চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে এরশাদ নামে এক অটোচালকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত এরশাদ মিয়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খোলাপাড়া গ্রামের বজলু মিয়ার ছেলে।
গতকাল ১৯ মে রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনি মারা যান।
জানা যায়, পেশায় অটোচালক এরশাদ মিয়া সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাড়িতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চার্জ দিতে যান। এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়েন তিনি। পরে অচেতন অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা এরশাদ মিয়াকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, এক অটোরিকশাচালক মারা গেছেন।
বিষয়টি আমরা আশুগঞ্জ থানাকে অবগত করেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ৪৪ কেজি গাঁজাসহ মো. আবুল বাশার (৩৫) নামে এক মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আবুল বাশার বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার গুলিশখালি গ্রামের মো: আব্দুল সাত্তার গাজীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ৪৪ কেজি গাঁজা উদ্ধারসহ চালক আবুল বাশারকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় মাদক পাচারে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নাহিদ আহাম্মেদ জানান, এসব গাঁজা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্ত এলাকা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গ্রেফতার আবুল বাশারের বিরুদ্ধে থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রজু করে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যুবলীগ নেতা জনি মিয়াকে (৩৫) ছুরিকাঘাতে পায়ের রগ কেটে হত্যার ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
১৬ আগস্ট বুধবার রাতে নিহতের বাবা মকসেন মিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সামা ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আমির হোসনসহ ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। বাবা-ছেলে দুজনই আওয়ামী লীগ নেতা এবং দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টায় পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। তারা হলেন, তালশহর গ্রামের আজহার শেখের ছেলে আজিম শেখ (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (৩২)।
এর আগে গত সোমবার রাতে উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের তালশহর বাজারের অদূরে ওই গ্রামের মকসেন মিয়ার ছেলে যুবলীগ নেতা জনি মিয়া ও আওয়াল মিয়া নামে দুজনকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা জনি মিয়ার দুই পায়ের রগ কেটে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর জখম করে এবং আওয়ালকেও কুপিয়ে আহত করে। তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক তাদের ঢাকায় পাঠান। ঢাকায় যাওয়ার পথে রাত ২টার দিকে নরসিংদীতে জনি মিয়া মারা যান।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ জানান, বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে হত্যা মামলা রজু করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন জানান আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধা মারা যান।
নিহত মালেকা বেগম (৫৫) আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মাজন খাঁর স্ত্রী।
নিহত মালেকা বেগমের নাতনি সানজিদা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তার মামা শাহিন মিয়া ও তার স্ত্রী জান্নাত এবং বড় মামি সেফালি ও মামাতো ভাই ইয়াসিন মালেকা বেগমকে মারধর করেন। তারা মালেকাকে মারধর করে প্রায়ই ৪ ঘণ্টা ঘরে ফেলে রাখে। এ সময় তার মেজো মামা তার নানিকে অজ্ঞান অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে মালেকা বেগমের প্রায়ই ঝগড়া হত। দুপুরে মালেকা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে কাভার্ডভ্যান থেকে ১০৪ কেজি গাঁজাসহ জিয়াউর রহমান (৩৮) নামের এক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ৫ আগস্ট শনিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিয়াউর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার দেলি উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত খেলু মিয়ার ছেলে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদক উদ্ধারের অভিযানের সময় একটি কাভার্ডভ্যানে তল্লাশি করে ১০৪ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। এই ঘটনায় এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানার এসআই মো. কবির হোসেন বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। গ্রেফতার কারবারিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারনামীয় এক আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বাদীর অনাপত্তি ও উপজেলা বিএনপিসহ স্থানীয় লোকজনের চাপের মুখে গতকাল ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছেড়ে দেওয়া ওই আসামির নাম রোমান মিয়া। তিনি ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গত ২০ আগস্ট আশুগঞ্জ থানায় হওয়া একটি মামলার ৬ নম্বর আসামি। গত বুধবার দিবাগত রাতে তাঁকে আটক করে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিল সেনাবাহিনী।
পুলিশ বলছে, বাদী ভুলক্রমে মামলায় ওই ব্যক্তিকে আসামি করেছে বলে আদালতে হলফনামা দিয়েছেন। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে আসামি ছেড়ে দেওয়ার পর দুপুরে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেনসহ পুলিশের তিন সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহার হওয়া অন্য দুই সদস্য হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী। তাঁদের প্রশাসনিক কারণে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, ওসি ও দুই এসআইকে প্রশাসনিক কারণে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে। প্রত্যাহারের সাথে আসামি ছেড়ে দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আশুগঞ্জ বাজারের ভাড়া বাসা থেকে রোমান মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন সেনাসদস্যরা। রাত থেকেই তাঁকে ছেড়ে দেয়ার জন্য আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মী ও উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লোকজন থানায় চাপ দিতে থাকেন। তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে বৃহস্পতিবার সকালে থানার সামনে অনেকেই অবস্থান নেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে থেকে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে আশুগঞ্জ গোলচত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। তখন রোমান মিয়াসহ অনেকেই ককটেল বিস্ফোরণ করে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা পিস্তল দিয়ে ছাত্রদের ওপর গুলি ছোড়েন। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় ২০ আগস্ট রমজান মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিনসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলার ৬ নম্বর আসামি রোমান। রোমানের ছোট ভাই ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মিয়া মামলার ৫ নম্বর আসামি।
মামলার বাদী রমজান মিয়া বলেন, ভুল করে রোমান মিয়াকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। রোমানের বিষয়ে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। এ ছাড়া উপজেলা বিএনপি দু’টি পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ায় বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, বাদী বিএনপির সমর্থক এবং ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন। উপজেলার একটি স্বার্থান্বেষী মহল, যারা জীবনে কোনো দিন বিএনপি করেনি, তারা এখন নিজেদের বিএনপির নেতা-কর্মী দাবি করে ওই আসামিকে ছাড়িয়ে নেয়। এর সঙ্গে উপজেলা বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারণ রোমান মিয়া সুবিধাবাদী ও আওয়ামী লীগের লোক। তিনি আওয়ামী লীগের একাধিক সভায় উপস্থিত ছিলেন। এক সভায় সারা জীবন আওয়ামী লীগ করবেন বলে বক্তব্য দেন, যেটি ভাইরালও হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, সেনাসদস্যরা ওই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে মামলার বাদী থানায় গিয়ে তাঁকে ভুলক্রমে মামলার আসামি করা হয়েছে বলে জানান। এ বিষয়ে তিনি আদালতে একটি অ্যাফিডেভিট (হলফনামা) দিয়েছেন এবং পুলিশকে সেটি কপি দেন। বাদীর অভিযোগ না থাকায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। সূত্র : প্রথম আলো