চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান (মোটর সাইকেল) প্রতীকের প্রার্থী মো. শের আলম মিয়া বিজয়ী হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে তালা প্রতীকের প্রার্থী হানিফ আহমেদ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীকের রোকেয়া বেগম বিজয়ী হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচনে বিজয়ী হলেন। আজ ৮ মে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেজবা উল আলম ভূইঁয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বে- সরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৪ পালন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ ১৫ মার্চ শুক্রবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালি বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব শরীফ উদ্দিন, সরাইল প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ মিয়া, বাবুল হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাবিববুর রহমান এ কে খান, আব্দুল জব্বার, আওয়ামীলীগ নেতা মাহফুজ আলী, বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাবুল মিয়া, সাংবাদিক রিমন খান, জহিরুল ইসলাম রিপনসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।
৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইলকে মুক্ত করেন। এদিন সকালে বিনা বাধায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনী শহরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে হানাদারমুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আনুষ্ঠানিকভাবে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্ত দিবস উদযাপনে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও সরাইল উপজেলা প্রশাসনসহ নানা সংগঠন। সূত্রমতে, ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত করতে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী সদস্যরা পাকবাহিনীর ওপর বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে।
১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় ২০ পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়।
৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। সেখানে ১১ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা। এরই মধ্যে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।
৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রুমুক্ত হয়। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাক বাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়।
৬ ডিসেম্বর আখাউড়া উপজেলাকে শত্রুমুক্ত করার পর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের চারপাশে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক হানাদাররা। ৬ ডিসেম্বর শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজাকারদের সহায়তায় তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটকে রাখা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাক হানাদাররা। পরদিন ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাক হানাদাররা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। এর ফলে ৮ ডিসেম্বর বিনা যুদ্ধে মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ওই দিন সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারি ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী। একই দিনে শত্রুমুক্ত হওয়ায় সরাইল থানা চত্বরেও উত্তোলন করা হয় লাল-সবুজ পতাকা।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক ডজন মামলার আসামী ও চিহ্নিত চোর আসাদ উল্লাহ প্রকাশ কাউছার মিয়া-(৩৭) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি প্রাইভেটকার জব্দ ও বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালংকার (২ ভরি ৫ আনা) এবং একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আজ ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার অনন্দা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসাদ উল্লাহ প্রকাশ কাউছার মিয়া সরাইল উপজেলার রানীদিয়া গ্রামের মোঃ তাজুল ইসলামের ছেলে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার অন্নদা মোড়ে চেকপোষ্ট বসানো হয়। এ সময় চেকপোষ্ট এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি প্রাইভেটকারের গতিবিধি সন্দেহ হলে প্রাইভেটকারসহ আসাদ উল্লাহ প্রকাশ কাউছারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার শরীর তল্লাশী করে বিভিন্ন প্রকারের স্বর্ণ অলংকার যার ওজন (২ ভরি ৫ আনা) ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, বুধবার রাতে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামের ফজলু মিয়ার ঘরে থেকে এই স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন চুরি করে কাউছার। সে একজন পেশাদার চোর।
এ ব্যাপারে বিরুদ্ধে ১২টি চুরির মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল–আশুগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন জামাতা ও শ্বশুর। তবে এ আসনে ভোটারদের মধ্যে আলোচনায় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিনের নাম বেশি চাউর হচ্ছে।
এ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ফলে এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নেই। তবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে জাপার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা ও তাঁর শ্বশুর স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধার (ঈগল) নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি নজর কাড়ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাঁরা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
এখানকার প্রার্থীরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন (কলার ছড়ি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঞা, তাঁর শ্বশুর জাপার দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির (রওশন) সহসভাপতি জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল প্রতীক), সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুছ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেন। সমঝোতার কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলমকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে।
নেতা-কর্মীরা বলছেন, রেজাউল ইসলাম ভূঞা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। একই আসনে তাঁর শ্বশুর সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তখন তাঁরা একে অপরের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিরোধে জড়ান। রেজাউল তখন মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। সে সময় ভোটের দুই দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হন রেজাউল। তবে শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা সিংহ প্রতীক নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলেন। গত ৫ নভেম্বরের উপনির্বাচনেও জিয়াউল হক অংশ নিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সঙ্গে বর্তমানে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির প্রার্থী হয়ে ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট। ওই নির্বাচনে জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে ৩৯ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। কোনো কোনো নেতা-কর্মীর ভাষ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ও জনপ্রিয়তার কারণে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মঈন উদ্দিন।
রেজাউল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল সারা দেশে ২৬টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে, যার একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। আশা করি, আওয়ামী লীগের সভাপতির আদেশ এখানে পালিত হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে হতাশ করবেন না।’
জাপার সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘কে নির্বাচন করল, সেটা দেখার বিষয় নয়। আমি এ জনপদে দুবার সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নির্বাচন করব।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে যেতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর কোনো চাপ নেই।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে বাস চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিক্সার যাত্রী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ ২১ আগস্ট সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল ইসলামাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো দুই যাত্রী আহত হন।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম আবু হানিফ (৬০)। তিনি আখাউড়া উপজেলার ধরখার গ্রামের আবদুল হাসেমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঢাকাগামী বাসটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সাটিকে চাপা দিলে অটোরিক্সার তিন যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু হানিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নোমান মিয়া জানান, হাসপাতালে আনার আগেই হানিফের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনেরা হাসপাতাল থেকেই তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছে।