অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ ২০ এপ্রিল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, আর সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন আছে আর অনিবন্ধিত অনলাইন আছে ২১৩টি।
অর্থাৎ মোট ৪২৬ অনলাইন আছে। বেশ কিছু নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এর বাইরে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সবগুলো নিউজ পোর্টালের তালিকা করা হয়েছে। নিবন্ধন ও আবেদনের বাইরে থাকা পোর্টালগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তালিকা বিটিআরসিতে পাঠানো হচ্ছে।
এর বাইরে যতগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, যেগুলো অনিবন্ধিত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ছিল সাংবাদিকদের। অনলাইন গণমাধ্যমের কমিটি, প্রেস ক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনও একই দাবি করেছে। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, তারপর নতুন করে যারা আবেদন করবে, তখন তা চালু হবে।
আবেদন না করলে চালু হবে না। আবেদন করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগ পর্যন্ত চালু থাকবে। কারণ তাকে চলতে হবে, দেখতে হবে যে কেমন হচ্ছে। তারপর যদি ছাড়পত্র না হয়, তখন আবার বন্ধ। কিন্তু আবেদন করল না, কোনো প্রক্রিয়ায় যায়নি, সেগুলো যদি চলে, সেখানে যদি অসত্য ও অপতথ্যের মাধ্যমের চকটদার খবর দেওয়া হয়, তাহলে সেই ধরনের সাংবাদিকতা পেশাদারির সঙ্গে যাঁরা সাংবাদিকতা করছেন, তাঁদের ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষার স্বার্থে, সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে পাস করা হবে। সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার হিসেবে মুক্ত গণমাধ্যমের পরিবেশ তৈরি করতে চাই।
তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশে কিছুটা অনীহা রয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য চাওয়া হলে তথ্য দিতে হবে। সেটাই করার জন্য আমরা মন্ত্রীসহ প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে কাজ করছি। কারণ তথ্য না থাকলে অপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়। অসত্য তথ্য দিয়ে যারা সরকারের সমালোচনা ও অপ্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান মন্ত্রী।’
এ সময় সাংবাদিকদের কল্যাণ ফান্ডে ৬০ কোটি টাকা রয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সংলাপে নির্বাচনের রোডম্যাপসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
আজ ৫ অক্টোবর শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বেলা ২টা ৩৫ মিনিটে সংলাপ শুরু হয়ে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা হয়।
এতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানায় বিএনপি।
সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আমরা একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছি।
তিনি বলেন, বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন সংস্কার কমিশনে না যায়, সেকথা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমরা বলেছি যে, ফ্যাসিস্ট সরকারের ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সকল ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করতে বলেছি। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে যেসব প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনার ছিল, তাদের ভুয়া ও ব্যর্থ নির্বাচন, পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন করার অভিযোগে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান ওনাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার।
বিএনপির দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কী বলেছেন জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব বলেন, বিষয়গুলো অত্যন্ত সহযোগিতার সঙ্গে তারা দেখছেন। তারা মনে করেন, আমাদের দাবিগুলো জনগণের দাবি, আমাদের দাবিগুলো তাদেরও দাবি।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে সংবিধান ধ্বংস ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের ‘মূল হোতা’ অভিহিত করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
প্রশাসনের ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর কর্মরত আছেন জানিয়ে তাদের অপসারণ, জেলা প্রশাসক নিয়োগে নতুন তালিকা এবং যেসব জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের নিযোগ বাতিল, ফ্যাসিবাদের সময়ের চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিলের কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তবর্তী সরকারের মধ্যে দুই-একজন আছেন, যারা বিপ্লব-গণঅভ্যুত্থানের যে মূল স্পিরিট তাকে ব্যাহত করছেন, তাদের সরানোর কথা বলেছি। আমরা গত ১৫ বছর ধরে সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিতদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি নিশ্চিত করার জন্য বলে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আামরা বলেছি যে, বিচার বিভাগের হাইকোর্ট বিভাগে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি। হাইকোর্ট বিভাগে বেশির ভাগ নিয়োগই ছিল দলীয় ভিত্তিতে এবং প্রায় ৩০ জন বিচারক বহাল তৈবিয়তে কাজ করছেন এখনো। এদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওিয়ার জন্য বলেছি। দলকানা কিছু বিচারক আছেন, তাদের অপসারণের কথা বলেছি। একই সঙ্গে অতিদ্রুত পিপি ও জিপি নতুনভাবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা লক্ষ করেছি, যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে… দুর্নীতি অথবা হত্যার সুনির্দিষ্ট মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে। এটা খুব উদ্বেগজনক। এই বিষয়টা আমরা দেখার জন্য বলেছি।
তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে শেখ হাসিনার শাসনামল পর্যন্ত সকল মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা ও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, শুনতে পাই, কিছু জায়গায় সাবেক মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। কীভাবে পালিয়ে যাচ্ছে, কার সহযোগিতায় পালাচ্ছে এই বিষয়গুলো দেখার জন্য বলেছি।
তিনি বলেন, আজকে পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতে আছেন। ভারতে থেকে তাকে কেন্দ্র করে, তার মাধ্যমে যে সমস্ত ক্যাম্পেইন চলছে, যে সমস্ত অপপ্রচার চলছে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে ভারতের সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য এবং তাকে ওই অবস্থা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি, তারা যেন ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে কারা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের একটি দল এসেছে বাংলাদেশে। যারা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে জড়িত আছেন তারা জাতিসংঘের টিমকে সেভাবে সহযোগিতা করছেন না। এ বিষয়ে আমরা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, সনাতনী কিছু মানুষ সবাই না, তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জনগণকে উস্কে দিচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। হিন্দু কমিউনিটির ওপর নির্যাতন হচ্ছে ইত্যাদি কথা বলছে, যা সর্বৈব মিথ্যা। এটা তাদের সুদূর পরিকল্পনা। এই কথাগুলো গুরুত্বের সাথে বলেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
সংলাপে অংশ নেওয়া বিএনপির অন্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এতে সরকারের দিক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।
অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া নালায় পড়ে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ৭ আগস্ট সোমবার সকালে হাটহাজারী উপজেলার ইসলামিয়া হাট বাদামতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ছাত্রীর নাম নিপা পালিত (২৪)। তিনি একই এলাকার উত্তম পালিতের মেয়ে। হাটহাজারী সরকারি কলেজের বিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সোমবার তার দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষায় অংশ নিতে গ্রামের বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।
নিপা পালিতের দুর্ঘটনাস্থল প্রশাসনিকভাবে হাটহাজারী উপজেলায় হলেও এটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের অধীন। গত দুইবছরে খোলা খাল-নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীসহ মারা গেছেন পাঁচজন। গত সাত বছরে মারা গেছেন নয়জন। এরমধ্যে একজনের খোঁজ মেলেনি। আহত হয়েছেন অনেকে। তবুও খোলা নালা-নর্দমা সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সিটি করপোরেশন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিতে হাটহাজারী উপজেলার বাদামতল এলাকাটি পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকাসহ সড়কও পানিতে তলিয়ে যায়। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নিপা পরীক্ষায় অংশ নিতে নাজিরহাট কলেজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন। এ সময় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে সড়কের পাশে নালায় তলিয়ে যান তিনি। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ প্রসঙ্গে হাটহাজারী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক আবু তালেব জানান, নিপার দ্বিতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষা চলছিল নাজিরহাট কলেজ কেন্দ্রে। ব্যবস্থাপনা চতুর্থ পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিতে ওই কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তিনি।
নিপা পালিতের দাদা বাদল পালিত জানান, প্রবল বৃষ্টির মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছাতা মাথায় দিয়ে বাসা থেকে বের হন নিপা। গাড়ি ধরতে মূল সড়কের একপাশ দিয়ে হাঁটছিলেন তিনি। হঠাৎ পানির তোড়ে নালায় পড়ে যান নিপা। সেখান থেকে আর উঠতে পারেননি। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোফরান উদ্দিন জানান, জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে এসআই জানান, নিপা মৃগী রোগী ছিলেন। তাদের বাড়ির আশপাশ ও সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি মাড়িয়ে হাঁটতে গিয়ে তিনি তলিয়ে যান। মৃগী রোগী হওয়ায় তিনি আর উঠতে পারেননি বলে পরিবার ও স্থানীয়দের ধারণা।
সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী মো. শফিউল আজিম বলেন, ‘এটি গ্রামীণ এলাকা। এখানে নালা নেই। বাড়ি থেকে ৩০-৪০ গজের মধ্যে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেসে গেছে ওই ছাত্রী। মৃগী রোগী হওয়ায় পানি থেকে আর উঠতে পারেননি।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট নগরীর মুরাদপুরে জলাবদ্ধতায় সড়ক-খাল একাকার হয়ে গেলে তাতে পড়ে নিখোঁজ হন সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। এ ঘটনার জন্য সিডিএকে দায়ী করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় চসিককেও দায়ী করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে লাল পতাকা ও ব্যানার টাঙানো এবং নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরিসহ দুর্ঘটনা রোধে ৯টি সুপারিশ করেছিল ফায়ার সার্ভিস। কোনো সুপারিশই পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি সিডিএ। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি সরকার।
একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর নগরীর আগ্রাবাদে খোলা নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার। ৬ ডিসেম্বর নগরীর ষোলশহর এলাকায় চশমা খালে পড়ে নিখোঁজ হয় ১২ বছর বয়সী শিশু কামাল উদ্দিন। তিন দিন পর মির্জাখাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এছাড়া ২০২১ সালের ৩০ জুন এই নগরীর নাসিরাবাদ এলাকায় চশমা খালে পড়ে যায় একটি সিএনজি অটোরিকশা। প্রচণ্ড স্রোতে ভেসে যান চালক সুলতান ও যাত্রী খাদিজা বেগম। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে আগামীকাল ২৬ নভেম্বর রবিবার। এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফল হস্তান্তরের পর বেলা ১১টায় স্ব স্ব কলেজ ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে একযোগে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। এবার শিক্ষার্থীরা কলেজে না গিয়ে ঘরে বসেই ফল দেখতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, কলেজ নোটিশ বোর্ড ছাড়াও বোর্ডের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে ও এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফল জানতে শিক্ষার্থীকে প্রথমেwww.educationboardresults.gov.bd এ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
পরীক্ষার ফল জানবেন যেভাবে
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইটে (www.educationboardresults.gov.bd) ঢুকে পরীক্ষার্থীর রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর টাইপ করে ফল জানতে পারবেন।
শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করতে পারবেন এই ওয়েবসাইট থেকে। তা করতে চাইলে সমন্বিত ওয়েবসাইটের রেজাল্ট কর্নারে ক্লিক করে থেকে ফলাফল ডাউনলোড করা যাবে।
এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। এইচএসসির ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৩ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আসবে ফল।
আলিমের ফল পেতে ALIM লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৩ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৩ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফলাফল জানানো হবে।
গত ১৭ আগস্ট এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা কিছুদিন পর শুরু হয়েছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী একটি বাদে সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হয়েছে। শুধু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) পরীক্ষা শেষ সময়ে এসে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বব্যাপী অপ ও ভুল তথ্য প্রতিরোধে বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিশেষ অধিবেশনের আগে তুরস্কের যোগাযোগ অধিদপ্তরের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ফাহরেতিন আলতুনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এ কথা জানান মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে অপতথ্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এগুলো ছড়ানো হচ্ছে। বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশও এর নেতিবাচক শিকার। অপতথ্য প্রতিরোধ তাই এখন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে যৌথ সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ অপরাপর সহযোগিতার বিষয়ে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় যেভাবে ক্রমাগত বিভ্রান্তিকর অপতথ্য ছড়ানোর ঘটনা ঘটছে, তা বিশ্ব খুব কমই দেখেছে। এ ধরনের অপতথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য, প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অপ ও ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে আশ্বস্ত করেন তুরস্কের যোগাযোগ অধিদপ্তরের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ফাহরেতিন আলতুন।
অনলাইন ডেস্ক :
সিলেটের রিজেন্ট পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে জনতার হাতে ধরা পড়া ১৬ তরুণ-তরুণীকে আটকের পর আটজনকে ১০ লাখ টাকা কাবিন ধার্য্য করে বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী। অপ্রাপ্ত বয়স্ক অপর আটজনকে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনা ঘটে ১৯ জানুয়ারি রবিবার বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকায় অবস্থিত রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে।
জনতার হাতে আটকের পর তরুণ-তরুণীরা জানায়, তাদের কারো বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ ও ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর এবং মৌলভীবাজারে।
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছিল। রবিবার দুপুরে জনতা রিসোর্টের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে আটক করা হয়। স্থানীয়রা এসময় তাদের অভিভাবকদের খবর দেন। পরে কথিত প্রেমিক প্রেমিকাদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ক আটজন ছেলে-মেয়েকে প্রকাশ্যে কাজী ডেকে অভিভাবকদের সম্মতিতে বিয়ে পড়িয়ে দেওয়া হয়। আর অপ্রাপ্ত বয়স্ক আট তরুণ-তরুণীকে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়। বিয়ে পড়াতে কাবিনে ১০ লাখ টাকা করে ধার্য করেন জনতা। এছাড়া কাজির বিয়ে পড়ানোর টাকাও জনতা চাঁদা তুলে পরিশোধ করেন।
এসময় জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুলও উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি জানান, মালিক পক্ষের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করেন, গ্রামের ভেতরে করা রিসোর্টটিতে বিশ্রামাগারে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও প্রেমিক-প্রেমিকাদের অসামাজিক কার্যকলাপ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। এছাড়া এখানে কোনো পর্যটক আসেন না। এ কারণে গ্রামের তরুণ সমাজের ওপরে প্রভাব পড়ছে। এলাকাবাসী এ ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে রবিবার রিসোর্টের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে ভাড়া করা কক্ষ থেকে অসামাজিক কার্যকলাপরত অবস্থায় আটক করেন। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পার্কটি বন্ধ ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে অসহায় ছিলেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টটির মালিক সিলেট নগরের কুমারপাড়ার মো. মঞ্জু চৌধুরী। তিনি বলেন, পার্কটি নগরের ঝর্ণারপাড়ের হেলাল উদ্দিনকে চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য ভাড়া দেন। ভাড়ার মেয়াদও শেষ হয়েছে। তবে হেলাল উদ্দিন চুক্তিবদ্ধ হলেও নেপথ্যে থেকে প্রবাসী মিসবাহ উদ্দিন রুপন পরিচালনা করেন। এদিন ঘটনার পর পুলিশের তরফ থেকে রিসোর্টের মালিক মো. মঞ্জু চৌধুরীকে তলব করা হলে রাতে তিনি ভাড়ার বিভিন্ন কাগজাদি নিয়ে থানায় গিয়ে দেখা করেন।
সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। ওই সময় জনতা ১৬ তরুণ-তরুণীকে আটক করে অভিভাবকদের খবর দেন। তাদের সম্মতিতে আটজনকে বিয়ে দেওয়া হয়। অপর আটজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু জনতার রোষানলে পুলিশ কোনো কিছু করতে পারেনি।
সিলেটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও সেখানে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে আটকের বিষয়টি জানতে পারে। পরে এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তক্রমে অভিভাবকদের খবর দিয়ে বিয়ের আয়োজন করা হয়। যদিও বিষয়টি থানায় নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় করা যেত। এরপরও জোরপূর্বক কেউ কিছু করার অভিযোগ করলে পুলিশ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।