বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এমপির ভাগ্নে

বাঞ্চারামপুর, 24 April 2024, 732 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ. বি. তাজুল ইসলামের ভাগ্নে কাজী জাদিদ আল রহমান জনি।

banner

আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে তিনি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে ভোটার এবং সমর্থকদের উদ্দেশ্যে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন।

জনি বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জনি। পরবর্তীতে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়রা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে তাকে। যদিও নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে জনির নাম ছিল শীর্ষে। নানাদিক বিবেচনায় নির্বাচনে তারই জয় হতো বলে দাবি সমর্থকদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী জাদিদ আল রহমান জনি বলেন, দলীয় নির্দেশনা এবং আমার মামার (তাজুল ইসলাম) প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। একই সঙ্গে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয়ও ব্যক্ত করছি।

উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষদিন ২ মে। আর ১২ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়।

Leave a Reply

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

বাঞ্ছারামপুর থানার পরিদর্শকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাঞ্চারামপুর, 20 March 2023, 1524 Views,

যুবককে তুলে নিয়ে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন

banner

চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আবদুল আহম্মদ ওরফে রুবেল নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শকসহ (তদন্ত) তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

গতকাল রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রুবেলের মা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে, এএসআই আল আমিন মানিক ও উপজেলার মধ্যপাড়ার রবি উল্লাহকে। ভুক্তভোগী রুবেল বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের লিল মিয়ার ছেলে।

মামলার আর্জি সূত্রে জানা যায়, মামলার তিন নম্বর আসামি রবি উল্লাহর সঙ্গে রুবেলের পরিবারের লোকজনের আগে থেকে বিরোধ ছিল। রবি উল্লাহর বিরুদ্ধে তারা আদালতে মামলাও করেছেন, যা চলমান রয়েছে। ১৪ মার্চ বিকাল ৪টার দিকে তারই প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কোনো কারণ ছাড়াই এক নম্বর আসামি এএসআই আল আমিন অপর ৪ পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বাড়ি থেকে রুবেলকে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুসি, লাথিসহ লাঠি দিয়ে মারধর করে তারা। থানায় নিয়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে ও এএসআই আল আমিন আবারও তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। এতে রুবেলের পুরো শরীর মারাত্মক জখম হয়। থানায় নির্যাতনের বিষয়ে রুবেলের মা আমেনা বেগম সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিলে ১৬ মার্চ দুপুর ২টায় রুবেলকে একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

রুবেলের মা আমেনা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ১৪ মার্চ বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয় অথচ ১৬ মার্চ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রেখে আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান বলেন, বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ধারায় দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আদেশ দেওয়ার জন্য রেখেছেন। ২০ মার্চ সোমবার আদেশ দিতে পারেন। এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম বলেন, শুনেছি আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে আমাদের পুলিশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা। এএসআই আল আমিন মানিক বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল বিতরণ

বাঞ্চারামপুর, 1 January 2024, 999 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ইয়াশা সোবহানের নিজস্ব তহবিল থেকে বাঞ্ছারামপুরে পাঁচ দিনব্যাপী অসহায়, ভিক্ষুক, মাদরাসা ও এতিমখানা শিক্ষার্থীদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। গত ২৬ ডিসেম্বর বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় দুর্গারামপুরে এই কর্মসূচি শুরু হয়। কম্বল বিতরণের আগে আল-আমিন হাফিজিয়া মাদরাসার মাওলানা হাফেজ মো. মহিউদ্দিনের আয়োজনে বসুন্ধরা গ্রুপ পরিবারবর্গ ও দেশবাসীর জন্য দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করা হয়।

banner

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম মাইমুন কবির, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন, সিনিয়র অফিসার আমির হোসেন আনোয়ার প্রমুখ।

উপস্থিত আছাদনগরের দুটি মাদরাসা ও দুর্গারামপুরের দুটি মাদরাসার এতিম ছাত্রদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই কম্বল। পর্যায়ক্রমে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক ৬০টি মাদরাসার এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে দুই হাজার ৫০০ কম্বল পৌঁছে দেওয়া হয়। এতে রয়েছে বাঞ্ছারামপুরের ৫৬টি মাদরাসা, হোমনার তিনটি মাদরাসা এবং নবীনগর উপজেলার একটি মাদরাসা। পাশাপাশি বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষুক, অন্ধ ও পথচারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই শীতবস্ত্র।

কম্বল পেয়ে পথচারী প্রতিবন্ধী ইসমাইল (৬৫) বলেন, ‘হাটতা পারি না, রাস্তার দারে বইয়া বইয়া ভিক্ষা করি। এই কম্বলডা এত শীতে অনেক কামে লাগব। আল্লাহর কাছে যারা দিছে তাগু লাগি দোয়া করি।’

আছাদনগর মাদরাসার এতিমখানার ছাত্র জুনাইদ (৭) বলে, ‘ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা শুরু করি।

অনেক শীত, এই কম্বলটা অনেক কাজে লাগবে। বসুন্ধরার মালিকদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করমু।’
হাফেজ মো. সাজিব (১০) বলে, ‘আমাদের মাদরাসার এতিমখানার সকল ছাত্র কম্বল পাইছে। এখন আর কেহর শীতের কারণে পড়ালেখা সমস্যা হবে না। আমরা সবাই একসাথে আল্লাহর কাছে দোয়া করমু, যাতে মালিকপক্ষ সবাই ভালো থাহে।’

হোমনার হরিপুর মার্কাযুল জিকির মাদরাসার ছাত্র ইমরান (৮) বলে, ‘বাঞ্ছারামপুর থেইকা আইসা আমাদের হোমনায় বসুন্ধরা গ্রুপের লোকেরা কম্বল দিয়া গেছে। এই শীতে আমরা কম্বলডা গায় দিয়া বেশি কইরা পরতা পারমু। আল্লায় হগলেরে ভালো রাহুক।’

বাঞ্ছারামপুরে সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে খুন : আটক ৪

বাঞ্চারামপুর, 30 January 2023, 1574 Views,

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের

বাঞ্ছারামপুর প্রতিনিধি :
বাঞ্ছারামপুরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে সাবেক ইউপি সদস্য অলি মিয়া (৪৮) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকেরা।

banner

গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলাপর ছলিমাবাদ ইউনিয়নের তাতুয়াকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ মুরশিদ মিয়া (৪৫), ফুল মিয়া (৩৬), স্বর্ণালী আক্তার (২৩) ও শিল্পী বেগমকে আটক করেছে।

নিহত অলি মিয়া ছলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ছিলেন। তিনি তাতুয়াকিান্দি গ্রামের মৃত সহিদ মিয়ার ছেলে।

পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের সদস্যরা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিল থেকে মাটি কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেক মেম্বার অলি মিয়ার সাথে একই এলাকার ইকবাল মিয়ার বিরোধ চলে আসছিলো। এনিয়ে উভয় দলের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান। অলি মিয়া তার পরিবার পরিজনসহ উপজেলা সদরে বসবাস করতো। গত রবিবার সন্ধ্যায় অলি মিয়া বাড়িতে যাওয়ার পথে বাড়ির সন্নিকটে পৌছলে তাকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে টেটাবিদ্ধ ও এলোপাথারী কুপিয়ে তাকে হত্যা করে।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রঞ্জন বর্মন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিছুজ্জামান বকুল বলেন, অলি মেম্বার ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি।

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানান, সোমবার জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহত অলি মিয়ার ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। লাশ দাফনের পর মামলা হবে। তিনি বলেন, হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ মুরশিদ মিয়া (৪৫), ফুল মিয়া (৩৬), স্বর্ণালী আক্তার (২৩) ও শিল্পী বেগমকে আটক করেছে।

তিনি বলেন, ইকবালের বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর থানায় ৯টি ও অলি মিয়ার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। এলাকার পরিবেশ বর্তমানে নিয়ন্ত্রনে আছে।

পরবর্তী অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাঞ্ছারামপুরে সেফটিক ট্যাংকে মিললো বৃদ্ধের ৯ টুকরো মরদেহ, স্ত্রী-সন্তান আটক

বাঞ্চারামপুর, 2 October 2024, 416 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে অরুন মিয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ও মেয়ের বিরুদ্ধে। হত্যার পর মরদেহ ৯ টুকরো করে ইট দিয়ে পলিথিনে পেঁচিয়ে পাশের বাড়ির সেফটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে।

banner

এ ঘটনায় স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫০) ও মেয়ে লাকি আক্তারকে (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ফরদাবাদ গ্রাম থেকে লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়।

আজ ২ অক্টোবর বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোছাইন।

তিনি জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন অরুন মিয়া। হত্যার চারদিন পর মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ফরদাবাদ গ্রাম থেকে লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় স্ত্রী মোমেনা বেগম ও মেয়ে লাকি আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

নিহত অরুন মিয়া ফরদাবাদ গ্রামের মৃত সুরুজ বেপারীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের প্রথম স্ত্রীর ছেলে লুৎফর রহমান রুবেল বাদী হয়ে সৎমা মোমেনা বেগম ও সৎবোন লাকি আক্তারকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল জানান, অরুণ মিয়া নিহতের ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে লাকীকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোছাইন জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগমের সঙ্গে অরুন মিয়ার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাকে মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করলে অরুন মিয়ার মৃত্যু হয়। পরে মোমেনা তার মেয়ে লাকিকে নিয়ে লাশ নয় টুকরো করে পলিথিনে ভরে পার্শ্ববর্তী মনির মিয়ার সেফটি ট্যাংকিতে ফেলে দেন। মঙ্গলবার রাতে এলাকাবাসী সেফটি ট্যাংকি থেকে গন্ধ বের হওয়ায় পলিথিন খুলে পুলিশে খবর দেয়। যাতে অরুন মিয়ার লাশের খণ্ডিত অংশ মেলে।

বাঞ্ছারামপুরে নদী দখল করে চলছে দেয়ালের নির্মাণ কাজ

বাঞ্চারামপুর, 17 April 2024, 704 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
তিতাস নদী দখল করে দেয়াল ও ঘাটলা নির্মাণকাজ চলছে। এতে নদী সংকুচিত হয়ে নৌ চলাচল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদী দখলের ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের ঝুনারচর গ্রামে।

banner

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের পশ্চিম পাশে মেঘনা নদী থেকে উৎপন্ন হয় তিতাস নদী। এর পর হোমনা সদর হয়ে রামকৃষ্ণপুর-রামচন্দ্রপুর হয়ে তিতাস উপজেলায় গিয়ে আবার তিতাস নদীর সঙ্গে মিলিত হয় নদীটি। রামকৃষ্ণপুর অংশ থেকে আরেকটি শাখা নদী ভুরভুরিয়া, ঝুনারচর, কলাকান্দি, নিজকান্দি, ফরদাবাদ, পূর্বহাটি, পিপিরিয়াকান্দা, দূবাচাইল, বাজেভিশারা, ভিটিভিশারা গকুলনগর ও ইমামনগর গিয়ে শেষ হয়। এই নদী ব্যবহার করে হাট-বাজারে পণ্য পরিবহন করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু রামকৃষ্ণপুর ওয়াই সেতুর উত্তরে ঝুনারচর গ্রামে নদীর জায়গা দখল করে বালু ফেলে ভরাট করে দেয়াল ও ঘাটলা নির্মাণ করা হচ্ছে। ঝুনারচর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে এ নির্মাণকাজের অভিযোগ উঠেছে।

ঝুনারচর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, রামকৃষ্ণপুর থেকে ফরদাবাদ গ্রামের দিকে গেছে তিতাস নদীর একটি শাখা। রামকৃষ্ণপুর থেকে ৫০০ মিটার উত্তরে ঝুনারচর গ্রামের দক্ষিণ পাশে নদী দখল করে দেয়াল ও ঘাটলা নির্মাণকাজ চলছে। তীর থেকে নদীর ভেতরে ৭-৮ ফুট দখল করে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এর পরও আরেকটি দেয়াল নির্মাণের জন্য নদীতে কয়েকটি কলাম নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণকাজ করছেন ৪-৫ জন শ্রমিক। কার নির্দেশে কাজ করছেন জানতে চাইলে ঝুনারচর গ্রামের মোখলেসুর রহমানের কথা বলেন তারা।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক নির্মাণশ্রমিক বলেন, ‘আমাদের যেভাবে বলা হচ্ছে, সেভাবে কাজ করছি আমরা। তবে এখানে দেয়াল ও ঘাটলা নির্মাণ করা হলে বর্ষাকালে নৌ চলাচল ব্যাহত হবে। পাশাপাশি দুটি বড় নৌকা চলাচল করতে পারবে না।’

ট্রলারের মাঝি জানান, তিতাস নদীর এই অংশটি এমনিতেই সরু। তার ওপর এভাবে নদী ভরাট করে দেয়াল ও ঘাটলা নির্মাণ করা হলে নৌযান চলাচল কঠিন হয়ে পড়বে।

ফরদাবাদ বাজারের ব্যবসায়ী আলম মিয়া বলেন, ‘আমরা এই নদী দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে মালপত্র নিয়ে আসি। যে জায়গাটি ভরাট করা হয়েছে, সেখানে দুটি নৌকা পাশাপাশি যেতে পারবে না। এতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।’

নদী দখলের অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে বাড়ি করার জন্য আমার ধানের জমি ভরাট করেছি। আমার জায়গায় ওয়াল দিচ্ছি, ঘাটলাও আমার জায়গায় করতেছি। নদীর মধ্যে আমি আরও জায়গা পাবো।’ আপনি পরিমাপ করেছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমার জায়গা আমি ভরাট করেছি, পরিমাপের কী দরকার।’

ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলামের ভাষ্য, তিতাস নদী দিয়ে নৌকায় পণ্য পরিবহন করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এভাবে নদী ভরাট করা হলে নৌ চলাচল ব্যাহত হবে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হবে।

সলিমাবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হেলাল হোসেন জানান, নদী দখলের বিষয়টি শুনেছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সরেজমিন দেখে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখনই খবর নিচ্ছি। নায়েবকে পাঠিয়েছি। নদী দখলের সত্যতা পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’