অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাঁধ দ্রুত মেরামতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে যে সমস্ত রাস্তাঘাট ও বাঁধ ভেঙে গেছে সেগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাতে বর্ষার আগেই আমরা বাঁধগুলো নির্মাণ করে জলোচ্ছ্বাস বা পানির হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারি। উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ সহনীয় ঘর করে দেওয়া হবে।
আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ অঞ্চলের যত বাঁধের ক্ষতি হয়েছে সেগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। যত মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সব আমি করে দেব। ক্ষতিগ্রস্ত সবার হিসাব করা হচ্ছে, বিকেলে সবাইকে নিয়ে বসব।’
‘জলোচ্ছ্বাসের কারণে অনেক পুকুরের পানি নোনতা হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় মাছের ঘের ভেসে গেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে, ধানকাটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও তরিতরকারি যা নষ্ট হয়েছে, কৃষক যাতে আবার সেগুলো বপন করতে পারে, সেজন্য বীজ, সার, যা যা লাগে সেগুলোর ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমি করে দেবো। নতুন উদ্যমে আপনারা যাতে চাষ করতে পারেন, আমি চাই আমাদের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী থাকবে না। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা পদক্ষেপ নিই। আর সেই ব্যবস্থা আমরা করে দেবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, আজ ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই দুযোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ করে দিয়েছি, আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা- বিদ্যুতের ব্যবস্থা সব করে দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, মানুষের জীবনের যে চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা তার ব্যবস্থা করার জন্য যা যা দরকার আওয়ামী লীগ সরকার তা করে যাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি, সেখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ আর বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। মায়ের নামে আমরা বৃত্তির টাকা পাঠাই। যারা একেবারে হতদরিদ্র বিনা পয়সায় খাদ্য সাহায্য দিই। এখন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, যারা কিনতে পারে না তাদের জন্য পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। অল্প টাকায় চাল, ডাল, তেল কিনে নিতে পারবে সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি। দেশের মানুষ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি মানুষের সার্বিক উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা খুলনার শ্যামনগর ও কয়রা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, বরগুনার পাথরঘাটা পরিদর্শন করেন। এরপর পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন হেলিপ্যাড মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণ করে। সেখান থেকে গাড়িতে করে খেপুপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রথম পর্যায়ে দুই হাজার ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে চাল, ডাল, লবণ, চিনি, ভোজ্য তেলসহ মোট ১৪ কেজির বেশি খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
আরও ১৮ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে আগামী হজের নিবন্ধনের। ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
আগের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী হজের নিবন্ধন আগামী রোববার (৩১ ডিসেম্বর) শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৪৭৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২২ হাজার ৫৪৯ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৯২৯ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটা এক লাখ ১৭ হাজার জন।
সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি, হজ এজেন্সি, হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় হতে হজ চুক্তির আগেই হজযাত্রীর চূড়ান্ত সংখ্যা জানানোর তাগিদ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ বিবেচনায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। এসময়ের মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন বা প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করা যাবে।
প্রাথমিক নিবন্ধন করা হলে প্যাকেজের অবশিষ্ট মূল্য আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবশ্যিকভাবে একই ব্যাংকে জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় হজে যাওয়া যাবে না এবং প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতে যাওয়ার সময় সীমান্তে আটক হয়েছেন সাবেক বিচারক এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। গতকাল ২৩ আগস্ট শুক্রবার রাতে তাকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর হেফাজতে নেওয়া হয়। বিজিবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) মো. শরীফুল ইসলাম তার আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবি জানিয়েছে, প্রথমে স্থানীয়দের হাতে আটক হন শামসুদ্দিন মানিক। পরে বিজিবিকে ডাকা হয় ঘটনাস্থলে। জানা গেছে, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোন সীমান্ত থেকে আপিল বিভাগের সাবেক এ বিচারককে আটক করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় তৎকালীন আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন সাবেক বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সে সময় বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে অতিথি আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে টকশোর উপস্থাপিকার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে টকশো শেষ হওয়ার পর ওই উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেও তিরস্কার করতে দেখা যায় তাকে। এ ঘটনায় তখন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। পরে অবশ্য এক আইনি নোটিশের প্রেক্ষিতে তিনি তার ব্যবহারের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
সম্প্রতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মানিকের নামে নোয়াখালীর আদালতে মামলা হয়েছে। কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
একই অভিযোগে ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে আইনজীবী মো. জিয়াউল হক বাদী হয়ে আরেকটি মামলার আবেদন করেন। আদালত অভিযোগটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বিচারপতি মানিককে এসব মামলায় গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।
চলারপথে ডেস্ক :
সব প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতা ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শান্তির নীতি অনুসরণ করি।’
তিনি সব প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতা ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।
২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি স্মরণ করেন একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী সব শহিদদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর ধরে শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার প্রয়াসে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ প্রথম গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ করেন। সেই থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর একুশ দফা, ’৬২-এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে অত্যন্ত দূরদর্শীতার সঙ্গে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।
তিনি ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ঘোষণা করেছিলেন, ‘আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এদেশটির নাম হবে পূর্ব-পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশ’। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করেছিলেন এবং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পুরো জাতিকে প্রস্তুত করেছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ’৭০-এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাক-সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা টালবাহানা শুরু করে। বৈঠকের মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করে তারা নিরস্ত্র বাঙালি নিধনের উদ্দেশ্যে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন এবং ১৫ মার্চ থেকে ৩৫ দফা নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশ সারা পূর্ব-বাংলায় অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সব প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তার আদিষ্ট পথেই পরিচালিত হতে থাকে। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার শাসন সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায়। ইয়াহিয়া-ভুট্টো বারবার সমঝোতার প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে অটল থাকেন। ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সারা দেশে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যেই ইয়াহিয়া গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। মধ্যরাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাংক নিয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ পরিচালনা করে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করতে শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং রাজারবাগে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, বাঙালি পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের হত্যা করতে থাকে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে। এর অব্যবহিত পূর্বেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন-চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও’। যা প্রথমে ইপিআর’র ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানিরা বন্দি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়; এমনকি তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। ১৩ জুন সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যুক্তরাজ্যের একটি পত্রিকার প্রথম পাতায় বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম বর্বরতার বাস্তব চিত্র নির্ভর একটি বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টি ত্বরান্বিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হয়, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারায় এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর আমরা জাতিসংঘের গণহত্যা বিরোধী কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করি। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শান্তির সংস্কৃতির ওপর রেজুলুশন গ্রহণের প্রস্তাব করি, যা ১৯৯৯ সালে গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ‘আন্তর্জাতিক শান্তির সংস্কৃতির বর্ষ’ এবং ২০০১-২০১০ সময়কে ‘শান্তির সংস্কৃতি এবং অহিংস দশক’ ঘোষণা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০০৮ সাল থেকে সব নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে গত ১৪ বছরের বেশি সময় একটানা তাদের ভাগ্যোন্ননের জন্য কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, আমরা ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছি। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা এড়াতে ভীত-সন্ত্রস্ত ১১ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আমরা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি: ভবিষ্যত প্রজন্ম এই পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী করে বাস্তবায়ন করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আজ এক বাণীতে একথা বলেন তিনি।
আগামীকাল ১ জুলাই সোমবার প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঐতিহাসিক ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ উপলক্ষ্যে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন’।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য-‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চ শিক্ষা’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে অত্র অঞ্চলে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়, সেই রাষ্ট্রটি বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আবাসভূমি ছিল না – এ সত্যটি সবার আগে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৎকালীন তরুণ ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি সবার আগে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বাঙালি জাতির পিতা, ‘বঙ্গবন্ধু, বাঙালির ইতিহাসের মহানায়ক ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। সেই থেকে ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চা এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টিতে এ প্রতিষ্ঠানটির অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৫২’র ভাষা-আন্দোলন, জাতির পিতা ঘোষিত ১৯৬৬’র ছয়-দফার ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন এবং তার (বঙ্গবন্ধু) আহ্বানে ১৯৭১’র মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তীকালে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সত্তার বিকাশ ও দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীরা অগ্রভাগে থেকে অব্যাহতভাবে নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী নির্দেশনায় ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করা হয়, যার মূল বার্তা ছিল- বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্ত-বুদ্ধি চর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের আলোকে দেশের শিক্ষা খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকগুলো বিজ্ঞান ও গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করি। গবেষণা ও প্রযুক্তির জন্য অনুদান ১০০ কোটিতে উন্নীত করি। আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন, বঙ্গবন্ধু বৃত্তি এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এর প্রবর্তন করি।’
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে ‘আমরা দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০’, ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার কৌশলী পরিকল্পনা: ২০১৮-২০৩০’ সহ প্রয়োজনীয় নীতিমালা এবং কলেজ পর্যায়ের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ২০২৩-২০৩১ মেয়াদি ন্যাশনাল স্ট্রাটেজিক প্ল্যান প্রণয়ন করেছি। আমরা বিদেশ থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ’ প্রবর্তন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল এ্যাক্ট-২০১৬ পাস করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি, দেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রিসার্চ এন্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ছাত্র ও শিক্ষক আন্তর্জাতিক একাডেমিক কমিউনিটি এবং তথ্য ভান্ডারের সাথে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা আহরণে সক্ষম প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক সংকট নিরসনে হল ও ভবন নির্মাণ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা, গবেষণার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে নতুন নতুন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৫৮টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র, ছাত্র-ছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল এবং ১৮৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৮৯৫ জন এবং পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৯৮১ জন শিক্ষক। শেখ হাসিনা বলেন, অধিকতর উন্নত গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে যেকোনো সংকট উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ জ্ঞানের সকল শাখায় এগিয়ে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘জ্ঞান ও আলোর পথের অভিযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন দিগন্ত তৈরি করবে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ তথা তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
তিনি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। সূত্র: বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কাগজিখোলা এলাকায় কুল চাষে স্বাবলম্বী ওরা ১০ বেকার যুবক। ১ হাজার ৫ শত কুলগাছ রোপণ করে মৌসুমে আয় করছেন প্রায় লাখ লাখ টাকা।
এক সময়ের বেকার ১০ যুবকদের এমন সাফল্য সাড়া ফেলেছে এলাকায়। তাদের এ সাফল্য দেখে অন্যরাও ঝুঁকছেন কুল চাষে।
বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে ইউটিউব দেখে কৃষি ক্ষেত্রে কিছু করা যায় কিনা ভাবতে থাকেন সাজোয়ার, কামাল,নেজাম উদ্দিন, আবদুস শুক্কুর,শাহ আলম,সাদেক ও ওমর ফারুকসহ বেকার ১০ যুবক।
তৎকালীন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করেন এবং তার পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নেমে পড়েন কুল চাষে। নিজেদের পর্যাপ্ত জমি না থাকায় ২০২০ সালে ৫ একর জমি ইজারা নিয়ে কাশ্মীরি কুল,ভারতী সুন্দরী কুল ও বল সুন্দরী কুল চারা নিয়ে শুরু করেন কুল চাষ। ২০২০ সালের শুরুতে রামু ঈদগড় এলাকার এক বাগান থেকে সংগ্রহ করেন ৩ প্রজাতির কুল গাছ।
গত ২ বছর তেমন লাভবান না হলেও গত বছরের চেয়ে এবছর ফল ধরেছে সব গাছে। গাছে গাছে দুলছে থোকায় থোকায় কুল। আকার, স্বাদে ভালো হওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেশ। প্রথমে ১২০ টাকা কেজি করে বাজারে বিক্রি শুরু করেন। এখন বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকার কুল বিক্রি হচ্ছে।
সাজোয়ার, কামাল জানান বছরের ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৩ মাস( কুল) বড়ই বিক্রি করতে পারে। তিনি বলেন সরকারী ভাবে যদি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা থেকে সহযোগিতা বা পরামর্শ পাওয়া যেত তাহলে বছরের ৫০ লাখ টাকার উপরে কুল বিক্রি করা সম্ভব হত। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণের কোন সহযোগিতা পরামর্শ তারা পাচ্ছেন না বলে জানালেন।
নেজাম উদ্দিন বলেন,৫ একর জমি বার্ষিক ১ লাখ টাকা ইজারা নিয়ে এই কুলবাগান গড়ে তুলেছি। এখানে ৩ ধরনের কাশ্মীরি কুল, বনসুন্দরী কুল ও ভারতী সুন্দরী কুল আছে। ফলন দেখে তিনি অনেক খুশি।
তিনি আরও জানান, প্রথমে মাছ চাষ করতে গিয়ে লোকসান হলেও এখন কুল চাষ করে তা পুষিয়ে নেওয়া গেছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাগান থেকেই কুল কিনে নিয়ে যান এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পর্যটকেরা প্রতিদিন বাগান থেকে কুল নিয়ে যায়। এই বাগানের বাউকুল খুবই মিষ্টি। তাই চাহিদাও বেশি। জেলার চাহিদা পূরণ করে এই বাগানের কাশ্মীরি কুল সরবরাহ করা হয় চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। লাভবান হওয়ায় গ্রামের অনেকে বিষাক্ত তামাক চাষ ছেড়ে বাউ কুল চাষে এগিয়ে আসছেন।
এসব দেখে এলাকার কয়েকজন বেকার যুবকদের নিয়ে শুরু করেছেন নতুন করে কুল চাষ। তাদের বাগানে আগামী বছর থেকে কুল উৎপাদন শুরু হবে বলে জানালেন।
বর্তমানে নেজামসহ ৩ শ্রমিক নিয়ে পুরো বাগানের পরিচর্যা করেন। কুল চাষীরা জানান, আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় এবছর বাগানে পর্যাপ্ত ফলন হয়েছে। গতবারের চেয়ে বেশী আয়করা সম্বভ। পাশাপাশি উক্ত জায়গার কুল গুলু রসালু ও সুস্বাধু। তাই এফলের চাহিদা ও বেশী।
এবিষে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইনামুল হক বলেন, বিষয়টি তাদের নয়। তাই কুল চাষীদের কে আমাদের পক্ষ থেকে কি করে সহযোগীতা করব। তার পরেও সরজমিনে পরিদর্শন করে কৃষককদের সাথে পরামর্শ করে আরো যাতে ভালো করা যায় সেটির বিষয়ে খেয়াল করবো।
কুল চাষীদের দাবী সরকারি ভাবে আর্থিক সহযোগিতা না পেলে ও কৃষি অফিসারদের সঠিক দিক নির্দেশনা পেলে আমরা আরো এগিয়ে যেতাম।