অনলাইন ডেস্ক :
এইচএসসি পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ ২১ এপ্রিল রবিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এইচএসসি পরীক্ষার অনলাইনের ফরম পূরণের চলমান কার্যক্রমের সময় আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলো। ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যাবে ৬ মে পর্যন্ত। বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের সময় ৭ মে থেকে শুরু হয়ে চলবে ১২ মে পর্যন্ত। ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যাবে ১৩ মে পর্যন্ত।
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৩০ জুন। এই পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হয়েছে ১৬ এপ্রিল থেকে। ফরম পূরণ চলার কথা ছিল ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এখন বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৫ মে পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, এবার পুনর্বিন্যাসকৃত (সংক্ষিপ্ত) পাঠ্যসূচিতে অনুষ্ঠিত হবে এইচএসসি পরীক্ষা।
কোনো বিভাগের জন্য কত ফি
পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ পত্রপ্রতি ১১০ টাকা, ব্যবহারিকের ফি বাবদ পত্রপ্রতি ২৫ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের ফি বাবদ পরীক্ষার্থীপ্রতি ৫০ টাকা, মূল সনদ বাবদ ১০০ টাকা, বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি বাবদ ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি বাবদ পরীক্ষার্থীপ্রতি ৫ টাকা নেওয়া হবে।
অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা অনিয়মিত ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। জিপিএ উন্নয়ন ও প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা তালিকাভুক্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০ টাকা। বিলম্ব ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।
কেন্দ্র ফি বাবদ প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে ৪৫০ টাকা ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ পরীক্ষার্থীদের পত্রপ্রতি ২৫ টাকা দিতে হবে। আর ব্যবহারিক উত্তরপত্র মূল্যায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা।
শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, বিজ্ঞান শাখার পরীক্ষার্থীদের মোট ২ হাজার ৬৮০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার জন্য ২ হাজার ১২০ টাকা করে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কোনো পরীক্ষার্থীর চতুর্থ বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা থাকলে এ ফির সঙ্গে অতিরিক্ত ১৪০ টাকা যুক্ত হবে। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কোনো শিক্ষার্থীর নৈর্বাচনিক বিষয়ে ব্যবহারিক থাকলে বিষয়প্রতি আরও ১৪০ টাকা যোগ হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মোহনগঞ্জে ৫টি মিষ্টি দোকানে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছে মোবাইল কোর্ট। আজ ১৭ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় পৌর শহরের কাচারি রোডে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ভূমি মো.জাহাঙ্গীর আলম। এসময় অস্বাস্থকর নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরি ও সংরক্ষণ। নষ্ট মিষ্টি দোকানে বিক্রি সহ বিভিন্ন অনিয়মের কারনে মো.আলী আসমানের মোহনগঞ্জ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। শংকর বাবুর মিষ্টি দোকানে ৫ হাজার টাকা, মনোরমা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ৫ হাজার টাকা, ও মিষ্টি মুখ দোকানে ২ হাজার টাকা ও অন্য একটা দোকানে ১হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এসময়
মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন। মেবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম জানান, নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরি করে, সমনে সুন্দর করে ডিসপ্লে করছে এসব দোকান। ময়লা সংযুক্ত এসব মিষ্টি খেয়ে শিশু সহ সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেপড়বে।
অনলাইন ডেস্ক :
পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান কম নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।
আজ ৯ মার্চ শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে ‘রেসিডেন্টদের ইনডাকশন প্রোগাম মার্চ-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় কম নয়। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের যে মেধা আছে, তার অনেক প্রমাণ আছে। আমরা ভুটান থেকে রোগী নিয়ে এসে চিকিৎসা দিচ্ছি। রোগী যে বাইরে যাচ্ছে এমন নয়। ভারত থেকেও রোগী আসছে। হাঙ্গেরি থেকে যে চিকিৎসক দল জোড়া মাথা আলাদা করেছিল, সেই অপারেশন রোগীদের অ্যানেস্থাসিয়া সে দেশের চিকিৎসকরা দিতে পারেননি। তাদের অ্যানেস্থাসিয়া দিয়েছিলেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা।
তিনি বলেন, আজকে যারা ইনডাকশনে রেসিডেন্ট হিসেবে বসে আছেন, তারা আগামীর দিনে চিকিৎসক হিসেবে কাণ্ডারি। ডাক্তার ও রোগীদের ভালো সম্পর্ক অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। শুধু ডাক্তারদের ওপর নির্ভর করে না। একটি হাসপাতালে ভালো কাজ একজন পরিচালক থেকে শুরু করে একজন অধ্যাপক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্ন কর্মীর ওপর নির্ভর করে। এদের সবার ওপর একটি হাসপাতালের সুনাম বৃদ্ধি নির্ভর করে।
নবীন চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা চিকিৎসকদের সম্মান এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারব যে কোনো একদিন এই দেশের মানুষ চিকিৎসকদের দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা নিচু করবে। এটি করতে হলে আমাদের একটু ধৈর্য ধরে রোগীদের কথা শুনতে হবে, ধৈর্য নিয়ে রোগীদের সেবা দিতে হবে। এজন্য সময় মতো হাসপাতালে যাব, আসব। এদেশের সাধারণ মানুষ বেশি কিছু চায় না। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে কথা বলা, সেবা দেয়া, কেমন আছেন জিজ্ঞেস করা এটুকুই চায়।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা উন্নতির যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সেটি আমাদের দিয়েই সম্ভব। আমাদের মনে রাখতে হবে, ঢাকায় সব কিছু না। আমরা চিকিৎসকদের ইনটেনসিভ দেব। আমাদের প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে এ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। আমি বিশ্বাস করি যদি তাকে সঠিক তথ্য দিয়ে বোঝাতে পারি তবে তিনি চিকিৎসকদের সব কিছু করবেন। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী এই প্রথম একজন চিকিৎসককে দায়িত্ব দিয়েছেন। রমজান মাসে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে মিটিং করব। এটি যাতে সংসদে পাস হয় সেজন্য আমি চেষ্টা করব।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার, বেসিক সায়েন্স ও প্যারা ক্লিনিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ প্রমুখ।
এবার ইনডাকশন প্রোগ্রামে ১ হাজার ৪২৩ জন চিকিৎসক অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার জন্য শপথ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে রেসিডেন্টদের শপথ বাক্য পাঠ করান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় ৪২ বোতল মদসহ ৩ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে হালুয়াঘাট থানা পুলিশ। মঙ্গলবার উপজেলার সমানিয়াপাড়া বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আজ ১৮ অক্টোবর বুধবার দুপুরে গ্রেফারকৃতদের বিরুদ্ধে অত্র থানায় মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এসআই জাহেদুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের দক্ষিণ লামুক্তা গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক এর পুত্র কবীর হোসেন (২৪), ইয়াকুব আলীর পুত্র সোয়েব (২০) ও তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র মকবুল হোসেন (৩৮)। এরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং অত্র থানায় এদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হালুয়াঘাট থানার সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে তল্লাশি চালিয়ে বিশেষ কায়দায় বস্তায় মোড়ানো আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় ৪২ বোতল মদসহ ৩ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হালুয়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় জানান, চলমান বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪২ বোতল ভারতীয় মদসহ ৩জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল উমারপুর ইউনিয়ননের হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা হামিদ মোল্লা (৮৬) ও তার স্ত্রী ফজিলা খাতুন (৭৭) দম্পতি। সংসারে ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের রয়েছে তাদের। যমুনা নদীর ভাঙনে বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলেরা যার যার মত সুবিধা মত জায়গায় চলে গেছেন। কিন্ত ৫ ছেলের সংসারে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ঠাঁই হয়নি। কয়েকদিন আগে তাদের উপজেলার সম্ভুদিয়া জান্নাতুল বাকি কবরস্থান এলাকায় নির্জন স্থানে ফেলে রেখে গেছেন স্বজনরা। এ ঘটনার পর তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। চলছে মামলার প্রস্তুতি।
জানা যায়, প্রায় ২ মাস আগে সেজ ছেলের মানিকগঞ্জের বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতিকে চৌহালী উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের হাঁপানিয়া চরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বৃদ্ধের ভাগ্নের বাড়িতে আশ্রয় হয়েছিল তাদের। সেখানেও অবহেলার শিকার হন তারা। এ অবস্থায় কয়েকদিন আগে পাশের বাঘুটিয়া ইউনিয়নে এ দম্পতির বড় মেয়ের বাড়ি সংলগ্ন সম্ভুদিয়া কবরস্থানের পাশে কাউকে না জানিয়ে ফেলে রেখে যায় স্বজনরা। সংবাদ পেয়ে এ দম্পতির বড় মেয়ে মনোয়ারা খাতুন বাবা-মাকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে মেয়ে মনোয়ারা খাতুন বলেন, আমি নিজেই স্বামী হারা। দরিদ্র সন্তানদের সংসারে থাকি। আমার পাঁচ ভাইয়ের কেউ বাবা মাকে ভরনপোষণ করে না। এই বৃদ্ধ বয়সে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগে আমাকে না জানিয়ে আমার বাড়ির পাশে বাবা- মাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। অভাব অনটনের সংসারে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা মাকে ভরণপোষণ আমার জন্য কষ্টসাধ্য। বিষয়টি জানতে পেরে অসহায় বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও বাগুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা এবং চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় দম্পতিকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সহায়তা করা হয়েছে। ওই দম্পতিকে সাময়িকভাবে তাদের মেয়ের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
ইউএনও মাহবুব হোসেন আরো বলেন, এই অসহায়তা দম্পতিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ঘর তুলে দেওয়ার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভরনপোষণ না করার অপরাধে ছেলেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বরিশালবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আবারও ক্ষমতায় আসতে পারলে বরিশালে ছয় লেনের রাস্তাসহ অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
আজ ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। যখন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আসলে দেশ এগিয়ে যায়। কাজেই এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
এ সময় নতুন ভোটারদের কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আহ্বান, যারা প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন, নিশ্চয় চাইবেন না যে, আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। কাজেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
আওয়ামী লীগ যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করে, তখন বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রেললাইন কেটে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ মরার ফাঁদ পাতে। মা আর সন্তানকে একসাথে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। গাড়িতে আগুন দেয়। ২০০১ সালের অগ্নিন্ত্রাস শুরু করেছিল। এরপর ২০১৩, ২০১৪ সালের পর এখন আবার শুরু করেছে।
“আমি ধিক্কার জানাই, ওই বিএনপি-জামায়াতকে। বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, ওদের রাজনীতি মানুষ পোড়ানোতে। তাদের এদেশের মানুষ চায় না। তাদের দোসর কে? যারা একাত্তরের গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে, মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিয়েছে। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি; সেই যুদ্ধাপরাধীরা হচ্ছে তাদের দোসর।”
তিনি বলেন, একদল হচ্ছে খুনি, সন্ত্রাসী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানিলন্ডারিং এবং যত প্রকার অপকর্ম…এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী সেই দল। তার সাথে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল। এরা নির্বাচন চায় না। বানচাল করতে চায়।
নৌকায় ভোট দিলে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরিক হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে আহ্বান, আপনারা ৭ তারিখে সকলে সকাল সকাল সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মার্কাটা কি? নৌকা মার্কা। এই নৌকা হচ্ছে নুহ (রা.) নবীর নৌকা। মহাপ্লাবন থেকে মানুষকে রক্ষা করেছিল।
“এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে দারিদ্র বিমোচন হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।”
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিখাতে দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে দরে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়ে তুলতে চাই। যাতে বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষা-দীক্ষায় সব দিক থেকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম চলতে পারে।
“ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলে মেয়ে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে। দক্ষ জনশক্তি হবে। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে, আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে, সমাজ ব্যবস্থা স্মার্ট হবে।”
দেশের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশালে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজকে অবহেলিত বরিশাল আজ কোথায় আছে। বরিশাল কি উন্নত হয়েছে?’ এ সময় উপস্থিত জনতা দু’হাত তুলে বরিশালের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বরিশাল বিভাগে নৌবাহিনীর ঘাটি করেছি, সেনানিবাস করেছি, এলাকার উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, সেখানে সোলার প্যানলসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে বরিশালেও নিয়ে আসব যাতে আরও শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে।’
“তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল কুয়াকাটায় চলে আসবে, সেখানে স্থাপন করা হবে যাতে দক্ষিণাঞ্চলের ইন্টারনেট নির্বিঘ্ন হয়। বরিশাল ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, এখন প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কথা দিয়েছিলাম কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। কথা রেখেছি। আমরা দিন বদলের সনদ দিয়েছিলাম, এখন দিন বদলে গেছে।”
ভাঙা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা এবং পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই বরিশালে আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না।
এ সময় বরিশাল একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি, প্রতিটি নদীর ওপর সেতু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, বরিশাল ছিল শষ্য ভাণ্ডার। আবারও সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য খাদ্য সংরক্ষণাগার করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের ফলে দক্ষিণাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটা মাথায় রেখে ডেল্টা প্লান ২১০০ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা আমি করে দিয়েছি। কাজেই এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কারা পারবে? একমাত্র আওয়ামী লীগ পারবে।
এ সময় তিনি বলেন, দারিদ্রের হার ৪১ থেকে ১৮.৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫.১ ভাগ ছিল, তা ৫.৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশের হতদরিদ্র থাকবে না। আমরা গৃহহীণদের ঘর করে দিচ্ছি। প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, জমি পাবে। কেউ গৃহহীন থাকবে না।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ থেকে থেকে ২০০১ সালে দেশ যত এগিয়েছিল, তারপর তার থেমে গেল। চক্রান্ত করে ২০০১ এ আমাদের হারানো হয়। এরপর যে অথ্যাচার শুরু হলো। এই বরিশাল থেকে ২৫ হাজার জনগণ আমার কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছিল। কেউ ঘরে থাকতে পারত না। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ হাত কাটা, পা কাটা, চোখ তোলা, হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হাড়গুড়ো করে মারা, ঘরবাড়ি দখল করা, মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা, ফাহিমা-মহিমা কতো মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এইভাবে তাদের অত্যাচার চলেছিল।’
“২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন না হলেও ওই বিএনপি ক্ষমতায় থেকে তাদের ভাগ্য গড়েছিল।”
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে সমস্ত দেশের গ্রেনেড হামলা বোমা হামলা। এমনকি আমার ওপর পর্যন্ত গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাঁচিয়ে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আমাদের মানবঢাল করে সেদিন রক্ষা করেছিল। এই বাংলাদেশকে তারা একটা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতির অভ্য়ারণ্য করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী তার জনসভার শেষ দিকে বরিশাল বিভাগের নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বরিশালবাসীর কাছে ভোট চান।