চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কনটেইনার ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ঘটনার আট ঘণ্টা পর ঢাকামুখী আপ লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আজ ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে রিলিফ ট্রেনের উদ্ধারকারী দল ভোর রাত ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কনটেইনার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত একটি বগির দুটি চাকা মেরামত করে চালিয়ে নিয়ে যায়। পরে এক কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনের বিভিন্ন অংশ মেরামত করা হয়। প্রায় আট ঘণ্টা পর ঢাকামুখী আপ লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
প্রঙ্গগত, ৮ এপ্রিল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি কনটেইনার ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দাড়িয়াপুর এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি বগির দুটি চাকা লাইনচ্যুত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান মারা গেছেন। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকাল পৌনে ৩ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেসরকারি আইসিইউ হাসপাতালে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফায়েজুর রহমান ফয়েজ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ ডাঃ মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়াবেটিক, হাই প্রেসার ও হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। গতকাল দুপুর দেড়টায় তিনি জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিজস্ব কক্ষে অসুস্থতা অনুভব করেন। তখন হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি হার্ট এ্যাটাক করেছেন বলে বিষয়টি জানা যায়। পরে তাকে ঢাকা নেওয়া প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু তার আগেই ডাঃ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের শারীরিক অবস্থান অবনতি ঘটলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কুমারশীল মোড়স্থ আইসিও স্প্যাশালাইজড হাসপাতালে তাকে আইসিওর লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তবে বিকাল পৌনে ৩টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
চিকিৎসক মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ২১ বিসিএস এর ক্যাডার। ২০২১সালে ২৩জুন তত্ত্বাবধায়ক পদে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিযুক্ত হন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আত্মহত্যা করতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে হাত হারিয়েছেন শেফালী বেগম (৩৫) নামের এক নারী।
আজ ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে পৌরশহরের শিমরাইলকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শেফালী বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের জগৎসার গ্রামের সালাউদ্দিনের স্ত্রী।
শেফালী বেগমের স্বামী সালাউদ্দিন বলেন, আমাদের সংসারে দুটি সন্তান আছে। সুখে-শান্তিতে আমাদের সংসার চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি শেফালী মানসিকভাবে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলেন। শুধু আত্মহত্যার কথা বলতেন। কী কারণ ছিল তা বলেননি। সকালে বাজারে ওষুধ আনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর তাকে খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যাচ্ছিল না। দুপুরে জানতে পারি আমার স্ত্রী ট্রেনে কাটা পড়েছে।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ বক্সে দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্টেবল ইমন বলেন, ওই নারী জানিয়েছেন, তিনি ট্রেনের নিচে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাতেম আলী ভূঁইয়া বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি মালবাহী ট্রেনে ওই নারী কাটা পড়েন। পরে দমকল বাহিনীর সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তার মাথায় আঘাত লেগেছে এবং ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, ওই নারীকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার একটি হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আতিকুল ইসলাম নামে এক বিএনপি কর্মী গুমের অভিযোগে সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে।
আজ ২ সেপ্টেম্বর সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এ মামলা হয়।
মামলাটি করেন ওই বিএনপি কর্মীর স্ত্রী নাছিমা ইসলাম।
অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনসারী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, চিনাইর গ্রামের হামদু মিয়া, শহরের কাজিপাড়ার রাজ্জাক মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া ও জসিম মিয়া, আতাউর রহমান ভূঁইয়া শাহীন, নবীনগরের নান্দুরার আবুল কাশেম, জিলানী ও শহরের মেড্ডা এলাকার জাকির মিয়া।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের শেষ দিকে কাজিপাড়ার সেলিম মিয়ার সঙ্গে আতিকুল ইসলামের জায়গা নিয়ে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে সেলিম সে সময়ের এমপি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আতিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আতিকুল ইসলামকে গুম করে প্রাণে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করেন তারা। ২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর দুটি মাইক্রোবাস যোগে আতিককে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়। তুলে নেওয়ার সময় তারা বলেছিলেন- র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সাহেব আপনাকে সালাম দিয়েছেন। আপনাকে আমাদের সঙ্গে উনার বাড়ি যেতে হবে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়ার পর আর কোনো সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় তখন থানায় অভিযোগ দিতে গেলে মোকতাদির চৌধুরীর হস্তক্ষেপে গ্রহণ করেনি। ১২ বছর যাবত আতিককে সন্ধান না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে তাকে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত একমাসে ৩টি হত্যাসহ পাঁচটি মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির ডাকা মহাসড়ক অবরোধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনের নিরাপত্তা এবং চালকদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য আজ ১ নভেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিশেষ টহল দিয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনী।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শাহগীর আলমের নেতৃত্বে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর পৌনে দুইটা পর্যন্ত এই দুই মহাসড়কে টহল দেয়া হয়।
সকালে জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, গোয়েন্দা পুলিশ, পুলিশের বিশেষ শাখাসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি গাড়ি বহর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত মহাসড়কে বিশেষ টহল দেয়। এ সময় দেখা যায় মহাসড়কে ট্রাক,মাইক্রোবাস, আন্তঃজেলা লোকাল বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকসাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়াও দূরপাল্লার বাস এনা পরিবহনের কয়েকটি বাসও মহাসড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বিশেষ টহল দেয়ার সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের ( সরাইল ব্যাটালিয়ন) লেঃ কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরাম উল্লাহ, র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের নাশিদ হাসান, জেলা আনসার ও ভিডিপির অ্যাডজুটেন্ট, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার উদ্দিনসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টহল শেষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অবরোধ থাকলেও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। তিনি বলেন, মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল একটু কম হলেও সময়ের সাথে সাথে তা বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, কেউ কোন ধরনের বিশৃংখলার চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবেনা।
এ ব্যাপারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, অবরোধের শুরু থেকেই আমরা মহাসড়কের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। তথাকথিত অবরোধ থাকলেও মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। সব কিছু স্বাভাবিক আছে। তবে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা একটু কম। এর প্রধান কারণ হচ্ছে যাত্রী স্বল্পতা। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
যৌথ বাহিনীর পৃথক দুটি অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক, দেশীয় অস্ত্র, পুরাতন মোবাইল ফোনসেট, ল্যাপটপসহ অন্যান্য পণ্য উদ্ধার হয়েছে। এ সময় মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে একজনের কাছ থেকেই পাওয়া যায় ৩৯টি মোবাইল ফোনসেট। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার গোকর্ণঘাটের মাদক ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ (৩৮), বিজয়নগরের বিষ্ণুপুরের রুবি আলমগীর (৩৩), মো. সামি ভূঁইয়া (১৬), মো. সিয়াম ভূঁইয়া (১৪) ও মো. সানি ভূঁইয়া (২৪)।
তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে সদর ও বিজয়নগর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
অভিযান সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী পৌর এলাকার গোকর্ণঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে তিনটি দেশীয় অস্ত্র, ৫০৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি ক্ষুর, দুটি ল্যাপটপ, চারটি ট্যাব, ১৭টি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনসেট, ২২টি বাটন মোবাইল ফোনসেট, চারটি পাসপোর্ট ও প্রায় দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এদিকে বুধবার রাত আড়াইটার দিকে যৌথ বাহিনী বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের ভূঁইয়া বাড়িতে (ভূঁইয়া ফার্ম হাউস) অভিযান চালানো হয়।
এ সময় মাদক ব্যবসায়ী রুবি আলমগীর তার ছেলে সামি ভূঁইয়া, সিয়াম ভূঁইয়া ও সানি ভূঁইয়াকে আটক করে। পরে তাদের কাছ থেকে ২০টি দেশীয় অস্ত্র (কুড়াল, চাপাতি, রামদা, ছুরি, হাতুড়ি), ৫২৫ বোতল ফেনসিডিল, ৭৪৫ বোতল স্কাফ সিরাপ, ৬০০ গ্রাম গাঁজা, ৯৯ হাজার ১০০ টাকা, দুই হাজার ২৯০ ইন্ডিয়ান রুপি, ৩০ কাতার রিয়াল, দুটি পাসপোর্ট, একটি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনসেট, একটি বাটন মোবাইল ফোনসেট ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।