চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে সেপটিক ট্যাংকে কাজ করতে নেমে তিন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
১৪ এপ্রিল রবিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গুনিয়াউক ইউনিয়নের গুটমা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আদাউর ইউনিয়নের সম্পদপুর গ্রামের মৃত নজব আলীর ছেলে মো. চুনু মিয়া (২৫), মাধবপুর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে মো. আলম মিয়া (২২), মাধবপুর উপজেলার আদাউর ইউনিয়নের মইজপুর গ্রামের আতিক মিয়ার ছেলে সম্রাট মিয়া (২০)।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা জানান, সকালে গুটমা গ্রামের আহাদ আলীর বাড়িতে নির্মাণাধীন একটি সেপটিক ট্যাংকে কাজ করতে নামেন তিনজন শ্রমিক। কাজ করা অবস্থায় সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে তাদের তিনজনেরই মৃত্যু হয়। তবে কীভাবে মৃত্যু হয়েছে-সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হচ্ছে ট্যাংকের ভেতরে অক্সিজেনের অভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ওসি আরো জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে সেপটিক ট্যাংক ভেঙে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আক্কেল আলী (৫৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ ৯ মে শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতোলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত আক্কেল আলী সোনাতলা গ্রামের পূর্বপাড়ার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। নিহত হওয়ার খরবে আতঙ্ক বিরাজ করায় আহতের নাম সংগ্রহ করা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতোলা গ্রামের সালাম মেম্বারের পক্ষ এবং আলী আজগরের পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক মাস যাবত ঝগড়া-বিবাদ ও সংঘর্ষ চলে আসছিল। গত ৬ নভেম্বর আজগর আলীর গোষ্ঠীর সিদ্দিক মোল্লা নামে একজন নিহত হয়। এরকিছু দিন পর গত ২১ এপ্রিল সালাম মেম্বারের গোষ্ঠীর জোহরালী মিয়া নামে একজনের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। সেই ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে হত্যা ও লুটপাট মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে পূর্বের ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই আজগর আলীর গোষ্ঠীর আক্কেল আলী মারা যান। আরো জানা যায়, দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে সোনাতলা গ্রামে গত ছয় মাসে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষে আক্কেল আলীসহ উভয় পক্ষের মোট তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। মূলত গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে জিততেই একের পর এক প্রাণ যাচ্ছে। গোয়ালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হক জানান, পূর্বের ঘটনার জের ধরেই আজকের উভয় পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
নাসিরনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জামিল খান হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় আক্কেল আলী নামে একজন নিহত হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি, পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে রমজান (২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ৩১ মে শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়ভাঙ্গা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত রমজান বড়ভাঙ্গা এলাকার কবির মিয়ার ছেলে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা জানান, সকালে পরিবারের সবাই ঘরে ছিলো। এ সময় শিশু রমজান বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। খেলার এক পর্যায়ে সে বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে ডুবে যায়। পরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পুকুরে ভাসমান অবস্হায় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু রমজানকে মৃত ঘোষণা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরের রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোটে বাধা দেওয়ায় পোলিং অফিসারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ কিছুটা ধীরগতিতে চলছে।
আজ ৮ মে বুধবার উপজেলা নির্বাচনের নাসিরনগরের রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার পলাশ মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমায়ূন কবির (চশমা প্রতীক) তার কয়েকজন সমর্থক নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এরপর তার সমর্থকরা জাল ভোট দিতে চাইলে কর্মরত পোলিং অফিসার ফয়সাল ইসলাম বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রার্থীর সমর্থকরা পোলিং অফিসারকে চড়-ধাপ্পড় মারতে থাকেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে ওই কেন্দ্রের পরিস্থিতি শান্ত আছে। ভোটগ্রহণও চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও নারী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রার্থীরা রির্টানিং কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মো: শহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুমা আক্তার,বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে ইয়াজ আল হোসাইন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার রায়,উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো: ওমরাও খান ও শ্রী প্রমোদ রঞ্জন সূত্রধর। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নেতা আবু আহাম্মদ কামরুল হুদা, হুমায়ুন কবীর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ভানু চন্দ্র দেব, সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ ,গুনিয়াউক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ছামদানী, মোহাম্মদ ইয়াছিন মিয়া পাঠান ও শাহজাহান চকদার। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার,সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা হামিদা লতিফ পান্না, সাবেক মহিলা মেম্বার রিটা আক্তার ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাহিদা আক্তার।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মো: শহীদুল ইসলাম জানান,এবার প্রথমবারের মত অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।সব প্রার্থী নিবার্চনী নিয়মনীতি মেনে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিল শেষে হার্ড কপি জমা দিয়েছেন। সকল প্রার্থীকে নিজ নিজ জায়গায় থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি রক্ষার অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল, বাছাই আপিল ১৮ এপ্রিল,আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল,প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২২ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৮ মে। নাসিরনগর উপজেলায় ৯৩টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ভোটার ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৪৭জন। পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ১‘শ ৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪‘শ ৩৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ ২ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
চারপাশে সবুজ। ঠিক মাঝখানে লাল। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে এ যেন বাংলাদেশের পতাকা। নাসিরনগর উপজেলায় ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের চিত্র এটি। উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে এটি করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম জানান, উত্তর লক্ষ্মীপুরে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪০টি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এসব ঘরসহ ভূমি পেয়েছেন বিধবা নারী, স্বামী পরিত্যক্তা, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী ও গৃহহীনরা। ঘরগুলো দৃষ্টিনন্দন করতে চাল লাগানো হয়েছে জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজে। ২২ মার্চ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো হস্তান্তর করা হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৬৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে নতুন ঘর। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বুধবার এসব ঘর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে প্রধানমন্ত্রী ঘর হস্তান্তরের পর জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন (যাদের জমি নেই, ঘরও নেই) তাদের পুনর্বাসনের জন্য চতুর্থ পর্যায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চতুর্থ ধাপে ৬৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পাবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এসব পরিবারকে ঘরের চাবি ও দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১০৫টি, বাঞ্ছারামপুরে ১২৬টি, নবীনগরে ১০০টি, আখাউড়ায় আটটি, সরাইলে ৪৯টি, আশুগঞ্জে ২০টি ও নাসিরনগর উপজেলায় ২৫৪টি পরিবার রয়েছে। এরই মধ্যে সুবিধাভোগী ভূমি ও গৃহহীনদের নামে ভূমির দলিল নিবন্ধন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, দুই কক্ষবিশিষ্ট আধাপাকা ঘরগুলো একই নকশায় তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ব্যয় হয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা।