অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
৩ এপ্রিল বুধবার বিকালে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে বিএসসিএল-এর প্রধান কার্যালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে সঙ্গে নিয়ে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, বিএসসিএল’র চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ, একাত্তর মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং বিএসসিসিএল-এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে অত্যন্ত চমৎকার একটি কাজের সূচনা হয়েছে। সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ বিষয়টি অত্যন্ত গর্বের। প্রযুক্তিটি আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, সরকার বেসরকারি খাত বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করতে পারে যেটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করা সম্ভব। এটিই আমাদের জন্য ব্যাপক অর্জন।
এ কার্যক্রমের জন্য সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের উদ্যোগ ও সহযোগিতা ছাড়া বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহযোগিতা ছাড়া এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্ভব হতো না।
সামনের দিনগুলোতে নিজেদের প্রচেষ্টায় নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে আরও বড় উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলেও এ সময় জানান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের উদ্যোগে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতায় টিআরপি সিস্টেমের মতো দেশে এ ধরনের আরও বড় কাজ হবে, যেগুলো বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে এবং যার উপযোগিতা থাকবে।
পরে প্রতিমন্ত্রী বিএসসিএলের প্রধান কার্যালয়ে টিআরপি সিস্টেমের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৪ জুন রবিবার দুপুরে ধুনট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধুনট থানা পুলিশের আয়োজনে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) সজিব সাহরিন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ধুনট থানার ওসি রবিউল ইসলাম, ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশাহ, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মহসিন আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম সোবহান, কাউন্সিলর সেলিম রেজা রিমান, ইউপি সদস্য সুলতান মাহমুদ, প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র, সহকারি প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলামসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।
অনলাইন ডেস্ক :
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, আন্দোলনের নামে গুহা থেকে বের হয়ে অনলাইনে চেহারা দেখিয়ে বিএনপির কর্মসূচির নামে গাড়ি পোড়ানো, আগুনসন্ত্রাস চালানো, মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপের কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না। আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দয়া করে আপনারা কলম ধরুন, কথা বলুন।
আজ ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের নামে ৩২ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। একজন সাংবাদিককে টানাহেঁচড়া করে মাটিতে ফেলে তাকে পেটানো হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জনের বেশি হচ্ছে বিএনপি বিটের সাংবাদিক। তাদের তারা চেনেন তারপরও মেরেছেন। বাংলাদেশে একদিনে এত সাংবাদিককে আহত করা আগে কখনো ঘটেনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু তাই নয়, তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন খুলনার হুমায়ুন কবীর বালু, মানিক সাহা, যশোরের সাইফুল ইসলাম মুকুল, শামসুর রহমানসহ সাত বছরে ১৪ জন সাংবাদিককে খুলনা, যশোর এলাকাতেই হত্যা করেছে। সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি-জামায়াতের কেন জানি ক্ষোভ এবং তারা যখনই ক্ষমতায় ছিল সাংবাদিকদের হত্যা করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলেছিল, জোটের সমর্থন নিয়ে তারা দুর্বার আন্দোলনের চেষ্টা করছে, নির্বাচনকে ঠেকিয়ে দেবে। অথচ যারা তাদের বাতাস দিয়েছিল তাদেরও বাতাস ফুরিয়ে গেছে আর গতকালই তাদের ১২ দলীয় জোট থেকে তিনটি নিবন্ধিত দলসহ ছয়টি দল বের হয়ে গেছে। জোটের শরিকরাও পালিয়ে যাচ্ছেন আর নির্বাচনে অংশ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। আমার শঙ্কা, যেভাবে তৃণমূল বিএনপি আগাচ্ছে তাতে বিএনপি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
বিএনপি অফিস তালাবদ্ধ প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, এই তালা প্রশাসন দেয়নি, ওরাই তালা মেরে চলে গেছে। একটা তালা খোলার মানুষ নেই তাদের। একটা তালা খুলে ওখানে বসার সাহসটাও তারা হারিয়ে ফেলেছেন, তারা কীভাবে রাজনীতি করেন! আর বিএনপি আমাদের অফিসে তালা দিয়েছিল, আমি ছিলাম সেখানে, আমরা তালা ভেঙে ঢুকেছি।
যথাসময়ে উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আসুন সবাই মিলে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাই। এই অগ্নিসন্ত্রাস-নৈরাজ্যের হাত থেকে দেশটাকে রক্ষা করি, আমাদের সরকার এই আগুনসন্ত্রাসী নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী দেশবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সাংবাদিকবান্ধব, এই ট্রাস্ট তার অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাকালে এককালীন সহায়তা হিসাবে ১০ হাজারের বেশি সাংবাদিককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এজন্য ১০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন।
মন্ত্রী ও অতিথিরা এদিন ১৮৬ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের হাতে এক কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
এর আগে তথ্য ভবন কমপ্লেক্সে পুরাতন ডিএফপি ভবনের দোতলায় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের নতুন অফিস উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া, ট্রাস্টের পরিচালক মিয়া মুহম্মদ মনিরুল কবীর প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবশেষে দাম্পত্য জীবন শুরু করেছেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ৭০ বছর বয়সের চিরকুমার অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক শওকত আলী হাওলাদার। তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী বিধবা শাহিদা আক্তার নাজুকে (৩৫) বিয়ে করেছেন।
রামপাল সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক বিয়ের পর নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ত্রীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত তা ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে স্ত্রী নাজুর সঙ্গে শওকত আলী হাওলাদারে যুগল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে শুভ কামনা জানাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ কটু মন্তব্যও করছেন।
রামপালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক শওকত আলী হাওলাদারের বাড়ি উপজেলার জিগিরমোল্লায় হলেও তিনি হুড়কা গ্রামে বসবাস করেন। রামপাল কলেজে শিক্ষকতার পাশাপশি ভাইবোনদের মানুষ করতে তার সময়মতো বিয়ে করা হয়নি। পরিবারের সদস্যরা শওকত আলী হাওলাদারকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও তিনি সবসময় তা এড়িয়ে গেছেন। ভাইবোনেরা বিয়ে করে সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অবসরপ্রাপ্ত এই কলেজ শিক্ষক একাকিত্ব অনুভব করায় ৭০ বছর বয়সে এসে পার্শ্ববর্তী মোংলা উপজেলার মিঠাখালী এলাকার কন্যা সন্তানের জননী বিধবা শাহিদা আক্তার নাজুকে বিয়ে করেন।
গত শনিবার (১৮ মার্চ) ১০ লাখ টাকা দেনমোহরানা নিয়ে এবং নগদ পাঁচ লাখ টাকা ওয়াসিলে এ বিয়ে করেন শওকত আলী হাওলাদার। বিয়ের পোশাকে স্ত্রীর সঙ্গে তোলা সেই ছবি তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুই আইডিতে পোস্ট দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। রামপাল ছাড়িয়ে এই বিয়ের খরব এখন চায়ের দোকান, অফিসে আড্ডায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
শওকত আলী হাওলাদারের ছোট ভাই আব্দুল হালিম খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বড় ভাইয়ের কাছে মানুষ হয়েছি। সারাটা জীবন তিনি আমাদের সুখে দুঃখে বটবৃৃক্ষের মতো আগলে রেখেছেন। বড়ভাই কলেজ শিক্ষকতা থেকে অবসরে চলে আসায় এবং বর্তমানে আমরা নিজেদের পরিবার ও ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি অনেকটা একাকিত্ব বোধ করছিলেন। তার এই একাকিত্ব দূর করতে ও তাকে দেখভাল করতে এ সময় তার একজন সঙ্গিনী খুবই দরকার ছিল। এই পরিস্থিতে আমরা তাকে বিয়ের জন্য জোরাজুরি করলে তিনি একটা সময় এসে রাজি হন। এরপর আমরা মোংলা উপজেলার মিঠাখালি এলাকার এক কন্যা সন্তানের জননী বিধবা শাহিদা আক্তার নাজু (৩৫) সঙ্গে তাকে বিয়ে দিয়েছি। কনের আগের সংসারের মেয়েটার দায়িত্ব আমার বড় ভাই শওকত আলী নিয়েছেন। তারা বর্তমানে সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন। পরিবারসহ নতুন বর ও কনে আগামীতে হজেও যাবেন। সংবাদমাধ্যমে দেশবাসীর কাছে এই নবদম্পতির জন্য দোয়া চাই।’
চলারপথে রিপোর্ট :
২০২৩ সালে ২৫ মে যুবক মোতালেবের পেট থেকে এন্ডোসকপির মাধ্যমে ২৩টি কলম বের করা হয়। তখন চিকিৎসকদের কাছে মোতালেব ওয়াদা করেছিল কখনো আর এসব জিনিস খাবেন না। কিন্তু কলমগুলো বের হতে কোনো কষ্ট না হওয়ায় যুবক মোতালেব আবারও লোহার সুচালো যন্ত্র, কলম ও কঞ্চি খেয়ে ফেলে। পরে পেট ব্যথা শুরু হলে পুনরায় সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দফায় চিকিৎসকরা পরীক্ষ-নিরীক্ষার পর এন্ডোসকপি সার্জারির মাধ্যমে মোতালেবের পেট থেকে পুনরায় লোহার তাঁতের সুচালো সরঞ্জাম, কলম ও একটি বাঁশের কঞ্চি বের করেন।
মোতালেব হোসেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলত নতুনপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।
মোতালেব হোসেন জানান, গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। তখন অনেক কলম বের হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যথা পাওয়া যায়নি। এ কারণে আবারও এগুলো খেয়েছিলাম। তবে ভবিষ্যতে আর খাব না।
হাসপাতালের চিকিৎসক ইরিন আলম বলেন, গত মাসের ১৩ মে মোতালেব হোসেন পেট ব্যথা-বমি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু ব্যথা কমে না। এরপর আমরা পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা পাই তার পেটের ভেতর লোহার মতো সুচালো যন্ত্র, কলম ও কঞ্চি থেকে দেখা যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে সার্জারি চিকিৎসক ডা. আমিনুল ইসলাম চৌধুরী এন্ডোসকপি সার্জারির মাধ্যমে ৪টি ধারালো লোহার তাঁতের সরঞ্জাম, একটি কলম ও একটি বাঁশের কঞ্চি বের করেন।
তিনি বলেন, এটি এক ধরনের মানসিক রোগ। যখন ভাল থাকে তখন কিছু করেন না। কিন্তু যখন মনে রোগটা একটু বেড়ে যায় সে অখাদ্য নানা জিনিসপত্র খেয়ে ফেলে। তাকে মানসিক চিকিৎসাও প্রদান করা হচ্ছে।
সার্জারি ডা. আমিনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গত বছর মোতালেবের পেট থেকে এন্ডোসকপির মাধ্যমে ২৩টি কলম বের করা হয়েছিল। এবারও যখন পেট ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয় তখন আগের সিনটম তার মধ্যে দেখা যায়। পরে পরীক্ষা–নিরীক্ষা পর তার পেটের ভিতর থেকে এন্ডোসকপি সার্জারির মাধ্যমে কলম ও সুচোলো জাতীয় ধারালো জিনিসগুলো বের করা হয়। গত বছরও অপারেশন ছাড়া বের করায় সে কষ্ট না পাওয়ায় আবারও সে এগুলো খেয়েছিল। তবে এবার ওয়াদা করেছেন আর খাবেন না।
তিনি আরো জানান, মোতালেব বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। খাওয়া-দাওয়া করতে পারছে। রোগটি পিকাসিন্ডোম নামে বিরল মানসিক রোগ। এ রোগের আক্রান্ত রোগীরা সাধারণ খাবারের জিনিসের পোড়ামাটি খায়। কিন্তু মোতালেব যেগুলো খেয়েছে সেটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। তারপরও আল্লাহর রহমতে আমরা সুস্থভাবে সেগুলো বের করেছি। বর্তমানে সে সুস্থ রয়েছে। দুএকদিনের মধ্যেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে। দেশ গড়ার যে সুযোগ পাওয়া গেছে সেটি সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাতে হবে।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের জন্ম থেকে এই সুযোগ আর আসেনি। শিক্ষার্থীদের দেখছি আর ভাবছি, কী একটা স্বপ্ন আমাদের সামনে, জাতির সামনে তোমরা নিয়ে এসেছ। যে সুযোগ তোমরা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছ, এটা যেন হাতছাড়া না হয়। এই সুযোগ হাতছাড়া হলে বাংলাদেশ আর রাষ্ট্র থাকবে না। এটা শুধু রাষ্ট্র না, পৃথিবীর সম্মানিত রাষ্ট্রে যেন পরিণত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা শহীদ হয়েছে আজকে তারা আমাদের সঙ্গে বসতে পারত। কিন্তু সেই সুযোগ তাদের দেওয়া হয়নি। যখন হাসপাতালে আহতদের দেখার জন্য যাই, তাদের দিকে তাকাতে কষ্ট হয়।
ড. ইউনূস বলেন, একজন তরুণকে যখন দেখতে যাই তখন সে জিজ্ঞেস করে স্যার, ক্রিকেট খেলব কীভাবে? ক্রিকেট খেলার কথা তার মাথা থেকে সরছে না। যতবার দেখি, মনে প্রশ্ন জাগে এটাই আমরা বাংলাদেশ বানিয়েছি? কালকে একটা হাসপাতালে গেলাম, আবার সেই দৃশ্য। তরুণ প্রাণ, অনেকের মাথার খুলি উড়ে গেছে। অনেকের শরীরে গুলি রয়ে গেছে। বেঁচে আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যতবার শুনি, যতবার দেখি, আবার নতুন করে প্রতিজ্ঞা করতে হয়, যে স্বপ্নের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছে সেই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়ন করব। এটা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমি সাক্ষাতের সময় যে দৃশ্য দেখছি সেটা তো সবাই দেখছে না। যারা হাসপাতালে আসছেন তারা হয়তো অনুধাবন করতে পারছে। মানুষকে জানাতে হবে, বোঝাতে হবে। কী নৃশংসতা ছিল।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় শাপলা হলে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত মতবিনিময় সভা চলে।
ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গত ৮ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অনুরোধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর তিনি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পত্রিকার সম্পাদক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ নিজ কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ড. ইউনূস।