চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। ধান শুকানোর ‘খলা’ দখল নিয়ে এ সংঘর্ষ হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৪ রাউন্ড গুলি ও তিন রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, পরমানন্দপুর গ্রামের সরকারি একটি জায়গায় অনেক দিন যাবৎ সাব্বির ও তার লোকজন দান শুকায়। বৃহস্পতিবার কাঞ্চন গ্রুপের লোকজন ওই জায়গার মাটি কেটে দখলে নিতে চায়। এরই জের ধরে দুই পক্ষের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ঝগড়ার নেতৃত্ব দেন সানাউল্লাহ গোষ্ঠীর কাঞ্চন মিয়া এবং বুইল্লার দলের পক্ষে জিয়াউল আমিন। পরে সোনাউল্লাহর পক্ষে যোগ দেয় খাঁ বাড়ি, কৈবর্তবাড়ির লোকজন। আর বুইল্লার বাড়ির সাথে যোগ দেয় বুদ্ধির গোষ্ঠী, বড়বাড়ি ও উজিবাড়ির লোকজন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫০ জন আহত হয়।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জানান, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ লাঠিপেটার পাশাপাশি গুলি ও টিয়ার শেল ছোড়ে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার সময় দুটি ভেকু ও তিনটি ট্রাক্টর জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভেকু ও ট্রাক্টর জব্দ করেছে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিলে কয়েকটি চক্র ফসলি জমি খননযন্ত্র দিয়ে পুকুরের মতো কেটে মাটি উত্তোলন করছেন। সে সব মাটি ট্রাক্টরের মাধ্যমে নিয়ে পুকুর ও জলাশয় ভরাট করছেন। তারা ফসলি জমিগুলোতে নষ্ট করে ফেলছেন।
বিকেলে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা কালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে ভূমিখোরেরা পালিয়ে যাই। পরে অভিযানে দুটি ভেকু ও তিনটি ট্রাক্টর জব্দ করে স্থানীয় মেম্বারের জিম্মায় রাখা হয়।
তিনি আরো জানান, এর আগে ধরন্তি বিলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা এক জনকে আটক করে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। ধুরন্তি বিলে চলতি মাসে এটি পঞ্চম অভিযান। এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় সরাইল থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস (১৪) নামে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আজ ২০ নভেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে আজবপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জান্নাতুল ফেরদৌস উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আজবপুর এলাকার মৃত আসিদ মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জান্নাতুল ফেরদৌসের জন্মের আগেই তার বাবা আসিদ মিয়া মারা যায়। তারপর মোর্শেদা বেগম মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে জান্নাতুল ফেরদৌসকে বড় করেন। সকালে মোর্শেদা বেগম বাজারে গেলে এ সুযোগে জান্নাতুল ফেরদৌস ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা দরজা ভেঙ্গে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে দুপুরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছি। তবে কি কারণে গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরী আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে পূজা উদযাপন কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরাইল উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ইউএনওর কার্যালয়ে আজ ৫ অক্টোবর বিকেলে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বী নেতৃবৃন্দের সাথে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের সভাপতিত্বে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, সরাইল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, সরাইল বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. তারেক রহমান, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মোছা. বিউটি আক্তার, শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল হুদা চৌধুরী বাদল, নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনসুর হোসেন, সরাইল উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দেবদাস সিংহ রায়,সাধারণ সম্পাদক ঠাকুর ধন বিশ্বাস, সরাইল উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাধারণ সম্পাদক মো. তাসলিম উদ্দিন, সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সরাইল কালিবাড়ি পূজা মন্ডপের সভাপতি দিলীপ বণিক প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনে বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরা হয়। এবার সরাইল উপজেলায় ৪৭টি পূজা মণ্ডপে দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে বলে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যায় ধুকছে। দীর্ঘদিন ধরে গাইনি ও সার্জারি চিকিৎসকসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদায়ন না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এতে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ গুরুতর রোগীদের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে অকেজো হয়ে পড়ে আছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবায় ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০১২ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাও করা হয়। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। তবে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এর সুফল পাচ্ছেন না উপজেলাবাসী।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্বনয়হীনতার কারণে সেখানে বিরাজ করছে চিকিৎসক সংকট। হাসপাতালটি পরিচালনায় মেডিকেল অফিসার ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিলিয়ে ৩০ জন থাকার কথা। কিন্তু সেখানে বর্তমানে ২২ জন চিকিৎসক দিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে কার্যক্রম। বিশেষ করে ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে গাইনি, সার্জারি, চর্ম ও নাক-কান-গলার চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, গাইনি চিকিৎসকের অভাবে গত এক বছরে হাসপাতালটিতে একটি সিজারও হয়নি। বর্তমানে ছোট খাট ১-২টি অপারেশন ছাড়াও গুরুতর কোনো অপারেশন হচ্ছে না। এতে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অনেকটা অকেজো হয়েই পড়ে আছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জনসাধারণ সেবা না পেয়ে ছুটতে হচ্ছে জেলা সদর হাসপাতালসহ আশ পাশ প্রাইভেট ক্লিনিকে। বিশেষ করে গর্ভবর্তী নারীদের নিয়ে অন্যত্র যাতায়াত করার ফলে তাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে।
এছাড়াও প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে অতিরিক্ত খরচ করে স্বাস্থ্য সেবা নিতে হয়। এতে হতদরিদ্ররা অনেকটা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। গত ৮ মাস আগে একজন গাইনি চিকিৎসককে এই হাসপাতালে পদায়ন করা হলেও তিনি কেবল যোগদান করে আর একদিনের জন্যও হাসপাতালে আসেননি। পরে তিনি এখান থেকে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যান। এ অবস্থায় দ্রুত সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
সরাইল মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুব খান বাবুল বলেন, প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণের পর প্রান্তিক জনপদের হতদরিদ্ররা কম খরচে সরকারি চিকিৎসা পাওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে উপজেলাবাসী তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটির আরো একটি সমস্যা হচ্ছে এখানে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ও গাইনি চিকিৎসককে একত্রে পদায়ন করা হয় না। এতে বছরের পর বছর ধরে সিজার বা সার্জারির কাজ ব্যাহত হয়ে আসছে। আমরা চাই সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে হাসপাতালটি পরিচালিত হোক।
চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নোমান মিয়া জানান, দ্রুত চিকিৎসক পদায়নের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবেই চলছে।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. একরাম উল্লাহ জানান, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও গর্ভবতী নারীদের নিরাপদ সন্তান প্রসব নিশ্চিত করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দ্রুত সময়ের মধ্যে গাইনিসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পদায়ন করা হবে। সেই সঙ্গে সিজারিয়ান বিভাগ দ্রুতই পুরোদমে চালু করা হবে। এতে উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ কমে আসবে।