অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দুজন পুলিশের করা গুলিতে এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। নিহত ওই তরুণের নাম উইন রোজারিও (১৯)। তার পরিবার দশ বছর আগে বাংলাদেশ ছেড়ে যায়। নিহত ওই তরুণ মানসিক রোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ২৭ মার্চ বুধবার বিকেলের দিকে কুইন্সে তার নিজের বাড়িতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯ বছর বয়সী এক তরুণকে নিউইয়র্কে বুধবার তার কুইন্সের বাড়িতে পুলিশ গুলি করে। এতে তিনি নিহত হন। নিহত ওই তরুণ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। গুলিতে নিহত হওয়ার আগে সাহায্যের জন্য ৯১১ নম্বরে ফোন করেছিলেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন, উইন রোজারিও নামের ওই তরুণ কাঁচি দিয়ে পুলিশ অফিসারদের দিয়ে তেড়ে যান। এরপর একপর্যায়ে কর্মকর্তারা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, কিন্তু নিহত তরুণের ভাই এই গুলি চালানোর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং তিনি ঘটনার পুলিশি বিবরণের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, তার মা ছেলেকে আটকাচ্ছিলেন এবং তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, পুলিশ অফিসারদের তাদের বন্দুক থেকে গুলি করার দরকার ছিল না।
এদিকে পুলিশ গুলি চালানোর পরপরই উইন রোজারিওকে মৃত ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওজোন পার্কের ১০৩তম স্ট্রিটে তার পরিবারের দ্বিতীয় তলার অ্যাপার্টমেন্টে এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ ডিপার্টমেন্টের টহল প্রধান জন চেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ওই পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ কর্মকর্তাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে সে ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি।
অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েল বর্বরতার সব জঘন্য রেকর্ড ভেঙেছে। প্রায় ৯ মাস ধরে অনবরত ফিলিস্তিনের গাজায় তারা বোমা ফেলছে। এরই মধ্যে নারী, শিশুসহ ৩৭ হাজার ৬০০ জনের বেশি বাসিন্দাকে হত্যা করেছে তারা। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ক্ষুধা-অনাহারে ধুঁকছে অধিকাংশ বসতি।
এবার নৃশংসতার আরেক অধ্যায় দেখিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। ফিলিস্তিনি এক নারীর ওপর লেলিয়ে দিয়েছে প্রশিক্ষিত কুকুর। এই হিংস্র জানোয়ারের হামলায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন ৬৬ বছর বয়সী ওই নারী। এমন একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিজ অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত হুসাম জুমলত। খবর আল-জাজিরার।
কুকুরের কামড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়ার এই বাসিন্দা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। সে সময় ইসরায়েলি সেনা সদস্যরা আসেন এবং তাঁর ওপর কুকুর লেলিয়ে দেন। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্নস্থানে ক্ষত তৈরি হয়েছে। এতেই ক্ষান্ত থাকেনি সেনারা। তারাও হামলায় চালিয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ থেঁতলে দিয়েছে তারা।
এদিকে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইসরায়েলের চাপিয়ে দেওয়া দুর্ভিক্ষে গাজায় আরও চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে।বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হুসাইন বলেন, গাজার অধিবাসীদের রক্ষায় বিশ্বকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে ২৩ লক্ষাধিক বাসিন্দা অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
তিনি ২০১১ সালে সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষের উদাহরণ টেনে বলেন, সে সময় দেশটিতে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যার অর্ধেকই মারা যায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণার দেওয়ার আগেই। মঙ্গলবার হুসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় যে শুধু খাবারের সংকট, তা নয়। এখানে পরিষ্কার পানি, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা এবং ওষুধেরও চরম সংকট রয়েছে।
তবে গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ এড়ানো গেছে। সেখানে বাইরে থেকে ত্রাণ সহায়তা ঢুকতে পারছে। এ ছাড়া বাণিজ্যিক সরবরাহও প্রবেশ করতে পারছে। অপরদিকে দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের হামলা অব্যাহত থাকায় সেখানে কোনো প্রকার সহায়তা বা ত্রাণ ঢুকতে পারছে না। এমনকি মিসর থেকে প্রবেশের প্রধান পথ রাফা ক্রসিংও বন্ধ আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে এক সড়ক দুর্ঘটনায় জুনায়েদ মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। ৬ আগস্ট রবিবার দুপুরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। আজ ৭ আগস্ট সোমবার সকালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের মামা শামীম সরকার।
নিহত জুনায়েদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে। তার বাবার নাম হামিদুল ইসলাম।
নিহতের স্বজনরা জানান, বছর খানিক আগে জীবিকার তাগিদে জুনায়েদ পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে তিনি বলদিয়া কোম্পানির গাড়ির হেলপার ছিলেন। রবিবার দুপুরে দাম্মাম শহরে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি সড়কের পাশে ছিটকে পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চালক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। জুনায়েদের মরদেহ দাম্মাম শহরের একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। জুনায়েদের আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের বিষয়টি জানায়নি। খোঁজ নিয়ে প্রবাসীর মরদেহ দেশে আনতে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা করব।
অনলাইন ডেস্ক :
রাশিয়ার সাথে যুদ্ধরত ইউক্রেনে সব ধরনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আবাসিক বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর আপ্যায়ন ছাড়াই বেরিয়ে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা আমাদের সাহায্য বিরতি দিচ্ছি এবং পর্যালোচনা করছি যাতে এই সাহায্য (সংঘাতের) সমাধানে অবদান রাখতে পারে।”
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র।
পৃথক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডার পর ইউক্রেনে সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে সোমবার হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) স্পষ্ট করেছেন যে- তিনি শান্তির দিকে মনোনিবেশ করেছেন। আমাদের অংশীদারদেরও সেই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। আমরা আমাদের সহায়তাকে থামিয়ে দিচ্ছি এবং পর্যালোচনা করছি যাতে এটি (সংঘাতের) সমাধানে অবদান রাখে।”
এদিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অফিস তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, আল-জাজিরা, সিএনএন
অনলাইন ডেস্ক :
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি প্রচেষ্টায় সহায়তার জন্য আগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউজে অভিষেক হতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এ নিয়ে শীঘ্রই ওয়াশিংটনে সফরের পরিকল্পনা করেছেন নেতানিয়াহু। গতকাল ১৫ জানুয়ারি বুধবার রাতে এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
১৫ জানুয়ারি বুধবার এ খবর দিয়েছে জেরুসালেম পোস্ট।
আরও পড়ুন
টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হলো এমা রেনল্ডস
নেতানিয়াহু বলেন, ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি বহু জিম্মি এবং তাদের পরিবারের কষ্টের অবসানে সহায়তা করেছেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার মন্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ‘গাজা কখনো সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় হবে না’ বক্তব্যের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং গাজায় আটক সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। পরে নেতানিয়াহু বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি বাইডেনকে বন্দি চুক্তি এগিয়ে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ এবং তার সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকে মাস্ক, বেজোস ও জাকারবার্গ উপস্থিত থাকবেন
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি-জিম্মি মুক্তির চুক্তি মেনে নিয়েছে ইসরাইল। চুক্তিটি আগামী রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
এই চুক্তির অধীনে, ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা দীর্ঘ সময় ধরে চলমান সংঘাতের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানল শুক্রবারও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। তবে অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা দাবানল ছড়িয়ে পড়ার গতিও কিছুটা কমাতে পেরেছেন। দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে ১০ জনে পৌঁছেছে। এতে অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া পুড়ে গেছে অন্য ভবন ও স্থাপনাও।
দাবানল কীভাবে হলিউডকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে?
লস অ্যাঞ্জেলেস হলো হলিউডের প্রাণকেন্দ্র। যেটি আমেরিকার প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। সেখানে ভয়াবহ দাবানলের আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলসের বিশাল অংশ। বৃহস্পতিবার সেখানে পাচটি সক্রিয় দাবানলে পুড়ছিল সবকিছু। এরমধ্যে ইটন নামে একটি দাবানল গতকাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। এ দাবানলটি ১৭ হাজার ৬০০ একর জায়গাজুড়ে ছড়িয়েছিল। শক্তিশালী বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির চাপ কম থাকায় আগুনের তীব্রতা শুধু বাড়ছিল। দাবানলে পুড়ে গেছে হলিউড হিলসও।
সানসেট নামের দাবানলে জ্বলছে হলিউড হিলস। যেখানে বিখ্যাত হলিউড সাইনবোর্ডটি অবস্থিত। স্থানীয় সময় বুধবার সেখানকার সাধারণ মানুষকে সরে যেতে বলা হয়। এরপরই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। ভয়াবহ এ আগুনে হলিউডের বেশ কয়েকজন তারকার বাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া হার্স্ট এবং লিডিয়া নামের দুটি ছোট আকৃতির দাবানলও লস অ্যাঞ্জেলসে জ্বলছে।
দাবানলে পুড়ে গেছে যেসব তারকার ঘরবাড়ি
বিলি ক্রিস্টাল
৭৬ বছর বয়সী বিলি ক্রিস্টাল একজন আমেরিকান কৌতুক অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি একজন স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান এবং তিনি মঞ্চ নাটকের জন্য বেশি পরিচিত। সানসেট নামের দাবানলে ১৯৭৯ সালে নির্মাণ করা তার প্যাসিফিক প্যালিসেডস নামের বাড়িটি পুড়ে যায়। বিলি ক্রিস্টাল এবং তার স্ত্রী জেনিস বুধবার (৮ জানুয়ারি) একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, তাদের ৪৫ বছরের পুরোনো বাড়ি প্যাসিফিক প্যালিসেডস অঞ্চলে পুড়ে গেছে। বিলি ক্রিস্টাল এবং তার স্ত্রী জেনিস বুধবার বিবৃতিতে জানান, তাদের ৪৫ বছরের পুরোনো বাড়ি প্যাসিফিক প্যালিসেডস অঞ্চলে পুড়ে গেছে। বিবৃতিতে তারা লিখেছেন, ‘জেনিস এবং আমি ১৯৭৯ সাল থেকে আমাদের বাড়িতে বাস করছি। আমরা এখানে আমাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের বড় করেছি। আমাদের বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চি ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল, সুন্দর স্মৃতি যা কখনো চলে যাবে না। আদের অবশ্যই হৃদয় ভেঙ্গেছে। কিন্তু আমাদের সন্তান ও বন্ধুদের ভালোবাসায় আমরা এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব।’
মেল গিবসন
মেল গিবসন আমেরিকান বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি নিউজ নেশনকে জানিয়েছেন, টেক্সাসের অস্টিনে শ্যুটিং করার সময় তার বাড়িটি দাবানলে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, এটা আবেগের বিষয়। বাড়িটিতে আমি দীর্ঘদিন ধরে বাস করছি। সেখানে আমার সব জিনিসপত্র ছিল। সেগুলো সব পুড়ে গেছে। তবে কিছু নথিপত্র সিন্ডারে রাখা আছে সেগুলোর জন্য কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।
জেফ ব্রিজস
প্রবীণ অভিনেতা জেফ ব্রিজসের মুখপাত্র দ্য হলিউড পত্রিকাকে জানান, মালিবুতে জেফ ব্রিজসের বাড়ি আগুনে পুুড়ে গেছে।
প্যারিস হিলটন
জনপ্রিয় টিভিব্যক্তিত্ব প্যারিস হিলটনের বাড়ি দাবানলে পুড়ে গেছে। মালিবুতে তার বাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত। খবরে সরাসরি সম্প্রচার দেখে জেনেছেন সে কথা। ঝলকের কিছু অংশ ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘এই অভিজ্ঞতা যেন আর কারও না হয়।’ তিনি আরও জানান, এই বাড়িতে অনেক মূল্যবান স্মৃতি ছিল তার। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করেছে সব। তার পরিবারের সদস্য ও পোষ্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েই কাঁদলেন প্যারিস হিলটন। প্রিয় বাড়িটি যে এভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে, স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি প্যারিস হিলটন। সেই বিধ্বংসী পরিস্থিতির ভিডিও শেয়ার করেছেন এ হলিউড অভিনেত্রী। দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি লিখলেন, ‘আমি এখন সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যেটা আমার স্বপ্নের বাড়িছিল। কতটা কষ্ট হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। প্রথম যখন খবরটা পেলাম, আমি কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারিনি প্রথমে। তবে এখন এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নিজে যা প্রত্যক্ষ করছি, আমার মন ভেঙে খান খান হয়ে গেল।’
নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে প্যারিস হিলটন বলেন, ‘এটা শুধু আমার বাসস্থান ছিল না। এই সেই বাড়ি যেখানে আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখেছি, হেসেছি-কেঁদেছি, পুরো পরিবারকে নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তৈরি করেছি। যে বাড়ির প্রতিটা কোণায় কোণায় ভালোবাসার চিহ্ন রয়েছে। সেই বাড়ি এভাবে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেল। আমি বাকরুদ্ধ।’
ক্যারি এলওয়েস
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ‘দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড’ ছবির অভিনেতা ক্যারি এলওয়েসেও। তার বাড়িও পুড়ে ছাই। কোনোমতে প্রাণে বেঁচে রয়েছেন পরিবারের অন্যরা। গত রোববার রাতেই ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ সিনেমার জন্য গোল্ডেন গ্লোবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন অ্যাড্রিয়েন ব্রডি। মার্কিন গণমাধ্যম টিএমজেড জানিয়েছে, দাবানলে অস্কারজয়ী এই অভিনেতার বাড়িও পুড়ে গেছে।
কেট বেকিনসল
অনেক দিন ধরেই প্যাসিফিক প্যালিসেডসের বাসিন্দা ব্রিটিশ অভিনেত্রী কেট বেকিনসল। প্যাসিফিক প্যালিসেডসের ধ্বংসযজ্ঞের ছবি ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ও আমার মেয়ের শৈশবের বেশির ভাগ সময় এখানেই কেটেছে। এক নিমেষেই আমাদের শৈশব হারিয়ে গেল। আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’
জেমি লি কার্টিস
অস্কার, এমি ও গোল্ডেন গ্লোবজয়ী অভিনেত্রী জেমি লি কার্টিস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, তার পরিবার নিরাপদ, কিন্তু তাদের বাড়ি রক্ষা পায়নি। তিনি উদ্ধারকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ম্যান্ডি মুর
সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী ম্যান্ডি মুর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, আগুন থেকে বাচতে তিনি তার সন্তান ও পোষা প্রাণীদের নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের আলতাদেনার বাসিন্দা মুর আরও লিখেছেন, দাবানলে তার বসবাসের এলাকাটি ধ্বংস হয়ে গেছে। দাবানল ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন তিনি।
মিলো ভেন্টিমিগ্লিয়া
আরেকজন তারকা মিলো ভেন্টিমিগ্লিয়া সিবিএস নিউজকে জানান, তিনি এবং তার গর্ভবতী স্ত্রী জারাহ মারিয়ানো তাদের মালিবু বাড়ি হারিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনি বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন সেখানে এক ধরনের বিষণ্ন মুহূর্ত রয়েছে। এটি বাস্তবে ঘটেছে। আমরা হার মেনে নিয়েছি।’
দাবানলে উদ্বিগ্ন প্রিয়াঙ্কা
লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ভারতীয় এই অভিনেত্রী কর্মসূত্রে কয়েক বছর ধরে হলিউডের বাসিন্দা। প্রিয়াঙ্কা ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘এই দাবানল রুখতে যারা প্রথম থেকে লড়াই করছেন, তাদের কুর্নিশ। রাত জেগে যারা কাজ করে চলেছেন ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিবারকে অনবরত সাহায্য করে চলেছেন তাদের ধন্যবাদ।’
পুরস্কার অনুষ্ঠান পেছাল
হলিউডে এখন পুরস্কারের মৌসুম। গত রোববার রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। আগামী দুই মাসে অস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশ কয়েক পুরস্কার অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু দাবানলের কারণে এসব অনুষ্ঠান নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দাবানালের কারণে অস্কার মনোনয়ন ঘোষণা পেছনে হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে ভোটদানের সময়ও। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি অস্কারের চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটা দুই দিন পিছিয়ে মনোনয়ন ঘোষণার তারিখ ১৯ জানুয়ারি করা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নের জন্য ভোটদান, যা ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন একাডেমির ভোটাররা।
পিছিয়েছে ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ডও। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অঙ্গনের এক বছরের সেরা কাজের পুরস্কার দেওয়া হয় এই আয়োজনে। আগামী রোববার এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এখন তা পিছিয়ে ২৬ জানুয়ারি করা হয়েছে।
প্রিমিয়ার, শুটিং বাতিল
ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দাবানলের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেসে পূর্বনির্ধারিত বেশ কয়েকটি সিনেমার প্রিমিয়ার স্থগিত করা হয়েছে। এসব সিনেমার মধ্যে আছে ‘আনস্টপেবল’, ‘উলফম্যান’, ‘বেটার ম্যান, ‘দ্য পিট’, ‘দ্য লাস্ট শোগার্ল’ ইত্যাদি।
এ ছাড়া মার্কিন গণমাধ্যম ডেডলাইন প্রযোজনা সংস্থাগুলোর বরাতে জানিয়েছে, দাবানলের কারণে বেশ কয়েকটি সিনেমা ও সিরিজের শুটিং বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া সিনেমা, সিরিজের মধ্যে আছে ‘হ্যাকস’, ‘টেড’, ‘সুইটস: এলএ’, ‘হ্যাপি প্লেস’, ‘ফলআউট ২’, ‘আফটার মিডনাইট’ ইত্যাদি।