চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বোরো ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আজ ১৪ মে মঙ্গলবার সকালে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ করে অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পেরে কৃষকরা খুশি। উপজেলা প্রশাসন, খাদ্য বিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সজীব কাউসারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদ হাসান, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুন নাহার, উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. মশিউর রহমান প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলায় মোট ৫৪৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি ধানের মূল্য ধরা হয়েছে ৩২ টাকা।
৭৬৬ জন কৃষক থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলবে। প্রত্যেক কৃষক তিন টন করে ধান দিতে পারবেন।
ধান দিতে আসা কৃষক তোতা মিয়া জানান, তিনি বেশ খুশি। খুব সহজেই সরকারের কাছে তিনি ধান বিক্রি করতে পেরেছেন। দামও ভালো পেয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পূর্বাঞ্চল রেলপথের অন্যতম বড় রেলওয়ে জংশন আখাউড়া। এ ষ্টেশনে প্রায় প্রতিটি আন্ত:নগর এক্সপ্রেসহ সকল ট্রেনের যাত্রা বিরতি রয়েছে।
প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী এ ষ্টেশন হয়ে ট্রেন ভ্রমন করে থাকে। বর্তমানে আখাউড়া ষ্টেশনে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এ ষ্টেশনে যাত্রী পারাপারের জন্য নব বিশাল একটি ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু ওভার ব্রীজে ওঠা-নামার জন্য র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এজন্য দুর্ভোগে পড়েছে ট্রেন যাত্রীরা।
প্রতিবন্ধি, বয়োবৃদ্ধ এবং নারী-শিশুদের চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত ব্যাগেজ বহন করে এক ফ্ল্যাট ফরম থেকে অন্য ফ্ল্যাট ফরমে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের সুবিধার্থে ওভার ব্রীজে ওঠা-নামার জন্য র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। এদিকে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হস্তপেক্ষ কামনা করে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম একটি দরখাস্ত দিয়েছেন।
রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ চলছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রতিটি রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন, নতুন ফ্ল্যাট ফরম নির্মাণ, রেল ট্র্যাক স্থাপনের কাজ প্রায় সমাপ্তির দিকে। নতুন জংশনে ১৭টি রেল ট্র্যাক/লাইন বসবে।
এ স্টেশন যাত্রী পারাপারের জন্য বিশাল একটি ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর দৈঘ্য প্রায় ১৯০ ফুট এবং উচ্চতা ৩০ ফুট। প্রায় ৫০ ফুট লম্বা সিঁড়ি হেঁটে যাত্রীদেরকে ওভার ব্রীজে উঠতে হবে। ওই ব্রীজে উঠা-নামার জন্য উভয় পাশে ৩টি করে ৬টি সিঁড়ি রাখা হয়েছে। কিন্তু কোন র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এজুন্য প্রতিবন্ধি, অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ যাত্রীদের পারাপারে অসুবিধা হচ্ছে।
তাছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজ বহন করে সিঁড়ি ভেঙ্গে চলাচল করতেও সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। অথচ এ পথের ছোট ছোট ষ্টেশনগুলোর ওভার ব্রীজেও র্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবন্ধি ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২১৩ এর ১৩ ধারায় ভৌত অবকাঠামো, যানবাহন, যোগাযোগ, তথ্য ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ জনসাধারণের জন্য প্রাপ্য্য সকল সুবিধা ও সেবাসমূহে অন্যান্যদের মত প্রত্যেক প্রতিবন্ধি ব্যক্তির সমসুযোগ ও সম আচরণ প্রাপ্তির অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, দু’জন নারী ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে রেল লাইনের উপর দিয়ে এক ফ্ল্যাট ফরম থেকে অন্য ফ্ল্যাট ফরমে যেতে দেখা গেছে। একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি ব্যক্তি ক্রাচে ভর করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করেছে। মালামাল বহনেও যাত্রীদেরকে বেগ পেতে হয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ব্রীজের উভয় পাশে সিঁড়ির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন আর র্যাম্প করার সুযোগ নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী যাত্রী বলেন, আমার ছোট বাচ্চা নিয়ে এতগুলো সিঁড়ি ভেঙ্গে ওভার ব্রীজ দিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাই হেঁটে পার হয়েছি। সমতল সিঁড়ি থাকলে খুব সুবিধা হতো।
শারীরিক প্রতিবন্ধি মোঃ নায়েব আলী নামে এক যাত্রী বলেন, সমতল সিঁড়ি হলে প্রতিবন্ধিদের খুব সুবিধা হতো। এখন যে সিঁড়ি করা হয়েছে তা দিয়ে প্রতিবন্ধিদের চলাচল করা সম্ভব না। আখাউড়া পৌরশহরের চন্দনসারের বাসিন্দা লেখক আলী মাহমেদ বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে রেলওয়ের আধুনিকায়ন কাজ করা হচ্ছে। অথচ আখাউড়ায় ওভার ব্রীজে কেন র্যাম্প রাখা হলো না তা বুঝতে পারছি না। অসুস্থ, প্রতিবন্ধি যাত্রীরা কিভাবে পারাপার হবে।
বিষয়টি খুবই অমানবিক। তিনি র্যাম্প নির্মাণের দাবি জানান। এ ব্যপারে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম বলেন, আখাউড়া ষ্টেশনে ওভার ব্রীজে ওঠার জন্য র্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়নি। বয়োবৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধিদের জন্য র্যাম্প সিঁড়ি খুবই দরকার। এ ব্যাপারে মাননীয় আইনমন্ত্রীর নিকট একটি আবেদন করেছি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে মন্ত্রী মহোদয়ের হাতে দরখাস্তটি হস্তান্তর করি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেলপথ নির্মাণ কাজ প্রকল্প পরিচালক মোঃ সুভক্ত গীন বলেন, আখাউড়া ষ্টেশনের ওভার ব্রীজের প্ল্যানে র্যাম্প রাখা নাই। তারা র্যাম্প নির্মাণ করা হয়নি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রপার ওয়েতে (সঠিক ভাবে) আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা পরামর্শক ও প্রকৌশলীদের সাথে পর্যালোচনা করে দেখব এটা করা যায় কিনা।
তিনি বলেন, প্রকল্পটির ব্যয় ধরা আছে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আমার মনে হয় ১ হাজার কোটি টাকা কম লাগবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছর জুলাইয়ে কাজটি শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানান এক কর্মকর্তা।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র লাইলাতুল কদর, ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর। তবে এ সময় ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে ৭ এপ্রিল রবিবার এ বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পরদিন ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিন যথারীতি যাবতীয় কার্যক্রম চালু থাকবে। এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পযর্ন্ত টানা ৫ দিন এ বন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল সোমবার সকাল থেকে পুনরায় এ বন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ খায়রুল আলম বলেন, পবিত্র শবেবরাত, ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ৬ দিন বন্ধ থাকলেও এ বন্দর দিয়ে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার অন্য সময়ের মতো স্বাভাবিক থাকবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি পাহাড়ি রাজ্যে পাথর, ছোট বড় মাছ, সিমেন্টসহ অর্ধশতাধিক পণ্য রফতানি করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিয়ে, গায়ে হলুদ, পুজা, খেলা-ধুলা বা মিছিলে বাদ্য বাজানোর জন্য ডাক পরে তাদের। কাঁধে ঢোল ঝুলিয়ে দু’হাতে ঢাকে কাঠির বারি দিয়ে ছন্দের আওয়াজ তুলেন। সেই ছন্দে মানুষ নেচে গেয়ে আনন্দ করে। মানুষকে আনন্দ দিয়েই চলে ঢুলিদের সংসার। পুজা এলেই কদর বাড়ে তাদের। ঢাকের বাদ্য ছাড়া পুজার আনন্দ যেন অসম্পূর্ণ। তাই আসছে দুর্গাপুজায় বাদ্য বাজানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের করুয়াতলী ঋষিদাস পাড়ার ঢুলিরা। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপুজা।
সোমবার দুপুরে ঋষি পাড়ায় ঢুকতেই কানে আসে ঢোলের আওয়াজ টেম-টে টেটেম..টেম.। সেই আওয়াজের ছন্দে শিহরণ জাগায়। মনে করিয়ে দেয় পুজা আসছে। উঠানে গিয়ে দেখা যায় বাদ্যযন্ত্র পরখ করে নিচ্ছেন ঢুলিরা। কেউ বা আঙ্গুলের আলতো ঁেছায়ায় ঢোলে তাল তুলছেন। তাদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক।
ঢুলিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল বাদ্য-বাজনার পেশা ধরে রেখেছে ঋষিদাস পাড়ার ৫/৬টি পরিবার। বিয়ে-গায়ে হলুদ, পুজাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। তাছাড়া ঢাক-ঢোল মেরামত আর মাঝে মধ্যে বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করেও কিছু আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। তবে তাদের ভাষ্য, দিন দিন আয় রোজগার কমে যাচ্ছে। তবু বাপ-দাদার পেশা বলে আকড়ে ধরে রেখেছেন।
ঢুলির সর্দার বিশাম্বর ঋসি প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ডোল বাজাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার বাবা ঢুলি ছিলেন। ১০/১২ বছর বয়স থেকে বাবার সাথে ঢোল বাজাতে বিভিন্ন জায়গায় যেতাম। এভাবেই ঢোল বাজানো শিখি। শখ থেকেই ঢোল বাজানো পেশা হয়ে গেছে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি বাবার পেশা ধরে রেখেছি। প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ঢোল বাজানোর সাথে জড়িত আছি। ২ মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলে আছে তারাও আমার সাথে বাজনা বাজায়।
তিনি আরও বলেন, বছরের অন্য সময় বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে বাদ্য বাজনার ডাক পরে। বছরের ২০/২৫টি অনুষ্ঠান করতে পারি। তবে পুজার সময় কাজের চাপ বাড়ে। এবার দুর্গাপুজায় ৪টি মন্ডপে কাজ পেয়েছি। একটি মন্ডপে ১০/১২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। লোকজনকে দিয়ে নিজের কিছু থাকে। বাপ-দাদা এ পেশায় ছিল। আমিও করছি। আমার ছেলেরাও করবে। তিনি বলেন আয় রোজগারের পাশাপাশি, ভক্ত-বৃন্দ আনন্দ পায় এটাই আমাদের আনন্দ।
কথা হয় রাখাল ঋসির সাথে। তিনি বলেন, ৬৫ বছর বয়স হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই ঢাক-ডোল বাজাই। পুজার সময় রোজগার বেশি হয়। তাই সারা বছর পুজার জন্য অপেক্ষা করি। ঢাক বাজাতে বিভিন্ন জেলাতে চলে যাই। পুজাতে ঢাক বাজিয়ে বেশি আনন্দ পাই। তিনি আরও বলেন, বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে ২/৩ হাজার টাকা পাওয়া যাই। এভাবেই আমাদের সংসার চলে। বয়স হয়েছে। জানি না আর কত দিন ঢোল বাজানোর কাজ করতে পারবো। আখাউড়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক বিশ^জিত পাল বাবু বলেন, পুজার একটি অন্যতম অনুষঙ্গ বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার। এটি আদিকাল থেকেই ছিল। এখনও আছে। তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে আয়ের স্বল্পতার কারণে অনেকেই এ পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ঋষিদাস পাড়ার কয়েকটি পরিবার পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখে কোন রকমে টিকে আছে। আশা করি, সরকারসহ স্থানীয়রা তাদের প্রতি নজর দিবেন।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
১০ দফা দাবিতে সারা দেশের ন্যায় আখাউড়ায় বিএনপির পূর্বঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, লবন, আটাসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সার, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্বি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও সকল বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি। এসব দাবির প্রতিবাদে আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে পৃথক স্থানে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। এদিকে একই সময়ে প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল।
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে গাজীর বাজার-হীরাপুর সড়কে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ডাঃ খোরশেদ আলম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচিতে দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জহিরুল আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহনেওয়াজ খান, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ মহসিন ভূঁইয়া, জাহের ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, মনির মুন্না প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আল আমিন ভূঁইয়া।
এদিকে দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গাজীর বাজারে উপস্থিত হয়ে শান্তি সমাবেশ করে। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মজনু মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা অহিদ ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা ছাদেকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন, ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক লুৎফুর রহমান সজিব প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় পৃথক স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ২ আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌর শহরের ১নং দুর্গাপুর এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে মো. মোসলেম মিয়া ও উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃত ফায়েজ মিয়ার ছেলে আলফাজ মিয়া।
গ্রেফতারকৃতদের আজ ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে থানা পুলিশ এ তথ্য জানায়। পুলিশ জানায়, পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসিম গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতাকৃতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।