স্পোটর্স ডেস্ক :
উগান্ডা এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে। জিম্বাবুয়ের মতো দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ৫৮ রানে অলআউট হয়ে হেরেছে বড় ব্যবধানে। পরের ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে জয় পেয়েছে দলটি। তবে এবার ফের হেরে বসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। আকিল হোসেনের স্পিনে উগান্ডাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে বড় জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গায়ানায় সি গ্রুপের ম্যাচে আজ ৯ জুন রবিবার ১৩৪ রানে জিতেছে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ১৭৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে ১২ ওভারে উগান্ডাকে ৩৯ রানে থামিয়ে দিয়েছে তারা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উগান্ডা আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেছিল ৫৮ রান। যা ছিল এই বিশ্বকাপের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। লজ্জার সেই রেকর্ড নিজেরাই ভাঙলো আফ্রিকা অঞ্চলের দলটি। ৩৯ রানে সব উইকেট হারিয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম রানে আলআউট হওয়ার লজ্জার রেকর্ড গড়লো উগান্ডা। বিশ্বকাপে এর আগে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড ছিল নেদারল্যান্ডসের।
২০১৪ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৩৯ রানে গুঁটিয়ে গিয়েছিল ডাচরা। দ্বিতীয় রেকর্ডটিও তাদেরই দখলে। সেবারও প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ২০২১ আসরে মাত্র ৪৪ রানে অলআউট হয়েছিল ডাচরা। আর আজ ডাচদের সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে উগান্ডা। ডাচদের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছে আফ্রিকার দেশটি। অবশ্য ডাচদের চেয়ে ৯ বল বেশি খেলেছে উগান্ডা। ডাচরা যেখানে ১০.৩ ওভার খেরেছে সেখানে উগান্ডা খেলেছে ১২ ওভার।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার। দুই ওপেনার ব্রান্ডন কিং এবং জনসন চার্লস দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ভালোভাবেই। উগান্ডাকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন আলপেস রামজানি। ৪.৩ ওভারে ব্রান্ডন কিংকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান। দলীয় ৪১ এবং ব্যাক্তিগত ১৩ রানে ফেরেন তিনি। চার্লসকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসেন নিকোলাস পুরান। আজ তার সামনে ছিল টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার সুযোগ। কিন্তু অল্পের জন্য রেকর্ড গড়া হয়নি তারা। ক্রিস গেইলকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি তিনি। রেকর্ড গড়ার পথে বেশ ভালো ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে ২২ রানে মাসাবার বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফির যান পুরান।
প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে আসলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেছে দলটি। ক্যারিবিয় ব্যাটসম্যানদের হাত খুলে খেলার খুব একটা সুযোগ দেননি উগান্ডার বোলাররা। জনসন চার্লস (৪৪), রোভম্যান পাওয়েল (২৩) ও শেরফান রাদারফোর্ড (২২) কাউকেই খোলসের বাইরে বের হতে দেয়নি ব্রায়ান মাসাবার দল। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ক্যারিবীয় ঝড় আটকে দেয় তারা। শেষদিকে আন্দ্রে রাসেলের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। শুরুতে ধীরেগতিতে রান করলেও পরে রানের চাকায় গতি আনেন এই ক্যারিবীয় তারকা। তার ১৭ বলে ৩০ রানের ইনিংসে ভর করে বড় সংগ্রহ পায় দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। রাসেলের ইনিংসে কোনো ছক্কা না থাকলেও ছিল ৬টি চারের মার। উগান্ডার পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক ব্রায়ান মাসাবা। ১টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন আলপেশ রামজানি, কসমস কেউয়াটা ও দীনেশ নাকরানি।
উগান্ডার সামনে লক্ষ্যটা ছিল ১৭৪। তবে সেই টার্গেটকে চ্যালেঞ্জ করা তো দূরে থাক, উগান্ডার ব্যাটিং লাইনআপ মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারেনি পুরো ম্যাচজুড়ে। উগান্ডাকে ধসিয়ে দেওয়ার মূল নায়ক স্পিনার আকিল। একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচ বাগিয়ে নিয়েছেন তিনি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মুকাসাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন আকিল। সেই শুরু, এরপর একে একে পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নায়ক তিনিই। প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার হিসেবে টি-২০ বিশ্বকাপে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন আকিল।
৪ ওভার বল করে ১১ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন আকিল। উগান্ডার ইনিংসের মাত্র একজন ব্যাটার ছুঁয়েছেন দুই অংক। ২৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে তখন বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তাদের। এক জুমা মিয়াগি শেষের দিকে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন লজ্জার রেকর্ড এড়াতে। তার ১৩ রানেও অবশ্য লজ্জা এড়াতে পারেনি উগান্ডা। ৩৯ রানে অলআউট হয়ে নেদারল্যান্ডসের সাথে যৌথভাবে টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়েছে তারা। ১২ ওভারের মাঝেই তাদের গুটিয়ে দিয়ে ১৩৪ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২০ ওভার ১৭৩/৫
উগান্ডা: ১২ ওভার ৩৯/১০
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩৪ রানে জয়ী।
অনলাইন ডেস্ক :
নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ২৭ অক্টোবর রবিবার প্রথম সেমি-ফাইনালে ৭-১ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরে এই ভুটানকে ৮-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও গত আসরের থেকে এই ভুটান দল সম্পূর্ণ ভিন্ন। গ্রুপপর্বে দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১৭ বার গোল দিয়েছে দলটি। এমন দলের বিপক্ষে ফাইনালে উঠার ম্যাচে তাই বাড়তি সতর্ক বাংলাদেশ। খেলেছে নিজেদের সেরা ফুটবলটাই। ফাইনালে পা রেখেছে সাফের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই। ভুটানকে সেমিফাইনালে উড়িয়ে দিয়েছে ৭-১ গোলের বড় ব্যবধানে।
নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ফাইনালে যাওয়ার রাস্তাটা অবশ্য প্রথমার্ধেই পরিষ্কার করে রেখে গিয়েছিল সাবিনা খাতুনের দল। প্রথমার্ধেই ভুটানের জালে ৫ গোল দিয়েছিল সাবিনা-তহুরারা। বিরতির পর সেই ব্যবধান আরও বাড়বে সেটাই ছিল অনুমেয়। হয়েছেও তাই। তবে ফাইনালের আগে চোট সতর্কতায় কোচ পিটার বাটলার বেশ কয়েকজনকে উঠিয়ে নেওয়ায় ব্যবধানটা তত বড় হয়নি এই যা।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে ম্যাচের ৫৭ মিনিটে প্রথম গোল পায় বাংলাদেশ। অনেকটা ফাকায় দাঁড়িয়ে ডি বক্সে ঢুকে বল জালে জড়ান তহুরা। পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। এই গোলের পর মাঝে একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়। ৭১ মিনিটে গোল করেন মাসুরা পারভিন। সানজিদার নেওয়া কর্নার কিক দারুণ হেডে জালে জড়ান এই রক্ষণভাগের ফুটবলার। এরপর আর গোল না হলে ৭-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। নিশ্চিত করে আসরের ফাইনাল।
এর আগে, প্রথমার্ধের পুরো সময় জুড়ে দাপট ছিল বাংলাদেশের। ম্যাচের ৭ মিনিটে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে দূর পাল্লার শটে জাল কাঁপালেন এই উইঙ্গার। বাংলাদেশ পেয়ে গেল জয়ের রসত। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। ঋতুপর্ণার গোলের পর ১৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তহুরা খাতুন। গোলরক্ষক খানিকটা সামনের দিকে থাকায় ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নেন তিনি। তাতে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ায়।
২৪ মিনিটে সাবিনার গোলরক্ষককে ফাকি দেওয়া শট গোলপোস্টে বাধা পেয়ে ফিরে আসে। নিশ্চিত গোল মিস হওয়ায় হতাশায় মুখ লুকান সাবিনা। অবশ্য এর এক মিনিট না যেতেই বল জালে জড়িয়ে গোল আদায় করে নেন সাবিনা। বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে।
৩৪ মিনিটে আবারও তহুরার ম্যাজিক। বক্সের বাইরে থেকে বা পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত শটে জাল কাঁপান তিনি। তাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৪-০ ব্যবধানে। এক হালি গোল হজম করে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে যায় ভুটান। এর দুই মিনিট না যেতেই ফের গোল। এবার গোলপোস্ট থেকে রুপনা চাকমার নেওয়া দূর পাল্লার শট মাঝ মাঠ থেকে দারুণ দক্ষতায় নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভুটানের ফুটবলারদের কাটিয়ে গোল করে আসেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। পঞ্চম দফা এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
খানিক পর অবশ্য এক গোল শোধ দিয়েছে ভুটান। দেখি লাজুম ৪০ মিনিটে এক গোল শোধ দেন। এ দফায় আর তাকে রুখতে পারেনি রুপনা। অনেকটা একাই পেয়ে গিয়েছিলেন রুপনাকে। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল হয়নি লাজুমের। ব্যবধান কমিয়ে বিরতিতে যায় ভুটান। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে আর দুই গোল হজম করতে হয়েছে তাদের। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছে ৭-১ ব্যবধানে।
একই দিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামবে ভারত ও নেপাল। সেই ম্যাচের জয়ী দল আগামী বুধবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এটা তাঁর সবচেয়ে সুন্দর ইনিংসগুলোর একটি, বলেছেন মুশফিক। এ জয়ের জন্য সব খেলোয়াড়কেই কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি, বিশেষ করে এ সিরিজের জন্য তাঁরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন সেজন্য। ম্যাচসেরার প্রাইজমানি বন্যার্তদের সহায়তায় দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
২০০৩ সাল। মুলতানে পরাক্রমশালী পাকিস্তানকে হারানোর সুযোগ এসেছিল। টেস্টে তখন বাংলাদেশ ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’। মোহাম্মদ রফিক ‘অনৈতিক’ ভেবে মানকাডিং না করায় সেবার ১ উইকেটে হেরেছিলেন হাবিবুল বাশার-খালেদ মাহমুদরা। ২১ বছর পর এবার ক্রিকেটে প্রথমবার পাকিস্তান জয় করলেন মুশফিকুর রহিম-সাকিব আল হাসান-মেহেদী মিরাজরা। আজ ২৫ আগস্ট রোববার রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে টাইগাররা।
টেস্টে বাংলাদেশ ঐতিহাসিক এই জয় পেয়েছে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ব্যাটিং, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি ছোঁয়া ইনিংস ও মুমিনুল-লিটনের পর মিরাজের ফিফটিতে। সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের ব্যাটিং ধসিয়ে দিতে মিরাজ ও সাকিব অসাধারণ বোলিং করেছেন। তাদের তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। জয়ের জন্য ৩০ রানের লক্ষ্য পায় সফরকারীরা। যে রান তুলতে পেতে হয়নি বেগ।
সিরিজের প্রথম এই টেস্টের টস পক্ষে আসে বাংলাদেশের। ম্যাচ শুরুর আগের রাতে ভারী বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে টস হয়নি। প্রায় দুই সেশন ভেসে যাওয়ার পর হওয়া টসে জিতে বোলিং নেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। উইকেটের সুবিধা নিয়ে মাত্র ১৬ রানে স্বাগতিক পাকিস্তানের ৩ উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম-হাসান মাহমুদরা। কিন্তু সূদ শাকিলের ১৪১ ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ১৭১ রানের সঙ্গে সাইম আইয়ূবের ৫৬ রানের ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ হয়তো ভেবেছিলেন বাংলাদেশ রানের চাপায় পিষ্ট হবে। কিন্তু চোখে চোখে রেখে শুধু জবাব দেননি মুশফিক-সাদমানরা। বরং তুলে নেন ১১৭ রানের লিড। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৫৬৫ রান তোলে। মুশফিকুর ১৯১ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। সাদমান সেঞ্চুরি মিস করলেও ৯৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। এছাড়া মুমিনুল ৫০, লিটন ৫৬ ও মেহেদী মিরাজ ৭৭ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে বাংলাদেশের বোলিং তোপে পাকিস্তান সুবিধা করতে পারেনি। তাদের দেড়শ’ রানের আগে ধসিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন স্পিনার সাকিব ও মিরাজ। টেস্টে বাঁ-হাতি বোলার হিসেবে সর্বোচ্চ ৭০৬ উইকেট তুলে নেওয়ার পথে সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট তুলে নেন। মিরাজ নেন ৪ উইকেট। এছাড়া শরিফুল, হাসান মাহমুদ একটি করে উইকেট নেন। ওই ইনিংসে পাকিস্তানের রিজওয়ান ৫১ রান করেন। আব্দুল্লাহ শফিক ৩৭ রান যোগ করেন। জবাবে জাকির ১৫ ও সাদমান ৯ রান করে জয় তুলে নেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের মাটিতে এটি বাংলাদেশের প্রথম জয়। এছাড়া টেস্টে প্রথমবার পাকিস্তানকে হারানোর কীর্তি গড়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাটে-বলে শুধু নয় ফিল্ডিংয়েও কর্তৃত্ব করে খেলেছে। লিটন উইকেটের পেছনে বাবর আজমের ক্যাচ ফেললেও সফরকারীরা এই ম্যাচে দুর্দান্ত কিছু ক্যাচ নিয়েছে। ক্রিকেট বোর্ড থেকে নাজমুল হাসান পাপনের বিদায়, বাংলাদেশ ক্রিকেটে সংস্কার কাজের শুরুতে পাওয়া জয়ের মাহাত্ম্য তাই একটু বেশিই।
স্পোটর্স ডেস্ক :
নিউজিল্যান্ড সফরে আরো একটি হারের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি ৭ উইকেটে হারল সফরকারীরা। এতে সিরিজ হার বাঁচাতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্তরা। একই সঙ্গে আরো দীর্ঘ হলো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের বিপক্ষে সাদা বলের সংস্করণে জয়।
নেলসনে সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ার-সেরা ১৬৯ রানের ইনিংসের পরেও তিন শর আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ, থামে ২৯১ রানে। রান তাড়ায় হেনরি নিকোলসের ৯৫ ও উইল ইয়াংয়ের ৮৯ রানের সুবাদে ২২ বল হাতে রেখে অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করা নিউজিল্যান্ড। অবশেষে জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ১১তম ওভারের শেষ বলে রিশাদ হোসেনের দারুণ ক্যাচে আউট হয়েছেন রাচীন রবীন্দ্র। এই ব্যাটার ৩৩ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৫ রান করেন। উদ্বোধনীতে উইল ইয়ংয়ের সঙ্গে তিনি ৭৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েছেন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উইল ইয়ং ও হেনরি নিকোলস ১৩১ বলে ১২৮ রান তোলেন। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ৯৪ বলে ৮৯ রান করা এই ব্যাটারকে হাসান নিজের ক্যাচেই ফেরান। ইয়ং ৮টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান।
কিউইদের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন শরিফুল। ৯৯ বলে ৯৫ রান করা হেনরি নিকোলসকে সেঞ্চুরি করতে দেননি এই বাঁহাতি। নিকোলস ৮টি চার ও একটি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান। টম ল্যাথাম ৩৪ ও টম বøান্ডেল ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে ২টি উইকেট পান হাসান মাহমুদ। একটি উইকেট পান শরিফুল।
টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। দলীয় ১১ রানে অ্যাডাম মিলনের বলে ব্যক্তিগত ২ রানে আউট হন এনামুল হক। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস ৬ রানকরে দ্রæতই ফিরে যান। এ দুজনকেই পর পর দুই ওভারে তুলে নেন জ্যাকব ডাফি। আর দলীয় ৮০ রানে তাওহীদ হৃদয় ১২ রান করে রান আউট হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ধীরে সুস্থে ব্যাটিং করেন সৌম্য সরকার। এই বাঁহাতি ৫৮ বলে ফিফটি ও ১১৬ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তিনি মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১০৮ বলে ৯১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকেও উদ্ধার করেন। ডাফির তৃতীয় শিকার হওয়া মুশফিক ৫৭ বলে ৫টি চারে ৪৫ রানে মাঠ ছাড়েন।
এরপর অন্য ব্যাটাররা সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারলেও সৌম্য টাইগারদের একাই পথ দেখান। সেঞ্চুরির পরই মূলত ব্যাটে ঝড় তোলেন। ইনিংসের শেষ ওভারে উইলিয়াম ও’রোরকের প্রথম বলে সৌম্য আউট হন। ১৫১ বলে ২২টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৬৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ ওভারে আরও দুটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
কিউই বোলারদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট পান ডাফি ও রোরকে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ক্রীড়াই শক্তি, ক্রীড়াই বল সুস্থ দেহ সুন্দর মন, ক্রীড়া পরিদপ্তর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি ২০২৪-২৫ এর কাবাডি ও দাবা প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ক্রীড়া অফিস আয়োজিত অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলাধূলার মান উন্নয়নে এবং নিয়মিত পরিচর্চার জন্য তৃণমুল পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশের উদ্দেশ্যে এ প্রতিযোগিত অনুষ্ঠিত হয়।
কাবাডি এবং দাবা প্রতিযোগিতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহণ করেন।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজনিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহমুদা আক্তার।
অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করেন অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুস সাকির ছোটন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, সুস্থ দেহ সুন্দর মন সঠিক রাখতে হলে খেলাধূলার বিকল্প নেই। তিনি বলেন নিয়মিত খেলাধূলা করলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ থেকে দূরে থাকা যায়।
অনলাইন ডেস্ক :
খেলার দুনিয়ার সবকিছুকে ছাড়িয়ে যার অবস্থান। যেখানে সুযোগ পাওয়া প্রতিটি অ্যাথলেটের কাছে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ তো আর এমনি এমনি বলা হয় না অলিম্পিককে। সেই মহাযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠতে যাচ্ছে। প্রেমের শহর, ঐতিহ্যের শহর, সৌন্দর্যের শহর প্যারিসের কাঁধে এবার গুরুদায়িত্ব। বাংলাদেশ সময় আজ ২৬ জুলাই শুক্রবার জমকালো উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে অলিম্পিক। কেমন হচ্ছে এবারের উদ্বোধন, কতজন অ্যাথলেটের মিলনমেলা হচ্ছে যাচ্ছে প্যারিসে? সিন নদীর তীরে চোখ রাখার আগে জেনে নেওয়া যাক- উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কোথায়: অলিম্পিকের আয়োজক হিসেবে কোনও দেশের নাম থাকে না। থাকে শহরের নাম। এবারের অলিম্পিক হচ্ছে প্যারিসে। তো এই শহরের মূল ভেন্যু, অর্থাৎ প্রধান অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেটা হয়ে এসেছে আগের আসরগুলোতে। কিন্তু এই জায়গায় প্যারিস অলিম্পিক ব্যতিক্রম। মূল স্টেডিয়ামে নয়, এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধন সিন নদীতে। ৬ থেকে ৭ হাজার অ্যাথলেট অস্টারলিটজ সেতু থেকে নৌকা ও বার্জে করে সিন নদীর ৬ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন। উদ্বোধন দেখার জন্য প্রায় প্রায় ৫ লাখের বেশি দর্শকের জন্য বানানো হয়েছে বিশেষ স্ট্যান্ড। আগ্রহ যে তুঙ্গে সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় ২ হাজার ৭০০ ইউরোর বেশি দামে টিকিট বিক্রির চিত্রে। উদ্বোধন কখন: শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা রয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানের বেশিরভাগ সময় দিনের আলোয়। তবে সূর্যাস্তের সময়ও রয়েছে আয়োজন। যাতে প্রেমের শহর হিসেবে পরিচিত প্যারিসের গোধূলির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শকেরা। অনুষ্ঠানে কী রয়েছে: ঐতিহ্য মেনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবার আগে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিসকে। এরপর শরণার্থী অলিম্পিক দলের পরিচিতি পর্ব। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের পতাকায় অংশ নিতে পারবেন না রাশিয়া ও বেলারুশের অ্যাথলেটরা। তারা অংশ নেবেন ব্যক্তিগত পরিচয়ে। পরিচয় পর্ব শেষে রয়েছে বিনোদন পর্ব। এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন বিখ্যাত থিয়েটার পরিচালক টমাস জলি। অনুষ্ঠানটিকে ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে ৩ হাজার নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও বিনোদনকর্মী অংশ নেবেন। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা সিন নদীর তীরে, সেতুতে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় থাকবেন। খরচ কত: প্যারিস অলিম্পিক আয়োজক ঠিক কত খরচ হচ্ছে, সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি ফ্রান্স। তবে ফ্রান্সের জাতীয় নিরীক্ষণ সংস্থার প্রধান পিয়েরে মসকোভিচি জানিয়েছেন, ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি ইউরো খরচ হবে। মসকোভিচির বলেছেন, ‘অলিম্পিক আয়োজনের খরচ এখনও আমরা জানি না। এ গেমস আয়োজনে তিন, চার কিংবা পাঁচ শত কোটি ইউরো খরচ হতে পারে।’যদি এই খরচের পরিমাণ সত্যি হয়, তাহলে সেটি ফ্রান্সের অলিম্পিক বাজেট ছাড়িয়ে যাবে। কারণ অলিম্পিকের বাজেট করার সময় ফরাসি সরকার জানিয়েছিল, অলিম্পিক আয়োজনে তাদের বাজেট ধরা হয়েছে ২৪৪ কোটি ইউরো।
কতদিনের গেমস:
২৬ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে প্যারিস অলিম্পিক। তবে উদ্বোধনের আগেই শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট। এর মধ্যে ফুটবল অন্যতম।
তবে যদি আনুষ্ঠানিক সময়ের হিসাব টানা যায়, তাহলে প্যারিস অলিম্পিক চলবে ১৭ দিন। ২৬ জুলাই শুরু হয়ে পর্দা নামবে ১১ আগস্ট।
অ্যাথলেট সংখ্যা কত:
২০৬টি দেশের অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে এবারের অলিম্পিকে। আফ্রিকার ৫৪টি, ইউরোপের ৪৮টি, এশিয়ার ৪৪টি, আমেরিকার ৪১টি ও ওশেনিয়া অঞ্চলের ১৭টি দেশের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় ও শরণার্থী দলের হয়ে অংশ নেবেন অ্যাথলেটরা। এবারের অলিম্পিকে ৩২টি খেলার ৩২৯টি ইভেন্টে প্রায় ৭ হাজার অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে পদকের লড়াইয়ে।
অলিম্পিক ফুটবল:
৩২টি খেলা নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের অলিম্পিক। অনেক আকর্ষণীয় খেলার মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে ছেলের ফুটবল। এবারের প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক ফ্রান্স ছাড়াও রয়েছে আর্জেন্টিনা, স্পেন, মরক্কো, মিশরের মতো দলগুলো। তবে সুযোগ পায়নি গত টোকিও অলিম্পিকের সোনাজয়ী ব্রাজিল।
১৬ দল চার গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে প্রথম রাউন্ড। প্রত্যেক গ্রুপের শীর্ষ দুই দল নিশ্চিত করবে কোয়ার্টার ফাইনাল। এরপর চার দলের সেমিফাইনাল। জয়ী দুই দল খেলবে সোনার লড়াইয়ে। আর হেরে যাওয়ার দুই দল মুখোমুখি হবে ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে। খেলাগুলো হবে ফ্রান্সের সাতটি ভেন্যুতে। প্রতিটি দলের স্কোয়াডে আছেন ২২ খেলোয়াড়। ১৮ জন মূল খেলোয়াড় ও ৪ জন বিকল্প। অলিম্পিক ফুটবল মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ দলের লড়াই। তবে এই বয়সের উর্ধ্বে থাকা তিনজন খেলোয়াড়কে স্কোয়াডে রাখার অনুমোদন আছে। অর্থাৎ, ২৩ পেরিয়ে যাওয়া তিনজন খেলোয়াড় নিয়ে স্কোয়াড সাজিয়েছে সুযোগ পাওয়া ১৬ দল। আর্জেন্টিনা যেমন তাদের স্কোয়াডে রেখেছে হুলিয়ান আলভারেজ, নিকোলাস ওতামেন্দি ও থিয়াগো আলমাদাকে। মরক্কোর রেখেছে আশরাফ হাকিমিকে।