চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছে। নিহত যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাঁটিহাতা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সারোয়া উরপে লাল খাঁ (২৫)।
এ ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টায় সরাইল উপজেলার সদরের বড্ডাপাড়া কুমার বাড়ি সংলগ্ন সড়কে।
এসময় ঘটনাস্থলে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত জসিম মিয়া (৩৭) নামে একজনকে ছুরিসহ হাতেনাতে এলাকার জনতা আটক করে সরাইল থানা পুলিশের হাতে তোলে দেন। একজন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আটক জসিম’কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাৎক্ষনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা আলামিন (৩৫) কে সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লাল খা হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার জসিম মিয়া (৩৭) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানাধীন নরসিংসার এলাকার নুর মিয়া’র ছেলে, সে উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা (হাফিজটুলা) এলাকায় শ্বশুর মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে বসবাস করত এবং অপর আসামি আলামিন (৩৫) বিজয়নগর থানাধীন সেজামুড়া এলাকার মৃত সফিক মিয়া’র ছেলে, তবে বর্তমানে সরাইল বড্ডাপাড়া গ্রামে মৃত হাফিজ মিয়া’র বাড়িতে ভাড়া’য় থাকে আলামিন।
নিহত লাল খা’র বুকের উপরে, নীচে এবং বামহাত মিলিয়ে মোট ৩টি ছুরিকাঘাত করে। লাল খা’র চিৎকারে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে আসেন এবং দ্রুত তাকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিক্ষা–নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: এমরানুল ইসলাম জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডে আটক জসিম ও আল আমিনকে আসামি করে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে অবৈধ গরুর হাট বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে ওই অবৈধ হাটে গরু, ছাগল, মহিষও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। আজ ১০ জুন সোমবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল-নাসিরনগর লাখাই আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশ দখল করে বসেছে এ গরুর হাট।
সড়কের উপর অস্থায়ী বাঁশ, খুঁটি বসিয়ে গরু ও ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে। কালিকচ্ছ বাজারে কুরবানির পশুর হাটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোন অনুমোদন।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর, ধরন্তি থেকে আগত গরু বিক্রেতা কালাম ও সেলিমসহ একাধিক বিক্রেতা জানান, এলাকার নিকটবর্তী হওয়ায় তারা এ বাজারে গরু বিক্রি করতে আসছেন। তবে আরও কয়েকজন বলেন, বাজারটি ইজারা আছে। মজিদ নামে এক লোক চার লাখ টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে ডেকে এনেছেন।
এ বিষয়ে কালিকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ বলেন, বাজারটি অনুমোদন নেই। গ্রামের লোকরা এমনিতে গরু নিয়ে বসে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া বলেন, বাজার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আর রাস্তার উপরে হাট বসানোর সুযোগ নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার গতকাল রবিবার সরাইল উপজেলার প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার সহ শিক্ষক মন্ডলী তাঁকে স্বাগত জানান।
এ সময় শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কট সহ শিক্ষকদের স্টাফ বাথরুম নির্মাণের অপরিহার্যতা ও জাতির পিতার মুর্যাল স্থাপন সহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তাঁকে অবহিত করেন যে, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৭শত শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১৭টি সহকারী শিক্ষকের পদ থাকা সত্তেও, মাত্র ৭জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জেলার প্রাচীনতম বিদ্যালয়টির এই দূর্দশা শুনে জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘‘শিক্ষা খাতকে’’ সর্বাধিক গুরুত্ব ও বাজেট বরাদ্দ দিয়ে আসছেন। তাই উপজেলা সদরের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠের এই সঙ্কট থাকার কথা নয়। তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কট দূরীকরণ সহ অন্যান্য সমস্যা দূরীকরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্টাফদের বাথরুম নির্মাণ ও জাতির পিতার মুর্যাল স্থাপনে শীঘ্রই জেলাপরিষদ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আশ^্যস্থ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় ছিনতাইকারী চক্রের হামলায় আহত অটোরিক্সশা চালক আব্বাস আলী (৫২) মারা গেছে। ঘটনার দুইদিন পর গত সোমবার দিবাগত গভীররাতে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
আব্বাস আলী সরাইল সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, অটোরিক্সা চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতো আব্বাস আলী। গত শনিবার রাতে সরাইল থেকে যাত্রী নিয়ে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ এলাকায়। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের ওই নির্জন স্থানে যাওয়ার পর যাত্রীবেশের একদল ছিনতাইকারী আব্বাস আলীর উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আব্বাস আলীকে কৌশলে অজ্ঞান করে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। আর তার অটোরিক্সাটি নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। সড়কে যাতায়তকারী কালিকচ্ছ এলাকার কয়েকজন লোক আব্বাস আলীকে উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকরা তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেফার করেন। সেখানে দুইদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে গত সোমবার গভীর রাতে মৃত্যুবরণ করেন আব্বাস আলী। ছিনতাই হওয়া রিকশা উদ্ধার হয়নি। গ্রেফতার হয়নি কোন ছিনতাকারীও।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোরিক্সা চালক আব্বাস আলী মারা গেছেন। ময়না তদন্তের পক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের ব্যবস্থাপনায় ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)’র আওতায় আজ ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পাকশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে নারী সমাবেশের অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে নারী সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সায়মা শাবরীন, প্রধান শিক্ষক পাকশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রেভা দাস, সমাজ কর্মী মোঃ শিব্বির আহমেদ শাওন এবং সমাজ কর্মী হাজী আইয়ুব আলী। শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড আখ্যা দিয়ে প্রধান অতিথি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুর রহমান বলেন, দারিদ্র পীড়িত আমাদের দেশে শতকারা ৯৭% শিশু প্রতি বছর শিক্ষা অর্জনের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হচ্ছে যা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন।
তিনি আরো বলেন শুধু শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে নিজেকে সীমাবদ্ব রাখলে চলবে না তারা যাতে যথার্থ বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে দেশের কাজে এগিয়ে আসতে পারে তার জন্য শিক্ষকদের পাশাপাশি মায়েদের অনস্বীকার্য ভুমিকা পালন করতে হবে। মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন বর্তমান যুগ মোবাইলের যুগ, মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে বাচ্চাদের ব্যাপক শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। তাই আমাদের সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে মোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে।
তিনি আরো বলেন অশিক্ষাই সকল অজ্ঞতার মূল। আমরা বর্তমান সমাজে যে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা দেখতে পায় যেমন বাল্য বিবাহ, মাদক আসক্ত, চুরি, ডাকাত, ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি তার মুলে আছে প্রকৃত নৈতিকতা সর্ম্পূন শিক্ষার অভাব। যদি আমরা এসব সামাজিক সমস্যার মূলোৎপাটন করতে চায়, একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করতে চাই তাহলে নৈতিকতা সর্ম্পূণ শিক্ষার কোন বিকল্প নাই।
উক্ত নারী সমাবেশে বাল্য বিবাহ ও মাদক আসক্তকে একটি সামাজিক সমস্যা হিসাবে আখ্যা দিয়ে অন্যান বক্তারা বলেন, বাল্য বিবাহ ও মাদক আসক্ত আমাদের জন্য একটি ভয়াভহ সমস্যা। এ সমস্যা দূর করার জন্য একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একটি বাল্য বিবাহ শুধু একটি মেয়ের জীবন ধ্বংস করেন তা নয় বরং দুটি পরিবারই শেষ হয়ে যায়, ঠিক তেমনি মাদক আসক্ত ব্যক্তি পুরো সমাজের জন্য হুমকি স্বরুপ।
জেলা তথ্য অফিসার দীপক চন্দ্র দাসের সমাপনী বক্তৃতার মাধ্যমে নারী সমাবেশ সমাপ্তি হয়। উক্ত নারী সমাবেশে প্রায় চার শতাধিক নারী উপস্থিত ছিল।