চলারপথে রিপোর্ট :
ভাগ্য বদলের আশায় ১৭ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফায়েজ মিয়া। সেখানে দাম্মাম শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। এবার দেশে এসে কোরবানির ঈদ করার কথা ছিল। এরই মধ্যে গত ১৪ মে কর্মস্থল সৌদি আরবের দাম্মামে হঠাৎ স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। বুক ভরা আশা নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ফায়েজ বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু জীবিত নয় কফিনবন্দি হয়ে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২১ দিনের মাথায় আজ ৪ জুন মঙ্গলবার দুপুরে তার মরদেহ নিজ জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার তারাগনে আসলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দেন আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশী।
বাদ আছর আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিনগর বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মাঠে বাদ আসর জানাযা শেষে সাতপুকুরপাড়ে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে, ভোরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর সড়ক পথে নিহতের মরদেহ লাশবাহী একটি অ্যাম্বুল্যান্স করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। নিহতের মরদেহ দুপুরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শুরু হয় শোকের মাতম। পরিবার-পরিজন আর স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
নিহতের মরদেহ এক নজর দেখেতে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার শত শত লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করেন। ফায়েজ আখাউড়া পৌর শহরের তারাগন এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। তার পরিবারে স্ত্রী, ৩ মেয়ে ১ ছেলে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১৭ বছর আগে ফয়েজ মিয়া সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে দাম্মাম শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। সর্বশেষ গত প্রায় ৫ বছর আগে দেশে আসেন। এবার কোরবানির ঈদের আগে দেশে আসার কথা ছিল। গত ১৪ মে স্ট্রোক করে মায়াভরা এ পৃথিবী থেকে না ফেরার দেশে চলে যান।
চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন বলেন, ফায়েজ একজন কর্মঠ লোক ছিল। দেশে থাকতে কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতো না। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে অনেক কষ্ট করে বিদেশে যায়। এরপর এই পরিবারটা ভালই চলছিল। হঠাৎ করে এভাবে সে মারা যাবে তা কখনো ভাবতে পারছি না। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুপুরে নিহতের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসেছে। বাদ আসর জানাযা নামাজ শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
মাওলানা হাফেজ নুরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ফায়েজ খুব ভালো একজন মানুষ ছিল। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতো বড় হওয়ার। এভাবে চলে যাবে তা কখনো ভাবতে পারিনি।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতি বিশ্বাস করে বলেই জনগণকে ভোট দিতে নিষেধ করছে।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশের মানুষ সব ক্ষমতার উৎস।
গণতান্ত্রিক ধারায় তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। অথচ একটি কুচক্রী মহল নির্বাচন বর্জন করে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে। বিএনপি তাদের সময়ে নির্বাচন করত ভোটারবিহীন হ্যাঁ-না ভোটে। বিএনপি-জামায়াত ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে বলেই জনগণকে ভোট দিতে নিষেধ করছে।
আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার চানপুর খেলার মাঠে নিজের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দেবে, তারা দেশকে কতটা ভালোবাসে। পরে তিনি সবার কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চান।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মুসলমানের ওপর দখলদার ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ ১১ এপ্রিল শুক্রবার বাদ জুম্মা শহরের শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠ থেকে দুই শতাধিক ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেলওয়ে স্টেশন গেইটের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে শেষ হয়।
মিছিলে প্রতীকী কফিন নিয়ে গাজায় শিশু হত্যার প্রতিবাদ জানানো হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর ইবরাহিম মিয়া সুজন, আসিফ নেওয়াজ, রুবায়েত খান, আতিক তুষার, ইসমাইল হোসেন, রানা প্রমুখ। বক্তারা স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনের নিরীহ মুসলমানের ওপর দখলদার ইসরাইলের বর্বর আক্রমনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
ফিলিস্তিনের ওপর নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহবান জানান। এসময় ইসরাইলি পণ্য বর্জন ও বয়কটের ডাক দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল জব্দ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের দায়ে এক বেকারী মালিককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ ২ অক্টোবর সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আদালত পরিচালনা করা হয়। মৎস্য অফিস ও পুলিশের সহযোগিতায় আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবতী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সহকারী কশিনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী ও সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহানের সমন্বয়ে গঠিত ভ্রাম্যমান আদালত শহরের বড় বাজার নৌ-ঘাট থেকে খড়মপুর এবং ধরখার পর্যন্ত নদীতে অভিযান চালায়। এসময় নদী থেকে ১৫টি রিং জাল, ৩০টি কারেন্ট জাল ও ২০০ মিটার বেড়জাল জব্দ করে। আদালতের অভিযানে বড় বাজার একটি মাছের আড়ৎ থেকে ৮০ কেজি বিদেশী মাগুর মাছ জব্দ করা হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার মোগড়া বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য তৈরির দায়ে বিসমিল্লাহ বেকারীর মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
পরে জব্দকৃত জালগুলো উপজেলা পরিষদ মাঠে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। জব্ধকৃত মাছগুলো ৭টি মাদ্রাসার এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
আখাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান বলেন, নদীতে অবৈধ জাল দিয়ে দেশীয় মাছ ধরা হচ্ছিল। এসব জালের কারণে মাছের প্রজনন ধ্বংস এবং জীব বৈচিত্র নষ্ট হয়। তাই অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে। বিদেশী মাগুরগুলো আমাদের দেশীয় মাছ খেয়ে ফেলে। এসব মাছ উৎপাদন, পরিবহন ও বিক্রি নিষেধ। এজন্য মাছগুলো জব্দ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অব্যবস্থার তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। ৩০ জুন রোববার বিকালে জেলার সিভিল সার্জনের নিকট প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
এর আগে গত শনিবার আখাউড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিদর্শনে গিয়ে অব্যবস্থাপনা এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখতে পেয়ে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করেন এবং বিষয়টি ভিডিও কলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী অ্যাড. আনিসুল হককে দেখালে মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে বিষয়টি মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সিভিল সার্জন ডা. মো. বেলায়েত হোসেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীমা সুলতানাকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। দায়িত্ব পেয়ে রোববার তদন্ত কমিটির সদস্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে তদন্ত করেন। পরে বিকালে সিভিল সার্জনের নিকট প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলী আশরাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়েছি। রিপোর্টে বড় কোন অব্যস্থাপনা পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে স্টোর না থাকায় নিলামযোগ্য মালামালগুলো হাসপাতালের ভেতরে রাখা হয়েছিল। এজন্য দেখতে খারাপ লাগছিল। শিগগিরই এগুলো নিলাম দেওয়া হবে। ওই দিন হাসপালের রোগীদের খাবার দেওয়ায় বিলম্ব এবং নিম্নমানের খাবার সরবরাহের বিষয়ে ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়েছে। ৩ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।