চলারপথে রিপোর্ট :
নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানামুখী উদ্যোগের ফলে দেশে নারীশক্তি ক্রমান্বয়ে বিকশিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ৩০ মার্চ শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আইসিটি ডিভিশন কর্তৃক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও নবীনগর উপজেলার ১৬০ জন নারী উদ্যোক্তার প্রশিক্ষণ শেষে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়। গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, সনাতন ধর্মীয় মতে নারী হচ্ছে আদ্যশক্তি। ইসলাম ধর্মীয় মতেও সমাজে নারীর গুরুত্ব পুরুষের চেয়ে কম নয়। যে কোনো জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য নারী পুরুষ উভয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তিনি বলেন, কিন্তু বিভিন্ন কারণে এদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীশক্তির পূর্ণবিকাশ ও উন্মোচন এখনো হয়নি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে নারীর অপরিমেয় শক্তির বিকাশ হতে শুরু করেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তাদের ভূমিকা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে নারীর ক্ষমতায়নে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর পদাতিক ডিভিশন, বিমান বাহিনী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদসমূহ এমনকি বিচারপতি হিসেবেও নারীদের নিয়োগ ও পদায়ন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে নারীরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায?িত্ব পালন করছেন। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর ভূমিকা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নারীরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে এবং নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। এ সেক্টরে আরও বিস্তর সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার এ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এর অংশ হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে দেশের ৪৪টি জেলার ১৩০টি উপজেলায় নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও নবীনগর উপজেলায় ১৮০ জন নারী উদ্যোক্তাকে ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ করা এসব নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রকল্পের আওতায় মন্ত্রী বিনামূল্যে একটি করে ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম শান্তনু চৌধুরী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম শেখ। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী সদর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পর্যালোচনা সভা ও মাসিক সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে মন্ত্রী সার্কিট হাউজে ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির পক্ষ থেকে জেলার নয়টি উপজেলার অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্রদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের কাছে ৯ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
এদিন বিকালে তিনি ৮ কোটি ৫০ লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের ছয় তলা একাডেমিক ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরে মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকনের পক্ষে জেলার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে ৫০০ অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্রের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা এবং পিপি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ইফতার মাহফিলের আয়োজন না করে ইফতার মাহফিলের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করে এসব ঈদ সামগ্রী ক্রয় করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আজ ১৫ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের এ তারিখ ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরের পাঁচ বছর। সেই হিসাবে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি।
এ ছাড়া জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। আর ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে। বাড়বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্য সংখ্যাও। এবার ভোটের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র অনলাইনেও দাখিল করতে পারবেন। এজন্য অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম তৈরি করেছে ইসি। এ ছাড়া ভোটের তথ্য দিতে তৈরি করা হয়েছে স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি নামে একটি অ্যাপ, যা ইতোমধ্যে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।
এ অ্যাপের মাধ্যমে একজন ভোটার ঘরে বসে তার ভোটার নম্বর জানতে পারবেন। পাশাপাশি তার ভোটার এলাকা বা নির্বাচনী আসন, ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারবেন এবং ভোটকেন্দ্রের ছবি, ভোটকেন্দ্রের ভৌগোলিক অবস্থান (ম্যাপসহ) দেখতে পাবেন।
এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে বিভাগওয়ারি বিভিন্ন আসনের তথ্য, যেমন- মোট ভোটার, মোট আসন, আসনের প্রার্থী, প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য (হলফনামা, আয়কর সম্পর্কিত তথ্য, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী) জানতে পারবেন। অ্যাপটির মাধ্যমে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের তথ্য জানা যাবে এবং সমসাময়িক তথ্যাবলি ‘নোটিশ’ আকারে প্রদর্শিত হবে।
প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য থাকায় একদিকে তিনি যেমন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভোটারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন, অন্যদিকে ভোটাররাও তথ্য বিশ্লেষণ করে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।
প্রার্থী হতে করণীয়
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীকে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পদাধিকারীর সইযুক্ত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইযুক্ত তালিকা। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী আগের কোনো সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে তাকে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা জমা দিতে হবে না।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জামানত হিসেবে জমা দিতে ২০ হাজার টাকা এবং ছবিছাড়া ভোটার তালিকা সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) কিনতে হবে ৫০০ টাকায়। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা জমা দিতে হবে, যেখানে থাকবে আটটি সুনির্দিষ্ট তথ্য। এ ছাড়া আয়ের উৎস, দায়-দেনা, সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি তার অনুলিপি ইসিকেও দিতে হবে।
নির্বাচনের প্রার্থীর ব্যয়সীমা হলো ২৫ লাখ টাকা। প্রার্থী বা তার এজেন্টকে একটি তফসিলি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ ব্যয় করতে হবে।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। ইসি আয়োজিত সর্বশেষ সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ১৮টি দল। তাদের অনেকেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেই মনে করছেন অনেকে।
আগের ১১ সংসদ নির্বাচন
প্রথম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৭ মার্চ। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৬ সালের ২ মার্চ। ভোটগ্রহণ হয়েছিল একই বছরের ৭ মে।
চতুর্থ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ। পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সপ্তম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ওই বছর ১২ জুন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ২০০১ সালের ১৯ আগস্ট। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১ অক্টোবর।
নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয় ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৩০ ডিসেম্বর।
অনলাইন ডেস্ক :
মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি স্টেশন এবং বিজয় সরণি স্টেশন আগামী ১৩ ডিসেম্বর খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
আজ ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক এ তথ্য জানান। তিনি জানান, আগামী ৩ মাসের মধ্যে মেট্রোরেলের সবগুলো স্টেশন চালু করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ ডিসেম্বর বিজয় সরণি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন চালু হবে। বাকি দুই স্টেশনও কর্মপরিকল্পনার ভেতরেই চালু করা হবে।
শিডিউলে পরিবর্তন আসবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত সময়সূচি আগের মতোই থাকবে। তবে সফটওয়ারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। অর্থাৎ, সবগুলো স্টেশন চালু হলে সময়সূচিতে পরিবর্তন আসবে।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ১৩ ডিসেম্বর দু’টি স্টেশন চালুর পর মেট্রোরেলের মোট ১৭টি স্টেশন চালু হয়ে যাবে। তখন চালু হওয়ার বাকি থাকবে কারওয়ান বাজার, শাহবাগ স্টেশন। তবে আমরা রাতদিন কাজ করছি। আমাদের টার্গেট জানুয়ারির মধ্যে বাকি দুই স্টেশন চালু করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত শাহবাগ ও কারওয়ান বাজার স্টেশনের কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় চালু করা হচ্ছে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটের বিভিন্ন অংশে গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলপথের বিভিন্ন অংশে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন চালাতে লোকো মাস্টারদের এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মালবাহী ট্রেন সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে কর্তব্যরত সহকারী স্টেশন মাস্টার শাকির জাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে ৭২ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কা থাকায় গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল করে। গত ১১ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন এ নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
চলারপথে ডেস্ক :
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন সাবেক বিএনপি নেতা ও মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে ব্যারিস্টার অন্তরা সেলিমা হুদা। বাবার মৃত্যুতে তার প্রতিষ্ঠিত দলটির চেয়ারম্যানের শূন্য আসনে বসতে যাচ্ছেন অন্তরা।
নাজমুল হুদার প্রেস সচিব তারেক হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মৃত্যুবরণ করেন। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মারা যাওয়ায় তার পদটি শূন্য হয়ে আছে। এমতাবস্থায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক ৯০ দিনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শূন্য পদটি পূরণ করার বিধান রয়েছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ২২ মার্চ এক জরুরি সভা ও আজ ৫ মে শুক্রবার সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদটি পূরণ করা হয়। আগামীকাল (শনিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে দেশবাসীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম প্রকাশ করা হবে।
দলীয় সূত্র বলছে, বৈঠকে সবাই চেয়েছিল নাজমুল হুদার স্ত্রী সিগমা হুদা দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হোন। কিন্তু সিগমা হুদা চান, মেয়ে বাবার প্রতিষ্ঠিত দলের চেয়ারম্যান হোক।
তৃণমূল বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর ১২টায় সাইনপুকুর, স্যুট, বাসা নম্বর-৮/সি, রোড নম্বর-১৪৩, গুলশান-১ (শ্যুটিং ক্লাব ও এসিসিএল ক্লাবের সামনে) তৃণমূল বিএনপির সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদার তৃণমূল বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলটিকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ‘সোনালি আঁশ’। তখন নাজমুল হুদা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দলটি নিবন্ধন পাওয়ার পরই মারা যান তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সরোদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত পাঠক নন্দিত দৈনিক সংবাদপত্র সমতট বার্তা’র ৩৩ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে দৈনিক সমতট বার্তার আয়োজনে ৭ পর্বের সমতট উৎসবের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল সুধী সমাবেশ, গুণীজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিতাস পাড়ে অভাবনীয় উন্নয়নের সফল রূপকার র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, মুখ্য আলোচক ছিলেন বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এএসএম শফিকুল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষণ দেবনাথ।
দৈনিক সমতট বার্তার উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ এর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও কবি জয়্দুল হোসেন। প্রধান অতিথি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি যখন ছোটবেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসতাম তখন কুসুমকুমার চক্রবর্তী নামে একজন বড় ডাক্তার ছিলেন। তিনি আমাকে কালো মেঘ ঔষধ খাওয়াতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এসে দিনে দিনে গ্রামে ফিরে যাওয়া সম্ভব হতো না। সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ পার্কে আমার ফুফুর বাসায় রাত্রিযাপন করতে হতো। তখন প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আমি শুনতে পেতাম ঘরে ঘরে সুরের মূর্ছনা, ঝংকার। প্রায় সবার বাড়ি থেকে হারমোনিয়াম এর আওয়াজ ভেসে আসতো ওই সময়টাতে। এটি ছিল নিতান্তই তখন সুরের শহর। আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন নামে যেখানে আমরা আজকে দাঁড়িয়ে আছি এই বাড়িটি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ক্রয়কৃত বাড়ি। এ বাড়িটিতে তিনি নিজে এই সঙ্গীত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আগের যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা দেখেছি সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন আর নেই। কিন্তু আমি আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে খুঁজে পেতে চাই। আমি যখন এখানে রাজনীতি করতে এসেছি তখন আমি এই শহরকে ভালোবাসি বলেই এসেছি। কারণ, সমৃদ্ধ শিক্ষা-সংস্কৃতি, অনেক অনেক জ্ঞানী-গুণীজনদের এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম ছিল অনেক উপরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, আরও ছিলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্যারিস্টার এ রসুল, নবাব শামসুল হুদা, মলয়া সংগীতের মনমোহন দত্ত, আফতাব উদ্দিন খাঁ, লব পাল এর মত অনেক গুণীজন। এখন আর সেই দিন নেই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজনীতি করতে এসে এখানে অনেক মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি সহমর্মিতা পেয়েছি। তাঁদের কথাতো আমি ভুলতে পারবো না। এরমধ্যে রয়েছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। আর সেই জন্যেই এখানে আসার ব্যাপারে তার যে আহ্বান সেটাকে আমি উপেক্ষা করতে পারিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারই বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে। আর এসব প্রচার যখন উপর মহলে যায় তখন আমরা অবহেলার শিকার হই। করোনাকালীন সময়ে একজন জনপ্রিয় মাওলানার মৃত্যুতে তাঁর জানাজায় অনেক মানুষ হয়েছিল। এটি নিয়েও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই চট্টগ্রামে শফি নামে একজন আলেম সাহেবের মৃত্যু হয়। তার জানাজায়ও আরো অনেক বেশি মানুষ হয়েছিল। সেটিও ছিল করোনাকালেই। অথচ চট্টগ্রামের এ বিষয়টি নিয়ে কোন বিরূপ প্রচারণা কেউ করেনি। উপরন্ত চট্টগ্রামবাসীরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পর্কে নেতিবাচক সমালোচনা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একজন মহিলা দু’দুবারে মহিলা মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, সেই কথাটা কেউ বলে না। কিছু লোক সংঘবদ্ধ হয়ে, অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে এই আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলস্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ বেশ কিছু স্থানে বর্বর হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করলো, এ ব্যাপারে কেউ কিন্তু আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ঢাকা শহরে এত এত সাংস্কৃতিক সংগঠন, বড় বড় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন’ তারা কিন্তু এই তান্ডবের বিপক্ষে একটি মানববন্ধন করেননি। ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাত্র আড়াই ঘণ্টার পথ। এ সত্যেও এখানে কেউ আসেননি। আমি এই ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করার কথা বলেছিলাম। তাও হলোনা। এখানেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে নেতিবাচকতা হয়েছে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বাড়ি, এমন সাংবাদিকও ওই ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর বিপক্ষে লিখেছেন। তাদের কেউ একবার এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, মিউনিসিপ্যালিটি সহ অন্যান্য স্থাপনার ধ্বংসরূপ দেখে যাননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতি তাদের বিরূপ ধারণা রয়েছে। এখানে রাজনীতিতে এসে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছি, এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার এ প্রচেষ্টায় আমার পাশে আছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। এখানকার অন্যান্য পত্রিকার মধ্যে দৈনিক সমতট বার্তা কিছুটা ব্যতিক্রম। জেলার শিল্প সংস্কৃতি এবং রাজনীতির প্রগতিশীল ভাবনাগুলোকে মর্যাদা দিয়ে তাঁরা পত্রিকাটি চালাচ্ছেন। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইনশাল্লাহ, একদিন অতীতের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা অবশ্যই ফিরে পাবো। এ ব্যাপারে আমি আবারো আপনারা সকলের সহযোগিতা চাই।’ অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন প্রধান অতিথি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, মুখ্য আলোচক বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন দৈনিক সমতট বার্তা পাঠক ফোরাম এর সভাপতি হাজী সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাফিরউদ্দিন চৌধুরী রনি। এর আগে মোরশেদুল ইসলাম ও ফখরুল ইসলামের জীবনচরিত ও কর্মকৃতি পাঠ করেন ফারিয়া বিনতে আলম ও ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা। সংগীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নুসরাত জুহুরী প্রান্তি, পাপিয়া চৌধুরী, ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা, মায়া চক্রবর্তী। নৃত্য পরিচালনা করেন নৃত্য প্রশিক্ষক যে আমিন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগীত সংগঠক আনিসুল হক রিপন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন দৈনিক সমতট বার্তার সম্পাদক মনজুরুল আলম।