চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে ফতেহপুর কমলাকান্ত গুরুচরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পাশ করা কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৮ মে শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে এই সংবর্ধনা প্রদান ও দোয়া মাহফিলসহ দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সমাবেশ ও নবগঠিত পিটিএ কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডা. মো. মিজানুর রহমান।
প্রধান শিক্ষক শাহ জাহান কবিরের সভাপতিত্বে ও সহকারী শিক্ষক আলী আকবর মাস্টারের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, মো. শাহীন, বাছির উদ্দিন, মিজানুর রহমান, মোখলেছুর রহমান, ইভা আক্তার, শিক্ষক প্রতিনিধি আবুল হোসেন, বায়েছ মিয়া ও হাজেরা বেগম, প্রভাষক আবুল হোসেন, মতিউর রহমান, পিটিএ কমিটির সভাপতি মফিজুল করিম, সদস্য সচিব বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ফতেহপুর কমলাকান্ত গুরুচরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ সহ ৯১.৪% শিক্ষার্থী পাশ করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সার্বিক দিকনির্দেশনায়, শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং শিক্ষার্থীদের সদিচ্ছার কারণেই এ ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সাফল্যে এমন ফলাফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এ জন্য তারা উপস্থিত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন।
পরে দেশ, জাতি ও ফতেহপুর কমলাকান্ত গুরুচরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনায় মিলাদ শেষে দোয়া করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আরাফাতুল ইসলামের স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা প্রশাসন। আজ ১২ জুলাই বুধবার দুপুরে মেধাবী ওই শিক্ষার্থীকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে আর্থিক সহযোগিতা করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক।
শিক্ষার্থী আরাফাতুল ইসলাম উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউনিয়নের আলমগীর হোসেনের ছেলে। মেধাবী ওই শিক্ষার্থীর বাবা ছোটখাটো একটি টং দোকান দিয়ে সংসার চালান। এর মধ্যে ছেলেকে বুয়েটে পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে আরাফাতুল ইসলামের অসহায়ত্বের বিষয়টি নজর কাড়ে ইউএনও একরামুল ছিদ্দিকের। পরে তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন ইউএনও। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বুধবার নিজ কার্যালয়ের ডেকে এনে তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেন তিনি।
বুয়েট ছাত্র আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ইউএনও স্যার আমার অসহায়ত্বের খবর পেয়ে আমার স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি খুব আনন্দিত ও গর্বিত। আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে মানুষের পাশে দাঁড়াব।
ইউএনও একরামুল ছিদ্দিক বলেন, উপজেলা প্রশাসন সব সময় মেধাবী, হতদরিদ্র মানুষের পাশে ছিল, আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কৃতী ছাত্র আরাফাতুলকে প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রয়োজনবোধে ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সন্ত্রাসী হামলায় জামালপুরের বকশীগঞ্জের ৭১ টিভি ও বাংলা নিউজের নির্ভীক সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুন শুক্রবার শেষ বিকেলে নবীনগর প্রেসক্লাব চত্বরে নবীনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সোরাফের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নবীনগর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ, মাহাবুব আলম লিটন, আসাদুজ্জামান কল্লোল, কান্তি কুমার ভট্টাচার্য্য, তাজুল ইসলাম, মেহাম্মদ হোসেন শান্তি, মিঠু সূত্রধর পলাশ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য টিটন দাস, সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি সঞ্জয় শীল, সাধারণ সম্পাদক কয়েছ আহম্মেদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন- সাংবাদিক গোলাম রব্বনী সহ ইতোপূর্বে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যার বিচারসহ অধিকাংশ সাংবাদিক হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়নি। ধারাবাহিক ভাবে সাংবাদিক হত্যাও নির্যাতনের বিচার না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সকল সাংবাদিক হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রæত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন।
সভায় এ হত্যকান্ডের প্রতিবাদে তিন দিন কালো ব্যাজ ধারণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের কাদৈর গ্রামের এন্তাজ মিয়ার ছেলে অটোরিকশা চালক আরাফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে নবীনগর থানা পুলিশ।
আজ ৬ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রতনপুর গ্রামের মাঈনুদ্দিন, আড়াই হাজার থানার ইসাক মিয়া ও সোনারগাঁও থানার হোসেন মাহমুদ।
হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে একালাবাসী নবীনগর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। আরাফাতের মা- বাবা খুনিদের ফাঁসি দাবি করেছেন।
উল্লেখ, গত ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নবীনগরের খাগাতুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে আরাফাতকে হত্যা করে তার অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় খুনিরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঘোড়ায় চেপে স্বপ্নের রাজপুত্র এসে নিয়ে যাবে রাজকন্যাকে-গল্পকথায় এ উপমার দেখা হর-হামেশাই মেলে। তবে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ কালের রাজকন্যাদের বিয়ের গল্পেরও আধুনিকায়ন হয়েছে। এখন রাজকন্যাদের স্বপ্নের রাজপুত্র আর ঘোড়ায় চেপে নয়, আসেন হেলিকপ্টারে চেপে।
এ কালের এমনই এক রাজপুত্রের দেখা মিলল নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের বলদীবাড়ি গ্রামে।
গতকাল ৩১ জুলাই সোমবার দুপুর ২টায় বলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এসে নামল একটি হেলিকপ্টার। চারপাশে ততক্ষণে বেশ ভিড় জমে উঠেছে। কিছুক্ষণ পর আকাশযান থেকে নেমে আসলেন বরবেশী এক যুবক। পাশেই অপেক্ষা করছিল ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের গাড়ি। তাতে চড়েই রাজকন্যাকে আনতে চললেন স্বপ্নের রাজপুত্র।
জানা গেছে, হেলিকপ্টারে উড়ে আসা বর নবীনগর উপজেলার ভিটিবিষাড়া গ্রামের মো. মানিক মিয়া ও সূচিত্রা বেগম দম্পতির মেঝ ছেলে মো. সুজন মিয়া। আর কনে হলো পার্শ্ববর্তী বলদীবাড়ি গ্রামের মো. হুমায়ুন কবির ও শিক্ষিকা মোসাম্মাৎ স্বপ্না কবিরের একমাত্র মেয়ে হাসনাত কবির সূচি। বিয়ের এই মুহূর্তটি স্বরণীয় করে রাখতে এক লাখ সত্তর হাজার টাকা দিয়ে হেলিকপ্টার ভাড়া করেছেন বর পক্ষ।
বলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বালুর মাঠে হেলিকপ্টারটি যতক্ষণ ছিল, ততক্ষণই চারপাশে ছিল উৎসুকদের ভিড়। হেলিকপ্টারে করে আসা বর দেখার জন্য আশপাশের অনেকেই ভিড় জমান মাঠে। উৎসুকদের ইচ্ছাপূরণ করে বিয়ে শেষে সন্ধ্যার আগেই কনেকে নিয়ে বর ফের চড়লেন হেলিকপ্টারে। বিকট শব্দে আকাশে ওঠে হেলিকপ্টার; আর মেঘের দেশ হয়ে ইট-কাঠ-পাথরের শহরে পাড়ি জমান এ কালের রাজপুত্র আর রাজকন্যা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকা আক্তারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল রবিবার বিকেলে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকার পড়াশুনা চালানোর জন্য তার হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
আনিকা আক্তার জেলার নবীনগর উপজেলার ভোলাচং গ্রামের কাজীমাবাদ শালকান্দি গ্রামের প্রয়াত মোঃ ফারুকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে।
আনিকা আক্তার যখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী তখন তার বাবা ফারুকুল ইসলাম মারা যান।এরপর দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে আনিকার পড়াশুনা চালিয়ে যান মা আয়েশা খাতুন।
অভাব অনটনের কারণে আনিকার বই কেনা, বিদ্যালয়ের বেতন, পরীক্ষার ফি ও ফরম পূরণের টাকা দেওয়ার মতো অবস্থা ছিলোনা মা আয়েশা খাতুনের। অনেক কষ্ট করে এসব টাকা পয়সা যোগাড় করতে হয়েছে আয়েশা খাতুনকে।
তবে কোনো কিছুই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি সংগ্রামী আনিকার। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নবীনগর উপজেলার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে আনিকা। পরে সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হয়।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে এইচএসসি পর্যায়ের পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম তাকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই কৃতি শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু এই শিক্ষার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, তাই সেখানে পড়াশোনার খরচ তেমন হবে না। নিয়মিত ক্লাশে উপস্থিত থাকলে এবং মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করলে এই শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করতে পারবে। তিনি এই শিক্ষার্থী ও তার মাকে সহায়তা ববাদ দেয়া টাকা পড়াশোনার জন্য খরচের পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে আনিকা বলেন, বাবার আদর স্নেহ পেলেও সে কথা মনে নেই। মা আমার সব। এক চাচি পরীক্ষার ফি যোগাড় করে দিতেন। বই কেনাসহ অন্যান্য টাকা মামা দিতেন। বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না বলে সৌদি আরব প্রবাসী মামা আমজাদ হোসেনের বাড়িতে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি।
নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব সংকর দাস বিদ্যালয়ের বেতন ও এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ফি মওকুফ করিয়েছেন। শিক্ষকরা বিনা টাকা পড়িয়েছেন। আনিকা বলেন, সহায়তা পেয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ। এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের হোস্টেলে একটি সীট পেলেই হয়। প্রয়োজনে টিউশনি করব, তবুুও পড়াশোনা চালিয়ে যাব।
আনিকার মা আয়েশা খাতুন বলেন, মেয়ের বাবা বেঁচে নেই। আমার আয়ের কোনা উৎস নেই। সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি চাই মেয়ে পড়াশোনা করে সামনে এগিয়ে যাক।