অনলাইন ডেস্ক :
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে বলেই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ এখন মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে চলতে পারে।’
‘এটা আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে, আব্দুল হাই-এর মতো ত্যাগী নেতাকর্মীদের কারণে। তাদের অবদানের ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক সফলতা আনা সম্ভব হয়েছে।’
ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে আজ ২ মে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে উপস্থাপিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় আরো অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, তৌহিদুজ্জামান, নাসির শাহরিয়ার প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঝিনাইদহ এমন একটা সন্ত্রাসী এলাকা ছিল, যেখানে গ্রামের মানুষ টিকতে পারত না। সেখানে নির্বাচন করা, রাজনীতি করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। সেই অবস্থার মধ্যেও আব্দুল হাই অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে সংগঠন ধরে রাখেন এবং সংগঠনকে সুংগঠিত করেন। তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন, ভালো সংগঠক ছিলেন। তাই সফলতার সঙ্গে তিনি সংগঠনকে দাঁড় করাতে পারেন। একসময়ে ওই এলাকায় গ্রামে মানুষ টিকতে পারত না, অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। বিএনপি নামক যে দলটি সৃষ্টি হয়েছিল, আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির বেশির ভাগ লোক কিন্তু এই বিএনপিই করত। সেখানে প্রতিনিয়ত আমাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা হতো, কত লাশ যে পড়েছে, তার হিসাব নেই। সেই অবস্থায় সংগঠনকে গড়ে তোলা এবং বারবার নির্বাচিত হয়ে এসে একটা বিরাট দক্ষতার পরিচয় তিনি দিয়েছিলেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটাই সবচেয়ে কষ্ট লাগছে, তিনি এই সংসদে বসতে পারলেন না। তাকে একসময় গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। আবার একজন রিট করল, তার সংসদ সদস্য পদ স্থগিত করা হলো। সেটা আবার আপিল করে স্থগিত করা হয়েছিল বলেই তিনি এই সংসদে বসতে পেরেছিলেন। যিনি বারবার নির্বাচিত হয়ে আসেন, তার ওপর এ ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তারপরে তিনি আসতে পেরেছিলেন। তবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিলেন।’ নতুন প্রজন্মকে আব্দুল হাইয়ের মতো ত্যাগী নেতাদের অনুসরণের আহ্বান জানান তিনি।
সংসদ সদস্য আব্দুল হাই ছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য শামছুল হক ভূঁইয়া, আবুল হাসেম খান, পিনু খান, নজির হোসেন ও মোখলেছুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর একুশের পদকপ্রাপ্ত গোলাম আরিফ টিপু, একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. প্রণব কুমার বড়ুয়ার মৃত্যুতে সংসদ অধিবেশনে শোক প্রকাশ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
একজন ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না পারবেন না, সেই বিধান তৈরিসহ রাষ্ট্র সংস্কারে সেক্টর অনুযায়ী আলাদা আলাদা ১০টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ ৯ অক্টোবর বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
এসময় জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, এই ১০ খাতের প্রস্তাব শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য। নির্বাচিত কোনো সরকারের জন্য নয়। এই সরকারের কাছে আসলে আমাদের মোট ৪১টি প্রস্তাব। তার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব আজ গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
খাতগুলো হলো- আইন ও বিচার বিষয়ক সংস্কার, সংসদ বিষয়ক সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা সংস্কার (পুলিশ বাহিনীর সংস্কার, র্যাব বিষয়ক সংস্কার), জনপ্রশাসন সংস্কার, দুর্নীতি, সংবিধান সংস্কার, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংস্কার (বিরাজমান সমস্যার আলোকে শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব, সংস্কৃতি সংস্কার), পররাষ্ট্র বিষয়ক সংস্কার ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সংস্কার।
অনলাইন ডেস্ক :
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।
আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।
পাঁচ চুক্তির মধ্যে আছে—উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু’দেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
পাঁচ সমঝোতা স্মারকের মধ্যে আছে—কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।
চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কাতারের পক্ষে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি ও বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দ্বিতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, তৃতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, চতুর্থটিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পঞ্চমটিতে কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি ও বাংলাদেশের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম সই করেন।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে সব কটিতে কাতারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সই করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ২৯ জুনকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। ১৪ জুন থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এবারও শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। তবে চাপ কমাতে দুই শিফটে টিকিট দেওয়া হবে। সকাল থেকে পশ্চিমাঞ্চলের এবং বেলা ১২টা থেকে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে।
আজ ৩০ মে মঙ্গলবার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ২৪ জুনের টিকিট ১৪ জুন, ২৫ জুনের টিকিট ১৫ জুন, ২৬ জুনের টিকিট ১৬ জুন, ২৭ জুনের টিকিট ১৭ জুন এবং ২৮ জুনের টিকিট ১৮ জুন বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ২৯, ৩০ জুন ও ১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা হবে ২৯ হাজার। সব টিকিটি অনলাইনে বিক্রয় করা হবে। ঈদের ট্রেনে ৬৫টি অতিরিক্ত বগি যোগ করা হবে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২২ জুন। ২২ জুন বিক্রি হবে ২ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
শ্রম আইন লঙ্ঘনের দুটি ধারায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এক মাসের মধ্যে আপিলের শর্তে জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ ১ জানুয়ারি সোমবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা তাঁর এ জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে একই আদালত আজ বিকেল ৩টার দিকে ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ডাদেশ দেন। অপর তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। তাঁদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রায়ের ব্যাপারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ রায়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আজ ১৫ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের এ তারিখ ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরের পাঁচ বছর। সেই হিসাবে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি।
এ ছাড়া জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। আর ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হবে। বাড়বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্য সংখ্যাও। এবার ভোটের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র অনলাইনেও দাখিল করতে পারবেন। এজন্য অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম তৈরি করেছে ইসি। এ ছাড়া ভোটের তথ্য দিতে তৈরি করা হয়েছে স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি নামে একটি অ্যাপ, যা ইতোমধ্যে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।
এ অ্যাপের মাধ্যমে একজন ভোটার ঘরে বসে তার ভোটার নম্বর জানতে পারবেন। পাশাপাশি তার ভোটার এলাকা বা নির্বাচনী আসন, ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারবেন এবং ভোটকেন্দ্রের ছবি, ভোটকেন্দ্রের ভৌগোলিক অবস্থান (ম্যাপসহ) দেখতে পাবেন।
এ ছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে বিভাগওয়ারি বিভিন্ন আসনের তথ্য, যেমন- মোট ভোটার, মোট আসন, আসনের প্রার্থী, প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য (হলফনামা, আয়কর সম্পর্কিত তথ্য, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী) জানতে পারবেন। অ্যাপটির মাধ্যমে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের তথ্য জানা যাবে এবং সমসাময়িক তথ্যাবলি ‘নোটিশ’ আকারে প্রদর্শিত হবে।
প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য থাকায় একদিকে তিনি যেমন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভোটারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন, অন্যদিকে ভোটাররাও তথ্য বিশ্লেষণ করে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।
প্রার্থী হতে করণীয়
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীকে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পদাধিকারীর সইযুক্ত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সইযুক্ত তালিকা। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী আগের কোনো সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে তাকে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা জমা দিতে হবে না।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জামানত হিসেবে জমা দিতে ২০ হাজার টাকা এবং ছবিছাড়া ভোটার তালিকা সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) কিনতে হবে ৫০০ টাকায়। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা জমা দিতে হবে, যেখানে থাকবে আটটি সুনির্দিষ্ট তথ্য। এ ছাড়া আয়ের উৎস, দায়-দেনা, সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি তার অনুলিপি ইসিকেও দিতে হবে।
নির্বাচনের প্রার্থীর ব্যয়সীমা হলো ২৫ লাখ টাকা। প্রার্থী বা তার এজেন্টকে একটি তফসিলি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ ব্যয় করতে হবে।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। ইসি আয়োজিত সর্বশেষ সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ১৮টি দল। তাদের অনেকেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেই মনে করছেন অনেকে।
আগের ১১ সংসদ নির্বাচন
প্রথম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৭ মার্চ। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৬ সালের ২ মার্চ। ভোটগ্রহণ হয়েছিল একই বছরের ৭ মে।
চতুর্থ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ। পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সপ্তম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ২৭ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ওই বছর ১২ জুন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছিল ২০০১ সালের ১৯ আগস্ট। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ১ অক্টোবর।
নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয় ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হয়েছিল ৩০ ডিসেম্বর।