অনলাইন ডেস্ক :
দেশের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণায় মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পাবনাতেই হবে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আজ ১১ মার্চ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডাক্তার সাহেবরা প্র্যাকটিস করেন, টাকা কামাই করেন, গবেষণার দিকে বেশি যান না।
ঠিক? কয়েকজন ডাক্তার আছেন, আমি সামনাসামনি জিজ্ঞাসা করছি। এখন গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় গুরুত্ব দিলে দেশের মানুষ আরো সুস্থ হবে, সবল হবে, মেধাবীরা আরো মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। গবেষণা অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিষয়ে যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সব ক্ষেত্রেই যে গবেষণার বিকল্প নেই, সে কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কৃষিতে গবেষণা করে আজকে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বাংলাদেশে এখন আমাদের ফল, ফুল, মূল, এমনকি টিউলিপ, যেটা শীতের দেশ ছাড়া হয় না, সেই টিউলিপও বাংলাদেশে হচ্ছে। স্ট্রবেরিও বাংলাদেশে হচ্ছে। সবই গবেষণার ফসল। গবেষণা আমাদের নতুন দুয়ার খুলে দেয়। আর বাংলাদেশের মাটি হচ্ছে সোনার মাটি, যা লাগানো যায় সেটাই হয়। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
চিকিৎসকদের তিনি বলেন, ‘যাঁরা সরকারি চাকরি করছেন, তাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসটা একটু কমিয়ে দিয়ে গবেষণার দিকে মনোযোগ দেন। যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য যা প্রয়োজন আমরা করব।
গবেষণাটা আমাদের খুব দরকার। বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, এই দুইটার ওপর আমাদের গবেষণায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, আমাদের গবেষণায় আরো বেশি লোক মনোযোগী হবেন। গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা কিভাবে দূর করা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের সরকার সব সময় অত্যন্ত আন্তরিক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে গবেষণার জন্য যে টাকা আমরা অনুদান হিসেবে দিচ্ছি, মনে রাখতে হবে, এই টাকাটা বাংলাদেশের জনগণের টাকা। জনগণের টাকা জনগণের কল্যাণে যেন লাগে। কারণ গবেষণা থেকে যেটা উদ্ভাবন হবে, সেটা কিন্তু জনগণের কাজে লাগবে। সেই কথাটাই মাথায় রাখতে হবে। আমি মনে করি তরুণের যে মেধাশক্তি, সেটা বিকাশের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতায় বাংলাদেশের মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ষোলর নিচে যারা (মেয়ে), তারা তো ভারতকে তিন গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন। তাদেরকে আমি ডাকব এবং তাদের ডেকে প্রাইজমানি দিয়ে উত্সাহিত করব।’
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের যে উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ইতিহাসও অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা।
দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পাবনার রূপপুরে করা হবে উল্লেখ করে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়টির কাজ যাতে শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণে। কিন্তু সেখানের মাটি এত নরম, প্রতিটি দ্বীপে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে এখন যেখানে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছি সেটার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়টাও আমরা এই পাবনাতে, এই রূপপুরেই করতে পারব।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার কাজ যখন শেষ হবে সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন দ্বিতীয়টার কাজ শুরু করতে পারি, এখন থেকে আমাদের সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উেক্ষপণ করেছি এবং স্যাটেলাইট-২ উেক্ষপণেও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।
অনলাইন ডেস্ক :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের প্রত্যেককেই দায়িত্ব নিতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে মূল্যবোধ গড়ে তোলার এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। আজ ১৯ জুলাই শনিবার রাজধানীর পরিবেশ অধিদপ্তরে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার সব ঠিক করে দেবে, এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে পরিবার থেকেই।
শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও অন্যান্য পরিবেশবিষয়ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ প্রতিযোগিতাগুলো শিশুদের মাঝে প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করেছে। অভিভাবকদের সচেতন অংশগ্রহণই এসব আয়োজন সফল করেছে। এই আগ্রহ থেকেই তৈরি হবে পরিবেশ রক্ষার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব। প্রকৃতির সাথে শিশুদের বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। গাছ কাটার পরিণাম কিংবা শব্দ দূষণের প্রভাব সম্পর্কে তাদের সচেতন করতে হবে ছোটবেলা থেকেই। আইন নয়, মূল্যবোধই হবে পরিবেশ রক্ষার ভিত্তি।
তিনি আরো বলেন, পলিথিন ব্যবহার পরিহার, শব্দদূষণ রোধে সচেতনতা, বিদ্যুৎ ও পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার-এসব ছোট ছোট অভ্যাসই পরিবেশ শিক্ষার অংশ। সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও উচ্চ শব্দের মাধ্যমে অন্যকে কষ্ট না দিয়ে পরিবেশবান্ধব আয়োজনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবেশ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের কাজ প্রদর্শনের মাধ্যমে পরিবেশ শিক্ষায় আরো উৎসাহ সৃষ্টি করা সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। আরো বক্তব্য দেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলী।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা পরিবেশবিষয়ক চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, রচনা, প্রকল্প প্রস্তাবনা ও মেলার শ্রেষ্ঠ স্টল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি বলেছে অক্টোবরে নাকি ফাইনাল খেলা হবে। আমরাও ফাইনাল খেলার জন্য বসে আছি। কিন্তু ফাইনাল খেলার আগে বিএনপি দেখতে পাবে তাদের খেলার টিমে ১১ জন নাই। আগামী কয়েক সপ্তাহে দেখতে পাবেন বিএনপির খেলোয়াড়রা টিম ছেড়ে অন্যদলে পালিয়ে গেছেন।
যে পথে তাদের নেতা শমসের মবিন ও তৈমুর আলম খন্দকার গেছেন, সেভাবে আরো অনেকেই পালানোর তালিকায় আছেন।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আজ দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
বিএনপি কয়দিন গণমিছিল, কয়দিন অবস্থান, আবার কয়দিন হাঁটা, কয়দিন দৌড় কর্মসূচি, কয়দিন বসা কর্মসূচি দেয়। এখন বিএনপির বাকি আছে হামাগুড়ি কর্মসূচি দেওয়া। এখন দেখার বিষয় বিএনপি কখন হামাগুড়ি কর্মসূচি দেয়।’
ভিসানীতিতে সরকার বা দল নয়, বিএনপিই চাপে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ওপর বিএনপির কোনো ভরসা নেই, ধীরে ধীরে তাদের সমাবেশ ছোট হয়ে আসছে, এ জন্য ঘনঘন বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র যেই ভিসানীতি ঘোষণা করেছে তাতে বলা হয়েছে- যারা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিপক্ষ হবে তারাই এই ভিসানীতির মধ্যে আসবে। আর বিএনপি এখন নির্বাচনে বাধা দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে। বিএনপি বলছে নির্বাচন প্রতিহত করবে। তাহলে কারা এই ভিসানীতির আওতায় আসবে -প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘ভিসানীতিতে সরকার কিংবা আমাদের দল কোনো চাপ অনুভব করছে না।
আমরা এটিকে স্বাগত জানাই। এটির প্রেক্ষিতে বরং বিএনপির ওপরই চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো লাভ হয় নাই। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বিদেশি বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলেন, এদেশ আমাদের, এদেশে নির্বাচন কিভাবে হবে সেটি আমরা ঠিক করব, নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে। কাউকে আমাদের গণতন্ত্র শেখাতে হবে না। আমরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা জানি। কিভাবে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষা নির্বাচন হয় সেটিও আমরা জানি।’ তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, দেশে অবশ্যই আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এবং সেই নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে আবারো জননেত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকারপ্রধান হিসেবে শপথগ্রহণ করবেন।
যুবলীগকে আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড ও শেখ হাসিনার অগ্রগামী বাহিনী উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি রাঙ্গুনিয়ায় এখন গর্তের মধ্যে ঢুকে আছে। গর্তের ভেতর থেক মাথা তুলে উঁকি দেয়, গর্ত থেকে যাতে বের হতে না পারে সেজন্য যুবলীগকে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। তারা করোনাসহ কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রাঙ্গুনিয়ার কারো পাশে দাঁড়ায়নি। ভোটের সময় ভাঁজওয়ালা পাঞ্জাবি পড়ে মাঠে নামবে শীতের পাখির মতো। গতবার ধানের শীষ বর্গা দিয়েছিল বলে রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মহিলা নেত্রীরা ঝাড়ু মিছিল করেছিল। এবার কাকে দেয়, সেটিই দেখার বিষয়।’
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুচের সঞ্চালনায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল ইসলাম, প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।
চলারপথে রিপোর্ট :
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ার জেরে স্বামীকে বালিশ চাপায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রীর বিরুদ্ধে ধনবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বামী গনেশ চন্দ্র পাল।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের কয়ড়া মধ্যপাড়া গ্রামের স্বর্গীয় মনিন্দ্র চন্দ্র পালের ছেলে গনেশ চন্দ্র পালের সাথে।
অভিযোগকারী স্বামী গনেশ চন্দ্র পাল জানান, আমি বিগত ৯ বছর পূর্বে নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার কামালপুর গ্রামের জিতেন্দ্র পালের মেয়ে সুমা রানী পাল কে বিবাহ করে সংসার করে আসছি।
সংসার জীবনে আমাদের ঘরে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে ভালই চলছিলো আমাদের সংসার। বছর খানেক আগে আমার স্ত্রীর এই পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কটি জানতে পারায় পরকীয়া সম্পর্কে বাঁধা দিলে আমার সাথে রাগারাগি কর সে বাড়ী ছেড়ে সাত দিন অন্যত্র ছিলো।
পরে সে এই সম্পর্ক বাদ দিয়েছে বলে আমার স্ত্রী পারিবারিক সমঝতায় আমার সংসারে ফিরে আসে। আমার স্ত্রী আমার অজান্তে গোপনে এই পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক টি চালিয়ে আসছিলো। হঠাৎ করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার থাকার ঘরে আমাকে ঘুমন্তবস্থায় আমার স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক অসীম চন্দ্র পাল দুই জনে মিলে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন।
আমার গোংরানি’র শব্দে পাশের ঘরে থাকা আমার বড় ভাই ও তার স্ত্রী সহ অন্যরা এসে আমাকে উদ্ধার করে আমার স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক অসীম কে আটক করে। পরে পুলিশ কে খবর দিলে তারা এসে দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়। অসীম আমার শ^শুর বাড়ীর পাশের উপজেলা দূর্গাপুরের রামপুর গ্রামের শ্যামল চন্দ্র পালের ছেলে। আমি আমার স্ত্রী সুমা রানী পাল ও তার পরকীয়া প্রেমিক অসীম চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি এঘটনায় সঠিক বিচার দাবী করছি।
অভিযুক্ত সুমা রানী পাল জানান, আমি বাঁচলেও আমার প্রেমিক অসীমের সাথেই বাঁচব, মরলেও দু’জনে একসাথে মরব। এবলে তিনি আর কোন মন্তব্য করেননি।
থানার ওসি এইচ এম জসিম উদ্দিন জানান, খবর পাওয়া মাত্রই ছেলে মেয়ে দু’জন কে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। অভিযুক্ত সুমা রানী পালের স্বামী গনেশ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে থানায় আজ ৬ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে দু’জনকেই টাঙ্গাইল জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি দফার বিভ্রান্তিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। কখনো ১০ দফা, কখনো ২৭ দফা, কখনো ১ দফা, আবার কখনো ৩১ দফা! বিএনপি কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত এসব দফা জনগণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
আজ ১৩ জুলাই বৃহষ্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্তৃক উত্থাপিত রূপরেখাকে অন্তঃসারশূন্য ও অকার্যকর বলে প্রত্যাখ্যান করে এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বিএনপি কিছু দিন পর পর নতুন নতুন দফা নিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। বিএনপির এই দফা জনগণের চাহিদা বিবেচনা করে নয় বরং ঐতিহ্যগতভাবে তাদের দুর্নীতি, লুটপাটতন্ত্র এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের স্বৈরতান্ত্রিক অপরাজনীতি ফিরিয়ে আনার কূটকৌশল।
তিনি বলেন, তাদের এসব দফা ও রূপরেখায় জনকল্যাণের সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপন্থা নেই। জনগণ তাদেরকে আস্থায় না নিলেও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা মরিয়া হয়ে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আজ যেসব রূপরেখা ও দফা তুলে ধরছে, প্রকৃতপক্ষে তারা তা বিশ্বাস ও ধারণ করে না। কারণ তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এসব নীতির বিরুদ্ধে সব ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র’-কে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে তারা দুর্নীতির বরপুত্র, একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিএনপি জনগণকে সেই ‘হাওয়া ভবন’-এর দুঃশাসনের যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়। আজ তারা দুর্নীতির শে^তপত্র প্রকাশের কথা বলছে! অথচ বিএনপির শাসনামলে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কের কথা জনগণ ভুলে যায়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের তথাকথিত রূপরেখায় ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলেছে! শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির কথা বলেছে! কৃষকের অধিকারের কথা বলেছে! -এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানই এদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর প্রথম আঘাত হেনেছিল এবং বিএনপির এমপি, মন্ত্রী ও ক্যাডারবাহিনী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের উপর পাশবিক ও বর্বর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছিল। তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর বার বার আঘাত হেনেছে বিএনপি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের শাসনামলে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে কিছুই করেনি, বরং তাদের হাত শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত। এমনকী পবিত্র রমজান মাসে বেতন-বোনাসের দাবীতে আন্দোলন করায় ১৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, কানসাটে বিদ্যুতের দাবীতে আন্দোলনরত মানুষকে গুলি করে হত্যা এবং সার ও তেলের দাবীতে আন্দোলন করায় কৃষকের বুকে বুলেট বিদ্ধ করেছিল বিএনপি। তাদের অতীত অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে, জাতির সামনে ক্ষমা প্রার্থনা না করে আজ তারা বিভ্রান্তির রূপরেখা উপস্থাপন করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে! আসলে গণতন্ত্রের মোড়কে তারা তাদের সেই হিং¯্র রাজনীতির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। গণতান্ত্রিক পন্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রধানতম অন্তরায় বিএনপি এবং তার দোসররা।
তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী সকলের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আজকের বাংলাদেশে কৃষক, শ্রমিক, জনতার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। যে কয়বার শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। কৃষি খাতে ব্যাপক প্রণোদনা ও কৃষি গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ক্ষুধা ও চরম দারিদ্র্যের অভিঘাত থেকে মুক্তি পেয়েছে জাতি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটেছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষের মাথা গোঁজার ঠাই এবং অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামীর উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে জনকল্যাণের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির এই ধরনের তথাকথিত রূপরেখা ও আন্দোলনের হুমকি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর দখল মুক্ত হয়েছিল জেলা ।
মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় পিছু হাঁটা পাক হানাদার বাহিনীর শেষ দলটি ৫ ডিসেম্বর বিকেল থেকে গোপনে মেহেরপুর ছাড়তে থাকে। পরের দিন ৬ ডিসেম্বর জেলা হানাদার মুক্ত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট মেহেরপুর সরকারি কলেজ মোড়ে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে পুষ্প্যমাল্য অর্পণ করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম ও মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের পক্ষে ক্যাপ্টেন আব্দুল মালেক পুষ্প্যমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক। অন্যদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন,পুলিশ সুপার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আব্দুল মালেক প্রমুখ।
১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর গাংনী উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হলে শিকারপুরে (ভারত) অবস্থিতমুক্তি বাহিনীর অ্যাকশন ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমা প্রশাসক (এসডিও) তৌফিক ইলাহী চৌধুরী হাটবোয়ালিয়ায় এসে মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি স্থাপন করেন। মিত্রবাহিনীও মুক্তিবাহিনী সম্মিলিতভাবে ৫ ডিসেম্বর মেহেরপুরে প্রবেশ করেন। সীমান্তে পাকবাহিনীর স্থাপন করা অসংখ্য মাইন অপসারণের মধ্য দিয়ে মেহেরপুর হানাদার মুক্ত হয় ৬ডিসেম্বর।
ওই দিন মেহেপুরের জনসাধারণ এবং মুক্তিযোদ্ধারা সর্বস্তরের লোক একযোগে রাস্তায় নেমে আনন্দ-উল্লাস করেন। এর আগে, তৎকালিন সময়ে ছাত্র-জনতা, আনসার-মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা হয়।
মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ পাঠান জানান, ১৮ এপ্রিল দুপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অস্ত্র সজ্জিত হয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে সড়ক পথে মেহেরপুর প্রবেশ করার সময় সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে উপুর্যপুরি হামলা চালায়। এর এক সপ্তাহের মধ্যে মেহেরপুর সরকারি কলেজ, ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিউট ও কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলসহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাক বাহিনী তাঁদের শক্তিশালী দুর্গ গড়ে তোলে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে দিশেহারা পাক সেনারা মেহেরপুর থেকে পালাবার সময় দিনদত্ত ব্রিজ, খলিশাকুন্ডি ও তেরাইল ব্রিজ এবং বৈদ্যুতিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করে।
তিনি জানান, দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৫ ডিসেম্বর রাত থেকেই পাক বাহিনী গোপনে মেহেরপুর ছেড়ে পালাতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করলে অবরুদ্ধ জনতা তাদের সঙ্গে বিজয়ের উল্লাসে যোগ দেয়। এদিন লাল-সবুজের পতাক টাঙ্গিয়ে দেয় স্বাধীনতাকামি জনতা।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সামসুল আলম সোনা জানান, মুক্তিযুদ্ধকালে জেলার ভাটপাড়া থেকে অনতিদূরে সাহারবাটি টেঁপুখালি, হিন্দা, লক্ষ্মী নারায়ণপুর, ধলা,গাড়াবাড়িয়া, জোড়পুকুরিয়া, ভোমরদহ, ধর্মচাকীর বহু মানুষ গনহত্যার শিকার হন। ৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে লাল-সবুজ পতাকায় মুক্ত হয়ে ওঠে মেহেরপুর।