সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল

জাতীয়, 26 May 2024, 212 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সকল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ ২৬ মে রবিবার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে এই তথ্য জানান তিনি।

প্রতিন্ত্রী বলেন, ৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহবান জানানো হচ্ছে। উপক‚লীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে; তবে ক্লাস বন্ধ থাকবে। এছাড়া সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু টানেলও বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা সবাইকে নিয়ে আজকে সভা করেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসও প্রস্তুত রয়েছে। পেছনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়কে আরো শক্তভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আশা করি নির্দেশনাগুলো যেভাবে দিচ্ছি সবাই যদি সে অনুসারে পালন করে, এই দুর্যোগ পূর্বের মতো সক্ষমভাবে মোকাবিলা করতে পারব।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাপবিদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১০ এ বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৯.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।

এটি আজ ২৬ মে সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (রোববার) সন্ধ্যা/মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকেূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান…

অনলাইন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে রাজধানীর Read more

বাঞ্ছারামপুরে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহনশীলতায় বিশ্বাস করে, শান্তিপ্রিয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটদের বিশেষ সাধারণ সভা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটস সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও Read more

আখাউড়ায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখামাত্র অসুস্থ Read more

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরকে হারাল ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক : ইকুয়েডরের বিপক্ষে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে জয়ের দেখা Read more

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের…

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, জেলা ছাত্রদল, যুবদলের Read more

মালয়েশিয়ায় একদিনে অভিযানে ২২২ বাংলাদেশি আটক

অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ২২২ জন Read more

নবীনগরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী…

চলারপথে রিপোর্ট : উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত Read more

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর Read more

জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উদীচীর…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে Read more

সালমান শাহকে হারানোর আজ ২৮ বছর

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের বাঁক ঘোরানো তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা Read more

দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে আহত প্রায়…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের Read more

জাপানি ২ পর্যটকের সব লুটে নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ : গ্রেফতার ৩

জাতীয়, 28 April 2023, 1006 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানীর রায়েরবাজারের বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে গিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন দু’জন জাপানি পর্যটক। তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় জাপানি ইয়েন, টাকা, আইফোন, ক্রেডিট কার্ড। এরপর লুণ্ঠিত অর্থ নিয়ে দুই ছিনতাইকারী ‘ফুর্তি করতে’ যায় কক্সবাজার। পরে জলপ্রপাত দেখতে তারা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৌঁছায়। সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো– জিহাদুল ইসলাম মামুন ও আবু রাসেল প্রত্যয়। এর আগে তাদের সহযোগী খায়রুল ইসলাম স্বপনকে মোহাম্মদপুর বোটঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ ২৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি জানান, গত ২৪ এপ্রিল দু’জন জাপানি নাগরিক শুক্রাবাদ এলাকার নন্দিনী হোটেলে ওঠেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে তারা রায়েরবাজারে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে যান। আনুমানিক রাত ৯টার দিকে তারা কবরস্থান থেকে বের হতে চাইলে অজ্ঞাতপরিচয় তিন যুবক তাদের ভুল পথ দেখিয়ে ভেতরের দিকে নিয়ে যায়। এরপর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮০০ জাপানি মুদ্রা, বাংলাদেশি ২৮ হাজার টাকা, দু’টি আইফোন, দুটি ক্রেডিট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লুটুথ ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে কাউকে কিছু না জানিয়ে হোটেলে চলে যান ভুক্তভোগীরা। পরদিন তারা বিষয়টি হোটেলের ব্যবস্থাপককে জানালে তিনি মোহাম্মদপুর থানা অবহিত করেন।

উপকমিশনার জানান, ২৫ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হওয়ার পর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এ সময় আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত চক্রটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। প্রথমে ২৭ এপ্রিল মোহাম্মদপুর বোটঘাট এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত খাইরুল ইসলাম স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে রায়েরবাজার শুটকি আড়তের পেছনের কবরস্থানের দেয়াল সংলগ্ন মাঠ থেকে জাপানি নাগরিকের পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড, দুটি ক্রেডিট কার্ড ও একটি পাসপোর্ট ছেঁড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, অপর দুই ছিনতাইকারী কক্সবাজারে বেড়াতে গেছে। তখন পুলিশের একটি দল যায় কক্সবাজার। ততক্ষণে ছিনতাইকারীরা চলে যায় সীতাকুণ্ড। সেখান থেকে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া একটি আইফোন, ৩০ হাজার জাপানি ইয়েন, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লুটুথ উদ্ধার করা হয়।

উপকমিশনার বলেন, লুণ্ঠিত একটি আইফোন এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। সেটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আর লুণ্ঠিত জাপানি ইয়েনের মধ্যে ৩০ হাজার উদ্ধার হলেও বাকিটা তারা টাকায় বদলে খরচ করে ফেলেছে। গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে আবু রাসেল প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনের একটিসহ মোট তিনটি মামলা আছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, সহকারী কমিশনার আজিজুল হক, মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান, তদন্তসংশ্লিষ্ট এসআই প্রদীপ কুমার সরকার, মো. নাজমুল ও মো. মাজেদুল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে ভূত হয়ে গেছে: সেতুমন্ত্রী

জাতীয়, রাজনীতি, 13 October 2023, 662 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপিসহ বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরিয়া ভূত হইয়া গেছে। এগুলো মাথা থেকে নামান।

নয়ত এ ভূতে বিএনপি শেষ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছে। এ তত্ত্বাবধায়ক আর কোনোদিন চোখ মেলবে না। ’
আজ ১৩ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর মোড়ে ঢাকার প্রবেশপথে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল তত্ত্বাবধায়ক বলতে বলতে শেষ। দুই সেলফিতে আপনাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ভারতে এক সেলফি, এরপর নিউইয়র্কে আরেক সেলফি। দুই সেলফিতে বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘অন্তরে জ্বালা। পদ্মা সেতু হয়ে গেল, মেট্রোরেল হয়ে গেল। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে গেল। একদিনে একশ সেতুর উদ্বোধন। জ্বালারে জ্বালা অন্তরে জ্বালা। ’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তারা খাম্বা দিয়েছে বিদ্যুৎ দেয়নি। এখন শেখ হাসিনার আমলে শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। খেলা হবে! অক্টোবর পার হয়ে যাচ্ছে। ফখরুল নাকি ঢাকা অবরোধ করবেন। এ নারায়ণগঞ্জের সমাবেশ থেকে বলতে চাই, জনগণ তাদের জবাব দেবে। আগুন নিয়ে এলে হাত পুড়িয়ে দেব। লাঠি নিয়ে এলে হাত ভেঙে দেব। ’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফখরুল বলেন—শেখ হাসিনা ঘোরাঘুরি করেন। শেখ হাসিনা কোথায় গেছেন। জি-২০ সম্মেলনে। কী সম্মান নরেন্দ্র মোদি দিয়েছেন! নিউইয়র্কে গিয়েছেন, কী সম্মান পেয়েছেন! শেখ হাসিনাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। দেশের প্রয়োজনেই তিনি বাইরে যান। তিনি ব্রাসেলসে যাচ্ছেন আমন্ত্রণে। তিনি যাচ্ছেন দেশের জনগণের জন্য। ’

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওরা গণতন্ত্রের কী জানে? ওরা জানে মানুষ খুন, লুটপাট, ভোটচুরি। শেখ হাসিনাকে টার্গেট করেছিল বিএনপি। এদের হাতে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমতা আর ফিরিয়ে দেবে না। আপনাদের বলছি বিএনপি থেকে সাবধান। ’

এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার হাসনাত, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভুঁইয়া সাজনু প্রমুখ।

অবৈধভাবে পণ্য মজুতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

জাতীয়, 22 January 2023, 1085 Views,

ডেস্ক রিপোর্ট :
অবৈধভাবে পণ্য মজুতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হচ্ছে। খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন-২০২২-এর খসড়ায় এ বিধান যুক্ত করা হয়েছে। অন্য সব অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

সম্প্রতি নতুন আইনের খসড়া প্রকাশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর এ সংক্রান্ত খসড়া আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধের বিশেষ আদালতে বিচার হবে।

গত বছরের ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব করা হয়। খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সবার মতামত নেওয়া হচ্ছে। এরপর এটি আবার মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে তা সংসদে যাবে। এ আইন পাশ হলে ‘ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ ও ‘দ্য ফুডগ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ বাতিল হয়ে যাবে।

উল্লে­খ্য, বছরের বিভিন্ন সময় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে পণ্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। এরপর ওইসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিপুল অঙ্কের মুনাফা লুটে নেয়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত চক্রটি এ কাজ করলেও সরকার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এ কারণে নতুন আইন করা হচ্ছে।

নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়- কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে শর্ত থাকে যে, এ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন তাহলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

উৎপাদন বা বিপণন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে- যদি কোনো ব্যক্তি কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই ধরনের জাতের উপজাত পণ্য হিসাবে উল্লে­খ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন, খাদ্যদ্রব্যের মধ্য থেকে কোনো স্বাভাবিক উপাদান সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করে বা পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করেন বা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশিয়ে উৎপাদন বা বিপণন করেন- তবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

খসড়ায় আরো উল্লেখ করা হয়- সরকার খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রাখা পণ্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য বা সরকারি গুদামের পুরোনো বা বিতরণ করা সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এমন চিহ্নযুক্ত খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ সরকারি গুদামে সরবরাহ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তরের বিতরণ করা সিল বা বিতরণ করা হয়েছে- এমন চিহ্নযুক্ত সিল ছাড়া সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, কেনাবেচা করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।

খসড়ায় আরো উল্লেখ করা হয়- অপরাধের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক আদালত থাকবে, যার নাম হবে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত। ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত হিসাবে নির্ধারণ করতে পারবে। একাধিক আদালত নির্ধারণ করা হলে প্রতিটি আদালতের জন্য স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্দিষ্ট করবে।

নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে কমনওয়েলথের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 7 May 2023, 1630 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষক পাঠাতে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডকে এ আহ্বান জানান তিনি।

আজ ৭মে রবিবার বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ক্লারিজেস হোটেলে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন এবং আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য কমনওয়েলথ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। খবর বাসসের

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, কমনওয়েলথ মহাসচিব বলেছেন, তারা শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে চান।

ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড বলেছেন, তারা সংস্থার কিছু সদস্য দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তা করেছেন। সেক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার প্রয়োজন যে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে, নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে এবং নির্বাচনে হারলে বা জিতলে সহিংসতায় যাবে না।

মোমেন বলেন, ‘কমনওয়েলথ (অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে) আমাদেরকে সাহায্য করতে চায় এবং আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি। আমরাও চাই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হোক।’

ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ঝামেলামুক্ত সেবা দানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

জাতীয়, 29 March 2023, 1079 Views,
ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমির মালিকানা সংক্রান্ত সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার অবসান এবং ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

২৯ মার্চ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দেশের প্রথম তিন দিনব্যাপী জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ভূমির মালিকানা সুনির্দিষ্ট করার জন্য ভূমি বণ্টন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করতে হবে এবং এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজে এটা খুবই সাধারণ ঘটনা যে ভাই-বোন উভয়েই একে অপরকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে, যার ফলে হামলা, হত্যা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, যদি একটি সঠিক ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব মানুষের জমির মালিকানা রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, আপনি দেশে এবং বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন- আপনার (দেশবাসী) সম্পত্তি আপনারই থাকবে। আমরা আপনার অধিকার সুরক্ষিত ও সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।

জমি সংক্রান্ত পরিষেবা পাওয়ার সময় জনগণকে কিছুতেই ঝামেলার সম্মুখীন করা যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি ডিজিটাল ল্যান্ড সিস্টেম তৈরি করছি বলে সমস্যাটি আর থাকবে না।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সাতটি উদ্ভাবনী উদ্যোগেরও সূচনা করেন। এগুলো হলো- লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতিস্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স, রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন ইন্টারকানেকশন, স্মার্ট ল্যান্ড ম্যাপ, স্মার্ট ল্যান্ড রেকর্ডস, স্মার্ট ল্যান্ড পিডিয়া, স্মার্ট ল্যান্ড। সারাদেশে ৪০০ উপজেলায় সার্ভিস সেন্টার ও আধুনিক ভূমি অফিস।

তিনি বলেন, আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সাতটি উদ্যোগের প্রতিটি একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ঝামেলামুক্ত ও দ্রুত ভূমি সংক্রান্ত সেবা দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহবান জানান।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন- ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন সচিব গোলাম সারওয়ার।

ভূমি সচিব মুস্তাফিজুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরজাহান আখতার সাথী সহকারী কমিশনারদের পক্ষ থেকে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

সম্মেলনের উদ্দেশ্য একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা তুলে ধরা ও ভূমি সেবার ডিজিটালইজেশনের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করা।

জাতীয় ভূমি সম্মেলনের অন্যান্য উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে নাগরিক, সরকারি সংস্থা ও স্টেকহোল্ডারদের অবহিত করা, ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং ভূমি সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।