চলারপথে রিপোর্ট :
শেখ হাসিনার বারতা নারী পুরুষ সমতা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে মা সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১২ মে রবিবার দুপুরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার ভূমি মো: মোনাব্বর হোসেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জান্নাত সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো: মনির হোসেন ভূঁইয়া, সদর ইউপি চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস।
সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আকতার হোসেন ভূঁইয়া ও তথ্য সেবা সহকারী শুকরানা আক্তার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা জন্মদাত্রী মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে সন্তান হিসেবে ছেলে মেয়ে উভয়েই মার প্রতি দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকা, জীবদ্দশায় মা এর সাথে কোন সন্তান যেন সামাজিক, পারিবারিক, মানসিক যেকোন অবস্থায় অশান্তি ও কষ্ঠকর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ থেকে বিরত থাকার আহবান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নদী ও প্রকৃতির সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন তরী বাংলাদেশ নাসিরনগর উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আজ ২৮ অক্টোবর সোমবার দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা সদরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী রবিউল সরোয়ারের উপস্থিতিতে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া।
পরে তরী বাংলাদেশ এর নাসিরনগর উপজেলা শাখার আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও যুগ্ম আহবায়ক শামীম আল মামুনের উপস্থিতিতে নাসিরনগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে তরীর সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার নাসিরনগর প্রতিনিধি নিহারেন্দু চক্রবর্তী, দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি মো. আরিফুল ইসলাম, দৈনিক সকালের সময় প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হাওড় এলাকায় দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে কিছু গাছের চারা রোপণেরও। ছোট্ট এ উদ্যোগে যেন বড় প্রশান্তির খবর কৃষকদের জন্য। তপ্ত রোদে ধান কাটতে এসে আপাতত টিউবয়েলের পানিতে তারা তৃষ্ণা মিটাতে পারছে। তারা আশায় আছে কাঠফাঁটা রোদে বৃক্ষের ছায়াতলে জিরিয়ে নিয়ে কাজ করতে পারার সময়টুকুর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের পতইর গ্রামের পূর্বপাড়া ছাত্র ও যুব সমাজের কয়েকজন হাওড়ে টিউবয়েল বসানোর উদ্যোগ নেন। এ কাজে এগিয়ে আসেন কয়েকজন প্রবাসী। তাদের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পতই এলাকার হাওড়ে দুটি টিউবয়েল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে ধান কাটতে আসা কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা ওই টিউবয়েল থেকে পানি নিতে শুরু করে। অনেকে ওই টিউবয়েলের কাছে বসে খাবারও খায়।
এক কৃষক বলেন, ‘এখন অনেক রোদ। গরমও বেশি। ধান কাটতে এসে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গে যেটুকু পানি থাকে তাতেও হয় না। যে কারণে এখানে টিউবয়েল বসানোয় আমাদের অনেক উপকার হলো। আমরা অনেক খুশি হয়েছি টিউবয়েলটি বসানোয়।’
ওই এলাকার বাসিন্দা ও উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত একজন বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচজন মিলে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা মাথায় আনি।
ছাত্র ও যুবসমাজের পাশাপাশি প্রবাসীরা এগিয়ে এলে কাজটি সহজ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। আরো একাধিক টিউবয়েল বসানো হবে। এ ছাড়া হাওড় এলাকার কৃষকের বিশ্রামের জন্য কিছু গাছের চারা লাগানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বেঙ্গাউতা গ্রামে বাস করেন এক হাজার পরিবারের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামে শিশু রয়েছে অন্তত ৫০০। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের জন্য কোনো বিদ্যালয় নির্মিত হয়নি গ্রামটিতে। সবচেয়ে কাছের যে বিদ্যালয়, সেই কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থানও প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। রাস্তাঘাট বেহাল হওয়ায় বছরের প্রায় ছয় মাস নৌকা ছাড়া যাতায়াত করতে পারেন না বাসিন্দারা। এ সময় চলাচলে ঝুঁকি থাকায় শিশুরাও দূরের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
এ গ্রামের বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন খান পড়েন রাজধানী ঢাকার তিতুমীর কলেজে। সেখানকার অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র বোরহান আক্ষেপের সুরে বলছিলেন, ‘আমাদের গ্রামে স্কুল নেই, রাস্তাঘাট নেই। মানুষের চেহারা নিয়ে কেবল বেঁচে আছি। শিক্ষার অভাবে প্রকৃত মনুষ্যত্ব জাগছে না।’ বোরহান আরও বলেন, এখানে শিক্ষিত কোনো মানুষ থাকেন না। যাঁদের অবস্থান একটু ভালো, তাঁরা চলে যান শহরে। ফলে বাসিন্দাদের সবাই নিরক্ষর।
মো. আমির বলেন, রাস্তাঘাট না থাকায় পাশের গ্রামেও যেতে হয় ফসলি জমি মাড়িয়ে। বর্ষায় তা-ও ডুবে যায়। যে কারণে ছয় মাস কোথাও যেতে পারেন না। নৌকার পথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিশুরা পাশের গ্রামের বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।
কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুবনা আক্তার বলেন, বেঙ্গাউতায় আনুমানিক পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে। নদী পার হয়ে বছরের তিন-চার মাস কিছু শিশু বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। সম্প্রতি তাদের আসা কমে গেছে। তিনি শুনেছেন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে অনেকে।
এর ইঙ্গিত মেলে বিদ্যালয়টির দুই ছাত্রীর কথায়। চতুর্থ শ্রেণির আফরোজা আক্তার বলল, ‘আমরার গ্রামে একটা ইস্কুল হইলে ভালা হইতো। এতো দূরের ইস্কুলে যাইতে মন চায় না। আব্বায় কইছে মাদ্রাসায় ভর্তি কইরা দিবো।’
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী বিলকিস আক্তারের আদর্শ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। তাঁদের মতো সে ভবিষ্যতে শিক্ষাদান করতে চায় অন্যদের। তবে এ পথে যে বাধা অনেক। বিলকিস বলে, ‘এতো দূর থেকে ইস্কুলে আইতে পারি না। বৃষ্টি আইলে বইখাতা ভিইজ্জা যায়। বন্যার সময় নৌকা দিয়া আইতে ডর (ভয়) লাগে।’ তাই স্থানীয় খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবিও জানায় সে।
সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে এ গ্রামের মানুষ বঞ্চিত বলে স্বীকার করেন চাপরতলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনসুর। তিনি বলেন, এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও রাস্তাঘাট তৈরি জরুরি।
জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার ১৩২টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১২৪টি। তবে ১৭টি গ্রাম বিদ্যালয়হীন। এর একটি এই বেঙ্গাউতা। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া বলেন, বিদ্যালয় স্থাপনে ৩৩ শতক জায়গার প্রয়োজন। জায়গার খোঁজ পেলে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবেন।
ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। ওই গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেল মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুস ছাত্তার নকশে বন্দী (রঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী সৈয়দ নাছিরুল হক (মাসুম) নকশে বন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রঃ) দ্বয়ের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ফান্দাউকের সভা আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
আজ ১২ মার্চ রবিবার বাদ ফজর নামাজের পর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ (মামুন)।
ফান্দাউক দরবার শরীফের সভায় লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মুখরিত প্রায় ৩৫ মিনিট মোনাজাতে মুসলিম উম্মার ঐক্য কামনাসহ দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে দেশ প্রেমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে পরম করণাময় আল্লাহর দরবারে শান্তি কামনা করা হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বি.এম. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মাহফিলে দরবার শরীফের আওতায় পরিচালিত প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার ৫জন ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়। এছাড়াও মাহফিলস্থলে ফান্দাউক দরবার শরীফের ছোট সাহেবজাদা সৈয়দ বাকের আহমদকে (আকদ) বিবাহ পড়ানো হয়।