চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ছদ্মবেশে এক জীবন মিয়া (৫০) নামে এক ডাকাতকে ধরে কাঁধে করে তুলে নিয়ে আসেন পুলিশ। পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ডাকাত জীবন পুলিশকে কামরালেও হাল ছাড়েনি পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের একটি জমি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জীবন মিয়া হরিপুর গ্রামের হুরন আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা আছে। সম্প্রতি সে মাধবপুর-হরিপুর সড়কে ডাকাতি করতে শুরু করে।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জীবনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে পুলিশ। ডাকাত জীবনকে গ্রেপ্তারের দায়িত্বে থাকা নাসিরনগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস.আই) রুপন নাথ আরো একজন কর্মকর্তা ও তিন পুলিশ কনস্টেবলকে নিয়ে হরিপুরে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন জীবন তার সঙ্গীদের দিয়ে একটি জমিতে বসে ইয়াবা সেবন করছিলো। তখন পুলিশ সদস্যরা সেখানে সাদা পোশাকে অবস্থান নেয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে জীবন ও তার সঙ্গীদের কাছে ইফতার করার জন্য পানি চায়। তখন এক পর্যায়ে জীবনকে আটক করে পড়ানো হয় হাতকড়া।
এ সময় জীবন মিয়া পুলিশ কনস্টেবল রানার হাতে কামড় দিয়ে ও ধস্তাধস্তি করে হাতকড়া নিয়েই দৌঁড়ে পালায়। পুলিশ সদস্যও ছুটে গিয়ে আবার তাকে আটক করে।
এক পর্যায়ে এএসআই মোঃ কামরুল হাতে কাঁধে তুলে নেন। কিছুদূর আনার পর তাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কড়া পুলিশ পাহারায় থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে এস.আই রূপন নাথ জানান, পাঁচজন মিলে এ অভিযান চালানো হয়। জীবন খুবই ধুর্ত। সে পালানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে বাধ্য হয়ে কাঁধে তুলে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় রানা নামে পুলিশ কনস্টেবল আহত হওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহাগ রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জীবন ডাকাত খুবই ধুর্ত প্রকৃতির। তাকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিলো না। গোপন সংবাদে এ অভিযান চালানো হয়। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড এর ৩৯ তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৬ মার্চ বুধবার সমিতির প্রশিক্ষণ মিলনায়তনে ইউসিসি‘র অন্তবর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সহকারী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা কমল চন্দ্র বনিকের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ফারজানা খন্দাকার, ইউসিসি‘র চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার রায়।
সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, ইউসিসির সাবেক সহ-সভাপতি নবী নেওয়াজ ভূঁইয়া, ইউসিসির সহ-সভাপতি সাংবাদিক আকতার হোসেন ভূঁইয়া, সমবায়ী হুমায়ুন করীর ভূঁইয়া, অরুণ জ্যোতি ভট্রাচার্য প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া।
সভায় আয়-ব্যয় ও প্রতিবেদন পাঠ করেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্ত মো: তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া।
সভায় উপজেলার বিভিন্ন সমিতির সভাপতি/ম্যানেজারগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ গেছে চাচাত ভাই-বোনের। গতকাল রবিবার দুপুরে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শংকরাদহ গ্রামে নিহতদের নিজ বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো-হরিপুর ইউনিয়নের শংকরাদহ গ্রামের দুবাই প্রবাসী আক্তার শাহের মেয়ে রউজা (৬), প্রবাসী শাহানুর শাহের ছেলে সামি (৫)। তারা দুজন চাচাত ভাই-বোন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রবিবার দুপুরে নিজ বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে গোসল করতে যায় রউজা ও সামি। গোসলের একপর্যায়ে পানিতে ডুবে যায় ওই দুই শিশু। পুকুরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তাদের পরিবারের লোকজন। পরে পুকুরে নেমে খোঁজ করলে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।
বিকেলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতদের চাচা মামুন শাহ বলেন, রবিবার দুপুরে তারা দুজন পুকুরে গোসল করতে যায়। এ সময় একজন তাদের ধমকও দেয় যে তোমরা এখানে গোসল করতে আসছ কেন? কিন্তু তারা ঐসময় বলে যে তারা তাদের মাকে বলে আসছে। পরে তারা পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়।
এ বিষয়ে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার শেষ হলো সপ্তাহব্যাপী বইমেলার সমাপনী, বিকালে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উৎসকৃষ্ট বই মানুষকে দেয় অনাবিল আনন্দ। আর এই বইয়ের যোগান দেয় বইমেলা। তাইতো পছন্দের বই কিনতে বইপ্রেমীরা মুখিয়ে থাকেন অমর একুশে বইমেলার দিকে। কিন্তু সেই বইমেলা যদি বাসার পাশেই হয় তবে তো কথাই নেই। গ্রন্থের সাহচর্যেই মানুষ অগ্রসর হয়ে চলে সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্রম-অগ্রযাত্রার পথে। এর ধারা অব্যাহত রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন আয়োজন করে ৭দিন ব্যাপী প্রাণের বইমেলা। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বইমেলা মঞ্চে প্রতিদিন আলোচনা সভা,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে,কবিতা আবৃত্তি,সাধারণ জ্ঞান,কুইজ প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রায় এক যুগ পর অনুষ্ঠিত বইমেলায় উচ্ছ্বাস দেখা গেছে অনেকের মাঝেই। প্রতিদিনই পাঠকের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল বইমেলা প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছেলেমেয়েরাও মেলায় বই কিনতে আসে।মেলায় শিশুদের উপযোগী বইও এনেছেন বিক্রেতারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়ার সভাপতিত্বে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রাফিউদ্দিন আহমেদ। গত ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এ বইমেলায় দেশের প্রখ্যাত লেখকদের বই দিয়ে সাজানো ছিল ২০টি বইয়ের স্টল। মেলায় সকাল থেকে শতশত বইপ্রেমী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বইপ্রেমীরা এসে পছন্দের বই কিনে ঘরে ফিরেছেন। সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত চলে বইমেলা। বইমেলায় বিক্রি সন্তোষজনক ছিল বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তবে গত সাতদিনে ২০টি স্টলে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার বই বিক্রি হয়েছে। শেষদিন ছিল ক্রেতাদের অনেক সমাগম। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিবলী চৌধুরী বলেন বই কিনতে আগে ঢাকায় যেতে হতো। ঢাকা যাওয়া কষ্টকর। এখানে ঘরের পাশেই পছন্দের বই পাওয়া যাচ্ছে আমাদের প্রাণে বইমেলায়। তাই দীর্ঘ একযুগ পর নাসিরনগরে বইমেলার আয়োজন করায় নবাগত উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর রহিম বলেন,বই হচ্ছে প্রাণের খোরাক। আমার মনে হয় প্রতিটি মানুষের মাসে অন্তত ১টি বই কেনা উচিত এবং সেটা পড়া উচিত। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়াকে আমার বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অভিনন্দন এমন চমৎকার বইমেলার আয়োজন করার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়া বলেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ তৈরী ও অভ্যাস গড়ে তোলার জন্যই বইমেলার আয়োজন করা। কিন্তু এত মানুষের ভালবাসা ও আগ্রহ বইমেলার প্রতি এটা আমার ধারণা ছিল না। সবাই পছন্দের বই কিনছে এটা দেখে আমি খুবই আনন্দিত। ভবিষ্যতেও আমরা এই বইমেলা অব্যাহত রাখবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হাওড় এলাকায় দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে কিছু গাছের চারা রোপণেরও। ছোট্ট এ উদ্যোগে যেন বড় প্রশান্তির খবর কৃষকদের জন্য। তপ্ত রোদে ধান কাটতে এসে আপাতত টিউবয়েলের পানিতে তারা তৃষ্ণা মিটাতে পারছে। তারা আশায় আছে কাঠফাঁটা রোদে বৃক্ষের ছায়াতলে জিরিয়ে নিয়ে কাজ করতে পারার সময়টুকুর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের পতইর গ্রামের পূর্বপাড়া ছাত্র ও যুব সমাজের কয়েকজন হাওড়ে টিউবয়েল বসানোর উদ্যোগ নেন। এ কাজে এগিয়ে আসেন কয়েকজন প্রবাসী। তাদের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পতই এলাকার হাওড়ে দুটি টিউবয়েল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে ধান কাটতে আসা কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা ওই টিউবয়েল থেকে পানি নিতে শুরু করে। অনেকে ওই টিউবয়েলের কাছে বসে খাবারও খায়।
এক কৃষক বলেন, ‘এখন অনেক রোদ। গরমও বেশি। ধান কাটতে এসে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গে যেটুকু পানি থাকে তাতেও হয় না। যে কারণে এখানে টিউবয়েল বসানোয় আমাদের অনেক উপকার হলো। আমরা অনেক খুশি হয়েছি টিউবয়েলটি বসানোয়।’
ওই এলাকার বাসিন্দা ও উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত একজন বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচজন মিলে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা মাথায় আনি।
ছাত্র ও যুবসমাজের পাশাপাশি প্রবাসীরা এগিয়ে এলে কাজটি সহজ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। আরো একাধিক টিউবয়েল বসানো হবে। এ ছাড়া হাওড় এলাকার কৃষকের বিশ্রামের জন্য কিছু গাছের চারা লাগানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২০ জুন মঙ্গলবার বিকেলে বিপুল সংখ্যক পূণ্যার্থীদের অংশগ্রহনে পাগল শংকর মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হয়। এ সময় বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পন্ডিত বাড়ি ও বলভদ্র ব্রিজ হয়ে মন্দিরে এসে শেষ হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্দিরের সভাপতি অসিম কুমার পালের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন, থানার (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহুল রায় প্রমুখ।
মন্দিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী এই রথযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দরা মনের বাসনা পূরণের আশায় এই রথযাত্রাটিতে অংশগ্রহণ করেন। রথযাত্রাটি পরিচালনা করেন মন্দিরের প্রধান অধ্যক্ষ সুখদা বলরাম দাস।