অনলাইন ডেস্ক :
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জামিন আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ ২৩ মে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কাকরাইলে অবস্থিত শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আসেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৬ এপ্রিল শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসকে ২৩ মে পর্যন্ত জামিন দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
ওই সময় আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেছিলেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় চ্যালেঞ্জ করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। সেদিন শ্রম আদালতের দেওয়া সাজা স্থগিত করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে জামিন চেয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার রায়ে ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চেয়ে আপিলও করেছিলেন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে গত ২৮ জানুয়ারি হাজির হয়ে আপিল করেন ড. ইউনূস।
চলারপথে রিপোর্ট :
কোনো রকমে ঠেলা ধাক্কায় ওপরে ওঠা। এরপর শুরু একের পর ঝাঁকি। মোট ৩৬টা। ততক্ষণ পর্যন্ত ‘ইস’ আর ‘উফ’ আওয়াজ।
বেশি বেকায়দায় পড়লে শোনা যায় হায় হায় শব্দ। পড়ে গেলাম পড়ে গেলাম বলে চিৎকার। দৌড়ে এসে রক্ষার চেষ্টা। রেললাইন ১২টা, ডুয়াল গেজের।
একেকটায় তিনটি করে রেলপাত। সেই হিসাবে মোট ৩৬টি পাত পার হওয়ার সময় প্রতিবারই বেশ ঝাঁকি লাগে। এতে যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীরা প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রেল ওভারপাসটি ওঠার সময়ও দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার লাল বাজারের একটি লেভেলক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত এভাবেই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এ লেভেলক্রসিং পার হয়েই যেতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। লেভেলক্রসিংয়ের পরেই রয়েছে বড় বাজার নামে একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ ছাড়া জেলা সদর ও উপজেলা সদরের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ লেভেলক্রসিং পার হয়ে এলাকায় যান।
সরজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লালবাজার নামে এলাকার শেষ হতেই লেভেলক্রসিং শুরু।
এক থেকে দেড় শ গজ পার হয়ে ওপারে বড় বাজার। আখাউড়া-লাকসাম ডুয়াল গেজ প্রকল্প নির্মাণের আগে তিনটি রেললাইন পার হয়ে এপার-ওপার যাওয়া যেত। আর এখন মোট ১২টি রেললাইন বসানোয় এটি পার হতে বেগ পেতে হয়। প্রতিটি রেললাইনের পরের জায়গা বেশ উঁচু-নিচু। এ ছাড়া নতুন রেললাইন অনেক উঁচুতে নির্মাণ হওয়ার সেটি সড়ক থেকে বেশ উঁচুতে। যে কারণে ঠেলা-ধাক্কায় যানবাহন ওঠাতে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। কখনো মালবাহী অনেক যান এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনার মধ্যে পড়ছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ২৪ ঘণ্টায় অর্ধশতের বেশি ট্রেন এ পথ দিয়ে চলাচল করে। যে কারণে একটু পর পর বেরিয়ার ফেলে রাখা হয় এ লেভেলক্রসিংয়ে। এতে হাসপাতালে জরুরি সেবা নিতে যাওয়া রোগীরা অনেক সময় আটকা পড়ে যান। লেভেলক্রসিং পার হতে গিয়ে বেশ ঝাঁকি লাগে বলে রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে যানবাহন চালকরা এ পথ দিয়ে যেতেও চান না।
দুর্ভোগের বিষয়টি এ প্রতিবেদক একাধিবার নিজেই দেখেন। যানবাহন চড়তে দুর্ভোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে গত ১৫ জানুয়ারি এ প্রতিবেদক একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে। রাধানগর চৌরাস্তা মোড় থেকে ওই লেভেলক্রসিংয়ে হয়ে স্টেশনে যাওয়ার পথে ঠিকই দুর্ভোগে পড়তে হয়। লেভেরক্রসিংয়ে ওঠার সময় এ প্রতিবেদকের অটোরিকশা আটকে যায়। একপর্যায়ে অটোরিকশাটি পেছন দিকে নামতে থাকলে অস্থায়ী বেরিয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক যুবক টেনে ধরেন।
লেভেলক্রসিং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আখাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন আহমেদ এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘উপজেলার একমাত্র হাসপাতাল, একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার এবং জেলা সদর ও আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে যেতে এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সড়ক থেকে রেললাইন অনেক উঁচু হওয়া ও অনেকগুলো রেললাইন পার হতে হয় বলে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগের শিকার এলাকার মানুষ এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস করার দাবিতে মানববন্ধনও করেছে। আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত বিবেচনায় নেবেন।’
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হিমেল খান বলেন, ‘হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা এ বিষয়ে প্রতিনিয়তই অভিযোগ করেন। নতুন রেলপথ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে চলতে গিয়ে তাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে হাড়ভাঙা রোগী, গর্ভবতী নারীদের বেলায় সমস্যা হচ্ছে বেশি। এ পথ ছাড়া হাসপাতালে আসার কোনো বিকল্প রাস্তাও নেই। জনগণের সমস্যার কথা চিন্তা করে এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণের জন্য এলাকার সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।’
এ বিষয়ে লাকসাম-আখাউড়া ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘রেললাইন পার হতে গিয়ে দুর্ভোগের বিষয়টি এলাকাবাসী বলেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি অবগত আছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে কিছু করার নেই। তবে যত দূর জানি পরবর্তীতে আখাউড়া-সিলেট ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণ কিংবা অন্য প্রকল্পে চলাচলের সুবিধার্থে একটি ওভারপাস কিংবা একটি আন্ডারপাসের পরিকল্পনা থাকতে পারে।’
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ, পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
আজ ২৫ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ বছর সরকারিভাবে এবং দলগতভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন নিরুৎসাহিত করেছি। আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠন নির্দেশমতো তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গরিব-দুস্থদের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ আগে থেকেই চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তুলি।
একচেটিয়া বাজার তৈরি করে অধিক মুনাফা যাতে কেউ করতে না পারে সে জন্য ভারত হতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পিঁয়াজ এবং প্রায় সমপরিমাণ আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রাজধানী ঢাকার অন্তত ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম এবং দুধ সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভ মূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলা―এই পাঁচটি পণ্য বিতরণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর―এই ছয়টি পণ্য বিতরণ করছে।
ঈদ উপলক্ষে সারা দেশের এক কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবার বিনা মূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন।
তিনি আরো বলেন, লাদেশ আওয়ামী লীগ জন্মের পর থেকেই গণতন্ত্র, মানবিধাকার এবং মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের লড়াই করে আসছে। এসব লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের স্বৈরশাসন, শোষণ-নির্যাতনের নাগপাশ থেকে মুক্তিলাভ করে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের। সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি প্রণয়ন করেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান যেখানে চার মূলনীতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।
১৯৭৫-এর পর আইয়ুব-ইয়াহিয়ার অনুকরণে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করলে আওয়ামী লীগই প্রথম এগিয়ে আসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে। পরের ২১ বছর আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে গণতন্ত্র এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯৮১ সালে ছয় বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসার পর ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাকেও বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি এবং কারাবন্দি হতে হয়েছে। আমাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে ঢাকাগামী ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেনের ৬৩০ জন যাত্রীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৫ টাকা ভাড়া ও জরিমানা আদায় করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চল পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের আওতাধীন বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে ব্লক চেকিংয়ের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়।
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে রাজশাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে এই অভিযান চালানো হয়। ব্লক চেকিংয়ের রেলওয়ে স্টেশনগুলো হলো রাজশাহী, ঈশ্বরদী বাইপাস, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম, বড়াল ব্রিজ, উল্লাপাড়া, নাটোর এবং সান্তাহার।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদারের নেতৃত্বে পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা কে এম নুরুল ইসলাম, ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষক আব্দুল আলিম বিশ্বাস মিঠু, গোলাম মুস্তফা, প্রবীর কুমার, কামরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল হাসানসহ ট্রেনগুলোর পরিচালক (গার্ড) এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এসব অভিযানে অংশ নেন।
অসীম কুমার তালুকদার বলেছেন, সরকারি ছুটির দিনে উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকে। অনেকে টিকিট ছাড়াই ট্রেনে চড়ে বসেন। আমরা সাধারণত আন্তঃনগর ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের শাস্তি হিসেবে পরবর্তী স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে থাকি। কিন্তু, রেল ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যের হওয়ায় তারা নামতে চান না। অনেকেই ভাড়াসহ জরিমানা দিয়েই গন্তব্য পথে যেতে চান।
তিনি জানান, আন্তঃনগর ছয়টি ট্রেনে মধ্যবর্তী স্টেশনে আকস্মিকভাবে অভিযান চালিয়ে ৬৩০ জন যাত্রীর কাছ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৫ টাকা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে ভাড়া ৯৫ হাজার ১৪৫ টাকা এবং জরিমানা ৩১ হাজার ৭১০ টাকা। অন্যান্য যাত্রীবাহী ট্রেনে অভিযান অব্যাহত আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
তীব্র শীতে উষ্ণতা ছড়াতে প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ১৫ জানুয়ারি সোমবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও ড্রিম ফর ডিসএবিলিটি ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন ড্রিম ফর ডিসএবিলেটির চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আজীজ মুন্না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস.এম. শান্তনু চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম শেখ, সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. লোকমান হোসেন, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকারের কল্যাণে প্রতিবন্ধীরা আজ সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরে আসছে।
বক্তারা শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পরে অতিথিরা ২০০ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের ‘বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালে’ বেশি বিল হওয়ায় তা পরিশোধ করতে না পেরে এক মাস বয়সী মেয়ে হাসপাতালে ফেলে উধাও হয়ে যান মা-বাবা। পরবর্তীতে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে ওই শিশুকে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
আজ ২২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট এ বিল পরিশোধ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। এর আগে ১২ আগস্ট শনিবার এমন ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে শিশুটির মা-বাবার কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়।
জানা যায়, শিশুটি নরদিংদী মনােহরপুরের রজত চন্দ্র এবং সুজাতা দম্পতি মেয়ে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মােস্তফা জানান, এক মাস পূর্বে শিশুটি তাদের গ্রামের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর থেকে শিশুটি হার্টের ছিদ্র সমস্যাটি নিয়ে ভুগছিলেন। কোনো উপায় না দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে তার মা বাবা ঢাকায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মাতুয়াইল মা ও শিশু ইনস্টিটিউটে এনআইসিইউ না পেয়ে সাইনবোর্ডের নবজাতক হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে এনআইসিইউ থাকা অবস্থায় শিশুটি সুস্থ হতে থাকেন। এমন প্রেক্ষিতে সবমিলিয়ে হাসপাতালের বিল দুই লাখ টাকার বেশি হলে শিশুটির মা-বাবা টাকা ম্যানেজ করে নিয়ে আসবে বলে উধাও হয়ে যান। এভাবে ৬-৭ দিন চলে যাওয়ার পর শিশুটি মা-বাবা ফেরত না আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানায়। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেলের নির্দেশে মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। অতঃপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমাদের সাধ্যমতো বিল পরিশোধ করে শিশুটিকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেই। বর্তমানে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। এমন মানবিক কাজ করতে পেরে আমরা খুব খুশি এবং ভবিষ্যতেও পেশাগত কাজের পাশাপাশি আমরা এসব মানবিক কাজ অব্যাহত রাখবো।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শিশুটির মা-বাবা জানান, আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় আমরা কোনোভাবেই বিল পরিশোধ করতে পারছিলাম না। এর মধ্যে দু’দিন আগে শিশুটার নানী মারা যান। কোনো উপায় না পেয়ে আমরা এ কাজ করি। পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আমাদের ফোনে আশ্বস্ত করে আজ আমাদের শিশুটিকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার পাশাপাশি তারা বাচ্চাটিকে লালন-পালন করার জন্য আরও কিছু টাকা দেয়। তারা আমাদের যে উপকার করলো সেজন্য পুলিশের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালের ম্যানেজার মোশাররফ হােসেন জানান, গত ২৯ জুলাই ওই শিশুটি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হোন। গত ২৪ দিন ধরে সে ডা. মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধায়নে এনআইসিইউতে ভর্তি ছিল। পরবর্তীতে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে গেলে আমরা তাদের বিল পরিশোধ করে বাচ্চাটিকে নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু এরপর তারা উধাও হয়ে গেলে আমরা পুলিশের শরণাপন্ন হোই। আজ বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। পুলিশের এই মানবিক কাজের সঙ্গে আমরাও তাদের অংশীদার হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধন্য মনে করছে।