চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে মেঘনা নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজের এক দিন পর মাদরাসার ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ ২৭ মার্চ বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার পানিশ্বর ইউপির দেওবাড়ীয়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মো. শওকত মিয়া হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পুরাসুন্দা এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে। শওকত মিয়া পানিশ্বর ইউপির দেওবাড়ীয়া গাউছিয়া সুন্নিয়া হাফিজীয়া মাদরাসার ছাত্র ছিলো। সরাইল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসার কয়েকজন ছাত্রসহ শওকত মেঘনা নদীতে গোসল করতে যায়। গোসল করার সময় এক পর্যায়ে শওকত পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। পরে মঙ্গলবার স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। পরে বুধবার সকালে ডুবুরিরা পানিশ্বর ইউপির দেওবাড়ীয়া এলাকার মেঘনা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আজ ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে “ক্ষুদে ডাক্তার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রম” পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রামার মোঃ নজরুল ইসলাম।
এর আগে একই দিন সকালে উক্ত কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর প্রধান ডাক্তার মোঃ নোমান মিয়া।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নাজবাহুল ইসলাম, সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আনোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলী ও শিক্ষার্থীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় ছিনতাইকারী চক্রের হামলায় আহত অটোরিক্সশা চালক আব্বাস আলী (৫২) মারা গেছে। ঘটনার দুইদিন পর গত সোমবার দিবাগত গভীররাতে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
আব্বাস আলী সরাইল সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, অটোরিক্সা চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতো আব্বাস আলী। গত শনিবার রাতে সরাইল থেকে যাত্রী নিয়ে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকায়। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের ওই নির্জন স্থানে যাওয়ার পর যাত্রীবেশের একদল ছিনতাইকারী আব্বাস আলীর উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আব্বাস আলীকে কৌশলে অজ্ঞান করে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। আর তার অটোরিক্সাটি নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। সড়কে যাতায়তকারী কালিকচ্ছ এলাকার কয়েকজন লোক আব্বাস আলীকে উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকরা তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেফার করেন। সেখানে দুইদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে গত সোমবার গভীর রাতে মৃত্যুবরণ করেন আব্বাস আলী। ছিনতাই হওয়া রিকশা উদ্ধার হয়নি। গ্রেফতার হয়নি কোন ছিনতাকারীও।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোরিক্সা চালক আব্বাস আলী মারা গেছেন। ময়না তদন্তের পক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল প্রায় চারশত বছরের প্রাচীন আরিফাইল শাহী জামে মসজিদ। এটি মুঘল আমলের অপরূপ স্থাপত্য শৈলীর সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রাচীন স্থাপত্যকলা ও অপূর্ব নির্মাণশৈলীর মসজিদটি দেখতে অনেকটা তাজমহলের মতো।
এলাকায় জনশ্রæতি আছে ১৬৬২ সালে দরবেশ শাহ আরিফ সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের আরিফাইল গ্রামে অপরূপ স্থাপত্যশৈলী ও কারুকার্য সমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি নির্মান করেন। তার নামানুসারেই এই মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে আরিফাইল মসজিদ। এর গম্বুজ ও নান্দনিক কারুকার্য মুঘল আমলের উৎকর্ষতার পরিচয় বহন করে। বর্তমানে মসজিদটি পুরাকীর্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে প্রতœতত্ত¡ বিভাগ। মসজিদের পাশেই রয়েছে জোড়া কবর যা আরিফাইল মাজার নামে পরচিত।
প্রাচীন এই মসজিদটিকে গায়েবি মসজিদ হিসেবে আখ্যায়িত করে বর্তমানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা তাদের মনোবাসনা পূরন করার জন্যে এই মসজিদে এসে নামাজ পড়েন।
সরাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরেই আরিফাইল গ্রামে। আরিফাইল গ্রামে রয়েছে বিশাল বড় এক দিঘী। সাগরদিঘী হিসেবে পরিচিত এই দিঘীটির দক্ষিন পাড়েই অবস্থিত প্রাচীন এই আরিফাইল মসজিদটি। আরিফাইল মসজিদের দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট ও প্রস্থ ৩০ ফুট।
এর চার কোনায় চারটি বুরুজ ও মোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলো মসজিদের ভেতরের অংশকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছে। সেগুলোতে সাজানো হয়েছে পদ্মফুলের ছবিতে। এর দেয়ালের পুরুত্ব ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। চুন, সুরকি ও ইটের গাঁথুনি। মসজিদটির মূল গেইট থেকে শুরু করে মসজিদের ভেতরের বিভিন্ন অংশে চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৎকালীন জেলা প্রশাসক রেজুয়ানুর রহমান মসজিদটির সৌন্দর্য্যবর্ধনের কাজ করেন। মসজিদটি সংরক্ষনের জন্য পূর্বের কাঠামো ঠিক রেখে মসজিদটিতে টাইলস এবং চুনকাম করা হয়েছে। মসজিদটিতে প্রবেশ ও বের হতে একাধিক পথ রয়েছে। প্রাচীন এই মসজিদটির সঠিক ইতিহাস স্থানীয়দের জানা না থাকলেও এলাকাবাসীর কাছে এটি গায়েবি মসজিদ হিসেবে পরিচিত। তাই সওয়াব লাভের আশায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মুসল্লী এসে মসজিদটিতে নামাজ পরেন।
মোহাম্মদ আলী নামে স্থানীয় এক মুসল্লী বলেন, এই মসজিদটি কে সবাই গায়েবি মসজিদ হিসেবেই চিনে। এখানে মানুষ কিছু মানত করলে সেই মানত পূরণ হয়।
ইফতেফার হোসেন নামে স্থানীয় আরেক মুসল্লী বলেন, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের কাছ থেকে মসজিদের বিষয়ে শুনেছি। তারাও বলতে পারেননি এই মসজিদটি কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে এটি আমাদের এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেন। আবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখানে আসেন মানত করতে। এখানে যদি কেউ মানত করেন সেই মানত আল্লাহতায়ালা পূরন করেন।
আমরা মসজিদের বাইরে যেন মানুষ নামাজ পড়তে পারেন সেজন্য খোলা জায়গাতে একটি ছাউনী করে দেয়ার জন্য দাবি জানাই।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল শুক্কুর বলেন, আমার বয়স এখন ৮৮। আমার দাদা বেঁচেছিলেন ১০৪ বছর। তিনিও মসজিদের সঠিক ইতিহাস বলতে পারে নি।
এদিকে মসজিদটির পাশেই জোড়া কবর রয়েছে। স্থানীয়দের ধারনা দরবেশ শাহ আরিফ এবং তার স্ত্রী এই জোড়া কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন।জোড়া কবর বর্তমানে আরিফাইল মাজার নামে পরচিত। এ ব্যাপারে আরিফাইল মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা আবদুল মজিদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এটি একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। এই মসজিদে প্রতিদিন শত শত মানুষ নামাজ আদায় করেন। জুম্মারদিন এই মসজিদে মুসল্লীদের স্থান সংকুলান হয়না। মানুষ কষ্ট করে বাইরে দাড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। তিনি মুসল্লীরা যাতে মসজিদের খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করতে পারেন সেজন্য খোলা জায়গাতে একটি ছাউনী করে দেয়ার জন্য দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, মসজিদটি এখন প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের অধীনে। মসজিদটির পাশে জোড়া কবর রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষ এসে এখানে মানত করেন। টাকা পয়সা দান করেন। প্রতিমাসে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হয়। এই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা রেখে মসজিদটির উন্নয়ন কর্মকান্ড তরান্বিত করার আহবান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, আমি মসজিদটি দেখতে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে মাজারে টাকা তোলার বিষয়টি আমরা জানা ছিল না। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে মাজারের আয়ের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছোটখাটো বিষয়ে প্রায় সময়ই ঝগড়া করেন বাবা-মা। ছয় বছরে শিশু সিয়াম তাদের কাছে আকুতি-মিনতি করেও ঝগড়া থামাতে পারে না। অবশেষে এ অভিযোগ দিতে থানায় হাজির হয় শিশু সিয়াম।
সিয়ামের চোখের সামনেই মাদকাসক্ত বাবা প্রায়ই তার মাকে মারধর করতেন। বিষয়গুলো সহ্য করতে না পেরে সে থানায় গিয়ে অভিযোগ দেয় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে। পরে পুলিশ তাকে চেয়ারে বসিয়ে অভিযোগ শোনে। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে তার বাড়িতে যায়। ডেকে আনা হয় সিয়ামের বাবাকে। তাৎক্ষণিকভাবেই মা-বাবাকে তারা আর কখনও ঝগড়া না করার অঙ্গীকার করান। এতে খুশি সিয়াম পুলিশকে হাসিমুখে বিদায় দেয়।
ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায়।
শিশু সিয়াম প্রাতবাজার নামক এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে।
২৮ এপ্রিল রবিবার বেলা ২টার দিকে সরাইল থানায় উপস্থিত হয় সিয়াম। থানায় বসেই তার কথা শোনেন ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম। শিশু সিয়ার তার বাবা-মায়ের প্রতি অভিযোগ দেওয়ার পাশাপাশি এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করে। বিষয়টি সমাধানে উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাইফুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। ডেকে পাঠান তার বাবাকে। একই সঙ্গে বাড়িতে থাকা তার মাকেও থাকতে বলেন। পরে সিয়ামের উপস্থিতিতে মা-বাবাকে আর ঝগড়া না করার অঙ্গীকার করানো হয়।
ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, দুপুরে হঠাৎ করেই শিশুটি এসে থানায় হাজির হয়। সে তার বাবা মায়ের প্রতি বিরক্ত প্রকাশ করে ও নানা অভিযোগ করে। তার কথা শুনে পুলিশ পাঠিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। সিয়ামের বাবা মা জানিয়েছেন, তার আর কখনও ঝগড়া করবেন না। এতে তাদের সন্তানও বেশ খুশি হয়।