চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিতাস নদীতে ড্রেজারে কাটছে মাটি। সেই মাটি যাচ্ছে এক কিলোমিটার দূরে এশিয়া নামক ইটভাটায়। ভাটায় ব্যবহারের পরও ওই মাটি চড়া দামে অন্যত্র বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। ওদিকে স্বল্প প্রস্থের নদীর গভীরতা বাড়তে থাকায় দু’পাড়ের শতশত একর ফসলি জমি এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর এলাকার নদী সংলগ্ন ফসলি মাঠে এমন হরিলুট করছে মাটি খেকোঁ চক্র। নদী ও মাটি খেকোঁ প্রভাশালী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় সেখানকার কৃষকরা। ভয়ে মুখ খোলার সাহসও করছেন না তারা।
সরজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, ধর্মতীর্থ এলাকার কৃষকরা বারবার নদী, ফসলি জমি ও মাটি খেঁকো একটি চক্রের শিকার হচ্ছেন। ওই চক্রটির কাজ হচ্ছে ইটভাটায় মাটি বিক্রির বাণিজ্য করা। এই লক্ষে তারা ধর্মতীর্থ চানপুর সহ অত্র এলাকার হাওরের ফসলি জমির মালিকদের টার্গেট করে। সহজ সরল কৃষকদের ফুসলিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমি ও গোচারণ ভূমির মাটি ক্রয় করে আসছে।
একটি জমি ক্রয় করে আশপাশের জমির মালিকদের বেকায়দায় ফেলে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করে ওই চক্রটি। হাওরের শতশত একর ফসলি জমি এখন চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। ফসলি জমির পর এখন তারা নদীর দিকে নজর দিয়েছেন। চানপুর মৌজায় তিতাস নদীতে গত ১৫ দিন ধরে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে এক কিলোমিটার দূরে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে এশিয়া নামক ইটভাটায় নিচ্ছেন। সেখান থেকে ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন। ওদিকে ড্রেজারে লাগাতার মাটি উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে করে নদীর দু’পাড়ে শতশত একর ফসলি জমি এখন ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। কৃষকদের আর্তনাদ ও প্রতিবাদ কোন আমলে নিচ্ছেন না প্রভাবশালী মাটি খেঁকোরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায় নদীর মাঝখানে বিকট শব্দে চলছে ড্রেজার। প্রায় ৮-১২ ইঞ্চি প্রস্থের পাইপ দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে মাটি যাচ্ছে। ড্রেজারের পরিদর্শক নুর নবী দাঁড়িয়ে আছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়েই ড্রেজারের কাছ থেকে দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করেন নুরনবী।
ড্রেজার চালক লাখাই থানার মো. ইসমাঈল মিয়া (৪০) নদীর মাটি ইটভাটায় যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার মফিজ মিয়া, হযরত আলী ও সাইজ উদ্দিন। আমরা শ্রমিক। ৪ জনের মধ্যে আমিসহ দু’জনের মাসিক বেতন ৪০ হাজার টাকা। অপর দু’জনের মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা। অনুমতি বা বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা আমরা জানি না।
ড্রেজার চালিয়ে নদীতে মাটি কাটাই আমাদের কাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার একাধিক কৃষক সামনে পেছনে তাকিয়ে বলেন, তারা হাওরের ফসলি জমি খাইছে। এখন মাটি কেটে যেভাবে গভীর করছে নদীর পাড়ের ফসলি জমি গুলো ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যাবে। আমরা শেষ। স্যার পারলে জমি গুলো রক্ষা করে আমাদের বাঁচান। আমাদের নাম লিখলে তারা মেরে ফেলবে। ঠিকাদার মফিজ মিয়া নদীর মাটি ইটভাটায় বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, এশিয়া ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছি। অনুমতির কথা দূর্গাচরণ দাদা বলতে পারবে। তিনিই কাজটি করছেন। আমরা শুধু দেখা শুনা করি।
দূর্গাচরণ দাস ও মাটি বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নদী খননের অনুমতি এনেছি। সেখানে মাটি কাটার কথা বলা আছে। তবে ইটভাটায় বিক্রির কথা বলা নেই। এটি উন্নয়ন প্রকল্প। মাটি বিক্রি না করলে রাখব কোথায়? ফসলি জমির ক্ষতির জন্য আমি দায়বদ্ধ।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, দূর্গাচরণ দাস অনুমতির কোন কাগজ আমাকে দেখাতে পারেননি। অনুমতি ছাড়া উনি যা করছেন, তা করতে পারেন না। আমি উনাকে ড্রেজারে নদীতে মাটি কাটা বন্ধ রাখতে বলেছি। কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
চলারপথে রিপোর্ট :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরাইল উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা শপথ নিয়েছেন।
আজ ২৮ মে মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা শপথ নেন।
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম।
নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানরা শপথ পাঠ করেন। সরাইল উপজেলা পরিষদ নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. শের আলম মিয়া, ভাইস-চেয়ারম্যান মো. হানিফ আহমেদ, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোছা, রোকেয়া বেগম।
উল্লেখ্য, ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ প্রথম ধাপে সরাইল উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ১৪ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে সাদিয়া আক্তার (১৭) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রী। নিখোঁজ সাদিয়া উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের নন্দীপাড়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার মেয়ে। গত ১৬ মার্চ ভোরে সে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় মেয়ের সন্ধান চেয়ে সরাইল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার বাবা ফারুক মিয়া।
সাধারণ ডায়েরির তথ্য থেকে জানা যায়, কালিকচ্ছ কলেজ পাড়া মহিলা মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার রুবি। সম্প্রতি অজ্ঞাত এক ছেলে সাদিয়ার মোবাইলে ফোন করে কথা বলত। পরিবার বিষয়টি উদঘাটনের চেষ্টা করলেও মেয়ের কাছ থেকে ওই ছেলের নাম ও মোবাইল নাম্বার সম্পর্কে কোনো তথ্য পায়নি। গত ১৬ মার্চ ভোরে পরিবারের লোকজন ঘুম থেকে উঠে দেখেন সাদিয়া ঘরে নেই। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত তার সাথে পরিবারের কোনো যোগযোগ নেই।
সাদিয়ার বাবা মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘আমার মেয়ে কোথায় আছে, কেমন আছে তা নিয়ে আমরা আতঙ্কে আছি। ঘটনার পর ওইদিনই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। ১৪ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত আমার মেয়ের কোনো খোঁজ মিলছে না। আমরা দ্রুত আমার মেয়ের সন্ধান চাই।’
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, ‘মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য আমাদের সব ধরনের প্রচেষ্ট অব্যাহত আছে। তার সন্ধান পেতে আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।’
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস বিন আতিক। বিশ্বের ১২৩টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে তিনি প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। গত বুধবার রাতে বাংলাদেশ সময় ৯টায় প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে বলে বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস বিন আতিকের বাবা হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমান জানিয়েছেন।
ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত ‘মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার’ ছাত্র হাফেজ আনাস বিন আতিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামের হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমানের একমাত্র ছেলে।
হাফেজ আনাসের বাবা হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমান ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে একটি প্রাইভেট মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন। পারিবারিকভাবে ৪ সন্তানের মধ্যে হাফেজ আনাস তার একমাত্র পুত্রসন্তান।
মেধাবী হাফেজ আনাস ইতোপূর্বে আরটিভিতে অনুষ্ঠিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়ও প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ আনাস বিন আতিক প্রথমস্থান অর্জন করার খবরে এলাকাবাসীর মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। হাফেজ আনাসের এ অসাধারণ সাফল্য অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাসের বাবা হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আবেগাপ্লুত কন্ঠে তিনি বলেন, সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত কুরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১২৩টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে আমার ছেলে হাফেজ আনাস প্রথম হওয়ায় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। গতকাল রাতে ফলাফল ঘোষণার পর আমরা খবরটি জানতে পেরেছি। বর্তমানে হাফেজ আনাস তার ওস্থাদদের সঙ্গে সৌদি আরব অবস্থান করছে। আল্লাহর রহমতে শিগগিরই তারা দেশে ফিরবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, আমার ছেলে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে বিশ্ব দরবারে দেশের সুনাম অর্জন করায় আমি আনন্দিত। দেশবাসীর কাছে তিনি তার ছেলের জন্য দোয়া কামনা করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কৃষির উন্নয়েনে ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমার্জেন্সি এসিসটেন্স প্রজেক্টের আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত।
আজ ২২ এপ্রিল সোমবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমার্জেন্সি এসিসটেন্স প্রজেক্ট (ফ্রিপ) এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকায় ফসল উৎপাদনে আগাম ও আকস্মিক বন্যা, সেচের পানির অপ্রতুলতা ইত্যাদি নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার ও এডিবি’র অর্থায়নে ফ্রিপ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিভিন্ন ধরনের সেচ অবকাঠামো নির্মান ও যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে অনবাদী জমি আবাদের আওতায় আনাতে ভূমিকা রাখতে পারবে।
সরাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ একরামুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষক হিসবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি অফিসার (অতিরিক্ত) এবিএম রকিবুল হাসান।