চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ ২১ এপ্রিল রবিবার বিকাল ৪ টায় নির্বাচন অফিস সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২য় ধাপের তফসিলে আগামী ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই ও ২ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। মনোনয়ন দাখিল করা প্রার্থীরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে ৬জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন।
চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাসেম ভূঁইয়া, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সামদানী (ফেরদৌস), ধরখার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাছির মোঃ আরিফুল হক।
ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, মোঃ জুয়েল রানা, মনিয়ন্দ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাজিদুল ইসলাম ওরফে মিন্টু মৃধা ও গোলাম মোস্তফা।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পিয়ারা আক্তার পিওনা, রোকসানা আক্তার, তানজিনা আক্তার ও মনিয়ন্দ ইউপির সাবেক মেম্বার বিনা আক্তার।
আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা অন্য কোন পার্টির নেতাকর্মী মনোনয়ন দাখিল করেননি।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ শিকার বলেন, গতকাল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৪ জন মনোননয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামী ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আযহা সামনে আখাউড়ায় পশু পালনে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক ও খামারিরা। ছোট বড় খামারি ও কৃষকরা গরু, ছাগল, মহিষ, পালন করছেন তারা। তবে এবছর চাহিদার চেয়ে অনেক কম পশু পালন হচ্ছে। গো-খাদ্যসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্য ভালো পেলে কোরবানির পশু বিক্রি করে লাভবান হবার আশা করছেন খামারিরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪ হাজার ৭০৩টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এরমধ্যে গরু-মহিষ ৩ হাজার ৬৬০, ছাগল-ভেড়া ১ হাজার ৪৩টি।
আখাউড়া উপজেলায় নিয়মিত খামারী আছে ৭০৪ জন। এছাড়াও অনিয়মিত খামারী স্বল্প সময়ে বিক্রির জন্য পশু প্রস্তুত করছে বলে জানা যায়। পশু পালন লাভজনক হওয়ায় অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন করছেন। এবছর আখাউড়া উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজারের বেশি। এরমধ্যে গরু-মহিষ ৮ হাজার ৯০০টি এবং ছাগল-ভেড়া ২ হাজার ৫০০টি । বাইরের জেলা-উপজেলা থেকে আনীত পশুর মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় সদর উপজেলাসহ অন্যান্য স্থান থেকে পশু আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সরেজমিনে কয়েকটি খামার ঘুরে খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদকে উপলক্ষে গরু লালন পালন করছেন। ঘাস, খড়, খৈল ভুষিসহ পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে দেশীয় জাতের গরুই বেশী লালন পালন করছেন বেশি। আশা করছেন লাভবান হবেন।উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত খামার মালিক রবিউল্লাহ বলেন, তার প্রবাসী বড় ভাই মো. হাবিব বিগত ৫ বছর আগে শখ করে কয়েকটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন। দেশে ফিরে রবিউল্লাহ এখন খামারটি পরিচালনা করছেন। বর্তমানে ২৫টি বড় গরু রয়েছে। দেড় বছর আগে পাবনা থেকে গরুগুলো কিনে এনেছিলেন। দেড় বছর লালন পালন করেছেন। গরু কেনা, শ্রমিকের বেতন, লালান পালন, খাবারসহ অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছেন খরচ বাদ দিয়ে ৭/৮ লাখ টাকা লাভ হবে।
দক্ষিণ ইউনিয়নের বঙ্গের চর গ্রামের মো. ইছহাক মিয়া জানান, তিনি বিগত ৫ বছর ধরে গরু লালন পালন করেন। কোরবানিকে সামনে রেখে তার খামারে ২২টি ছোট বড় গরু রয়েছে। দেশী জাতের পাশাপাশি, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়াম জাতের। ঘাষ, খের, ভূষি ইত্যাদি খাবার খাওয়ান তিনি। ভালো দাম পেলে লাভবান হবার আশা করছেন তিনি।
আব্দুল্লাহপুর গ্রামের খামার মালিক সোহাগ ভূঁইয়া বলেন, প্রতিবছরই কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে গরু লালন পালন করি। তবে এবার ছোট বড় ১২টি গরু লালন পালন করছেন। আশা করছেন তিনি লাভবান হবেন।
আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার বলেন, এপ্রিল/২৪ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে আখাউড়া উপজেলায় ৪ হাজার ৭০৩টি পশু লালন পালন হয়েছে। উপজেলায় গরু-মহিষের চাহিদা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। খামারিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি খামারিদের সচেতন ও তদারকি করছি। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করে দেশীয় খাবার খাইয়ে পশু পালনের জন্য কৃষক ও খামারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। ভারতে পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি যাত্রী পারাপারও হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। ধীরে ধীরে যাত্রীদের কাছে পছন্দের রুট হয়ে উঠছে আখাউড়া স্থলবন্দর। ফলে যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। তবে যাত্রীর সঙ্গে রাজস্বের পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা মিলছে না আখাউড়া স্থলবন্দরে। আন্তর্জাতিক এই স্থলপথের যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য রপ্তানি বাণিজ্য চলছে। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক গুরুত্ব বাড়ায় ২০০৮ সালে স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে আখাউড়া স্থলবন্দর। বর্তমানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার বরফায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, পাথর, তুলা, প্লাস্টিক ও কাঠের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। রপ্তানিকৃত পণ্য ত্রিপুরা থেকে সরবরাহ করা হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও।
পণ্য রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি সরকার যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদও বিপুল রাজস্ব পায় আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে। চিকিৎসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন আটশ থেকে এক হাজার যাত্রী আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত গমন করে থাকেন। বিভিন্ন উৎসবের সময় এই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দর পার হলেই আগরতলা শহর। সেখান থেকে মাত্র মিনিট বিশেকের পথ পাড়ি দিলেই আগরতলা বিমানবন্দর। এছাড়া রেলস্টেশনও শহরের কাছাকাছি। এর ফলে আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশি যাত্রীরা সহজে কলকাতা, গৌহাটি, দিল্লি, চেন্নাই, জয়পুর, গ্যাংটক ও শিলংসহ দেশটির পর্যটন শহরগুলোতে যাতায়াত করতে পারেন। এতে খরচও সাশ্রয় হয়। মূলত এসব কারণেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার বাড়ছে। এছাড়া আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেনের জাতীয় মহাসড়কের কাজ শেষ হলে আখাউড়া স্থলবন্দর যাত্রী পাপারের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম রুট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন দুই লাখ ৫৭ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী। এ সময় যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় আট কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ হাজার। সরকার রাজস্ব পেয়েছে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকার কিছু বেশি। বিগত অর্থবছরে যাত্রীর ভ্রমণ কর পাঁচ শ টাকা থাকলেও চলতি অর্থবছর থেকে তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। ভারতীয় যাত্রীরা বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্যও এই কর দিতে হয়। তবে বন্দরে কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবনের ছোট্ট এক কক্ষে কাস্টমসের কাজ শেষ করে যাত্রীদের আরেক ভবনে যেতে হয় ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য। এরপর সেখান থেকে বিজিবি চৌকি পার হয়ে যেতে হয় ইমিগ্রেশন ভবনে। রুগ্ণ ইমিগ্রেশন ভবনটিও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে আরও কয়েক বছর আগেই। তবুও ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের কাজ করা হয়।
ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনের বেশির ভাগ অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত জায়গা না পেয়ে ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী আবুল কাশেম জানান, ঢাকা থেকে ভারতের সব শহরে ফ্লাইট সুবিধা নেই। এছাড়া ঢাকা থেকে ফ্লাইটে খরচও বেশি। এক্ষেত্রে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলা থেকে আকাশপথে ভারতের বিভিন্ন শহরে সহজেই যাতায়াত করা যায়। এতে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি খরচও লাগে কম। ফলে আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করেন তিনি। তবে আগরতলা স্থলবন্দরের তুলনায় আখাউড়া স্থলবন্দরে যাত্রীদের জন্য তেমন কোনো সেবা নেই।
ফজলে রাব্বি নামে আরেক যাত্রী জানান, ট্রলি সুবিধা না থাকায় যাত্রীদের লাগেজ বহনে সমস্যা হয়। এছাড়া ইমিগ্রেশন ভবনে যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই। এতে করে নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অথচ আগরতলা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এবং ব্যাগেজ স্ক্যানিং সুবিধা মিলে একই ছাদের নিচে। সেখানে যাত্রীদের জন্য আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী মাহাবুবুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনে একসঙ্গে অনেক যাত্রী বসার সুবিধা নেই। ফলে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে গরমের সময় ভোগান্তি বাড়ে। এছাড়া বৃষ্টি হলে জমে হাঁটুপানি। এসব সমস্যা নিরসন করলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার আরও বাড়বে এবং সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে বলে জানান তিনি।
যাত্রী দুর্ভোগ কমানোর পাশাপাশি যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আখাউড়া স্থলবন্দরে আধুনিক ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্টরা। ২০১৬ সালে পুরাতন ইমিগ্রেশন ভবনের পাশে শুরু হয় ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন জটিলতায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তিতে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভবনের নকশা পরিবর্তন এবং দুইতলা ভবন নির্মাণের শর্তে নির্মাণকাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু একতলা করার পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আবারও বাধা আসে বিএসএফের তরফ থেকে। ফলে এখনো বন্ধ রয়েছে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা নিজেরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনটি হয়ে গেলে যাত্রীরা এক ছাদের নিচেই সব ধরনের সেবা পাবেন। তখন আর দুর্ভোগ থাকবে না। তবে সীমান্ত আইন জটিলতায় ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ ফের শুরু হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা,জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী জনসচেতনতা, বাল্য বিবাহ বন্ধকরণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও স্থানীয় পর্যায়ে কৃষিপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ হাবিবুর রহমান। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নূরে আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়াহিদ সারোয়ার, উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আবু ইউসুফ নূরুল্লাহ, প্রধান শিক্ষক কাজী মোঃ তারেক, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি মোঃ রফিকুল ইসলাম, মাদরাসার সুপার কাজী কেফায়েতুল্লাহ মাহমুদী, ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা কাজী মাইনুদ্দিন, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি প্রমুখ।
বক্তারা, আখাউড়া পৌরশহরের যানজট নিরসন, ফুটপাত হকার দখল মুক্ত, দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ, মাদক পাচার রোধ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নত করণে জেলা প্রশাসনের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান আখাউড়াকে জনবান্ধব করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও ইউএনওকে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখতে হবে। নীতি নৈতিকায় সবাইকে কাজ করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুস্থ বিনোদনের জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোন টেটা বল্লম থাকবে না। কেউ টেটা বল্লম তৈরি করতে পারবে না। ভোক্তাদেরকে গুজবে কান না দেওয়ার আহবান জানান। প্রশাসনকে বেশি বেশি বাজার মনিটরিং করার নির্দেশ দেন তিনি। সবার সামনে পজেটিভ ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে তুলে ধরতে হবে। এজন্য তিনি জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। আলোচনা শেষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানকে শুভেচ্ছা স্মারক ক্রেস্ট দেওয়া হয়। পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
পরে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান উপজেলা পরিষদ চত্বরে ২টি বনজ ও ঔষধী গাছ রোপন করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় স্ত্রীসহ আটক হয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা নান্টু কুমার কর (৩৪)।
আজ ২৪ নভেম্বর রবিবার দুপুরে দায়িত্বরত বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা স্থলবন্দর এলাকায় তাদেরকে আটক করে।
বিকেলে বিজিবি’র ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল জাবের বিন জব্বারের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আটককৃত নান্টু কুমার কর চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার দৌলতপুর করপাড়ার সুচীন্দ্র করের ছেলে। শান্তা রানী (২৪) নান্টু কুমার করের স্ত্রী এবং একই এলাকার সঞ্জয় কুমার নাথের ছেলে।
বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নান্টু কুমার কর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম বন্দরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার আসামী। তিনি স্ত্রী শান্তা রানী নাথকে নিয়ে আত্মগোপনে যেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় তাদেরকে আটক করা হয়। তাদেরকে আখাউড়া থানায় সোপর্দ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় কেরির বড়ি খেয়ে সানজিদা আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামে সোমবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আজ ১ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তর জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠিয়েছে। নিহত সানজিদা জয়পুর গ্রামের প্রবাসী নোয়াব মিয়ার মেয়ে। সে একটি মাদ্রাসায় ১০ শ্রেণীতে পড়তো।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই গ্রামের দিলু মিয়ার পুত্র নুর মোহাম্মদ নামে এক ছেলের সাথে সানজিদার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়ের পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে পারে নি। কিছু দিন আগে মেয়েটিকে কুমিল্লায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে লেখাপড়ার জন্য। ছেলেটি সেখানে গিয়ে মেয়ের সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করলে মেয়ের পরিবার জানতে পেরে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এনিয়ে পরিবারের লোকজন তাকে শাসন করে। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা সে কেরির বড়ি খেয়ে ফেলে। পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে প্রথমে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে কুমিল্লা হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে দশটার দিকে তার মৃত্যু হয়। আখাউড়া মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশি একটি ছেলে ওই মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করতে চাইতো। বিষয়টি মেয়ের পরিবার মেনে নিতে পারেনি। এ ঘটনায় গত রাতে মেয়েটি কেরির বড়ি খেয়েছে বলে শুনেছি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার ওসি মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকারে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রেম ঘটিত বিষয় থেকে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে তথ্য পেয়েছি। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।