চলারপথে রিপোর্ট :
সারাদেশে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার দুপুরে পৌর শহরের মসজিদ পাড়া উপজেলা সদর ঈদগাহ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এই নামাজ শেষে মুসল্লিরা রহমতের বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহ দরবারে প্রার্থনা করেন।
ইসতিসকার নামাজের ইমামতি করেন মসজিদ পাড়া সদর জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মাওলানা ইয়াকুব হাসান। নামাজে পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মুসল্লিরা স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে ইমাম আরবিতে খুতবা দেন। এরপর তিনি তীব্র গরমের কথা উল্লেখ করে গরম থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া করা হয়।
নামাজে অংশগ্রহণকারীরা জানান, বৈশাখের শুরু থেকে তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র গরমে কষ্ট ভোগ করছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর সাহায্য চেয়ে এই নামাজ আদায় করেন তারা।
মাওলানা ইয়াকুব হাসান বলেন, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের কারণেই মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি ও খরা দেন। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। সেজন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে রহমতের বৃষ্টির জন্য দোয়া করা হয়।
উপজেলা সদর মসজিদ পাড়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: মনির হোসেন বাবুল বলেন, তীব্র তাবদাহে মানবজাতিসহ অন্যান্য প্রাণিকূল অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। আমরা মনে করি এটা একটি আল্লাহ তাআলার গজব। আমাদের পাপাচারের কারণে অনেক সময় মানবজাতিকে দুর্ভোগে ফেলেন। আমরা এই তীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে এখানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছি। এ সময় মুসল্লিরা নিজেদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। একই সঙ্গে রহমতের বৃষ্টির জন্য আল্লাহ দরবারে প্রার্থনা করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় দ্রব্যমূল্যের বাজার মনিটরিং বিষয়ক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ ১১ মার্চ সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নেয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার।
বক্তারা রমজানে বাজার মনিটরিং করার জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠন করার প্রস্তাব করেন। বাজারমূল্য তদারকিতে মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার কথা বলেন। জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে বাজার জানজট মুক্ত রাখার আহবান জানান। ব্যবসায়ীদেরকে অতিরিক্ত মুনাফা না করার আহবান জানানো হহয়। ক্রেতা সাধারণকেও প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত পণ্য না কেনার অনুরোধ করা হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী, আখাউড়া থানার ওসি মোঃ নূরে আলম, সড়ক বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সহ সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির খোকা, কারিমা চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মমিন বাবুল, মোগড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেকান্দার প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার বাজেট দিয়েছে ৭ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি টাকা। বিএনপি দাতাদের পরামর্শে বাজেট দিত। সেই চিত্র এখন পাল্টেছে। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছি। বঙ্গবন্ধুর সেই কথা আমাদেরকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমরা জাতির পিতার সন্তান। আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না ইনশাল্লাহ।
আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল আরো বলেন, কর্ণফুলী টানেল হয়েছে, মেট্টে রেল হচ্ছে। বাজেট ঘোষণার পর দেখা গেছে, আমাদের দারিদ্র সীমা কমে এসেছে। চাকরী প্রার্থীর সংখ্যাও আস্তে আস্তে কমে আসছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নতি করার প্রচেষ্টা এগিয়ে চলছে। কিন্তু দু:খের বিষয় সেই উন্নয়ন কারও কারও চোখে ভাল লাগছে না। এরমধ্যে বিএনপি যারা লুটপাট করে বাংলাদেশকে শেষ করে দিয়েছিল। দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি প্রমান করে দিয়েছিল। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র করার সকল সরঞ্জাম তৈরি করে ফেলেছিল। তারা সরকারের উন্নয়ন দেখতে পায় না। চোখ থাকতেও তারা অন্ধ। এখন কিছু ষড়যন্ত্রকারীও তাদের সাথে যোগ হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের কথা মনে রাখতে হবে। গতকাল শুক্রবার সকালে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মোগড়া ইউনিয়ন ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপির শেষ সময়ে বাজেট দিয়েছিল ৬৩ হাজার কোটি টাকা। বিএনপি দাতা দেশের পরামর্শে বাজেট দিত। মিটিং হতো প্যারিসে। বড় বড় রাষ্ট্রগুলো থেকে টাকা নিয়ে বাজেট দিত। বাজেটে লিখা থাকতো শতকরা ৮০ টাকা আসবে বিদেশ থেকে আর বাকী টাকা দিবে দেশের জনগণ। সেই চিত্র এখন পাল্টে গেছে। আজকে এত বিপুল পরিমাণ টাকার বাজেট দেওয়ার পরও শতকরা ৮৩ টাকা দিবে বাংলাদেশের জনগণ। আর বাকী টাকা আসবে বিদেশ থেকে।
সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে না। কারণ নির্বাচন দিলেই তারা বলে নির্বাচনে যাবে না। গত নির্বাচনে বিএনপি প্রতিটি আসনে ৩/৪ জন প্রার্থী দিয়েছে। তারপরে বলে নির্বাচন করবে না। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচন করবে না। নিবার্চন নষ্ট করবে। মানুষকে বাসে পুড়িয়ে মারবে। এ ব্যপারে সবাইকে সর্তক থাকার আহবান জানান তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী বলেন, সুদখুররা যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকবেন। ষড়যন্ত্রকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন বাংলার মানুষ, বাংলার ছাত্রছাত্রীরা শেখ হাসিনার সাথে আছে। ষড়যন্ত্র করে পার পাবে না। ষড়যন্ত্র করলে জনগণ উচিত শিক্ষা দিয়ে দিবে।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বারের পিপি মাহবুবুল আলম খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় এক ইট ভাটাকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে উপজেলার মোগড়া এলাকায় মেসার্স তিতাস ব্রিকস (সুরমা) কে এ জরিমানা ও সিলগালা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী প?রিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী, আখাউড়া থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিল ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী জানান, জেলার আখাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুপুরে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া এলাকায় মেসার্স তিতাস ব্রিকস (সুরমা) দেখা যায় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও ইট ভাটার জন্য অবৈধ ভাবে মাটি এনে ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছিলো। পরে অবৈধভাবে ইট ভাটায় ইট প্রস্তুত করার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনে মেসার্স তিতাস ব্রিকস (সুরমা) কে দুটি মামলায় ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পাশাপাশি ইট ভাটাটি অবৈধ হওয়ায় আংশিক গুড়িয়ে দেয়া হয় এবং ইট ভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ করে ভাটাটি সিলগালা করা হয়। অভিযানে আরো ২টি ইট ভাটার মালিককে সরকারি আইন মেনে ইট ভাটা পরিচালার বিষয়ে সতর্ক করা হয়। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তোরণ নির্মাণের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হানিফ মিয়া (৪৫) নামে এক ডেকোরেটর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ডেকোরেটর মালিক সেলিম মিয়া (৪২) আহত হয়েছে।
২০ জানুয়ারি শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে আখাউড়া থানা মসজিদের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হানিফ মিয়া পৌরশহরের কলেজ পাড়ার মৃত আতর আলীর পুত্র। তিনি ১ ছেলে মেয়ের জনক। আহত ডেকোরেটর মালিক সেলিম মিয়া রাধানগর ভাড়া বাসায় থাকে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সংবর্ধনা উপলক্ষে তোরণ নির্মাণ করছিলেন ডেকোরেটর শ্রমিকেরা। ২৭ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা।
প্রত্যক্ষদর্শী ইলিয়াস মিয়া বলেন, হানিফ মিয়া আমার পূর্ব পরিচিত। আমি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলাম হানিফ মিয়া গেইটের উপরে উঠে গেইট বানানোর কাজ করছিল। হঠাৎ দেখি হানিফের হাত দিয়ে ধোঁয়া উড়ছে। সেলিম মিয়া বাঁশ ধরা অবস্থায় কাঁপছে। তৎক্ষনাৎ আমি আরেকটা বাঁশ দিয়ে সেলিমকে সজোরে বারি দিয়ে সরিয়ে দেই। আমিও শট পাই। এসময় হানিফ মিয়া উপর থেকে নীচে সড়কে পড়ে যায়।
আহত সেলিম মিয়া বলেন আইনমন্ত্রীর সংবর্ধনা উপলক্ষে অর্ডার পেয়ে গেইট নির্মাণ করছিলাম। তখন হানিফ মিয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যায়। উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল বলেন, আগামী ২৭ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ইকরাম চৌধুরী বলেন ৫ টা ১০ মিনিটে হানিফ মিয়াসহ দুইজন আহত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে। আমরা রোগীর ইসিজি করে কোন রেসপন্স পাইনি। ব্ল্যাড প্রেসার পাইনি। হাসপাতালের আনার আগেই হানিফ মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। সেলিম মিয়া শঙ্কা মুক্ত আছে।
আখাউড়া থানার ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন শ্রমিকরা কার গেইট নির্মাণ করছিল বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া স্থলবন্দরে গত দুই বছর ধরে গুদমে পড়ে থেকে পচে নষ্ট হয়ে গেছে ভারত থেকে আমদানি করা ২২৮ টন গম। যা এখন পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারের উপযোগী নয় বলে জানিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ফলে গমের আমদানিমূল্য বাবদ ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৮০ লাখ টাকা। দফায় দফায় চিঠি দেওয়ার পরও আমদানিকারক গমগুলো ছাড়াতে আগ্রহী না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় গমগুলো ধ্বংসকরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। যদিও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, শুল্ক কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণেই নির্ধারিত সময়ে গমগুলো খালাস করা যায়নি।
সংশ্লষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের আগস্ট থেকে প্রথমবারের মতো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গম আমদানি শুরু হয়। মূলত ব্যবসায়ীদের চাহিদা মতো পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকায় অনুমোদিত পণ্য আমদানি করে ভালো মুনাফা করতে না পারায় বন্দর দিয়ে কম পণ্য আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা।
তবে, শুল্কমুক্ত হওয়ায় ২০২১ সালের আগস্ট থেকে গম আমদানির মাধ্যমেই সচল ছিল আমদানি বাণিজ্য। যদিও ২০২২ সালের মে মাসে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। তবে নিষেধাজ্ঞার পরও কয়েক মাস পর্যন্ত পূর্বের খোলা এলসির গমগুলো আমদানি হয় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮৮ হাজার ৫২৪ মেট্রিক টন গম আমদানি হয়।
২০২২ সালে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার টন গম আমদানি করে চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স। প্রতিটন গমের আমদানি মূল্য ছিল ৩২৫ থেকে ৩৫০ মার্কিন ডলার। বাজারে চাহিদা থাকায় আমদানির পরপরই গমগুলো খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তবে ওই বছরের জুনে ভারতের ভারী বর্ষণের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় গম আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আগস্ট থেকে আবারও বন্দরে আসতে থাকে আটকে পড়া গমের চালান।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ভালো গমের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভেজা গমও পাঠায়। যার পরিমাণ প্রায় ২২৮ টন। তাই ভালো গমগুলো প্রথমে খালাস করে পরবর্তীতে ভেজা গমগুলো ছাড়াতে গেলে আটকে দেয় শুল্ক কর্তৃপক্ষ। তাদের গড়িমসির কারণে নির্ধারিত সময়ে খালাস না করতে পারায় দীর্ঘসময় গুদামে পড়ে নষ্ট হতে থাকে গমগুলো। এসব গমে পোকা ধরেছে এবং পচে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
আলম ট্রেডার্সের আখাউড়া স্থলবন্দর প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেন বলেন, গমগুলো ভেজা হওয়ায় রফতানিকারকের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুল্ক কর্তৃপক্ষ ছাড় দিব-দিচ্ছি করতে করতে গমগুলো আর নির্ধারিত সময়ে খালাস করা যায়নি। ফলশ্রুতিতে অবহেলায় গুদামে পড়ে থেকেই সবগুলো গম পচে নষ্ট হয়েগেছে। এগুলো এখন আর ছাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই, কারণ পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারের উপযুক্ত নেই গমগুলো।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে গমগুলো গুদামে ফেলে রাখায় বিপাকে পড়েছে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। গুদাম ভাড়া বাবদ পাওনা হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। যা আর আদায়ের কোনো সম্ভাবনাও দেখছে না কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গুদামে অন্য কোনো পণ্যও রাখা যাচ্ছে না। তবে গুদাম খালি করার লক্ষ্যে গমগুলো ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, সবগুলো গমে পোকা ধরেছে এবং দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে। তবে আমদানিকারক গমগুলো আর ছাড়াতে আগ্রহী নয়। ফলে গুদামও খালি করা যাচ্ছে না। এতে করে বন্দর কর্তৃপক্ষও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া বন্দরের বিদ্যমান সড়কটি চারলেন উন্নীতকরণ কাজের জন্য গুদামটি ভাঙা পড়বে। তাই দ্রুত গুদাম খালি করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন বলেন, গমগুলো ভেজা এবং নিম্নমানের ছিল। তাই আমদানি নীতিবর্হিভূত হওয়ায় তখন ছাড় দেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আমদানিকারককে চিঠি দেওয়া হলেও গমগুলো খালাসে আগ্রহী নয় বলে জানায়। গমগুলো পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী কিনা- সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষার রিপোর্টে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করায় আবার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। নতুন রিপোর্ট এলেই গমগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু হবে।