চলারপথে রিপোর্ট :
২য় ধাপের তফসিলে আগামী ২১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
চলছে মনোয়নপত্র দাখিলের কার্যক্রম। এবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হচ্ছে। ২১ এপ্রিল মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ। এদিকে, শনিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন। এছাড়াও কয়েকজন প্রার্থী আবেদন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। মনোনয়ন দাখিল করা প্রার্থীরা সবাই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে সূত্রে জানা গেছে। ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই ও ২ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আবুল কাসেম ভূইয়া, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন ভূইয়া, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সামদানী (ফেরদৌস)।
এছাড়াও বাছির মো. আরিফুল হক, মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া ও জাহাঙ্গীর আলম নামে দুজন আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, মোঃ জুয়েল রানা, মনিয়ন্দ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাজিদুল ইসলাম ওরফে মিন্টু মৃধা ও গোলাম মোস্তফা। সোহেল রানা নামে একজনের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পিয়ারা আক্তার পিওনা, রোকসানা আক্তার, তানজিনা আক্তার ও মনিয়ন্দ ইউপির সাবেক মেম্বার বিনা আক্তার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে প্রতিটি পদে একজন করে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষে সম্প্রতি সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে একটি সভা হয়।
সভায় উপস্থিত প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন করার বিষয়ে একমত হয়। অপর দিকে আওয়ামীলীগের কয়েকজন প্রবীণ একই বিষয়ে পৃথক একটি সভা করেন উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে। এরপর থেকেই উপজেলা নির্বাচন নিয়ে জনমনে কিছুটা আগ্রহ বেড়েছে। আওয়ামীলীগের দৃশ্যমান দলীয় কোন্দল না থাকলেও চেয়ারম্যান পদটি নিয়ে একটি স্নায়ু চাপ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। দু’পক্ষই চাইছে চেয়ারম্যান পদটি নিজস্ব বলয়ে রাখতে।
আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা অন্য কোন পার্টির নেতাকর্মী মনোনয়ন দাখিল করেননি। আখাউড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ শিকার বলেন, ২য় ধাপে আগামী ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মায়ের মৃত্যু শোক সহ্য করতে না পেরে বিলাপ করতে-করতে মারা গেলেন ঝান্টু মোল্লা (৫০) নামে এক ব্যক্তি। রোববার রাত ৮টায় উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া মোল্লাবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আজ ৬ নভেম্বর সোমবার বেলা ১১টায় জানাযা শেষে ঝান্টুর মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ইদ্রিস মোল্লার ছেলে।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে বার্ধক্যজনিত কারণে ঝান্টুর মা রেজিয়া খাতুন (৭০) মারা যান।
স্থানীয় এলাকাবাসী দাবি করেছেন, মায়ের মৃত্যুতে মাতম করছিলেন বড় ছেলে ঝান্টু মোল্লা। শোক সইতে না পেরে বিলাপ করতে থাকেন তিনি। এতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে মা-ছেলের মৃত্যুতে ঝান্টু মোল্লার স্ত্রী হাজেরা ও দুই মেয়ে সুমাইয়া এবং সামিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা পারিবারিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর, সোহাগ ভূঁইয়া ও আলম মোল্লা বলেন, ঝান্টু মোল্লা মা ভক্ত ছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে তার মায়ের মৃত্যুর পর সে লাশের পাশে বসে কাঁদছিলেন। তার মাকে কবরস্থ করার পর শোক সইতে না পেরে বিলাপ করতে থাকেন তিনি। রবিবার রাত ৮টার দিকে বুকে ব্যথা ওঠে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সোমবার জোহরের নামাজের পর জানাযা শেষে ঝান্টু মোল্লার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে শনিবার একই কবরস্থানে তার মায়েরও দাফন করা হয়েছে।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. রহিম মিয়া বলেন, মায়ের শোকে ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। শুনেছি তাদের শোকে পরিবারের আরো তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুই নারী ও এক শিশুকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আটককৃতদের মধ্যে মা ও তার শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে বিজিবি। মামলায় তাদের সহযোগিতাকারীকেও আসামি করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার হিজুলিয়া গ্রামের রহমান ভূঁইয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩২) ও তার ছেলে মো. ফারহান (০৩) এবং নোয়াদিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (২৫)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে দালাল মো. মাসুদ মিয়া অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার জন্য ওই তিনজনকে সহযোগিতা করেন। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মানব পাচারকারী দালাল মাসুদ পালিয়ে যায়।
২৫ বিজিবি সরাইল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ফকিরমোড়া বিওপির একটি টহল দল আখাউড়া উপজেলার আব্দুল্লাহপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ওই তিনজনকে আটক করে। পরে তাদের আখাউড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে ফরিদা সন্তানসহ চিকিৎসার জন্য ও জেসমিন আক্তার জুতা কারখানায় কাজ করতে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মী রানী দাস। তিনি ভারত থেকে স্বামী ও সন্তান নিয়ে আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
যাত্রাকালে আগরতলা ইমিগ্রেশনে সুষ্ঠু ও স্বাচ্ছন্দ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এলেও আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে রীতিমত অবাক হক তিনি। বসারও সুব্যবস্থা নেই এখানে।
ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ালেও ছোট কক্ষটিতে নেই কোনো ফ্যান। হঠাৎ ১২ বছর বয়সী ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা করার জন্য কোনো স্থান না পেয়ে ইমিগ্রেশন ভবনের এক কোনায় বসে তার সেবা যত্ন করেন। আশেপাশে ছিল না কোনো টিউবওয়েল। যাও বা ট্যাংকের পানি জুটেছে, তাও তীব্র তাপদাহে তপ্ত। তা দিয়েই ছেলেকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান।
লক্ষ্মী রানী দাসের বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশনে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ও সুন্দর পরিবেশে আরামে সব কাজ করে এসেছি। বন্দর থেকে গাড়িতে আমাদের ফ্রি চেকপোস্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। অথচ আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে এসে নাজেহাল হতে হলো। এখানে কোনো কিছুরই সুব্যবস্থা নেই। একতলা পুরোনো ভবনের ছোট্ট কক্ষে শত শত লোক ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে। এখানকার ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনা দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। এখানে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা বাড়ানো উচিত। আশা করব, বাংলাদেশ সরকার দুই দেশের যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে ইমিগ্রেশন উন্নত করবে।
আগরতলা থেকে আসা আরেক যাত্রী খোকন মিয়া বলেন, আমি গত ছয় বছর ধরে এ চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করছি। ইমিগ্রেশনটি যে হালতে দেখেছিলাম, সে হালতেই আছে। একজন রোগী এলে যে বসবে, সে উপায় নেই। এখানে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সে তুলনায় খুবই কম আছে।
বন্দরটি ঘুরে দেখা গেছে, মূলফটক পার হলেই একতলা বিশিষ্ট তিন রুমের একটি ভবন। এর মধ্যে দুটি ছোট রুম ও একটি মাঝারি রুম। একটিতে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বসেন, আরেকটি হচ্ছে ব্যারাক। মাঝারি কক্ষটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। পুরোনো ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে গেছে। প্রতিদিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, তাই গাদাগাদি করেই চলে কার্যক্রম। যাত্রীদের মালপত্র বারান্দায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বসার জন্য ইমিগ্রেশন কক্ষে কোনো জায়গা নেই। আর বাইরে টিনের একটি ছাউনি আছে, যেখানে ১৫/২০টি চেয়ার থাকলেও কোনো টেবিল নেই। অথচ ফরম পূরণ করতে টেবিল প্রয়োজন। ফরম পূরনের জন্য দেখা গেছে কেউ বারান্দার মেঝেতে বসে, আবার কেউ কেউ বিদ্যুৎতের জেনারেটরের ওপরে ফরম রেখে পূরণ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্যও জায়গা নেই। কক্ষটিতে এসির ব্যবস্থা থাকলেও ভিড় থাকায় যাত্রীদের লাইন কক্ষের বাইরে বারান্দায় চলে যায়। ফলে এসিগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় গরমে কষ্ট সহ্য করে ইমিগেশনের কাজ শেষ করতে হয়।
তবে বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। কাস্টমসের কাজ করতে পাড়ি দিতে হচ্ছে অন্তত দুইশ গজ দূরবর্তী অন্য আরেকটি ভবনে। মূলত এক ভবন ও এক ছাদের নিচে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ করতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চালু হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট থেকে অনেকেই আখাউড়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার কররে ভারতে যাতায়াত করছেন।
কাস্টমস সূত্র জানায়, এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অত্যন্ত এক হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করছেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ভারতে যান। যা থেকে প্রতি মাসে ৭৫ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে সরকারের। বিগত ছয় মাসে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
এদিকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সীমান্ত আইনের অজুহাতে বিএসএফ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
মৌলভীবাজার জেলা থেকে ভারতগামী বাংলাদেশি যাত্রী সুমন আহমেদ বলেন, আমি ইমিগ্রেশনের পরিবেশ দেখে হতবাক হয়ে গেছি। এখানে লাইনের কোনো শৃঙ্খলা নেই। কোনো ধরনের আধুনিকায়ন নেই। অথচ আগরতলা ইমিগ্রেশনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফারহানা মিলি নামে এক নারী চিকিৎসক তার বাবার চিকিৎসা জন্য ভারতে যাওয়া সময় আক্ষেপ করে বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশন ও আখাউড়া ইমিগ্রেশনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমাদের এখানে ভালো ব্যবস্থা নেই। মালপত্র রাখার জায়গা পাই না। আরেকজনের কাছে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। বছরের কয়েকবার যেতে হয়। তবে এর উন্নতি দেখছি না। এখানে দ্রুত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগুক সেই কামনা করি।
মুক্তি খান নামে এক যাত্রী বলেন, বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নামেমাত্র টিকে আছে। জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। স্থায়ী ভবন তৈরির পর এক ছাদের নিচে সব পরিষেবা পাওয়া গেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরও বেড়ে যাবে। যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগও লাঘব হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ইমিগ্রেশন দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালানোর জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে, তা খুবই অপ্রতুল। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সেবার মান বাড়বে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করলেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের পর্যাপ্ত সুবিধার কমতি রয়েছে। আমাদের নতুন একটি ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ চলছিল, তা বিএসএফের বাধায় বন্ধ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে আমরা ভবনটির কাজ আবার শুরু করতে পারব। এছাড়া বলে রাখি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে একটি আধুনিক বন্দর নিমার্ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৩.৫৭ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ হাতে নিয়েছি। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন স্থলবন্দর, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। যাত্রীসেবার মানও উন্নত হবে।
তিনি আরো বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এবং আধুনিক স্থলবন্দরটি তৈরি হলে আখাউড়াই হবে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দর।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় রেলসেতু পারাপারের সময় ৪ জন নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেই রেলসেতুটির উভয় পাশে দেওয়া হয়েছে বাঁশের নিরাপত্তা বেষ্টনী। পাশাপাশি রেললাইন এলাকায় মানুষের চলাচল নিরাপদ রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, ঢাকা-সিলেট রেলপথের খরমপুর রেলসেতুটির উভয় পাশে বাঁশ দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে যাতে রেলসেতুর ওপর দিয়ে কেউ চলাচল করতে না পারে। ট্রেন আসার সময় বাঁশগুলো সরিয়ে ফেলা হয়, চলে গেলে আবার বাঁশ বেঁধে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, তিতাস নদী হয়ে নৌকায় করে এসে অনেকেই রেললাইনের পাশ দিয়ে খরমপুর মাজারে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে অতিরিক্ত পুলিশ রেললাইন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছে। ১২ আগস্ট শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কমিটির সদস্যরা। এ সময় তারা সরেজমিনে ঘটনার খোঁজ-খবর নেন।
এর আগে বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ঢাকা) ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। আখাউড়া সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (রেলওয়ে) মেহেদী হাসান আহমেদ তারেককে কমিটির আহ্বায়ক করে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সহকারী কমাডেন্ট, একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা এবং একজন সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে ডিআরএম (ঢাকা) মো. শফিকুর রহমান বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায় ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকে আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুর কল্লা শহীদ (র.) বার্ষিক ওরস শুরু হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাজার শরীফের পশ্চিম পাশে ঢাকা-সিলেট বাইপাস রেলপথ দিয়ে ভক্ত-আশেকানরা মাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন রেলওয়ে সেতু অতিক্রম করার সময় ট্রেনের থাক্কায় এবং নদীতে ছিটকে পড়ে চারজনের মৃত্যু হয়। ওই রাতেই ২ জন এবং পরদিন শুক্রবার দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আখাউড়ায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজে আজ ২৫ ডিসেম্বর সোমবার দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ ৯৩৬ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
সকালে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ ইকবাল হোসেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রাবেয়া আক্তার, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ শিকদার, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নূরে আলম প্রমুখ।
এসময় রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান ভোট গ্রহণ পদ্ধতি এবং আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহবান জানান তিনি।
উদ্বোধন শেষে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, জেলায় ৬টি আসনে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, জবাবদিহিমূলক করার জন্য আমরা কাজ করছি।
নির্বাচন কমিশন একটি স্বচ্ছ নির্বাচন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আখাউড়ায় উপজেলায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হলো। স্বচ্ছ নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য তাদেরকে হাতে কলমে শেখানো হবে।
পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলায় ভোট কেন্দ্র ৪৪টি, বুথ ২৬৯টি। প্রিজাইডিং অফিসার ৪৪ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২৯৬জন এবং পুলিং অফিসার ৫৯২ জন।