সরাইল প্রতিনিধি :
সরাইলে মাকে মারধোর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫জন আহত হয়েছেন। ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বড়ই বাড়ির গ্রামের মুন্সী বাড়ি ও সাদুল্লাহর বাড়ির লোকদের মধ্যে দফায় দফায় এই সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার দুপুরে মুন্সী বাড়ির আলী আকবরের ছেলে সাদ্দাম হোসেন তার মাকে মারধোর করলে সাদ্দামের মামাতো ভাই অলি আহমেদ তাকে বাঁধা দেয়। এতে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় অলির বড় ভাই জালাল আহমেদ এসে ঝগড়া থামাতে দু’জনকে চড়-থাপ্পর দেয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সাদ্দাম হোসেন মামাতো ভাই জালাল আহমেদকে মারার জন্য ওইদিন সন্ধ্যায় লোহার রড নিয়ে রাস্তায় উৎপেতে বসে থাকে। সন্ধ্যায় জালাল আহমেদ রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে সাদ্দাম তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আহত জালাল বর্তমানে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাদ্দাম হোসেন ও জালাল আহমেদের গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, মা-ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্বের ঘটনা নিয়ে প্রথমে মামাতো ভাই ও ফুফাতো ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হলে গ্রাম্য সর্দাররা বিষয়টি উস্কে দেয়। এর জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে এলাকায় অভিযান চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে আজ ৫ নভেম্বর রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু (নৌকা প্রতীক) ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি এই আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (কলার ছড়ি) পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট।
আজ ৫ নভেম্বর রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার ১৩২টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে অপর প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ (লাঙ্গল প্রতীক) পেয়েছেন ৩ হাজার ১৪২ ভোট, জাকের পার্টির প্রার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম জুয়েল (গোলাপ ফুল) পেয়েছেন ৫৬১ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোঃ রাজ্জাক হোসেন (আম প্রতীক) পেয়েছেন ৭৩৯ ভোট।
জেলা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম আনুষ্ঠানিকভাবে কোন ফলাফল ঘোষনা করেননি। উল্লেখ্য ১৯৭৩ সালের পর এই আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
এদিকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর বিজয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন, শাহজাহান আলম সাজুকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করায় আমি সংসদীয় আসনের ভোটারদেরকে ধন্যবাদ জানাই। শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন উপহার দেয়ায় জেলা প্রশাসন, আইন-শৃংখলাবাহিনী সহ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই ও শাহজাহান আলম সাজুকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হিসেবে তাহের উদ্দিন ঠাকুর বিজয়ী হয়েছিলেন। এর পরের নির্বাচনগুলোতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী দিলেও তারা জয়লাভ করতে পারেননি । নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি আওয়ামীলীগ মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার দায়ে এক জনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেন সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা। জরিমানাপ্রাপ্ত আখতার হোসেন উপজেলার কালিকচ্ছ এলাকার ইমাম হোসেনের ছেলে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কয়েকটি চক্র ফসলি জমি খননযন্ত্র দিয়ে পুকুরের মতো কেটে বালু উত্তোলন করছেন। সে সব বালু পাইপসহ ট্রাক্টরের মাধ্যমে নিয়ে পুকুর ও জলাশয় ভরাট করছেন। তারা ফসলি জমিগুলো নষ্ট করে ফেলছে। দুপুরে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিল এলাকায় অভিযানে কালে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার সময় এক জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ মোতাবেক এক জনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় সরাইল থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উপস্হিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রকৌশলী আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ) শিক্ষা বৃত্তি ২০২৩ এর পক্ষ থেকে দরিদ্র, মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে এককালীন শিক্ষা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান আজ ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে সরাইল উপজেলা কালিকচ্ছ ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বিল্লাল এর বাড়ির মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে কালিকচ্ছ (উ:) মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক, সরাইল পাইলট (উ:) বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ আইয়ুব খান এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সরাইল সরকারি কলেজের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল মানবন্ধন পাল।
প্রধান বক্তা ছিলেন গুনারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দেওয়ান রওশনারা লাকী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ)।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: অহিদুজ্জামান লস্কর অপু।
অনুষ্ঠানে ২৯ জন শিক্ষার্থীকের ৩ হাজার টাকা করে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার পলাশের পিতা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরীর ইন্টার্ন কমান্ড কাউন্সিলের প্রধান সংগঠক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কর্মী ও সহচর এবং সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার (ভূমি) ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে মাদকের বিস্তৃতি বৃদ্ধি পাঁচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের এমন বক্তব্য স্বীকার করেছেন ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম। ওসি বলেন পুলিশের একার পক্ষে মাদক প্রতিরোধ অসম্ভব। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অভিভাবক ও সুশিল সমাজসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মাদক প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
আজ ২৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে নবনির্মিত সরাইল উপজেলা কমপ্লেক্সে ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা সভায় ওসি এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর।
বক্তব্যে সরাইল সদরের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, অরূয়াইলের মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, কালীকচ্ছের মো. ছায়েদ হোসেন, শাহবাজপুরের খায়রূল হুদা চৌধুরী বাদল, নোয়াগাঁও-এর মো. মনসুর আহমেদ চুন্টার মো. হুমায়ুন কবিরসহ অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান সম্প্রতি সরাইলে উল্লেখযোগ্য হারে মাদকের বিস্তৃতি নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেন।
সভায় উপস্থিত সুশিল সমাজের লোকজনও মাদক প্রতিরোধে পুলিশের সহায়তা কামনা করেন।
এ ছাড়া অনেকেই সরাইলের কৃষি জমির মাটি বিক্রি ও রাতের অন্ধকারে কেটে জেলা শহরে ও বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় আসে অরুয়াইল সদরে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমি খেকুদের সরকারী জায়গা, সালিসের নামে টুপাইস কামানো, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত নদীর ঘাটলা দখল ও দুই পাড়ে তিতাস নদী দখলের বিষয়টি।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম সম্প্রতি মাদকের বিস্তৃতি বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে? বিদ্যালয়ে না গিয়ে অন্য কোথাও যাচ্ছে কিনা? কি করছে? পড়ালেখা ঠিকঠাক মত করছে কিনা? এসব খোঁজখবর রাখার দায়িত্ব আপনার। এসব না করে মাদক প্রতিরোধ বা আসক্ত ব্যক্তির বিচারের দায়িত্ব শুধু পুলিশের উপর ছেড়ে দিলে চলবে না। কারণ পুলিশের একার পক্ষে মাদক প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। প্রত্যেক ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা আপনার এলাকায় মাদকাসক্ত ব্যবসায়ি, মাটি ও ভূমি খেঁকুদের চিহ্নিত করে গ্রাম আদালতের আওতায় আনুন। সহযোগিতার জন্য আমাদেরকে (পুলিশকে) ডাকুন। আপনাদেরকে এসব কাজে সহযোগিতা করতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মাদকসহ অন্যান্য অনিয়ম দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব না।