অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে ২৩৫ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৫৮ বল হাতে রেখেই জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
আজ ১৮ মার্চ সোমবার ম্যাচের শুরুতে লঙ্কানদের আড়াইশর আগে আটকে রেখে জয়ের পথটা সহজ করে দিয়েছিলেন বোলাররা। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তানজিদ তামিমের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটাররা সুবিধা করতে পারেননি। তাওহিদ হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা ব্যর্থ হলে ম্যাচে ফেরে শ্রীলঙ্কা। শঙ্কা জেগেছিল জয় নিয়েও। সেই শঙ্কা উড়ে গেছে রিশাদ হোসেনের ঝড়ে। তার ক্যামিওতে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ২৩৫ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০১ রান করেন লিয়ানাগে। বাংলাদেশের হয়ে ৪২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ।
জবাবে খেলতে নেমে ৪০ ওভার ২ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছেন তানজিদ তামিম। তাছাড়া ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রান করেছেন রিশাদ।
স্পোটর্স ডেস্ক :
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠল আফগানিস্তান। শান্ত বাহিনীকে ৮ রানে হারিয়েছে রশিদ-নবিরা। নাটকে ভরা ম্যাচটি। শেষে বাংলাদেশের জন্য জমা হলো হতাশা, যেন বরাবরের মতোই। সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ মেলানোর মতো ব্যাটই করছিল বাংলাদেশ, কিন্তু হুট করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এসে থামিয়ে দিলেন ওই চেষ্টা। পরে ম্যাচই হারতে হলো। এর আগে বোলাররা করেছিলেন দুর্দান্ত।
আজ ২৫ জুন মঙ্গলবার আর্নেস ভ্যাল স্টেডিয়ামে বৃষ্টি আইনে আফগানিস্তানের কাছে ৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে আফগানিস্তান। পরে ওই রান তাড়া করতে নেমে ১০৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে ১২ ওভার ১ বলে জিততে পারলে সেমিফাইনালে যেতো তারা।
কিন্তু জয় তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষায় থাকা আরেক দল অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে সেমিতে চলে গেছে আফগানরা। এবারই প্রথম এমন কীর্তি গড়লো তারা। সেমিফাইনালে ২৭ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। একই দিনে অন্য সেমিতে ভারতের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।
টস হেরে বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ের শুরুটা করেন তানজিম হাসান সাকিব। প্রথম ওভারে ৩ রান দেন তিনি। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন দুই রান। এই দুজনের করা প্রথম চার ওভারে আসে ২১ রান।
পঞ্চম ওভারে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাফল্যও প্রায় এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার করা তৃতীয় বলে ইবরাহিম জাদরানের ক্যাচ ছেড়ে দেন তাওহীদ হৃদয়। শর্ট কাভারে দাঁড়িয়ে থাকা তার কাছে বল গিয়েছিল বেশ দ্রুত। হাতে জমিয়ে রাখতে পারেনননি হৃদয়।
পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ২৭ রান তুলতে পারেন দুই ওপেনার। এরপরও অবশ্য থামেননি তারা। ১০ ওভারে ৫৮ রান তুলে চায়ের বিরতিতে যায় আফগানিস্তান। ফেরার পরই অবশ্য তারা হারিয়ে ফেলে উইকেট। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে এনেই সফল হন শান্ত।
১৮ বলে ২৯ রান করে রিশাদের বলে তানজিম হাসান সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত গেছেন ইবরাহিম জাদরানের। অনেকটুকু দৌড়ে এসে ক্যাচ নেন তানজিম। আগে থেকেই চাপে থাকা আফগানিস্তান খেই হারায় উইকেট হারানোর পর।
ইবরাহিম ফেরার পরের ওভারে এসে মেডেন দেন তাসকিন আহমেদ। রিশাদ নিজের তৃতীয় ওভারে এসে দুটি চার হজম করেন। তবে আরও একবার ম্যাচের মোড় ঘুরে এই লেগ স্পিনারের হাত ধরেই। অবশ্য গুরবাজের সঙ্গে গড়ে উঠা আজমতউল্লাহর জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান।
তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন লিটন দাস। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। ১২ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় আজমতউল্লাহকে। ১৭তম ওভার করতে এসে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ। দুটিতেই ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার।
তার করা অনেক বাইরের বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে পৌঁছাতে পারেননি গুরবাজ। ৫৫ বলে ৪৩ রান করে আউট হন তিনি। তার করা চতুর্থ বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন সৌম্য। এবার ৩ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান গুলবাদিন নাইব।
পরের ওভারে এসে মোহাম্মদ নবীকেও আউট করেন তাসকিন। এই ওভারে টানা পাঁচটি ডট বল করে শেষটিতে ছক্কা হজম করেন তাসকিন। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন এক রান। কিন্তু তানজিম সাকিবের করা শেষ ওভারে ১৫ রান নেন রশিদ খান। ইনিংসের শেষে বৃষ্টি এলেও সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
রান তাড়ায় নেমে সেমিতে উঠার সমীকরণ মেলানোর লড়াইয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আসে ১৩ রান। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে গিয়েই হারিয়ে ফেলে উইকেট। ৩ বলে শূন্য রানে নাভিন উল হকের বলে এলবিডব্লিউ হন তানজিদ হাসান তামিম। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।
পরের ওভারে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে বাংলাদেশ। টানা দুই বলে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। ৫ বলে ৫ রান করে ডিপ মিডউইকেটে মোহাম্মদ নবীর হাতে ক্যাচ দেন শান্ত। নাভিন উল হকের পরের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসান। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও সেটি করতে পারেননি নাভিন।
মাঝে বৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। তবে বাংলাদেশের সেমির সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকে। সৌম্য সরকারের সঙ্গে লিটন দাসের জুটিও লম্বা হতে দেননি রশিদ খান। ১০ বলে ১০ রান করা সৌম্যকে বোল্ড করেন তিনি।
এরপরও উইকেটে এসে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তারও ব্যাটে ঠিকঠাক টাইমিং হচ্ছিল না, তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ৯ বলে ১৪ রান করে হৃদয় আউট রশিদ খানের বলে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়ে।
তার আউটের পরই হুট করে বাংলাদেশের ইনেন্ট বদলে যায়। নূর আহমেদের ১০ম ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পাঁচটি ডট দেন, হাঁকান কেবল একটি বাউন্ডারি! এমনকি তার মধ্যে কতটা চেষ্টা ছিল, প্রশ্ন উঠতে পারে সেটি নিয়েও।
এরপরের ওভারে আসেন রশিদ খান। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনার শেষ তো বটেই, ম্যাচ হারের শঙ্কাও ভর করে এই ওভারে। পঞ্চম বলে রিয়াদের ব্যাট ছুয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ ইশহাকের হাতে যায়। আম্পায়ার আউট দেননি। পরে বদলি ইশহাকের কথায় রিভিউ নিয়ে সফল হয়ে যান রশিদ। পরের বলেই রিশাদ হয়ে যান বোল্ড।
বৃষ্টিতে এক ওভার কমে আস ম্যাচের দৈর্ঘ্য। একপ্রান্তে যখন উইকেট পড়ছে, তখন আরেকদিকে বাংলাদেশের জন্য ভরসা হয়ে থাকেন লিটন। তার দিকে তখন তাকিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়াও। কারণ বাংলাদেশ জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো তাদের।
কিন্তু লিটন আর স্ট্রাইকেই আসতে পারেননি। ১৮তম ওভারে তাসকিনকে বোল্ড করার পরের বলেই এলবিডব্লিউ হন মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো আফগানিস্তানের ডাগ আউট। কারো চোখে দেখা মেলে জলেরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ২০ ওভার ১১৫/৫
বাংলাদেশ : ১৭.৫ ওভার ১০৫
ফল : আফগানিস্তান বৃষ্টি আইনে ৮ রানে জয়ী ।
অনলাইন ডেস্ক :
ডাকেটের ইতিহাস গড়া ব্যাটিংয়ে রেকর্ড রান তুলল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৩৫২ রানের বিশাল লক্ষ্য। শুরুতেই তাদের ব্যাটিং লাইনে আঘাত করে সহজ জয়ের আশাও হয়তো করেছিল ইংলিশরা। কিন্তু সময় গড়াতেই ধীরে ধীরে ম্যাচ হাত ফসকে বেরিয়ে যেতে থাকে। তাদের ওপর চড়াও হন জশ ইংলিস। তাতে প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান করেও হারতে হলো ইংল্যান্ডকে। ১৫ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের রেকর্ড গড়া জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। ৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ট্র্যাভিস হেড (৬) ও স্টিভ স্মিথের (৫) উইকেট তুলে নেয় ইংল্যান্ড। অজি শিবিরে শুরুতেই আঘাত হানেন জোফরা আর্চার ও মার্ক উড। তবে ম্যাথু শর্ট ও মার্নাস লাবুশেনের জুটি স্বস্তিতে ফেরায় অজিদের। দুইজনে মিলে গড়েন ৯৫ রানের জুটি। লাবুশেন ৪৫ বলে ৪৭ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হন। হাফ সেঞ্চুরি করা শর্টও তাকে অনুসরণ করে মাঠ ছাড়েন। ৬৬ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে ৬৩ রান করে লিভিংস্টোনের শিকার হন এই ওপেনার।
দলীয় ১৩৬ রানে চার উইকেট পড়লে কিছুক্ষণের জন্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ১১৬ বলে ১৪৬ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে পথে ফেরান অ্যালেক্স ক্যারি ও ইংলিস। ৩৮তম ওভারে রশিদের বলে আর্চারের হাত ফসকে জীবন পেয়ে ক্যারি দুটি রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান।
ব্রাইডন কার্স ১৪৬ রানের এই জুটি ভাঙলে ইংল্যান্ড ভেবেছিল তারা ম্যাচে ফিরেছে। কিন্তু ক্যারি ৬৩ বলে ৬৯ রানে পেসার ব্রাইডন কার্সকে উইকেট দিলেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ইংলিস। ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বলে আর্চারকে ছক্কা মেরে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন ইংলিস। অন্য প্রান্ত থেকে সময় সুযোগ বুঝে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের ব্যবধান কমাতে থাকেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও।
৪৭তম ওভারে লিভিংস্টোন ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ নিলেও আর্চারের বল কোমরের ওপরে থাকায় নো বল হয়। ফ্রি হিট থেকে ছক্কা মারেন এই অজি ব্যাটার। ৪৭.৩ ওভারে ছক্কা মেরে দলকে জয়ের বন্দরে নেন ইংলিস। ৮৬ বলে ৮ চার ও ৬ ছয়ে ১২০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৩৬ বলে ৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩২ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। তার ১৫ বলের ক্যামিওতে ছিল চারটি চার ও দুটি ছয়।
রেকর্ড রান করেন ডাকেট
এর আগে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। বেন ডারশুইসের আঘাতে সাজঘরে ফেরেন ফিল সল্ট (১০) ও জেমি স্মিথ (১৫)। ৪৩ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা দ্রুত সামলে নেয় ইংলিশরা।
তৃতীয় উইকেটে ১৫৮ রানের জুটি গড়েন জো রুট ও ডাকেট। ৭৮ বলে চার চারে ৬৮ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন রুট। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকলেও ডাকেটের ব্যাটে শক্ত ভিত গড়ে ইংল্যান্ড। ৯৫ বলে ১১ চার ও ১ ছয়ে শতক হাঁকান এই ওপেনার।
ডেথ ওভারে সেভাবে রান তুলতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ ১০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান যোগ করে তারা। ১৩৪ বলে ১৫০ রান করেন ডাকেট। তাকে ফেরান মার্নাস লাবুশেন। ১৪৩ বল খেলে ১৭ চার ও ৩ ছয়ে ১৬৫ রান করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অভিষেক রাঙান ডাকেট। তৃতীয় সেঞ্চুরির ইনিংসকে ক্যারিয়ার সেরা বানিয়েছেন ডাকেট, আগের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল ১০৭ রান। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এটা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসও।
শেষ দিকে ১০ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দলীয় স্কোর সাড়ে তিনশ পার করেন আর্চার। তার সঙ্গে ১ রানে অপরাজিত ছিলেন আদিল রশিদ। সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন ডারশুইস। দুইটি করে উইকেট নেন জাম্পা ও লাবুশেন।
অনলাইন ডেস্ক :
স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে উড়িয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করলো বার্সেলোনা। রুদ্ধশ্বাস ও তুমুল উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ৫-২ গোলের ম্যাচে স্প্যানিশ সুপার কাপের রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৫তম শিরোপা জিতল কাতালানরা।
১২ জানুয়ারি রবিবার দিবাগত রাতে জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে মহিমান্বিত রাত উদযাপন করেছে হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা। একইসাথে কার্লো আনচেলত্তির রিয়ালকে ভুলে যাওয়ার মতো এক রাত উপহার দিয়েছে।
গত আসরের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বার্সেলোনা।
গোলের শুরুটা করেছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। গোলের শেষটাও করে তারা। তবে মাঝে পাঁচ গোল হজম করতে হয় আনচেলত্তি দলের। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে নিজেদের প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল পেয়ে যায় রিয়াল। মাজমাঠ থেকে ভিনিসিউসের পাস থেকে একক নৈপুণ্যে গোল করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।
এরপর বার্সা শো শুরু হয়। প্রথম হাফেই চার গোল দিয়ে রিয়ালকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলে তারা। শুরুটা করেন ইয়ামাল। লেভানডোভস্কির থ্রু বল পেয়ে দারুণ করে বার্সাকে সমতায় ফেরান এই স্প্যানিশ তারকা। ৩৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে বার্সাকে লিড এনে দেন লেভানডোভস্কি।
তার তিন মিনিট পরই রাফিনিয়া তৃতীয় গোল করলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রিয়াল। ডান দিক থেকে জুলস কুন্দের ক্রসে বক্সে চমৎকার হেডে বল জালে পাঠান রাফিনিয়া। এরপর প্রথমার্ধের ৯ মিনিট যোগ করা সময়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে গোল করেন বালদে।
৪৮তম মিনিটে আবারও রিয়ালের জালে বল পাঠায় বার্সা। কাসাদোর পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন রাফিনিয়া। ৫৬তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে এমবাপ্পেকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন শেজনি। ঐ ফ্রি কিক থেকে গোল করে রিয়ালকে দ্বিতীয় গোলে স্বাদ দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো।
এরপর আর গোলের দেখা পায়নি বার্সেলোনা। তবে গোলের দেখা পায়নি তারা কিছুতেই। শেষ বাঁশি বাজতেই উল্লাসে মেতে ওঠে বার্সেলোনা। নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা দুইটি ক্লাসিকোয় অন্তত ৪ গোল করে করল বার্সেলোনা। ১৯৬৩ সালে রিয়ালের পর প্রথমবার এমন কিছু দেখা গেল ক্লাসিকোয়।
অনলাইন ডেস্ক :
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) শাস্তির মুখে পড়েছেন ভারতের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্ত। ভারত-ইংল্যান্ডের মধ্যকার চলমান হেডিংলি টেস্টের তৃতীয় দিনে এই ঘটনা ঘটেছে। ম্যাচ শেষে আইসিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পন্ত ‘লেভেল ওয়ান’ পর্যায়ের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। ঘটনাটি ঘটে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৬১তম ওভারের পর।
আম্পায়াররা বলের আকৃতি পরীক্ষার জন্য ‘গেজ’ ব্যবহার করে বলের আকার যাচাই করছিলেন। পরে তারা বল পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই বলে সিদ্ধান্ত নেন। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে পন্ত বল মাটিতে ছুড়ে দেন—যা সরাসরি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অসন্তোষ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
আইসিসির আচরণবিধির ২.৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ওই অনুচ্ছেদ ভাঙার দায়ে তারা পন্তের শৃঙ্খলা রেকর্ডে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে। গত দুই বছরে পন্তের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা।
হেডিংলি টেস্টের ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় পন্তকে আলাদা শুনানির মুখে পড়তে হয়নি। মাঠের আম্পায়ার পল রেইফেল ও ক্রিস গ্যাফানে, তৃতীয় আম্পায়ার বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা ইবন শহীদ এবং চতুর্থ আম্পায়ার মাইক বার্নস—সবাই এই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, আইসিসির ‘লেভেল ওয়ান’ পর্যায়ের অপরাধে সর্বনিম্ন শাস্তি হলো তিরস্কার। সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা ও দুই ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়ার সুযোগ থাকে।
পন্ত এই টেস্টে ভারতের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন। এর মাধ্যমে উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের পর ইতিহাসে তিনিই টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির বিরল কীর্তি গড়েছেন।
এদিকে হেডিংলি টেস্টে আজ পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা। গতকাল দিন শেষে বিনা উইকেটে ২১ রান সংগ্রহ করেছে ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য শেষ দিনে স্বাগতিকদের প্রয়োজন আরো ৩৫০ রান।
অনলাইন ডেস্ক :
টানা দুই ম্যাচ হারের পর টানা দুটি জিতে ফাইনালের টিকিট কেটেছিল রংপুর রাইডার্স। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য সৌম্য-রিশাদদের জাতীয় দলে ডাক পড়ায় বিপাকে পড়েছিল রংপুর। ফাইনালে অংশগ্রহণ করা নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। সেই অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠে ফাইনালেও বাজিমাত করেছে বিপিএলের এই ফ্রাঞ্চাইজি। আজ ৭ ডিসেম্বর শনিবার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার দল ভিক্টোরিয়াকে ৫৬ রানে হারিয়ে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন হল রংপুর রাইডার্স।
রংপুরের জয়ের নায়ক সৌম্য সরকার। তার বিধ্বংসী এক ইনিংসে ভর করেই ৩ উইকেটে ১৭৮ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করায় রংপুর। ওই রান তাড়া করতে নেমে ১২২ রানে অলআউট হয় ভিক্টোরিয়া। ২০১৭ সালে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আবার শিরোপার স্বাদ পেল বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ম্যাচসেরার পাশাপাশি মোট ১৮৮ রান করে টুর্নামেন্টসেরাও হয়েছেন সৌম্য।
প্রথম গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম শিরোপা জয়ের গৌরবের পাশাপাশি রংপুরের অর্থযোগও কম নয়। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ৫ লাখ ডলার প্রাইজমানি পেয়েছে তারা। প্রাথমিক পর্বের দুটি জয়ের জন্য আরও ৫০ হাজার ডলার তো আছেই।
গায়ানা ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের আয়োজনে প্রথমবারের মতো আয়োজিত গ্লোবাল সুপার লিগে অংশই নেয়ার কথা ছিল না রংপুরের। বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে ফরচুন বরিশালকে টুর্নামেন্টের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল গায়ানা। তবে বরিশাল সদিচ্ছা না দেখানোয় রংপুর রাইডার্স সুযোগ পায় টুর্নামেন্টটিতে। আর সেই সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে রংপুর। বিশ্বের পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের পাঁচ দলকে নিয়ে আয়োজিত টুর্নামেন্টের প্রথম শিরোপা জিতে নিয়েছে দলটি।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক সোহান। সৌম্য ৫৪ বলে ৭ চার আর ৫ ছক্কায় খেলেন হার না মানা ৮৬ রানের ইনিংস। আরেক ওপেনার স্টিভেন টেইলর ৪৯ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় করেন ৬৮ রান। সাইফ হাসান আউট হন ৪ বলে ৬ করে, ২ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল হাসান সোহান। ভিক্টোরিরার তিন বোলার নেন একটি করে উইকেট।
জবাবে শেখ মেহেদি-রিশাদ হোসেনদের তোপে দাঁড়াতেই পারেনি ভিক্টোরিয়া। ওপেনার জো ক্লার্কের ২২ বলে ৪০ ছাড়া বলার মতো স্কোর করতে পারেননি আর কেউ। বাকি ব্যাটাররা কেউ বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি। রংপুর রাইডার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন হারমীত সিং। শেখ মেহেদী এবং সাইফ হাসান শিকার করেন দুটি করে উইকেট। এ ছাড়াও কামরুল হাসান এবং রিশাদ হোসেন নেন এক উইকেট।
দিন শেষে হেসেছেন সৌম্যই। তাঁর ইনিংসই গড়ে দিয়েছে রংপুরের জয়ের ভিত্তি। যে জয় রংপুরকে এনে দিয়েছে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরের ট্রফি আর রংপুরের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ট্রফি। এর আগে ২০১৭ সালে বিপিএল (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রংপুর।
৫ দলের গ্লোবাল সুপার লিগে লিগ পর্বে চার ম্যাচের প্রথম দুটিতেই হেরেছিল রংপুর রাইডার্স। নুরুল হাসানের নেতৃত্বাধীন দলটিকে ভিক্টোরিয়াও হারিয়ে দিয়েছিল ১০ রানে। তবে শেষ দুই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স ও পাকিস্তানের লাহোর কালান্দার্সকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে শেষ পর্যন্ত ট্রফিতেই হাত রেখেছে রংপুর। ম্যাচসেরার পাশাপাশি মোট ১৮৮ রান করে সৌম্য হয়েছেন টুর্ণামেন্টসেরাও।