সময় টিভির বার্তা প্রধানসহ সারাদেশে সাংবাদিক হয়রানির প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 6 February 2023, 2129 Views,

স্টাফ রিপোর্টার :
সময় টিভির বার্তা প্রধান মুজতবা দানিশ এবং সময় টিভির রংপুর অফিসের ব্যুরো প্রধান রতন সরকারের বিরুদ্ধে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হক কর্তৃক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে আজ ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত সর্বস্তরের সাংবাদিক ও সূধীজন এর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামির সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের স্টাফ রিপোর্টার মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরি বাপ্পি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক ও সমকালের স্টাফ রিপোর্টার আবদুন নূর, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম কাউছার এমরান, সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম, শিহাব উদ্দিন বিপু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি অসীম কুমার বর্ধন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি পিযূষ কান্তি আচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দত্ত, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবু হোরায়রাহ, খেলাঘর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার, মোজ্জামেল চৌধুরি, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু, জালাল উদ্দিন রুমি প্রমুখ।

সাংবাদিক হাবিবুর রহমান পারভেজের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সময় টিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যুরো প্রধান উজ্জ্বল চক্রবর্তী প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো সাংবাদিককে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হবে না। কিন্তু বাস্তবে এই কথার উল্টো চিত্র আমরা দেখছি। সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করার জন্য সারা দেশেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেয়া হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ করা যাবেনা। বক্তারা অবিলম্বে সময় টিভির বার্তা প্রধান মুজতবা দানিশ এবং সময় টিভির রংপুর অফিসের ব্যুরো প্রধান রতন সরকারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও জিডিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল করার দাবি জানান।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

রাষ্ট্রপতির ওপেন হার্ট সার্জারি বুধবার

জাতীয়, 17 October 2023, 892 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বুধবার সেখানে তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হবে। সার্জারির আগে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

banner

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, মঙ্গলবার সকালে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালে ভর্তি হন রাষ্ট্রপতি।

বুধবার সকালে কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক ডাক্তার কফিদিস থিওডোরোসের তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রপ্রধানের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হবে। রাষ্ট্রপতি তার আশু আরোগ্য কামনায় দেশবাসীসহ সবার দোয়া চেয়েছেন।

এর আগে, সোমবার সিঙ্গাপুরে যান রাষ্ট্রপতি।
সূত্র : বাসস

সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব, কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না : জাহাঙ্গীর

জাতীয়, 26 May 2023, 1315 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনের ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আপনাদের শক্তি দিয়ে আমি দেখিয়েছি, যতদিন থাকব আমার জীবন এবং আমার বাড়িঘর সব আপনাদের। আমার মালিকানা কিছু লাগবে না। সবকিছুর মালিক আপনারা। যেকোন সময় যেকোনো মুহুর্তে আমার এবং আমার মা’র ঘরের দরজা খোলা থাকবে ২৪ ঘণ্টা। সে হিসেবে আপনারাই আমার সবচেয়ে আপনজন।

banner

শহরের মালিক যে জনগণ এটা আপনাদের ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। নির্বাচনে আপনাদের জয় হয়েছে, আর যারা অপরাধী তারা অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সে হিসেবে তাদের আর কিছু বলার নেই। কেউ আঘাত করলে তাকে পাল্টা আঘাত করতে হয় না।

২৬ মে শুক্রবার দুপুরে মহানগরের ছয়দানা এলাকার তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। এসময় উৎসুক জনতা ও নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার মা মানে আপনাদের মা। আমার বাড়িঘর আপনাদের সবার জন্য উন্মুক্ত। যেকোনো সময়, যেকোনো প্রয়োজনে আপনারা আসবেন। আমার মা এবং আমি মিলে আপনাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব। সবার জন্য এ শহর। আমরা কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই।’ শহরের মালিক যে জনগণ এটা আপনাদের ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। নির্বাচনে আপনাদের জয় হয়েছে, আর যারা অপরাধী তারা অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সে হিসেবে তাদের আর কিছু বলার নেই। কেউ আঘাত করলে তাকে পাল্টা আঘাত করতে হয় না।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শহরের মালিক যে জনগণ এটা আপনাদের ভোটের বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী থেকে শুরু করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলব, সবার পারিবারিক একটা মর্যাদা আছে। সবাই যেন সবাইকে সহযোগিতা করে। এ শহরের মানুষ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিবে। আপনারা (কর্মী-সমর্থক) দুঃসময়ে আমার পাশে ছিলেন। আল্লাহর পরে এ দুঃসময়ে আপনারা আমার এবং আমার মা জায়েদা খাতুনের পাশে ছিলেন। আমি এবং আমার মায়ের কাজ দিয়ে এই শহরকে আপনাদের সহযোগিতায় চালাব।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। উনি আমাদের অভিভাবক, উনাকে সহযোগিতা করব। আমাদের নেতাকর্মীদের যারা হয়রানি করছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা বন্ধ করতে হবে। কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যাবে না। কারণ যারা শহরের মেয়র বানাতে পারে, তারা এই সমাজে সবকিছু প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। পেশিশক্তি দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। ওয়ার্ড, থানা ও মহানগরের সবাইকে নিয়েই পঞ্চায়েত সিস্টেম করে শাসন ব্যবস্থা এবং সিটির কাজগুলো করা হবে।

এরআগে শুক্রবার সকালে সদ্য বিজয়ী মেয়র জায়েদা খাতুন এবং তার ছেলে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে শুভেচ্ছা জানাতে ছয়দানা এলাকার বাসায় নগরবাসী ও কর্মী-সমর্থকরা ভিড় জমায়। সকাল থেকেই শত শত এলাকাবাসী আনন্দ মিছিল এবং ফুল ও মিষ্টি নিয়ে তাদের বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে তারা থেমে থেমে মিছিল করতে থাকে, এক পর্যায়ে তাদের মিছিলের শব্দ পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম বাসা থেকে নিচে নেমে আসেন এবং তাদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন। পরে সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মী এবং সাাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

তিনি তাদের বলেন, আমি আপনাদের ঋণ শোধ করতে পারবো না। আজ আমাদেরকে শুভেচ্ছা জানাতে আমার বাসায় এসেছেন। আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি শনিবার কিংবা রোববার আমি আপনাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানাবো।

৬৭৫ আসামির নাম বাদ দিতে বাদীর আবেদন

জাতীয়, 27 April 2025, 139 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তখন তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন করছেন বা হলফনামা দিয়ে বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।

banner

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৪০ মামলা থেকে ৬৭৫ জন আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে গেছেন বাদীরা। এ জন্য তাঁরা ৩৫৪টি আবেদন ও হলফনামা দিয়েছেন। কোনো আবেদনে একজন, কোনোটিতে দুজন আবার কোনো আবেদনে চার-পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বলেছেন বাদীরা।

আইনজীবীরা বলছেন, এ রকম আবেদন এখনো জমা পড়ছে। হলফনামা দিয়ে ও আবেদন করে বাদীরা বলছেন, এজাহারে ভুলে আসামিদের নাম কে বা কারা লিখে দিয়েছেন। তাই তাঁদের জামিন কিংবা মামলা থেকে নাম বাদ দিতে আপত্তি নেই। বেশির ভাগ আবেদনের ভাষা প্রায় একই রকম।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম ও মহানগরে এ পর্যন্ত ১৪৮ মামলা হয়েছে। এসব এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ১৩ হাজার ২৭ জন। এর বাইরে অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা অন্তত ৩০ হাজার। এসব মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সন্ত্রাসী যেমন আসামি আছেন; আবার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন এমন ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। এখন মামলা থেকে এ ধরনের ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য যেমন আবেদন করছেন অনেক বাদী, পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর জন্যও আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনও রয়েছেন। মামলা থেকে বাদ দিতে আবেদন করা হয়েছে এমন অন্তত ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে যাঁরা আগে থেকে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বলছেন, এসব বাদীর পেছনে কিছু আইনজীবী ও বিএনপির নেতা-কর্মী রয়েছেন। তবে মামলা থেকে রেহাই পেতে টাকা লেনদেনের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা কেউ পরিচয় প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে শুরুতেই এক দফা ‘বাণিজ্য’ করেছে একটি চক্র। খসড়া এজাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে পরে টাকার বিনিময়ে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। গত ২ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘মামলা-বাণিজ্যের’ ব্যাপারে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া অনেক মামলা সাজানো। অনেক বাদী আসামিদের চেনেন না। মামলার নেপথ্যে বিভিন্ন চক্র কাজ করেছে। এ ধরনের মামলার তদন্ত নিয়ে বেকায়দায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এক মামলারই ৪৫ জনকে বাদ দেওয়ার আবেদন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে গুলিতে নিহত হন দোকান কর্মচারী মো. ফারুক। এ ঘটনায় তাঁর বাবা ভ্যানচালক মো. দুলাল ২৮ আগস্ট পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরসহ ২৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

এর মধ্যে মামলা থেকে আ জ ম নাছিরের নাম বাদ দিতে ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাতে বলা হয়, বাদীর অজ্ঞাতসারে অন্য কেউ ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত মামলায় আ জ ম নাছিরের নাম দিয়েছে। নাছির ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

বাদীর পক্ষে আদালতে আবেদন পেশ করেন আইনজীবী আখেলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কাকে মামলার আসামি রাখবে না রাখবে, সেটি বাদীর বিষয়। আদালত বাদীর আবেদন নথিভুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।

এর মাসখানেক পর ৫ ডিসেম্বর একই মামলার আরও সাত আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ, গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ হোসেন, বায়েজিদ বোস্তামী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল নবী ও খুলশী ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার মল্লিক এবং আওয়ামী লীগ কর্মী আজগর আলী ও মো. মানিক।

এর আগে ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছিলেন বাদী। এভাবে গত চার মাসে এ মামলা থেকে ৪৫ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

তবে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তদন্তে যা পাবে তা-ই প্রতিবেদন দেবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রথম আলোকে বলেন, নাম বাদ দিতে তাঁদের কারও ৩০ হাজার, কারও এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। মামলা চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে এসব লেনদেন হয়েছে।

তবে বাদী মো. দুলাল প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘তাড়াহুড়া করে মামলা করেছি, এতে অনেকের নাম এসে গেছে। তাই বাদ দেওয়ার আবেদন করেছি।’ টাকার বিনিময়ে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

৪০ আসামিকে বাদ দিতে চান আহত সিরাজ

গত বছরের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তিনপুলের মাথায় আহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিএনপির কর্মী সিরাজ খান। পরে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৪০ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি। তাঁদের মধ্যে চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।

এ বিষয়ে বাদী সিরাজ খান প্রথম আলোর কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে যেসব আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
বাদীর অজান্তে অন্য কেউ আসামি দিয়েছে!

৫ আগস্ট মনসুরাবাদ এলাকায় গুলিতে আহত হন মো. মানিক। ওই ঘটনায় তিনি ২০ নভেম্বর ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। আসামি করেন ১০৮ জনকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছিরসহ ২৬ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন।

আবেদনে বাদী লেখেন, আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। ফায়দা লোটার জন্য সুকৌশলে কেউ নাছিরের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। বাকি ২৫ জনের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা বলেন তিনি। এ বিষয়ে প্রথম আলোকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি মানিক।

৪ আগস্ট আহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির কর্মী এনায়েতুল গণি হাটহাজারী থানায় মামলা করেন ৩০১ জনের বিরুদ্ধে। পরে ২৪ আসামির নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি।

মো. সেলিম নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক চালক গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। পরে ৫১ আসামির মধ্যে ১৮ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি।

এভাবে অন্তত ৪০ মামলার বাদীরা ৬৭৫ আসামির নাম বাদ দেওয়ার জন্য হলফনামা ও আবেদন দিয়েছেন আদালতে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে প্রায়ই আসামির নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করছেন বিভিন্ন মামলার বাদী। আদালত তা নথিভুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দাবি

গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা মামলায় হয়রানিমূলক আসামি যাচাই-বাছাই করতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় দুটি কমিটি করা হয়েছে। দুটিরই সদস্য নগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপার।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন দাবি করে এরই মধ্যে অনেক আসামি আবেদন করেছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করছে কমিটি।

প্রায় অভিন্ন কথা বলেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. রাসেল। তিনি বলেন, পুলিশ যা তদন্তে পাবে, তা-ই অভিযোগপত্রে দেবে।

জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় করা মামলা নিয়ে এমন আচরণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অনেকে বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে মামলা দিয়েছেন। অনেক নিরপরাধ লোককে আসামি করা হয়েছে, কিন্তু সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়নি। হলেও কিছু বাদী এখন নাম বাদ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে নিরপরাধ ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হোক।’
সূত্র : প্রথম আলো, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইজাজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফারাবী নেত্রকোনায় গ্রেফতার

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 8 June 2024, 1052 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাৎ হোসেন শোভনের আনন্দ মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে কলেজ ছাত্র আশরাফুল রহমান ইজাজকে হত্যার ঘটনায় হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

banner

গতকাল ৭ জুন শুক্রবার ভোরে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি মতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়ার গ্রামের একটি ঝোঁপ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।

আজ ৮ জুন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত ৫ জুন বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন (আনারস প্রতীক) বিজয়ী হওয়ার খবরে তার সমর্থকেরা বিজয় মিছিল বের করে। মিছিলটি কলেজপাড়া এলাকার খান টাওয়ারের সামনে আসলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশরাফুল রহমান ইজাজ গুলিবিদ্ধ হয়। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ফারাবী তাকে গুলি করে কোমড়ে পিস্তল রেখে ঘটনাস্থল থেকে সরে যাচ্ছে। এ সময় তার (ইজাজের) বন্ধুরা তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।

এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের পিতা হাজী আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫জনকে আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পরে পুলিশ হেডকোয়াটার্সের একটি বিশেষ টিম, সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার দল অভিযান পরিচালনা করে শুক্রবার ভোরে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেপ্তার করে।

প্রেসব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়, গ্রেফতারের পর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারে কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, নরসিংদী আশুগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের একটি ব্রীজের পাশের ঝোপের মধ্য থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর হাসান আল ফারাবী জয় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী পূর্ব বিরোধের জের ধরে ও এলাকায় তাদের একক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইজাজকে মাথায় পিস্তল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে।

পুলিশের কাছে দেয়া জয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালাল হোসেন খোকা এবং জয় খুবই ঘনিষ্ঠ, ইজাজও তাদের সাথে চলাফেরা করতো, তারা একই পাড়ার বাসিন্দা। কলেজপাড়া এলাকায় এককভাবে প্রভাব বিস্তার করতো খোকা ও জয়। তবে তাদের সব সিদ্ধান্ত ইজাজ ও তার সাথে কয়েকজন মেনে না নিয়ে কিছু কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতো। আর এ কারনেই ইজাজ ও তার কয়েকজন বন্ধুর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলো খোকা ও জয়। এই বিরোধ আস্তে আস্তে চরম আকার ধারন করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়, মামলার অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) জয়নাল আবেদীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ বিল্লাল হোসেন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তিতাস ও নরসিংদী গ্যাস ফিল্ডে ৫টি কম্প্রেসর স্থাপন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 14 November 2023, 1591 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
তিতাস ও নরসিংদী গ্যাস ফিল্ডের কূপগুলোতে গ্যাসের চাপ বাড়িয়ে উত্তোলন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে স্থাপন করা হচ্ছে পাঁচটি ওয়েলহেড কম্প্রেসর। ইতোমধ্যে তিনটি কম্প্রেসর স্থাপন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দুইটি কম্প্রেসর বসানোর জন্য ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়েছে। আজ ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কম্প্রেসরগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

banner

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস্ কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক পরিচালিত পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডের মধ্যে তিতাস গ্যাস ফিল্ডটি অন্যতম বৃহৎ। প্রতিদিন তিতাসের ২৩টি কূপ থেকে ৩৯২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। তবে প্রাচীন এই গ্যাস ফিল্ডের কূপগুলোতে গ্যাসের চাপ ক্রমাগত কমছে।

বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাপ ৭০০ পিএসআই হলেও তিতাসের কূপগুলোতে কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ পিএসআই। ফলে জাতীয় গ্রিডে চাপের সাথে সমন্বয় রেখে গ্যাস উত্তোলন এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশন ‘এ’ ও ‘সি’- তে দুইটি কম্প্রেসর স্থাপন করা হয়েছে। একই কারণে নরসিংদী গ্যাস ফিল্ডেও একটি ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশন ‘ই’ এবং ‘জি’- তে আরো দুইটি কম্প্রেসর বসানো হচ্ছে। যার ফলে জাতীয় গ্রিডে চাপের সাথে সমন্বয় রেখে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে। কম্প্রেসরগুলো স্থাপনে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৮২২ কোটি টাকা। অর্থায়ন করছে জিওবি এবং জাইকা।

বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সুলতান সাংবাদিকদের জানান, তিতাস সহ অন্যান্য গ্যাস ফিল্ডের বন্ধ হয়ে যাওয়া কূপগুলো ওয়ার্কওভার এবং নতুন কয়েকটি কূপ খনন করা হচ্ছে। এগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে সামগ্রিকভাবে গ্যাস ফিল্ডগুলোতে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে।

ওয়েলহেড কম্প্রেসর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন উপলক্ষে জেলা শহরের ঘাটুরাস্থ তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ‘এ’ লোকেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সুলতান, মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) উত্তম কুমার সরকার ও কোম্পানি সচিব মো. হাবিবুর রহমানসহ তিতাস গ্যাস ফিল্ডের অন্যান্য কর্মকর্তারা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।