চলারপথে রিপোর্ট :
টেকসই উন্নয়ন, অভীষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা আজ ১৫ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম কার্যালয়ের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর অমৃত লাল সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ বিল্লাল হোসেন, জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার নাগ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের জেলা শাখার সহকারী পরিচালক আকরাম হোসেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, শিশুদের নৈতিক শিক্ষায় আলোকিত করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে এই প্রকল্পের অধিকাংশ শিক্ষক হলেন নারী। এতে প্রকল্পটি নারীর ক্ষমতায়নেও ভূমিকা রাখছে।
বক্তারা এই প্রকল্পের আরো উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সফলতা কামনা করেন।
দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রকল্পের ৯০জন শিক্ষক, হিন্দু নেতৃবৃন্দ, মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ ও অভিভাবকসহ ১৫০ জন অংশগ্রহন করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিমে) দুই বোনসহ তিনজনকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভুইয়া বিপ্লবকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর পাশাপাশি তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে কেন্দ্রীয় সংসদে কেন সুপারিশ করা হবে না, তা আগামী সাত কর্মদিবসে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগ ওঠায় বিপ্লবকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় দুই নারীসহ তিনজনকে গত বুধবার জেলা শহরের বিএস ফিটনেস ক্লাব নামের একটি জিমে পরিচালক বিপ্লব, তাঁর সহযোগী সামিন ও জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতুর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ ওঠে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিপ্লবসহ অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়। তিনজনই এখন জেলহাজতে।
চলারপথে রিরেপার্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা রেস্তরা মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শাহআলম (৫৫) এবং পৌর ছাত্রলীগের সদস্য শাকিবুল চৌধুরী অন্তর (২০) কে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ ২ অক্টোবর বুধবার দুপুরে পৃথক অভিযানে শহরের কাউতলী এলাকা থেকে মোঃ শাহআলম এবং মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার এলাকা থেকে শাকিবুল চৌধুরী অন্তরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শাহ আলম পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামের মরহুম আবদুল মালেক সর্দারের ছেলে এবং শাকিবুল চৌধুরী অন্তর মধ্যপাড়া (বর্ডার বাজার) এলাকার শফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে। মোঃ শাহআলম বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বুধবার বিকেলে জেলা পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতারকৃত দুজন গত ৪ ও ৫ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃত শাহ আলম ও অন্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এজাহারনামীয় আসামি। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় তিতাস নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে গিয়ে নৌকা ভেঙে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নৌকায় থাকা ইউএনও, এসিল্যান্ড ও থানার ওসিসহ স্টাফরা পানিতে পড়ে যান। পরে তারা সাঁতরে তীরে উঠে প্রাণে রক্ষা পান। গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা কয়েকজন জানান, সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরে তিতাস নদী থেকে রাতে অবৈধভাবে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া যায়। গোপন খবরের ভিত্তিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসেন ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। ভ্রাম্যমাণ আদালতের দলটি নৌকাযোগে তিতাস নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের স্থানে যাচ্ছিল। নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর মাঝে ভেঙে ডুবে যায়। এতে নৌকায় থাকা ইউএনও, এসিল্যান্ড ও ওসিসহ সবাই পানিতে পড়ে যান। মধ্যরাতে অন্ধকারে নদীতে এ ঘটনা ঘটায় এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। পরে তারা সাঁতরে নদীর তীরে ওঠেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, আমি ভেবেছিলাম কাছাকাছি কোনো জায়গায় যাবে। নৌকা উনারাই নিয়েছিলেন। তবে এ ঘটনায় কোনো জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, নৌকাটি অনেক নড়বড়ে ছিল। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
স্টাফ রিপোর্টার :
ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে তিন বাসযাত্রী আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বাইপাস সড়কের পৈরতলা রেলগেইট এলাকায় ।
আহতরা হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দেবরাজ রায়ের ছেলে কলেজ ছাত্র সিগ্ধ রায়, একই এলাকার স্বপন বর্মনের ছেলে প্লাবন বর্মন ও অপূর্ব বর্মন। আহতদেরকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আহত সিগ্ধ রায়ের বন্ধু আকাশ সরকার ও তন্ময় রায় জানান, ৪৫জন যাত্রী নিয়ে বাসযোগে তারা কিশোরগঞ্জ সদর থেকে চট্টগ্রামে তীর্থ ভ্রমণের জন্য প্রবর্তক মন্দির ও পুন্ডুরি ধামে যাওয়ার পথে বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বাইপাস সড়কের পৈরতলা রেলগেইট এলাকায় পৌছে বাসটি ট্রেন যাওয়ার কারণে লেভেল ক্রসিংয়ে আটকা পড়ে।
এ সময় তীর্থ যাত্রী প্লাবন, সিগ্ধ ও অপূর্ব প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য বাস থেকে নামার সাথে সাথে সেখানে আগে থেকে উৎপেতে থাকা ৫/৬ জনের একটি ছিনতাইকারীর দল তাদেরকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে। এতে তারা তিনজন আহত হন।
পরে তাদেরকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনে ভর্তি করা হয়। আহত তিনজনই কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে জেলা খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার জানান, পৈরতলা রেলগেইটের স্পটটি দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাইয়ের রেডজোন হিসেবে পরিচিত। এর আগেও এই স্থানে একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই স্পটে দূর পাল্লার বাস যাত্রী ও চালকেরা ছিনতাইয়ের কবলে পরছেন।
তিনি একাধিক বাস চালকদের বরাত দিয়ে জানান, গভীর রাতে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী এনা, শ্যামলী, সৌদিয়া, মামুন, ইউনিক, ও গ্রীনলাইনসহ একাধিক পরিবহনের যাত্রীবাহি বাস পৈরতলা রেলগেইট এলাকায় গিয়ে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। যার কারণে বেশীর ভাগ সময়ে দূর পাল্লার পরিবহনের চালকেরা বাইপাস সড়ক বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভেতর দিয়ে চলাচল করতো। পরে শহরবাসীর আপত্তির মুখে রাতের বেলা দূর পাল্লার বাস শহরের মধ্যে দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথে কথা বলেন। ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সরোদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত পাঠক নন্দিত দৈনিক সংবাদপত্র সমতট বার্তা’র ৩৩ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে দৈনিক সমতট বার্তার আয়োজনে ৭ পর্বের সমতট উৎসবের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল সুধী সমাবেশ, গুণীজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিতাস পাড়ে অভাবনীয় উন্নয়নের সফল রূপকার র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, মুখ্য আলোচক ছিলেন বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এএসএম শফিকুল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষণ দেবনাথ।
দৈনিক সমতট বার্তার উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ এর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও কবি জয়্দুল হোসেন। প্রধান অতিথি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি যখন ছোটবেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসতাম তখন কুসুমকুমার চক্রবর্তী নামে একজন বড় ডাক্তার ছিলেন। তিনি আমাকে কালো মেঘ ঔষধ খাওয়াতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এসে দিনে দিনে গ্রামে ফিরে যাওয়া সম্ভব হতো না। সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ পার্কে আমার ফুফুর বাসায় রাত্রিযাপন করতে হতো। তখন প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আমি শুনতে পেতাম ঘরে ঘরে সুরের মূর্ছনা, ঝংকার। প্রায় সবার বাড়ি থেকে হারমোনিয়াম এর আওয়াজ ভেসে আসতো ওই সময়টাতে। এটি ছিল নিতান্তই তখন সুরের শহর। আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন নামে যেখানে আমরা আজকে দাঁড়িয়ে আছি এই বাড়িটি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ক্রয়কৃত বাড়ি। এ বাড়িটিতে তিনি নিজে এই সঙ্গীত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আগের যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা দেখেছি সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন আর নেই। কিন্তু আমি আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে খুঁজে পেতে চাই। আমি যখন এখানে রাজনীতি করতে এসেছি তখন আমি এই শহরকে ভালোবাসি বলেই এসেছি। কারণ, সমৃদ্ধ শিক্ষা-সংস্কৃতি, অনেক অনেক জ্ঞানী-গুণীজনদের এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম ছিল অনেক উপরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, আরও ছিলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্যারিস্টার এ রসুল, নবাব শামসুল হুদা, মলয়া সংগীতের মনমোহন দত্ত, আফতাব উদ্দিন খাঁ, লব পাল এর মত অনেক গুণীজন। এখন আর সেই দিন নেই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজনীতি করতে এসে এখানে অনেক মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি সহমর্মিতা পেয়েছি। তাঁদের কথাতো আমি ভুলতে পারবো না। এরমধ্যে রয়েছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। আর সেই জন্যেই এখানে আসার ব্যাপারে তার যে আহ্বান সেটাকে আমি উপেক্ষা করতে পারিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারই বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে। আর এসব প্রচার যখন উপর মহলে যায় তখন আমরা অবহেলার শিকার হই। করোনাকালীন সময়ে একজন জনপ্রিয় মাওলানার মৃত্যুতে তাঁর জানাজায় অনেক মানুষ হয়েছিল। এটি নিয়েও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই চট্টগ্রামে শফি নামে একজন আলেম সাহেবের মৃত্যু হয়। তার জানাজায়ও আরো অনেক বেশি মানুষ হয়েছিল। সেটিও ছিল করোনাকালেই। অথচ চট্টগ্রামের এ বিষয়টি নিয়ে কোন বিরূপ প্রচারণা কেউ করেনি। উপরন্ত চট্টগ্রামবাসীরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পর্কে নেতিবাচক সমালোচনা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একজন মহিলা দু’দুবারে মহিলা মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, সেই কথাটা কেউ বলে না। কিছু লোক সংঘবদ্ধ হয়ে, অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে এই আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলস্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ বেশ কিছু স্থানে বর্বর হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করলো, এ ব্যাপারে কেউ কিন্তু আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ঢাকা শহরে এত এত সাংস্কৃতিক সংগঠন, বড় বড় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন’ তারা কিন্তু এই তান্ডবের বিপক্ষে একটি মানববন্ধন করেননি। ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাত্র আড়াই ঘণ্টার পথ। এ সত্যেও এখানে কেউ আসেননি। আমি এই ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করার কথা বলেছিলাম। তাও হলোনা। এখানেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে নেতিবাচকতা হয়েছে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বাড়ি, এমন সাংবাদিকও ওই ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর বিপক্ষে লিখেছেন। তাদের কেউ একবার এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, মিউনিসিপ্যালিটি সহ অন্যান্য স্থাপনার ধ্বংসরূপ দেখে যাননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতি তাদের বিরূপ ধারণা রয়েছে। এখানে রাজনীতিতে এসে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছি, এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার এ প্রচেষ্টায় আমার পাশে আছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। এখানকার অন্যান্য পত্রিকার মধ্যে দৈনিক সমতট বার্তা কিছুটা ব্যতিক্রম। জেলার শিল্প সংস্কৃতি এবং রাজনীতির প্রগতিশীল ভাবনাগুলোকে মর্যাদা দিয়ে তাঁরা পত্রিকাটি চালাচ্ছেন। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইনশাল্লাহ, একদিন অতীতের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা অবশ্যই ফিরে পাবো। এ ব্যাপারে আমি আবারো আপনারা সকলের সহযোগিতা চাই।’ অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন প্রধান অতিথি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, মুখ্য আলোচক বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন দৈনিক সমতট বার্তা পাঠক ফোরাম এর সভাপতি হাজী সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাফিরউদ্দিন চৌধুরী রনি। এর আগে মোরশেদুল ইসলাম ও ফখরুল ইসলামের জীবনচরিত ও কর্মকৃতি পাঠ করেন ফারিয়া বিনতে আলম ও ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা। সংগীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নুসরাত জুহুরী প্রান্তি, পাপিয়া চৌধুরী, ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা, মায়া চক্রবর্তী। নৃত্য পরিচালনা করেন নৃত্য প্রশিক্ষক যে আমিন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগীত সংগঠক আনিসুল হক রিপন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন দৈনিক সমতট বার্তার সম্পাদক মনজুরুল আলম।