চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম ও মাদকের বিস্তৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জনপ্রতিনিধি ও সদস্যরা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ইউএনও মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর।
শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল বলেন, আমাদের ইউনিয়নের একটি এলাকায় কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ব দিনদিন চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। ওই গ্যাং এর সদস্যরা ওঠতি বয়সের মেয়ে ও স্কুলে যাওয়া আসার সময় নারী শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করছে।
বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা আতঙ্কে আছেন। লোক লজ্জার ভয়ে অনেক অভিভাবক মুখ বুঝে সহ্য করছেন। আর মাদকের বিস্তৃতি বলে শেষ করা যাবে না। প্রতি সভায় মাদক নিয়ে বলছি। কোন ভাবেই প্রতিরোধের পথ পাচ্ছি না।
শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোছাম্মৎ আছমা বেগম উনার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের ইউনিয়নে বর্তমানে মাদক ও জুয়ার বিস্তৃতিটা বেশী।
৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য বলেছেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মাদকের ছড়াছড়ি বেশী।
কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন ডাকাতি ও মাদক প্রতিরোধে সরাইল-নাসিরনগর সড়কের কদমতুলি এলাকায় সওজের জায়গায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদের প্রস্তাব দিয়েছেন।
অরুয়াইলসহ আরো কয়েকটি ইউনিয়নে কিশোর গ্যাং-এর দাপট ও তাদের গডফাদারদের আইনের আওতায় দাবি জানিয়েছেন সরাইল মহিলা কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মাহবুব খান।
তিনি অরুয়াইলের সরকারি ঘাটলা উদ্ধার ও ফসলি জমির মাটি কাটার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করায় উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অনেক এলাকায় মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন জনপ্রতিনিধি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দিয়েছেন- পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আ. স. ম. মো. আতিকুর রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ, চুন্টা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান মো. কাউছার হোসেন, পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সরাইল প্রেসক্লাবের সম্পাদক তৌফিক আহমেদ তফছির, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুর রহমান ও সুকের পরিচালক।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে জমি-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন দুইজন। আজ ৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বিষুতারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন বিষুতারা গ্রামের আজাদ মিয়া (৫৫) ও তার আমানত মিয়া (৬০)। এ ঘটনায় আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভিটিবাড়ি নিয়ে বিষুতারা গ্রামের আজাদ মিয়ার সাথে তার ভাতিজা ইনসান মিয়ার বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে সকালে আজাদ মিয়া তার দোকান খোলার সময় ইনসান মিয়া ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আজাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আজাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর আজাদ মিয়ার পক্ষের লোকজন ইনসান পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় ইনসান পক্ষের সমর্থক আমানতকে বল্লম দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই বহিষ্কার হলেন উপজেলার সূর্যকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ শাহগীর মৃধা।
গত ১৩ জুন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভায় তাকে বহিষ্কার করা হয় এবং ওই দিনই তাকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে বহিষ্কারের বিষয়টি দেয়া হয়।
তার বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের লিখিত বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে শিক্ষা কমিটি তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, মোঃ শাহগীর মৃধা সরাইলের কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। তিনি ২০২২ সনের ৭ ডিসেম্বর ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এদিকে তার বহিষ্কারের বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে ।
সূত্র মতে, মোঃ শাহগীর মৃধার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার পর থেকেই তার মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাবের সৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্যই তা ক্ষতিকারক। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের আদরের ছলে তাদের সাথে অনভিপ্রেত ও কুরুচিপূর্ণ আচরণ করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিভিন্ন পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তার সুপারিশের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভার গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সভাপতি মোঃ শাহগীর মৃধার সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সূর্যকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামিরা ঝর্ণার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সভাপতিকে বহিষ্কারের চিঠি পেয়েছেন বলে জানান। তিনি আরো জানান, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাকি নতুন সভাপতি নিয়োগ করা হবে তা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নৌসাদ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সভাপতি মোঃ শাহগীর মৃধাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৩ জুন থেকেই বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৩ অক্টোবর রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১২টার দিকে ধীতপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের আক্কেল আলীর শিশু পুত্র ইনসাফ আলী (০৪) ও তার আপন ছোট ভাই আশরাফ আলীর শিশু পুত্র সাড়ে তিন বছরের আদিল নামক এই দুই শিশু বাড়ির পাশে খেলা করছিল। খেলার কোন এসময় পরিবারের সদস্যদের অজান্তে শিশুরা বাড়ির নিকট পুকুরের পানিতে তলিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাদের দেখতে না পেয়ে আশ পাশ ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে দুপুর ১টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে তাদের মৃত দেহ ভেসে উঠে।
শাহবাজপুর ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল হুদা চৌধুরী বাদল পানিতে ডুবে শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ জাপান শাখার সভাপতি, মানবিক সরাইল জে.বি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সরাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ) সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় সভা করেন।
২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে উপজেলা প্রেসক্লাবে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলমগীর মিয়ার সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ) বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হলে বেকার সমস্যা সমাধানে বিদেশি সহায়তায় পাঁচটি শিল্প কারখানা স্থাপন করবো। কোনো কারণে আমাকে মনোনয়ন না দেয়া হলে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে কোনো হাইব্রিড প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, অসুস্থ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী, মৌলবাদ আওয়ামী নেতা, নিজ দলে কোন্দল ও বিবাদ সৃষ্টিকারী ব্যক্তিকে যেন নৌকার মনোনয়ন না দেয়া হয়। নেত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে আমি আপনার নৌকার পক্ষ হয়ে ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালীকচ্ছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাহবুবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বিল্লাল মিয়া, মানবিক সরাইল জেবি দপ্তর সম্পাদক নূর নবী, সদস্য তাবারক হোসেন সহ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে প্রয়াত শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ওরফে বাবরু মাষ্টারকে মরণোত্তর সম্মাননা ও ৩০ শিক্ষার্থীকে উপহার দিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘সভ্যতার পথে’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উচালিয়াপাড়া গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার এই সংঘঠনটি গত শনিবার সন্ধ্যায় এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহৎ এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন। সমাজসেবক মো. ফজল মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম মানিক।
ক্বারী মো. জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সমাজসেবক মো. জাকারিয়া, মো. সোনা মিয়া ও মো. আলমগীর মিয়া। সংগঠন সূত্র জানায়, ওই গ্রামের কৃতি সন্তান উচালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক গুণী শিক্ষক প্রয়াত জহিরুল ইসলামকে সম্মানসূচক মরণোত্তন স্মারক প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষায় গ্রামের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে সংগঠনটি ৫ম থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ও মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া গ্রামের ৩০ জন শিক্ষার্থীর হাতে উপহার সামগ্রি তুলে দিয়েছেন। সকল অতিথিকে দেয়া হয়েছে সম্মাননা ক্রেষ্ট।
প্রধান অতিথি বলেন, যে দেশে গুণীর কদর নেই, সেই দেশে গুণী জন্মাতে পারে না। জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়েও বড়। আমাদের সন্তানরাই বড় সম্পদ। এই সম্পদকে কাজে লাগাতে হলে পড়ালেখার কোন বিকল্প নেই। তিনি সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলার কাজে আরো মনযোগি হওয়ার জন্য গ্রামের সকল অভিভাবকদের অনুরোধ জানান। মহৎ ও সময়োপযোগি আয়োজনের জন্য তিনি ‘সভ্যতার পথে’ সংগঠনের সাথে জড়িত সকল যুবককে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সেই সাথে এই ধারা অব্যাহত রাখারও অনুরোধ করেছেন।