মানবসম্পদ উন্নয়ন। আর মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার হলো প্রশিক্ষণ। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও দরকার প্রশিক্ষণ।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তৃতা করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের অভাব সারা বিশ্বব্যাপী। এখন কেনাটাই অনেকটা মুশকিল। ক্রয় করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়ে গেছে। জলবিদ্যুৎ আমদানিরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আবার চালু করা যায়। আজ ৪ জুন রবিবার সংসদের বৈঠকে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের অতিমারি আর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বে যে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি- এটা প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশ সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
আওয়ামী লীগ দলীয় চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয়। চলতি সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুতে বৈঠক মুলতবি করার রেওয়াজ রয়েছে। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পরের দিনের কার্যক্রম স্থগিত করে সোমবার বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা বলেন, সরকার জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ নিয়েছে। আজকে স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাবের কারণে এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে কিন্তু জ্বালানির অভাব হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশেও বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী।
তিনি বলেন, জানি না আর কখনও এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল কিনা। হয়তো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভিক্ষ ও মন্বন্তর দেখা দিয়েছিল।
সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। সব জিনিস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। চেষ্টা করে যেতে হবে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা করে যাচ্ছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
মরহুম আফসারুল আমীনকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়। তিনি মন্ত্রী হিসেবেও অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, ৭৫ এর পর ২১টি বছর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ারও সাহস পেতেন না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সেই সংগ্রামে আফরারুল আমিনকে পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সবসময়ই দুর্গতদের সেবা করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের ঘুর্ণিঝড় হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। তৎকালীন বিএনপি সরকার জানেইনি যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। সকলের আগে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছুটে যায়। আমি নিজেও ছুটে যাই। সেই কুতুবদিয়া, মহেলখালী, বাশখালী- মানুষের লাশ, মহিলা ও শিশুর লাশ ভাসছে। তখন আফসারুল আমিনসহ চট্টগ্রামের সকল নেতারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা সাধ্যমতো রিলিফ দেওয়া ও লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। এটা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন, যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরেনি। তিনি তখনও জানেননি। তাঁর কাছে কোনো খবর ছিল না। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম কত মানুষ হলে আপনার তত মানুষ হবে।
শোক প্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সরকারি দলের মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়াসিকা আয়শা খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙা বক্তব্য রাখেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা নদী পারাপারের সময় নৌকা ডুবে তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন।
আজ ৯ জুলাই রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনি গ্রামের তিস্তা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজদের উদ্ধারের জন্য হাতীবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম কাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন, হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারি ইউনিয়নের দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের মৃত দমেজ উদ্দিনের ছেলে ফজলুল হক (৫৯), মৃত জুলাই শেখের ছেলে আহিদুল (৫০) ও দক্ষিণ গড্ডিমরাী এলাকার মৃত খাদু শেখের ছেলে শফিকুল (৪৫)।
স্থানীয়রা জানান, সকালের দিকে ধুবনী এলাকার ১৩ জন কৃষক নদী পার হয়ে চরে যাওয়ার সময় মাঝ নদীতে নৌকা উল্টে যায়। এসময় ১০ তীরে আসতে পারলেও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
হাতীবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোঃ মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি, ডুবুরি না থাকায় রংপুরে খবর পাঠানো হয়েছে। ডুবুরীদল এলেই উদ্ধার তৎপরতা চালু করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী মিলন বলেন, নদী পার হয়ে আমন ধানের চারা লাগাতে গিয়ে নৌকা ডুবে যায়। বয়স্ক তিনজন ডুবে যায়। এখোন তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সিঙ্গিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, নৌকাডুবির খবর শুনে ছুটে এসেছি।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ চালিয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সরাসরি হজে পাঠানোর ক্ষেত্রে হজ এজেন্সির জন্য সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা কমিয়েছে সৌদি সরকার। ৫০০ জন থেকে ওই কোটা ২৫০ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে যেসব এজেন্সির হজযাত্রী ২৫০ জন হবে তারা এখন সরাসরি হজে লোক পাঠাতে পারবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি সরকার সরাসরি হজযাত্রী পাঠাতে কোটা কমানোর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ২৭ জানুয়ারি শনিবার হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এবং এজেন্সিগুলোকে এটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হজ এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিজরি ১৪৪৫/২০২৪ সনের হজ মৌসুমে অনুমোদিত প্রতিটি হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন ৫০০ জন হজযাত্রী থাকলে ওই এজেন্সি সৌদি আরবে সরাসরি হজযাত্রী পাঠাতে পারবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোটা কমানোর চিঠিতে জানিয়েছে, সৌদি সরকার ২০২৪ সালের হজের জন্য বাংলাদেশসহ সব দেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা প্রথমে দুই হাজার জন এবং পরবর্তী সময়ে ৫০০ জন নির্ধারণ করে পত্র দেয়। সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ জনের পরিবর্তে আগের মতো বাংলাদেশের সব এজেন্সিকে হজযাত্রী পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সৌদি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, ধর্মমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার আবদুল ফাত্তাহ সুলেমান মাশাত এবং হজ অ্যাফেয়ার্স অফিসের মহাপরিচালক ড. বদর আলসোলামির সঙ্গে টেলিফোনে কোটার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানান।
অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জানুয়ারি ভাইস মিনিস্টারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ জনের পরিবর্তে ২৫০ জন নির্ধারণের কথা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়।
এ ক্ষুদে বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী কোনো হজ এজেন্সি ২৫০ জন হজযাত্রী থাকলে সরাসরি সৌদি আরবে পাঠাতে পারবে। যেসব এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫০-এর কম সেসব এজেন্সিকে অন্য এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে হজযাত্রী পাঠাতে হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালেও বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটায় এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এবার হজে যেতে সরকারি-বেসরকারি হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ১৫ নভেম্বর। গত ১০ ডিসেম্বর নিবন্ধন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নিবন্ধনে সাড়া না পাওয়ায় তিন দফা সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ বাড়ানো নিবন্ধনের সময় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। বাংলা একাডেমি আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয়। এই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। এই অধিকারটাও আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।
বই হাতে নিয়ে পড়ার আনন্দ আলাদা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও এখন আমাদের যুগ হয়ে গেছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগ। তবু বই প্রকাশ অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, হাতে নিয়ে বই পড়ার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। তবে আজকালকার ছেলে-মেয়েরা ট্যাবে বই পড়ে, আবার ল্যাপটপেও পড়ে।
এসময় নিজের স্কুল-কলেজ জীবনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বেশ আফসোস করে বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় আসায় কোনো মজা নেই। কারণ, স্বাধীনতা নেই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বাঁয়েও নিরাপত্তা, পেছনে গেলে নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা; এই নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে স্কুল জীবনের কথা, ছোটবেলার কথা। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন সেই স্বাধীনতাটা নেই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর যখন জাতিসংঘ আমাদের স্বীকৃতি দিল, তিনি কিন্তু তখন সেখানে গিয়ে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষায় ভাষণ অর্থাৎ বাংলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করে এই পর্যন্ত যতবার ভাষণ দিয়েছি, বাংলায় ভাষণ দিয়েছি।
ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকাশকদের অনুরোধ করে বলব— শুধু কাগজে প্রকাশ করলে হবে না, ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল প্রকাশক হলে এটা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও পৌঁছাবে। মনমানসিকতা পরিবর্তন করে আধুনিক প্রযুক্তিও রপ্ত করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে আমার এগিয়ে যাব।
অনুবাদ সাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, একসময় দাবি উঠেছিল— অনুবাদ করা যাবে না। কিন্তু আমি অনুবাদের পক্ষে। অনুবাদ যদি না হয় পৃথিবীর এত ভাষা আমরা কোথা থেকে জানব। একটা দেশকে, তার সংস্কৃতিকে জানতে হলে তার ভাষার মধ্য দিয়ে জানতে হবে।
এবারের মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। বরাবরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে মেলার আয়োজন।
মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।
বইমেলার সময়সূচি
এবারের বইমেলা অধিবর্ষের বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবার বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।