বাংলাদেশে অদ্বৈত চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ অধ্যাপক শান্তনু কায়সারকে মরণোত্তর ‘অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার’-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে।
২৩ মে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন (পিপিএম)।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কবি, গীতিকার ও কবিতা বিষয়ক গবেষক মো. আ. কুদ্দূস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের দীর্ঘদিনের সহচর, বিশিষ্ট কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অদ্বৈত চর্চার ইতিহাস, অদ্বৈত গবেষণায় অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের অবদান এবং অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা ও কর্ম পরিধি নিয়ে বিশদ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সহকারী সম্পাদক কবি পিয়াস মজিদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম পঠান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শান্তনু কায়সারের পরিবারের পক্ষে সম্মানজনক এ পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর বড় ছেলে রাসেল রায়হান। এসময় অতিথিবৃন্দ তার হাতে সম্মাননা স্মারক, নগদ অর্থ ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছোটকাগজ ‘প্লাটফর্ম’-সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হৃদয় ও কিচিরমিচির সম্পাদক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে এই ধরনের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন- প্রয়াত এ গুণীজনকে সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে একই সাথে অদ্বৈত মল্লবর্মণ ও অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. আ. কুদ্দূস বলেন- নতুন প্রজন্মের মাঝে অদ্বৈতর চিন্তা-চেতনাকে ছড়িয়ে দেওয়া এবং অদ্বৈত গবেষণায় দ্বার উন্মুক্ত রাখতে ভবিষ্যতেও আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান থাকবে।
২০২২ সালে মো. আ. কুদ্দূস প্রতিষ্ঠিত অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যমে অদ্বৈতর জন্মভিটা গোকর্ণঘাটে ২০২৩ সালে প্রথম ও ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলা আয়োজন করা হয়েছিল। দুই বছরই দুইজন গুণী ব্যক্তিকে অদ্বৈত গবেষণায় অবদান রাখায় ‘অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালে এ পুরস্কার লাভ করেন কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন। এ বছর ২০-২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এ মেলায় অধ্যাপক সান্তনু কায়সারকে এ পুরস্কার দেওয়ার কথা থাকলেও সে সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিদেশে অবস্থান করায় গতকাল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদান করা হলো।
অনুষ্ঠানে তার বড় ছেলে রাসেল রায়হান অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন- আমার বাবা কর্ম ও ভালোলাগার সূত্রে দীর্ঘদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসবাস করেছেন। আমাদের ভাই-বোনদের সকলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। বাবা ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এত বেশি থেকেছেন, আসা-যাওয়া করেছেন এবং কাজ করেছেন যে দেশের অনেকেই ভাবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বুঝি তাঁর আসল বাড়ি। আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর এই সম্মান পেয়ে আমরা পরিবারের সদস্যরা গর্বিত ও আনন্দিত। বাবা বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই তিনিও গর্ব অনুভব করতেন। বক্তব্যে তিনি অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক শান্তনু কায়সার ১৯৫০ সালের ৩০ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাজনমেঘ গ্রামের মুন্সী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষে অধ্যাপনাকে জীবনের ব্রত হিসেবে নেন। একইসঙ্গে তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে অধ্যাপনার সময় তিনি এখানকার সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তিনি অদ্বৈত গবেষণা ও চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। একসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে গেলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই জেলার সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বিস্তর কর্মজীবনে বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রায় ৪৫টি গ্রন্থ রচনা করেন। যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই অদ্বৈত গবেষণার উপর। ২০১৪ সালে প্রবন্ধ সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করা গুণী এই সাহিত্যিক ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিহ্নিত ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৮ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে জেলা শহরের কান্দিপাড়া বাবুর বাড়ির সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, কান্দিপাড়া মাইমল হাটির মো. রিগ্যান পাঠান (৩৫), একই এলাকার সানজু রাজ (২২), শহরের কাজীপাড়া দরগাহ মহল্লার মো. সায়েম (২০) ও কাউতলী এলাকার তুষার মিয়া (১৯)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন বলেন, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তারা শহরের চিহ্নিত ছিনতাকারী। গ্রেফতারকৃত রিগ্যান পাঠানের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় ৯টি মামলা এবং অন্য তিন জনের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাজীপাড়া ছাত্র ও যুব সমাজের উদ্যোগে ও অল টাইম মাস্তি ক্লাবের আয়োজনে মাদকবিরোধী প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৬ জুলাই রবিবার বিকেলে জেলা শহরের প্রধান ঈদগাহ মাঠে ‘মাদককে না বলি, শরীর চর্চায় এগিয়ে আসি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে এ প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র-৩ ও ৮নং ওয়ার্ড কাজীপাড়ার কাউন্সিলর মীর মোঃ শাহীনের সভাপতিত্বে ও রাব্বি মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাসেল মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান লেনিন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি আশরাফুল আলম টিটু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইজাজুল হক রাব্বি, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রহমান, সহ-সভাপতি সানি শাহ, উপ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রনি, ছাত্রলীগ নেতা মোঃ নিরব মিয়া, মোঃ বিদ্যুৎ মিয়া, মোঃ ইয়াকুব মিয়া, মোঃ সেন্টু, আনিসুর রহমান, সামি প্রমুখ।
এসময় সিনিয়র একাদশ টিমের সাথে জুনিয়র একাদশ টিমের মধ্যে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলার শেষ পর্যায়ে দুই পক্ষের টিমের মধ্যে এক এক গোলে ড্র হয়। পরে ট্রাইবেকারে ৪-২ গোলে জুনিয়র একাদশকে হারায় সিনিয়র একাদশ টিম।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কমিটি গঠিত হয়েছে।
আজ ২৬ অক্টোবর শনিবার জেলা কালেক্টরেট কর্মচারি ক্যান্টিনে এই কমিটি গঠন উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুল লতিফ।
বক্তব্য রাখেন, শুধাংসু সূত্রধর, পল্লব কুমার চক্রবর্তী, আবু বক্কর সিদ্দিক, শাহাজাদা খান, তাসলিমা আক্তার, শিরিনা আক্তার প্রমুখ। সভা শেষে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এমএম জাকারিয়া আহমেদকে সভাপতি ও মো. রুবেল মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজের দুদিন পর রাব্বি (১৬) নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, চড় মারার জেরে রাব্বিকে হত্যা করেন তার বন্ধু সাগর।
আজ ১৯ জুন সোমবার বিকেলে জেলা শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত রাব্বি শহরের মেড্ডা আরামবাগ এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ১৭ জুন শনিবার রাতে মোবাইল বেচাকেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় রাব্বি। পরে তার কোনো সন্ধান না পাওয়ায় রোববার (১৮ জুন) পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকালে রাব্বি নিখোঁজের পেছনে তার বন্ধু ফুলবাড়িয়া এলাকার সাগরের (১৯) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। রাতে সাগরের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ কিন্তু তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
সোমবার সকালে সাগরের মা লিলি বেগমকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে তিনি জানান, রাত ২টার পর সাগরের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এসময় সাগরের মায়ের মোবাইল ফোনে একটি কল রেকর্ড পায় পুলিশ। সেই রেকর্ডে সাগরকে তার মাকে বলতে শোনা যায়, রাব্বি তাকে একবার চড় দিয়েছিল। তাই তাকে মেরে এলাকার একবাড়ির ঝুপড়িতে ফেলে দিয়ে তিনি ঢাকায় পালিয়ে গেছেন। পরে কল রেকর্ড অনুযায়ী পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। একপর্যায়ে পশ্চিম ফুলবাড়িয়ায় একটি বাড়ির ঝুপড়িতে রাব্বির মরদেহ পাওয়া যায়।
ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সাগরকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।