চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ছয়গড়িয়া শাহআলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
আজ ১০ জুন সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়গড়িয়া গ্রামে স্কুল সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে কমিটির সদস্য, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসী বলেন, দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ চারটি পদ শূন্য রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক পদে দুইবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা বেগম নিজের পদ ধরে রাখার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন না। অন্যান্য পদেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশলে নিয়োগ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছেন।
এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কমিটির সাবেক সভাপতি ও ভূমিদাতা আবুল বাশার মোবারকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করেছেন। তাছাড়া তিনি বর্তমান কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীসহ কমিটির তিনজন সদস্যের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সদস্য মো. তাজুল ইসলাম, কমিটির সদস্য আবুল বাশার, সাবেক সদস্য সহিদ মিয়া (মেম্বার), আবু তাহের প্রমুখ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোছা. সেলিনা বেগম বলেন, আমি যাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে অভিযোগ করছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আজ শনিবার নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় গৃহায়ণ ও গনপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপিকে গণসংবর্ধনা দিবে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ।
শনিবার বিকেলে সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে গৃহায়ণ ও গনপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপিকে এবং একই সময়ে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মাঠে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপিকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে।
সন্ধ্যায় গণপূর্তমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে গান গাইবেন রক তারকা জেমস ও আইনমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে গান গাইবেন আঁখি আলমগীর।
এদিকে দুই মন্ত্রীর সংবর্ধনাকে ঘিরে জেলায় অন্তত দুই শতাধিকের বেশি তোরণ নির্মাণ ও অসংখ্য ব্যানার- পোস্টার সাঁটিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণমানুষের নেতা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি।
মহান স্বাধীনতার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীই প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হয়েছেন। নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে তাঁকে গণসংবর্ধনা দেয়ার আয়োজন করেছে জেলা আওয়ামীলীগ।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া -৪-(কসবা-আখাউড়া) আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তৃতীয়বারের মতো আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন আনিসুল হক। তিনি কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
নতুন সরকারের এই দুই মন্ত্রী শনিবার নিজ নিজ এলাকায় সংবর্ধিত হচ্ছেন। শনিবারের দুই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরেই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। তবে সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের আকর্ষণ হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেমসের আগমনের বিষয়টি ব্যাপক হারে প্রচাল হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির আগমনকে কেন্দ্র করে আশুগঞ্জ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কের পাশে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও দলের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছেন।
মহান স্বাধীনতার পর স্বাধীন বাংলাদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীই প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হয়েছেন। এর আগে পাকিস্তান আমলে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের রামরাইল গ্রামের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পুনিয়াউট গ্রামের আবদুর রহমান খান। সেই হিসেবে প্রায় ৭০ বছর পর র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ায় চলছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস
শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জেলার নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে মোকতাদির চৌধুরী এমপির গণসংবর্ধণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া -১-(নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত বিএনপির বহিস্কৃত নেতা সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান এমপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া -২- (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত মঈন উদ্দিন এমপি, ব্র্র্রাহ্মণবাড়িয়া -৫-(নবীনগর) আসনে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত ফয়জুর রহমান এমপি।
অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন, সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মোকতাদির চৌধুরীকে সংবর্ধণা জানাবেন। এরপর সন্ধ্যায় রক তারকা ব্যান্ড নগরবাউলের জেমস, ব্যান্ড আবাস ও সঙ্গীত শিল্পি লায়লা।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী জানান,ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে এবারই প্রথম কাউকে মন্ত্রী পরিষদে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। শনিবার গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে। তিনি বলেন, মন্ত্রীকে বরণ করতে নেতাকর্মীরা শতাধিক তোরণ নির্মাণ করেছে। তিনজন সংসদ সদস্যসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটবে।
এদিকে শনিবার একই সময়ে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের মাঠে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গণসংবর্ধণা দেয়া হবে। উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক শুক্রবার সকালে দুই দিনের সফরে এলাকায় পৌঁছেছেন। শনিবার বিকাল তিনটায় উপজেলা পরিষদ মাঠে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া -৬- (বাঞ্ছারামপুর) আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া -৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান। সন্ধ্যায় সংগীত পরিবেশন করবেন আঁখি আলমগীর পুলক।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা বলেন, মন্ত্রী মহোদয়কে সংবর্ধনার পাশাপাশি চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পুরো আখাউড়া শহরসহ উপজেলায় অসংখ্য তোরণ নির্মাণের পাশাপাশি নেতাকর্মীরা ফেস্টুন ও ব্যানার সাটিয়েছেন।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আখাউড়া উপজেলায় জোর করে থানায় নেওয়ার সময় পুলিশের সামনে মৌসুমী আক্তার (২৫) নামে এক নারী বিষপান করেছেন। ২৩ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় নুরপুর গ্রামে মৌসুমির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও প্রতিবেশিরা ওই নারীকে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার পাকস্থলি পরিষ্কার করে সেখানকার চিকিৎসক তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠায়। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
মৌসুমী আক্তার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের আইয়ুব খানের মেয়ে।
তার মা শাহানা বেগম হাসপাতাল চত্বরে অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আখাউড়া থানার এএসআই আব্দুল আজিজ মহিলা পুলিশসহ ৮/১০ জন মিলে আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে ধরে থানায় নিয়ে যেতে চায়। আমার মেয়ে তখন তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চেয়ে বলে, আমাকে থানায় নেবেন কেন, আমি কী করেছি? আমার দুইটা ছেলে আছে, আমার স্বামী পাগল। আমি থানায় যাবো কেন? আজিজ দারোগা বলল ওসি সাহেব তোমাকে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে। এ সময় আমি পুলিশকে বলি, আমার মেয়ের হার্টে ব্লক আছে, তাকে নিয়েন না। দরকার হলে আমি থানায় যাব। এ সময় পুলিশ জোরাজোরি করে ধরে নিতে চাইলে আমার মেয়ে পুলিশের সামনে বিষ খেয়ে ফেলে। কিন্তু পুলিশের সামনে বিষপান করলেও কেউ তাকে আটকাতে আসেনি। পরে আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি আরো অভিযোগ করেন, এর আগেও পুলিশ কয়েকবার আমাকে ধরে আনতে চেয়েছিল।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক ওই নারীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ সময় আখাউড়া থানা পুলিশের ওসি আসাদুল ইসলামসহ বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য উপস্থিত রয়েছেন। পরে রাত ৮টার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় থানার এসআই আবু ছালেক সঙ্গে যান।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. লুৎফুর রহমান বলেন, রোগীর প্রেসার অনেক কমে গিয়েছিল। স্টমাক ওয়াশ করে বিষ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়।
তবে, আখাউড়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আজিজকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, কিছু মাদক উদ্ধার হয়েছিল। আমাদের কাছে তথ্য ছিল মাদকগুলো তাদের। এ প্রেক্ষিতে আমি পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না। তার ঘরে কিছু পাওয়া যায়নি। আগে রোগীর চিকিৎসা হোক। তারপরে যদি তদন্তে এএসআই আজিজের কোনো অপরাধ থাকে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে জুয়াড়িরা। হামলায় তিন যুবক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌর শহরের খড়মপুর এলাকায় জুয়া খেলায় বাধা দেওয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন খড়মপুর গ্রামের আশিক খাদেম (৩০), নারায়ণপুর গ্রামের রিফাত (২৫) ও উমেদপুর গ্রামের আমজাদ (২৮)। তারা সবাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ছাত্র আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে খড়মপুর এলাকার রেললাইনের পশ্চিম পাশে জুয়ার আসর বসিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা পয়সা লুটে নিচ্ছে একটি চক্র। বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিছু সচেতন ছাত্র ও স্থানীয় যুবকরা ওই এলাকায় যায়। জুয়াড়িদেরকে জুয়া বসানোর কারণ জানতে চাওয়ার সাথে সাথে তাদের ওপর হামলা করা হয়।
দুষ্কৃতিকারীরা ছাত্র-যুবকদেরকে এলোপাথারি মারধর করে ও ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলায় আশীষ, রিফাত ও আমজাদসহ কয়েকজন আহত হয়। আহতদেরকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়া হয়। তবে আশঙ্কাজনক হওয়ায় আশীষ খাদেমকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আখাউড়া উপজেলার সমন্বয়ক মোঃ শাহরীয়ার হাসান বলেন, জুয়া বসানোর বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বাছির মিয়ার নেতৃত্বে তার সাঙ্গপাঙ্গারা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ব্যপারে আখাউড়া থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
আহত আশীষ খাদেমের বাবা কাজল মোল্লা খাদেম বলেন, আশীষের শরীরে ধারালো বস্তুর ৫/৬টি আঘাত রয়েছে। পিঠের আঘাতটি খুব গভীর। তার একটি অপারেশন হয়েছে। এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
রেলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নতুন যোগাযোগ চালু হতে এখন আর মাত্র মাস দেড়েকের অপেক্ষা। পাঁচ বছর আগে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর অবশেষে আসছে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে আন্তর্জাতিক এ পথে ট্রেনের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে।
৬ জুন সোমবার বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্মাণকাজের ৮৫ ভাগ শেষ হয়েছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন পরিচালনা করা হবে।
এরপর সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
পরিদর্শন দলে থাকা বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এ রেললাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের নতুন ধারা সৃষ্টি হবে। ভারতীয়রা খুব কম সময়ের মধ্যে তাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারবে। আমাদের দেশ নানাভাবে সুবিধা পাবে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর জানান, রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষের পথে বাংলাদেশ অংশে মাত্র এক কিলোমিটার রেললাইন বসানোসহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আশা করা হচ্ছে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ এ পথ দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো যাবে।
এর আগে প্রকল্প পরিদর্শন করে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ সংযোগ প্রকল্পটি দুই দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রেলপথ চালু হলে দুই দেশের জনগণই উপকৃত হবে। দুই দেশের বাণিজ্য আরো প্রসারিত হবে।
মন্ত্রী বলেন, জুন মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। আপনারা জানেন যে কোনো প্রজেক্টেরই এক বছর ডিফিকাল্ট লায়াবিলিটি থাকে। আগামী ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত আছে। আমরা আশা করছি চলতি বছরের জুনের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব। এরপর এক বছর ট্রায়াল রান হবে।
এ সময় রেলমন্ত্রী আরো বলেন, যেহেতু এটি দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আছে। তফসিল ঘোষণা হলে বড় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন করা যায় না। তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে।
আখাউড়া থেকে গঙ্গাসাগর হয়ে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে ২০১৮ সালের জুলাইয়ের কাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১৮ মাস। এরপর করোনাসহ নানা কারণে পাঁচ দফা এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। দুই দেশের এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬.৭৮ কিলোমিটার।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।