জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার এক বিবৃতিতে, জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তারের বিজয়কে ‘ষড়যন্ত্র ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয় হিসাবে’’ উল্লেখ করে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দেওয়ায় তিনি সরাইল ও আশুগঞ্জ নির্বাচনি এলাকার ভোটার এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি উপ-নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতির বিষয় উল্লেখ করে বলেন, উপ-নির্বাচনটিতে রাজনৈতিক দল ভিত্তিক প্রার্থী বা প্রতিযোগীতা এবং শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় নির্বাচনে উত্তাপ ছিলনা। সে কারণে ভোটারদের আগ্রহ ও কাক্সিক্ষত উপস্থিতি ছিলনা।
তবে, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ফলে ‘বিএনপি’র নির্বাচন বর্জন বা প্রতিহতের ঘোষণা’ জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখাত হয়ে বিএনপি একটি জনসমর্থন বিহীন ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চলারপথে রিপোর্ট :
২৪ হেক্টরেরও অধিক ইরিবোরো ধানের জমি ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি অফিস বলছেন, পোকা মাকড় জীবাণুর আক্রমণ বা ব্লাস্ট রোগ।
কৃষকরা বলছেন, ধানে চাল আসার আগেই ছড়াগুলো জ্বলে পুড়ে লালচে হয়ে ঝরে পড়ছে। কোথাও সাদা পাউডারের মতো হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার জয়ধরকান্দি, দেওড়া, মলাইশ, নিয়ামতপুর, ধাউরিয়া, চুণ্টা, বিটঘর গ্রামের ফসলি মাঠে ও কালিকচ্ছের ধর্মতীর্থ এলাকায় আকাশী হাওর বিলে বি আর-২৮ ধানের জমিতে এ রোগ দেখা দিয়েছে।
সরাইল উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরাইল উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ইরিবোরো ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২৪ হেক্টর জমি। তবে কৃষকদের দেয়া তথ্য মতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৫-৪০ হেক্টর জমির ধান। অধিকাংশ এলাকায় বিআর-২৮ জাতের ধান আক্রান্ত হয়েছে। এই জাতের ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করে কৃষি অফিস। কারণ এগুলো অনেক পুরাতন মডেল।
তাই ২৮ জাতের ধানে দ্রুত পোকা মাকড় ও জীবাণু আক্রমণ করে ক্ষতি করে থাকে। এর পরিবর্তে নতুন উন্নত জাতের ধান এখন বিআর-৮৮, ৮৯ জাত। জয়ধরকান্দি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া (৪০) ও ইমরান মিয়া (৩৫) বলেন, বিঘা প্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করেছি। চোখের সামনে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ধানে এখনো চাল হয়নি। এরই মধ্যে ছড়া লাল বা সাদা রঙ ধারণ করে নিচ দিয়ে ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। আবার সাদা পাউডারের মতো হয়ে পড়ছে। এই এলাকায় শতাধিক বিঘা জমি আক্রান্ত হয়েছে। কেটে আনলে হাঁস মোরগের খাবার হবে। গ্রামের দোকানদার থেকে ১০ কেজি ওজনের বীজ ধানের প্যাকেট ৬ থেকে ৭শ’ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিলাম। প্যাকেটের উপরে লেখা ছিল ‘কুমিল্লা’ও ‘চুয়াডাঙ্গা’। ধান নেই তারপরও এক কানি জমি কাটতে ৩৬শ’ টাকা লাগে। এবার কি খেয়ে বাঁচবো জানি না? দেওড়া গ্রামের কৃষক মো. জয়নাল মিয়া, ধাউরিয়া গ্রামের কৃষক ক্ষিরোদ মজুমদার, লিল মহন সরকার, নিরঞ্জন সরকার, জগদিশ সরকার বলেন, আমাদের এখানে প্রায় দেড় শতাধিক বিঘা জমি শেষ। এখন কেটে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে। কালিকচ্ছ বাজারের ‘কৃষকবন্ধু’ দোকানের মালিক মো. সেলিম মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় কৃষকরা লাইন ধরে পোকা মাকড় ধ্বংস ও আগাছা নাশক ওষুধ ক্রয় করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন ২৮-২৯ জাতের ধান আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অনেক পুরাতন হওয়ায় প্রকৃতিগতভাবেই এই জাতের ধানে জীবাণু আক্রমণ করে থাকে। এই ধান চাষে আমরা কৃষকদের নিরুৎসাহিত করে থাকি। লেটেস্ট ও ভালো বীজ হচ্ছে ৮৮, ৮৯ জাতের ধান। আমরা প্রণোদনায়ও আধুনিক বীজ দিয়ে থাকি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ভূমি দস্যুদের কবল থেকে সরকারি ঘাটলা উদ্ধার করেছেন উপজেলা প্রশাসন। গত ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে ঘাটলাটিতে মাটিচাপা দিয়ে দখলে রেখে বাণিজ্য করছিল স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। ঘাটলাটি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ি ও সাধারণ মানুষ একাধিকবার আন্দোলন সংগ্রাম মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। গণমাধ্যমে বিষয় গুলো ফলাও করে প্রচার হয়েছে। ৮ বছরেরও অধিক সময় ধরে এ বিষয়ে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা চলছে। অবশেষে গত বুধবার অরুয়াইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে সরজমিনে দিনভর অভিযান চালিয়ে ওই ঘাটলা উদ্ধার করা হয়েছে। স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেছে বাজারের ব্যবসায়ি ও সাধারণ লোকজন।
সরাইল উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নদী ও সরকারি জায়গা দখলে অরুয়াইলে ভূমি খেঁকো প্রভাবশালী একাধিক চক্র রয়েছে। জায়গার দখল ধরে রাখতে এরা ইউএনও’র বিরুদ্ধেও মামলা করার রেকর্ড করেছে। অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের সীমানার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিতাস নদীর শাখা। নদীটির অরুয়াইল পাকশিমুল বাজার এলাকার অগণিত অংশে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি ভূমি দস্যু চক্রের। তারা বিভিন্ন কৌশলে মাটি বা ময়লা ফেলে আস্তে আস্তে নদী ভরাট ও পরে দখল করে ফেলে। সেখানে ধীরগতিতে দিনে রাতে স্থায়ী ইমারত নির্মাণ করে মার্কেট ও দোকানঘর করে দখল পাকাপুক্ত করেন। অনেক সময় স্থানীয় ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করেই নির্মাণ কাজ করেন। আর উপজেলা প্রশাসন নড়চড়া করলেই সাময়িক ভাবে থেমে যায় সেখানকার ভূমি খেঁকোরা। সেখানকার ভূমি খেঁকোদের সরকারী জায়গায় নির্মিত দোকানে লাল কালির দাগ দিয়ে উচ্ছেদ পক্রিয়ায় এগুতে থাকলে ভূমি দস্যুরা সাবেক ইউএনও মো. এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করে দিয়েছিলেন। আজ থেকে ১০ বছর আগে মেঘনা তিতাস দিয়ে বয়ে আসা নৌকার মালামাল সহজে উঠা নামার করার লক্ষে অরুয়াইল বাজারে বিশ্ব ব্যাংকের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল একটি পাকা ঘাটলা। ঘাটলাটি নির্মাণের কিছুদিন পরই ভূমি দস্যু চক্রের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে সেখানে। ওই চক্রটি স্থানীয় সর্দার ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাগে আনেন। একসময় ওই ঘাটলাটির উপর মাটি ফেলে ভরাটের কাজ শুরু করে। বাজারের ব্যবসায়ি ও স্থানীয় লোকজন বাঁধা দেন। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। সংঘর্ষ সংঘাত নিরসনে পুলিশ প্রশাসন সেখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। সকল বাঁধা উপেক্ষা করে ঘাটলা মাটি চাপা দিয়ে উপরে দোকানপাট করে ফেলে। একসময় ওই চক্রটি তোহা বাজার ও সরকারী জায়গা দখল করে আরো এক দেড়শত দোকান নির্মাণ করে। অতিসম্প্রতি অরুয়াইল বাজারের ওই সকল অবৈধ দখল নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়। আমলে নেন উপজেলা প্রশাসন। তাই সকালে অরুয়াইল বাজারে মসজিদ সংলগ্ন ওই ঘাটলাটি উদ্ধারে প্রথম অভিযান শুরু করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া। অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহফুজ আলী, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, ইউপি আ.লীগের সভাপতি আবু তালেব, স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি, পুলিশ সদস্য ও বাজারের ব্যবসায়িরা। মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, উদ্ধার অভিযানটি যেন কারো ইশারায় বন্ধ না হয়। এ ছাড়া আমরা দায় সারা অভিযানও আশা করি না। পুরো ঘাটলাটি উদ্ধার চাই। সরকারি একটি খালের মুখ ভরাটের মাধ্যমে পানি নিস্কাশন বন্ধ করে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন ডেসার এক সাবেক কর্তা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই অরুয়াইলবাসী। নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, সরকারী স্থাপনা উদ্ধার একটি চলমান পক্রিয়া। এরই অংশ হিসাবে মাটি ও আবর্জনার নীচে পড়ে থাকা ঘাটলাটি উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, সরকারী জায়গা এখানকার সাধারণ মানুষ দখল করেন না। দখল বাণিজ্যের সাথে যুক্ত স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। এরাই ঘুরে ফিরে সাধারণ মানুষদের শোষণ করছে। আমার কল্পনাতেও ছিল না এই ঘাটলাটি উদ্ধার হবে। বর্তমান ইউএনও মহোদয়ের সহযোগিতায় সরকারি খরচে নির্মিত মাটিচাপায় থাকা ঘাটলাটি উদ্ধার হলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমকে (শিউলি আজাদ) ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ ৭ অক্টোবর সোমবার দুপুরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত সাম্য এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট পরিদর্শক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার দুপুর ১২ টায় তাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের নিকট ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমকে গত রোববার রাতে ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলি আজাদ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি প্রয়াত এ কে ইকবাল আজাদের সহধর্মিনী।
চলারপথে রিপোর্ট :
গত ৩০ ফেব্রুয়ারি বসেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। আইন অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনেই নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটগুলোর প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে ৫০টি সংরক্ষিত আসন বন্টন করা হয়। সাধারণত ৬ আসনের বিপরীতে কোন দল বা জোট একটি সংরক্ষিত আসন পেয়ে থাকে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা। আসন সমঝোতার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনটি মহাজোটের শরীকদল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নির্বাচনে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে বিজয়ী হয় আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা এবং ২টি আসনে বিজয়ী হয় স্বতন্ত্র প্রার্থীগণ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন (কলার ছড়ি) প্রতীকে বিজয়ী হন।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা, বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ এ.কে এমরামুজ্জামান আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বি.এম. ফরহাদ হোসেনকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ইতিমধ্যেই নতুন মন্ত্রী সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দু’জন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনের পর থেকেই শুরু হয়েছে আলোচনা ও গুঞ্জন। কে হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে প্রায় ৭/৮ জন মহিলা নেত্রী ঢাকায় দৌড়ঝাপ করছেন।
এরা হলেন, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সদ্য সাবেক এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জোবেদা খাতুন পারুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী, নব্বই এর রাজপথ কাঁপানো নেত্রী মিসেস মিনারা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ ও এমবি কানিজ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শামীমা চৌধুরী বিথি, নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুমা বেগম প্রমুখ।
মিনারা বেগমঃ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান মিনারা বেগম স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি। তার পিতা মরহুম আবু তাহের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার কমিশনার ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে যোগ দেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা ছাড়া) হত্যাকান্ডের পর তিনি চরম প্রতিকূল পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হওয়া প্রতিটি মিছিল-সমাবেশে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
১৯৭৮ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা ও ১৯৮৯ সালে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। স্বৈরাচারি এরশাদ সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা শারিরিকভাবে তৎকালীন সরকারের ক্যাডার বাহিনীর দ্বার বিভিন্নভাবে নাজেহাল হন।
তিনি ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও জেলা তথ্য অফিস ভাংচুর ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করলে তাঁকে প্রধান আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে দুটি মামলা হয়।
ওয়ান ইলেভেনের সময় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বড় ছেলে আশিকুল আলম বাবলু (প্রয়াত) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলেন। এছাড়াও বাবলু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
মিনারা বেগম ২০২৩ সালে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী” ক্যাটাগরিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জয়িতা সম্মানে ভ‚ষিত হন। তিনি বর্তমানে জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যনের দায়িত্ব পালন করছেন।
উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদঃ শিউলী আজাদ সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা ও সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম. ইকবাল আজাদের স্ত্রী। দলীয় গ্রুপিংয়ের কারনে ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সরাইল সদরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ইকবাল আজাদ ঘাতকদের হাতে খুন হন। এর পর থেকে শিউলী আজাদ রাজনীতিতে যোগদান করেন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারো তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে।
বিউটি কানিজঃ বিউটি কানিজ ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ঢাকা মহানগর) শাখার সাবেক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাবেক শিক্ষা ও প্রক্ষিশণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমবি কানিজ জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
শামীমা চৌধুরী বিথিঃ শামীমা চৌধুরী বিথি ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য, তিনি ইডেন মহিলা কলেজ শাখার (১৯৯১-১৯৯২) সালে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। শামীমা চৌধুরী বিথি জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতঃ অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি, সাপ্তাহিক গতিপথ’র সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখার সাবেক মহিলা সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
রুমা বেগমঃ-রুমা বেগম নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র- সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক নাজির মিয়ার স্ত্রী। তার পিতা লে. গোলাম নূর নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রুমা বেগম ও তার স্বামী নাজির মিয়া দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। রুমা বেগম জানিয়েছেন তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন। এখানে সরকারের কোন হাত নাই বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ড. ইউনুস তার বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে জাতীসংঘে উদ্বেগের বিষয়ে আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি ঢাকা থেকে আন্তঃনগর মহানগর প্রভাতী ট্রেনে সকাল সাড়ে ১০ টায় আখাউড়া জংশন স্টেশনে এসে পৌছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তা কতটুকু কার্যকর হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন সেটা বিএনপি বলতে পারে। তবে আপনারা নির্বাচন দেখেছেন। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখেছেন। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়নের কাজ করবেন মানুষ সেদিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন। বাংলাদেশে গনতন্ত্র আছে, তারা আন্দোলন করতে চেষ্টা করুক।
পরে তিনি সড়ক পথে নির্বাচনী এলাকা কসবা উপজেলায় যান।
এসময় স্টেশনে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।