অনলাইন ডেস্ক :
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, তথ্যের সঙ্গে অনেক সময় অপতথ্যের মিশ্রণ ঘটে। তাই সেখানে সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে নতুন করে কাজ চলছে। সরকার গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিতে কাজ করছে।
আজ ৪ মে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিটি সংগঠন থেকে দুইজন প্রতিনিধির সঙ্গে বসে দ্রুততম সময়ে আইনটি সংসদে উত্থাপন করে পাস করার চেষ্টা করব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ রক্ষায় যারা কাজ করবে, তারা আমাদের বন্ধু। পরিবেশ সাংবাদিকতায় প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ রক্ষা করা।
তিনি বলেন, শুধু পরিবেশ সুরক্ষা নয়, মুক্ত গণমাধ্যেমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিতেও সরকার কাজ করছে। পরিবেশ-প্রতিবেশকে সুরক্ষা দিয়ে উন্নয়ন করতে হবে ব্যালেন্স করে। যেমন পদ্মা সেতু শুধু পারাপার হতে নয়, দারিদ্র্য বিমোচনেও কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে গণমাধ্যমের মধ্যে শৃঙ্খলা আনা দরকার। আপনারাও (সাংবাদিক) বলেন- সাংবাদিকদের ন্যূনতম যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। সাংবাদিকসহ সব স্তরে সবার দাবি যেহেতু একই রকম, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে সে জায়গায় কাজ করব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যম মুক্ত নয়, উন্মুক্ত হয়ে আছে। তাই বর্ডার লাইন টানা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে কথা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের বন্ধু। তারা অ্যাড্রেস করে দেন। আমরা কাজ করতে পারি। সব সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি না সরকার যারা পরিচালনা করছে, তারা সবাই ফেরেশতা। গণমাধ্যম ধরিয়ে দিলে আমরা শুধরে নিতে পারি। তবে অনেক ক্ষেত্রেই মোটিভেটেড সাংবাদিকতা হয়। ক্ষতি হয় পেশাদার সাংবাদিকতার।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলা করলেই জেলে নেওয়া হতো। এখন সেটি নেই। সিএসএতে অপসাংবাদিকতায় কেউ যদি ভুক্তভোগী হয়, তারও সহায়তা চাওয়ার অধিকার আছে। পেশাদার সাংবাদিকতার সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করা হয়েছে। অপব্যবহার হলে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান থাকবে।
এ সময় নোয়াবের সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, বিভিন্ন মহলের চাপের কারণে দেশে সাংবাদিকতা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। সব নিউজ আমরা ছাপাতে পারি না।
নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, দেশে দুর্নীতি বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় দুর্নীতি বাড়ছে। এক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় থাকছে না। তাই জবাবদিহিও মিলছে না। এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকেরা হয়রানির শিকার হন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে বিনা অনুমতিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ থেকে এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের পদক্ষেপ ব্যাংক লোপাটকারীদেরই উৎসাহিত করবে।
রহিত হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলার প্রসঙ্গে টেনে এ. কে. আজাদ বলেন ‘আমাদের প্রশ্ন হলো সাংবাদিকতা কি অপরাধ?’ তিনি বলেন, সাংবাদিকেরা সেলফ সেন্সরশিপে চলে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে চান। জনস্বার্থে তথ্য অনুসন্ধান এবং তা প্রকাশ করতে গিয়ে কেন তারা ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন?
বক্তারা বলেন, দেশে যে সংকটগুলো চলছে, তার মধ্য বড় সংকট পরিবেশ বিপর্যয়। যারা জমি দখল করছে, তাদের অনেকের মিডিয়া আছে। সেখানে বড় চ্যালেঞ্জ সাংবাদিকতা। তবে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে সাংবাদিকতার ওপর তাগিদ দেন তারা।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম। সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান ও দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তাফা মামুন।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা আজ ২৩ আগস্ট বুধবার বিকেলে পাঁচ পকেটমারকে আটক করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় বুধবার বিকালে রিক্তা নামের এক নারীর ব্যাগ কেটে টাকা নিয়ে পালানোর সময় এলাকাবাসী পকেটমারের ৫ সদস্যকে আটক করেন।
পরে পুলিশকে খবর দিলে খবর পেয়ে পকেটমারের ৫ সদস্যকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটককৃতরা হলো মো. শফিক (২০), হালিমা আক্তার (১৮), আলিয়া আক্তার (৪০), বর্ষা (২০), শিল্পী আক্তার (১৭)। তারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পকেটমারের কাজ করতো বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কালিয়াকৈর থানার এস আই মো. রিপন আলী খান জানান, পাঁচজন পকেটমারকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত পকেটমারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদপুরে বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুড়ে মারা গেছে সোহান (১০) নামের এক প্রতিবন্ধী শিশু। আজ ২১ জুলাই শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার আলীপুর দক্ষিণপাড়া বেপারিবাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহান সদর উপজেলার আলীপুর দক্ষিণপাড়া বেপারিবাড়ির রবিউল আলমের ছেলে।
দিনমজুর রবিউল আলম বলেন, ‘পরিবারের সবাই মিলে দাওয়াত খেতে যাই। সেসময় সোহান ঘরে একা ছিল।
শাহরাস্তি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আলী আহমেদ অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, অপকর্মের সাথে জড়িত থাকায় অনেক পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছে না। যারা এখনও কর্মস্থলে যোগ দেননি, তাদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না। পুলিশের যেসব সদস্য অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের কিছুতেই মাফ করা হবে না।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা ও ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি আনসার ভিডিপি একাডেমিতে সমাপনী অনুষ্ঠানে খোলা জিপে চড়ে প্যারেড গ্রাউন্ড পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ছয়জন বিসিএস কর্মকর্তা ও ৯০৮ জন রিক্রুট সিপাহী সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের জন্য নির্ধারিত মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেন। বিসিএস কর্মকর্তারা দীর্ঘ ১২ মাস মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন। একইসঙ্গে মাস্টার্স অব হিউম্যান সিকিউরিটি (এমএইচএস) কোর্স সম্পন্ন করেছেন। অপরদিকে রিক্রুট সিপাহিরা ৬ ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের পর অনেক পুলিশ সদস্য আত্মগোপনে চলে যান। আবার উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দেননি। পরে নোটিশ দিয়ে তাদের কর্মে ফেরায় পুলিশ সদর দফতর। কিন্তু এমন নোটিশ পেয়ে বেশিরভাগ কাজে যোগ দিলেও এখনো ১৮৭ জন সদস্য কর্মস্থলে এখনও অনুপস্থিত রয়েছেন বলে গতকাল পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাতে পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পটপরিবর্তনের পর গত ১ আগস্ট থেকে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ১৮৭ জন কর্মস্থলে যোগাযোগ না করে অনুপস্থিত রয়েছেন।
আজ বাংলাদেশ আনসার একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেসব পুলিশ সদস্য এখনও কর্মস্থলে যোগদান করেননি, তাদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে। এখনও কাজে যোগ দেয়নি এমন পুলিশের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমরা তাদের ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধান করছি। আপনারাও তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।
সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা জনগণের সুবিধার জন্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছে। তাদের একটা ক্ষমতার ভেতর কাজ করতে হবে। আমাদের অন্য বাহিনীতে কিছু স্বল্পতা রয়ে গেছে।
আনসার বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর আজ বাংলাদেশ নবজাগরণে উজ্জীবিত। বিগত সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের হতে পারেনি বলেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার সরকার দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দিয়েছেন আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ইয়ামিন ও ফাইয়াজদের মতো হাজারো ছাত্র-জনতা। আপনাদের কাছে আমার চাওয়া, দেশ ও জনগণের কল্যাণে আপনারা নিজেদের সপে দিয়ে সততা, নিষ্ঠা ও ন্যায্যতার মাপকাঠিতে কাজ করবেন। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
আনসার বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থানা, ট্রাফিক, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ডিএমপির থানাগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।
আনসার বাহিনীকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর স্বল্পতার মাঝেও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাতে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। জাতির জরুরি প্রয়োজনে সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য বাহিনীটির সব সদস্যের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট, উপ মহাপরিচালকবৃন্দ, বাহিনীর পরিচালকরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।
বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।
প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।
কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।
সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আরো ১০টি পণ্যকে মান সনদের আওতায় এনেছে। বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের ৩৭তম সভায় বাধ্যতামূলক মান সনদের তালিকায় ১০টি নতুন পণ্যকে মান সনদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রাধন কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী ও বিএসটিআই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। নতুন যে ১০টি পণ্য মান সনদের আওতায় আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ফেসওয়াস, পেট্রোলয়িাম জেলি, রুটি (ফ্ল্যাটব্রেড/ টরটিলা), এ্যারোসলস, গিজার, শেভিং ফোম/জেল, আই কেয়ার, হেয়ার ডাইস লিকুইড ও শু-পলিশিং লিকুইড। বর্তমানে বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ২২৯টি। বিএসটিআই কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, এ সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ও কাউন্সিলের সদস্য সচিব মোঃ আবদুস সাত্তার এ সভা পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সকলের জন্য একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে আরও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসটিআইকে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে বিএসটিআইকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা মহামারিকে পূঁজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। তারা পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে, সিন্ডিকেট করছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষায় বিএসটিআইকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় রেখে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে কাজ করতে হবে।
কাউন্সিল সভার পরে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিএসটিআই’র ৯১ জন নবনিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ, যোগদান এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।