চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদার জন্য ব্রাহ্মণবড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলায় দিদার হোসেন নামে ১৪ বছরের এক কিশোরকে এক পা গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করেছে একদল বখাটে যুবক। এসময় তারা কিশোরের পরিবারের নিকট মোবাইল ফোনে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকায় মুক্তি মেলে।
এ ঘটনায় আজ ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভুক্তভোগী দিদার হোসেনের বাবা মো. খায়ের মিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন উপজেলার চরচারতলা গ্রামের জামির (৪১), মাসুদ রানা (৩১), তোফাজ্জল (২৮), সাইফুল ইসলাম শাকিল (৩০), নাসির (৪০) ও আকাশ (৩০)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে তোফাজ্জলের কাছে দিদারের কাজের পাওনা ৮’শ টাকা চাইতে গেলে তোফাজ্জল তা দিতে অস্বীকার করে। এসময় দিদারের সাথে তোফাজ্জলের কথা কাটাকাটি ও একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। দুপুরে দিদার বাড়ি থেকে বের হলে একই এলাকার জামির, তোফাজ্জল, মাসুদ, শাকিল, আকাশ ও নাসির দিদারকে মিডল্যান্ড পাওয়ার প্লান্টের পাশে নিউ এশিয়া প্রজেক্টের খালি জায়গায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে একটি কড়ই গাছের ডালে দিদারকে ডান পায়ে দড়ি বেঁধে উল্টো ভাবে ঝুলিয়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে দিদারের মাকে মাসুদের মোবাইল ফোন দিয়ে ২ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়। পরে দিদারের মা বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ঋণ করে ৩০ হাজার টাকা মাসুদকে দিলে গাছের ঝুলন্ত অবস্থা থেকে দিদারকে মাটিতে নামানো হয়। ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার এবং দুই বোনকে তুলে নেয়ার হুমকি দেয় তারা।
মামলার বাদী খায়ের মিয়া বলেন, তাদের ভয়ভীতির কারণে আমি প্রথমে কাউকে জানায়নি। আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, দিদারের পরবিারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের অবিলম্বে ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
হাজার হাজার মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র কলার ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী মঈন উদ্দিন মঈন।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার আশুগঞ্জ ও সরাইল উপজেলা থেকে দিনভর সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ ও নেতাকর্মীরা স্বত:স্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়ে প্রিয় নেতাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসময় নবনির্বাচিত এমপি মঈন উদ্দিন মঈনকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিবেদন করেন।
গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকেই এই আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ভোটের ফলাফল আসতে থাকলে বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত মানুষ বিজয় মিছিল করে জননেতা মঈন উদ্দিন মঈনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে থাকেন।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্ব, বিনয়, সততা, স্পষ্টবাদিতা ও জনপ্রিয়তা এবং প্রার্থীর প্রতি তরুণ-যুবসমাজ আকৃষ্ট হওয়া ইত্যাদি কারণে মঈন উদ্দিন জয়ী হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মঈন উদ্দিন মঈন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহিরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। স্কুলজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। ১৯৯০ সালের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের আলম-কামরুল-মেহেদী পরিষদে ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক পদে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মো. শাহজাহান আলম (সাজু) কে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মোহাম্মদ গোলাম ফারুক।
আজ ৮ অক্টোবর রবিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তাদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মনোনীতদের নাম সাংবাদিকদের জানান। সভায় সংসদীয় বোর্ডের অন্য সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান জানান, গত ৬ অক্টোবর শুক্রবার ও ৭ অক্টোবর শনিবার দুই দিন আওয়ামী লীগ ওই দুই আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হয়। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ১৬ জন ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে ১৪ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরম সংগ্রহ করেন।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১৬ জন প্রার্থী। তারা হলেন– কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশীষ কুমার চক্রবর্তী, আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ উপ-কমিটির সদস্য মো. শাহজাহান আলম (সাজু), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান রতন ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য প্রকৌশলী আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক শাহ মফিজ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. কামরুজ্জামান আনসারী, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছফিউল্লাহ (হুমায়ুন মিয়া), সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নাজমুল হোসেন ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর, সরাইল উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ তানবির হোসেন কাউসার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সদস্য মাইনুল হাসান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. মাসুদুর রহমান ও সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মো. জালাল মিয়া।
এর আগে, গত ১ অক্টোবর সংসদ সচিবালয় এই দুই আসন শূন্য ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এমপি আব্দুস সাত্তার ভূঞা এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি একেএম শাহজাহান কামাল রাজধানীর একটি হাসপাতালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোরে মারা যান।
সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের কোনো আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর আসন শূন্য হওয়ার তারিখ হিসেবে এই দুই আসনে উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে।
৩ অক্টোবর মঙ্গলবার শূন্য ঘোষিত এই দুই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১১ অক্টোবর (বুধবার) মনোনয়ন দাখিলের শেষদিন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার), মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১৩ থেকে ১৭ অক্টোবর, আপিল নিষ্পত্তি ১৮ অক্টোবর (বুধবার), প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন ১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার), প্রতীক বরাদ্দ ২০ অক্টোবর (শুক্রবার) এবং ভোটগ্রহণ ৫ নভেম্বর।
চলারপথে রিপোর্ট :
নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরইমধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নিজের প্রার্থীতার জানান দিলেন আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নাসির আহমেদ সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার প্রার্থীতা ঘোষণা করেন।
এসময় তিনি বলেন, আমি সাধারণ পরিবারের সন্তান। হাই প্রোফাইল আমার নাই। আমি চেয়ারম্যান ছিলাম তাই মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা জানি। সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এখন বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে চাই। আমি সার্বজনীন জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। কারো হক মেরে খাওয়ার চিন্তা আমার নাই।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, সারাদেশে যখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে ঠিক তখন যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় এই উপজেলা উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। আমি এই এলাকার সাধারণ মানুষদের মাঝ থেকে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে এলাকার উন্নয়ন করতে চাই। এ সময় তিনি স্থানীয় রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ, এলাকার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাচ্চুসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির টানা দুই বারের সাবেক সংসদ সদস্য ও এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা। আর বার্ষিক আয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আলম। চার বছরে জিয়াউল হকের বার্ষিক আয় কমলেও নিজের নামের পাশাপাশি স্ত্রীর নামে সম্পদ প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে।
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন উপলক্ষে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম, জাতীয় পার্টির আবদুল হামিদ, স্বতন্ত্রপ্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেন ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম।
হলফনামা অনুযায়ী, পাঁচজনের মধ্যে তিনজন প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত। তাঁদের মধ্যে শাহজাহান আলম এমবিএস (মাস্টার্স ইন বিজনেস স্টাডিজ), আবদুল হামিদ ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা এলএলবি পাস। রাজ্জাক হোসেন উচ্চমাধ্যমিক ও জহিরুল ইসলাম স্বশিক্ষিত।
নৌকার প্রার্থী শাহজাহান আলমের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি পেশায় শিক্ষক। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএস পাস। আশুগঞ্জ উপজেলায় নিজের প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু কারিগরি ও বাণিজ্যিক মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তিনি। ২০১৫ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে তাঁর নামে দুটি মামলা ছিল। তবে দুটি মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
হলফনামা অনুযায়ী, শাহজাহান আলমের বার্ষিক আয় ১১ লাখ ২৩ হাজার ১১৬ টাকা। তাঁর নিজ নামে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ২৬২ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩২ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। নিজ নামে সোনা আছে ২০ তোলা। নিজ নামে ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৭ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ৯৬ হাজার স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে তিনি ১৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।
জিয়াউল হক মৃধার পেশা আইনজীবী। তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে মামলা হলেও তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়। হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল বড় ছেলের বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৩১ হাজার ১২ টাকা দেখিয়েছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ২৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩১ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে তাঁর বার্ষিক আয় ২২ লাখ ১৭ হাজার ৬৩১ টাকা কমেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে জিয়াউল হক মৃধার বর্তমানে নিজ নামে সরাইল ও রাজউকের পূর্বাচলের নিউটাউনে ৬৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৭৯ টাকার সম্পত্তি, স্ত্রীর নামে ১৬৩ শতক জমি ও যৌথ মালিকানায় ৯ একর ৫০ শতক জমি আছে। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে বর্তমানে নিজ নামে ৪৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি ল্যান্ডক্রুজার প্রাডোসহ ৯১ লাখ ৩৭ হাজার ১৪৯ টাকার সম্পত্তি আছে। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ৭ ভরি সোনাসহ ২ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪৮ টাকার এবং নির্ভরশীলদের নামে ৩৫ ভরি সোনাসহ ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকার সম্পদ আছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পেশায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। কৃষি ও অন্যান্য খাত থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ হাজার ৯৬ হাজার ২০০ টাকা বলে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। ব্যবসা থেকে তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তাঁর নিজ নামে ৩০ লাখ ২৭ হাজার ১৪৫ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। নিজ নামে সোনা আছে ৪০ ভরি ও স্ত্রীর নামে আছে ৩৭ ভরি। সরাইলে তাঁর ১০ বিঘা কৃষিজমি ও দশমিক ৪৫ শতক অকৃষিজমি আছে। আর স্ত্রীর নামে ৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকার অকৃষিজমি আছে বলে হলফনামায় লেখেন তিনি।
জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুলের নামে মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর নিজ নামে ২৬ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। তাঁর নামে ৩০ শতক কৃষি জমি ও আধা পাকা টিনশেডের দুই কোঠার একটি দালান আছে।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেনের নামে মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। তাঁর নিজ নামে ২৮ লাখ ৭ হাজার ৭০০ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তাঁর নামে ৩০ শতক কৃষিজমি আছে। তাঁর ১২ লাখ টাকার ব্যাংক লোন আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। এতে আসনটি শূন্য হয়। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে অন্যতম স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান (মোটর গাড়ি প্রতীক) আবু আসিফ আহমেদের সন্ধ্যান মিলেছে।
আজ ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আবু আসিফ আহমেদ তাঁর আশুগঞ্জের বাসায় ফিরেছেন। আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আবু আসিফ আহমেদ ঢাকার বসুন্ধরায় তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের কাছে তথ্য আসে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আজাদ রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে একটি মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আবু আসিফ আহমেদ ঢাকায় আছেন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে তিনি আশুগঞ্জের বাসায় ফিরেছেন। আবু আসিফ আহমেদ গত শুক্রবার রাত থেকে নিখাঁজ ছিলেন।
জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরিন আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে জানান, আবু আসিফ তার ঢাকার বাসায় আছেন। তিনি আশুগঞ্জে চলে আসবেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেনকে অবহিত করেন। বিকেলে তিনি আশুগঞ্জের বাসায় ফিরে আসেন।
এদিকে আবু আসিফের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি তার স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরিন উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছিলেন ও এবং ৩১ জানুয়ারি এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত থেকে আসিফ নিখোঁজ করার পর পরিবারের পক্ষ থেকে আসিফ নিখোঁজ বলা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল আসিফ আত্মগোপনে আছেন। এনিয়ে নির্বাচনী এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
আবু আসিফ আহমেদ গত বুধবার অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে মোটর গাড়ি প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ২৬৯ ভোট পান। আসিফের স্ত্রী মেহেরিন আশুগঞ্জ শ্রমকল্যান কেন্দ্রের ভোট কেন্দ্রে গিয়েও ভোট না দিয়ে ফিরে আসেন। বাসায় চলে যাওয়ার সময় তিনি উপনির্বাচনকে “অসুস্থ নির্বাচন” উল্লেখ করে এই নির্বাচন স্থগিত করার দাবি জানিয়েছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির দলত্যাগী নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আসিফের স্ত্রী নিজেই আশুগঞ্জ থানার ওসিকে বলেছিলেন আসিফ তার ঢাকার বাসায় আছেন। বিকেলে তিনি তার আশুগঞ্জের বাসায় ফিরে এসেছেন। আসিফকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসিফ নিজেই ঢাকার বাসায় গিয়েছিলেন, আবার নিজেই আশুগঞ্জের বাসায় ফিরে এসেছেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কি আছে?
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরিনের মোবাইল ফোনে কয়েকদফা চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।