চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে সার্ভার ক্রুটির কারণে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারার অভিযোগ করেছেন বিজয়নগর উপজেলার সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোছাঃ প্রীতি খন্দকার ওরফে হালিমা আক্তার।
গতকাল ৯ মে বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে তিনি রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন।
প্রীতি খন্দকার জানান, বৃহস্পতিবার তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিতে সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠানে যান। মনোনয়ন ফরমের বিভিন্ন অংশ পূরণের পর প্রস্তাবকারি ও সমর্থনকারির ছবি অনলাইনে দেখা যাচ্ছিলো না। নির্ধারিত সময় বিকেল চারটা নাগাদও ছবি দেখা না যাওয়ায় মনোনয়ন ফরম পূরণ করতে পারেননি।
প্রীতি খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, ধারনা করা হচ্ছে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জটিলতার সৃষ্টি করেছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাবেন।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসার মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে উনি যে সময়ে সার্ভার ক্রুটির কথা বলেছেন তখন আরো একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দেন। যে কারণে সার্ভার ক্রুটির বিষয়টি সত্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পর তিনি আমাদেরকে জানাননি। যেখানে ফরম ফিলাপ করেছেন সেখানে সময় নষ্ট করেছেন। সময়ের শেষ দিকে ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে তিনি আরো বিপাকে পড়েন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১২ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৪২ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজা এবং গতকাল বুধবার বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বক্তারমুড়া ও একই দিন বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে পৃথক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান এই মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এসময় মাদকদ্রব্য বহনকারী একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল এলাকার মৃত তোতা মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০), ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার চর-কাছাপিয়া গ্রামের মোঃ হান্নান মিয়ার ছেলে নাঈম আহম্মেদ (২০) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কান্দিপাড়ার মোঃ ফজলু মিয়ার ছেলে মোঃ পিয়াস মিয়া (৩০)।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুগঞ্জ টোল প্লাজার সামনে থেকে মনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার শরীরে তল্লাশী চালিয়ে তার কোমরে ও পায়ে রাবার দিয়ে বিশেষ কায়দায় ফিটিং করা অবস্থায় ১২ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে বুধবার বিকেলে একই স্থানে অভিযান চালিয়ে একটি পিকআপ ভ্যান আটক করা হয়। পরে পিকআপভ্যানে তল্লাশী চালিয়ে ২২ কেজি গাঁজা উদ্ধার ও নাঈম আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
অপরদিকে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাজু আহমেদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বক্তারমুড়া গ্রাম থেকে ২০ কেজি গাঁজাসহ মাদক পাচারকারী পিয়াস মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে হাফিজুর রহমান (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে হত্যা করেছে মেয়ের জামাই। আজ ৪ নভেম্বর শনিবার ভোরে উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাফিজুর রহমান ওই এলাকা গুলু মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত মেয়ের জামাতা শামীম মিয়া ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তিনি একই ইউনিয়নের পেটুয়া গ্রামের তাজু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে হাফিজুর রহমানের মেয়ে নাহিদা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে শামিম মিয়ার বিয়ে হয়। নাহিদা আক্তার ও শামিম মিয়ার সংসারে ২ বছরের একটি শিশু সন্তান আছে। বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক নানান বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ৮ অক্টোবর নাহিদা আক্তার তার স্বামী শামিম মিয়াকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। এর পর তিনি স্বামীর বাড়ি ফিরে না গেলে শামীম তার বাবা হাফিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেয়।
নাহিদা আক্তার এরই মধ্যে পরিবারের লোকজনদের কিছু না জানিয়ে আবার স্বামীর সংসারে ফিরে যান। কিন্তু তাদের মধ্যে ফের কলহ শুরু হয়। এরই জেরে ৩ নভেম্বর শুক্রবার নাহিদা আবার বাবার বাড়ি চলে আসেন। নাহিদাকে ফিরিয়ে নিতে শামীমের বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা তাদের বাড়ি আসে। কিন্তু শামীমের সংসারে নাহিদা আক্তার ফিরে যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরই জেরে ভোরে শামীম শ্বশুর বাড়ি এসে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তার শ্বশুর হাফিজুর রহমানকে হত্যা করে পালিয়ে যান।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘাতক শামীমকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন খামারে চলছে গরু মোটাতাজাকরণ। খৈল, ভূষি, ঘাস, খড়, বন, লালিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে।
বিজয়নগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় কোরবানি যোগ্য অতিরিক্ত পশু মজুদ রয়েছে উপজেলায়।
উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ৬২০টি খামার ছাড়াও অনেকেই পারিবারিক ভাবেও কোরবানির পশু পালন করছেন। তার মধ্যে ষাঁড় গরু ২৫৫৭টি, বলদ গরু ১৩৭৪টি গাভী গরু ২৩৬৬ টি এবং মহিষ ৮৭৯ টি ছাড়াও ছাগল রয়েছে ৩২৯৫ টি ও ভেড়া ২১৫১ সহ মোট ১২৬২২ টি পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তার বিপরীতে উপজেলায় কুরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১০৫০০ টি পশু।
খামারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি খামারের শ্রমিকরা পশুগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত। কেউ গরুকে গোসল করাচ্ছেন, কেউ আবার খাওয়াচ্ছেন, কেউ বা পরিচ্ছন্ন করছেন।
কথা হয় খামার মালিক সেন্টু মিয়ার সাথে তিনি বলেন, আমাদের খামারে বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। সবনিম্ন লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকারও গরু রয়েছে। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন বাজারের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে।
আরেক খামার মালিক মোঃ হাবিব শাহীন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমার খামারে গরুর পরিচর্যা করা হচ্ছে। মোটাতাজা করতে কোনো প্রকার ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে এবার বাজারজাত নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছি। শুনছি চাহিদার চেয়ে পশু উৎপাদন বেশী।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আরিফুর ইসলাম বলেন, উপজেলায় দীর্ঘ একটি বছর আমাদের পরামর্শে ৬২০ টি খামারের স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে সর্ব মোট ১২৬২২ পশুর উৎপাদন করা হয়েছে। এছাড়াও পারিবারিক ভাবে যারা পশু লালনপালন করেছে তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বাজার গুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সার্বক্ষণিক দুইটি মেডিকেল টিম কাজ করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর সীমান্তে বিএসএফের বিরুদ্ধে মুরাদুর রহমান মুন্না নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ করছে নিহতের স্বজনরা।
৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তে জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুন্না ওই গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের পরিবার অভিযোগ করে বলেন, বিকেলের দিকে মুন্না তার ধানি জমি দেখতে সেজামুড়া সীমান্তের কাছে যান।
এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়।
এ সময় তাকে গুরুতর অবস্থায় জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তারা এ ঘটনায় সরকারের কাছে বিচার দাবি করেছেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিকিৎসক ডা: আরাফাত জানান, হাসপাতালে আনার পর তার শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সরাইল ২৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, যতটুকু খবর পেয়েছি মুরাদ নামে একজন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছিল। সে কি কারণে সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন, বিএসএফ তাকে ধরেছে কি না, না অন্য কেউ মেরেছে তা এখনও জানা যায় নি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
বিজিবির টহল টিমের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, মুরাদ ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের পর সুস্থভাবে ফিরে এসেছিলো। তখন তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। বিএসএফের সাথে কথা বলে আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মেসেঞ্জারে পরিচয়। টানা দুই বছরের প্রেম। বাধা হয়নি ছয় হাজার কিলোমিটারের পথ। বাধা হয়নি ধর্ম। ধীরে ধীরে প্রেম। শেষ পরিণয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছেন তারা। ইউক্রেনের নাগরিক অ্যান্দ্রো প্রকিপ। নাম বদলে এখন মোহাম্মদ। বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের বৃষ্টি আক্তারকে। স্বামীর সঙ্গে নাম মিলিয়ে বৃষ্টির নাম এখন বৃষ্টি প্রকিপ।
আজ ৩০ ডিসেম্বর সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালাছড়া গ্রামে দেখা মিলে বৃষ্টি ও প্রকিপের। কথা বলেন তাদের ভালোবাসা নিয়ে। জানালেন বিয়ে করতে পেরে তারা খুশি। সবার দোয়া চান তারা।
কালাছড়া গ্রামের কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি। এসএসসি পাস। টুকটাক ইংরেজি জানেন। বছর দুয়েক আগে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠান প্রকিপকে। সেই থেকে প্রেমের শুরু। গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন প্রকিপ। সে দিনই বিয়ে করেন বৃষ্টিকে।
কথা হলে বৃষ্টি জানান, প্রকিপকে পেয়ে তিনি বেশ খুশি। প্রকিপ শুরু থেকেই বলছিলেন বিয়ে করবেন। শেষ পর্যন্ত সে কথা রেখেছে তার। আমিও তার সাথে চলে যেতে প্রসেস করছি।
প্রকিপ জানায়, তার বিয়ে করা দরকার ও সে মুসলিম হবে- এ দুটি বিষয় আকৃষ্ট করেছে তাকে। বৃষ্টিকে বিয়ে করতে পেরে সে খুব খুশি। বাংলাদেশ তার ভালো লাগছে।
ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার ফরহাদ আলী বলেন, প্রেমের এমন ঘটনায় তারা সবাই খুশি। এ দম্পত্তিকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন।