বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিতে আফগানিস্তান

খেলাধুলা, 25 June 2024, 707 Views,

স্পোটর্স ডেস্ক :
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠল আফগানিস্তান। শান্ত বাহিনীকে ৮ রানে হারিয়েছে রশিদ-নবিরা। নাটকে ভরা ম্যাচটি। শেষে বাংলাদেশের জন্য জমা হলো হতাশা, যেন বরাবরের মতোই। সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ মেলানোর মতো ব্যাটই করছিল বাংলাদেশ, কিন্তু হুট করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এসে থামিয়ে দিলেন ওই চেষ্টা। পরে ম্যাচই হারতে হলো। এর আগে বোলাররা করেছিলেন দুর্দান্ত।

banner

আজ ২৫ জুন মঙ্গলবার আর্নেস ভ্যাল স্টেডিয়ামে বৃষ্টি আইনে আফগানিস্তানের কাছে ৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে আফগানিস্তান। পরে ওই রান তাড়া করতে নেমে ১০৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে ১২ ওভার ১ বলে জিততে পারলে সেমিফাইনালে যেতো তারা।

কিন্তু জয় তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষায় থাকা আরেক দল অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে সেমিতে চলে গেছে আফগানরা। এবারই প্রথম এমন কীর্তি গড়লো তারা। সেমিফাইনালে ২৭ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। একই দিনে অন্য সেমিতে ভারতের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।

টস হেরে বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ের শুরুটা করেন তানজিম হাসান সাকিব। প্রথম ওভারে ৩ রান দেন তিনি। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন দুই রান। এই দুজনের করা প্রথম চার ওভারে আসে ২১ রান।

পঞ্চম ওভারে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাফল্যও প্রায় এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার করা তৃতীয় বলে ইবরাহিম জাদরানের ক্যাচ ছেড়ে দেন তাওহীদ হৃদয়। শর্ট কাভারে দাঁড়িয়ে থাকা তার কাছে বল গিয়েছিল বেশ দ্রুত। হাতে জমিয়ে রাখতে পারেনননি হৃদয়।

পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ২৭ রান তুলতে পারেন দুই ওপেনার। এরপরও অবশ্য থামেননি তারা। ১০ ওভারে ৫৮ রান তুলে চায়ের বিরতিতে যায় আফগানিস্তান। ফেরার পরই অবশ্য তারা হারিয়ে ফেলে উইকেট। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে এনেই সফল হন শান্ত।

১৮ বলে ২৯ রান করে রিশাদের বলে তানজিম হাসান সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত গেছেন ইবরাহিম জাদরানের। অনেকটুকু দৌড়ে এসে ক্যাচ নেন তানজিম। আগে থেকেই চাপে থাকা আফগানিস্তান খেই হারায় উইকেট হারানোর পর।

ইবরাহিম ফেরার পরের ওভারে এসে মেডেন দেন তাসকিন আহমেদ। রিশাদ নিজের তৃতীয় ওভারে এসে দুটি চার হজম করেন। তবে আরও একবার ম্যাচের মোড় ঘুরে এই লেগ স্পিনারের হাত ধরেই। অবশ্য গুরবাজের সঙ্গে গড়ে উঠা আজমতউল্লাহর জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন লিটন দাস। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। ১২ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় আজমতউল্লাহকে। ১৭তম ওভার করতে এসে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ। দুটিতেই ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার।

তার করা অনেক বাইরের বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে পৌঁছাতে পারেননি গুরবাজ। ৫৫ বলে ৪৩ রান করে আউট হন তিনি। তার করা চতুর্থ বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন সৌম্য। এবার ৩ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান গুলবাদিন নাইব।

পরের ওভারে এসে মোহাম্মদ নবীকেও আউট করেন তাসকিন। এই ওভারে টানা পাঁচটি ডট বল করে শেষটিতে ছক্কা হজম করেন তাসকিন। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন এক রান। কিন্তু তানজিম সাকিবের করা শেষ ওভারে ১৫ রান নেন রশিদ খান। ইনিংসের শেষে বৃষ্টি এলেও সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

রান তাড়ায় নেমে সেমিতে উঠার সমীকরণ মেলানোর লড়াইয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আসে ১৩ রান। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে গিয়েই হারিয়ে ফেলে উইকেট। ৩ বলে শূন্য রানে নাভিন উল হকের বলে এলবিডব্লিউ হন তানজিদ হাসান তামিম। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।

পরের ওভারে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে বাংলাদেশ। টানা দুই বলে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। ৫ বলে ৫ রান করে ডিপ মিডউইকেটে মোহাম্মদ নবীর হাতে ক্যাচ দেন শান্ত। নাভিন উল হকের পরের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসান। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও সেটি করতে পারেননি নাভিন।

মাঝে বৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। তবে বাংলাদেশের সেমির সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকে। সৌম্য সরকারের সঙ্গে লিটন দাসের জুটিও লম্বা হতে দেননি রশিদ খান। ১০ বলে ১০ রান করা সৌম্যকে বোল্ড করেন তিনি।

এরপরও উইকেটে এসে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তারও ব্যাটে ঠিকঠাক টাইমিং হচ্ছিল না, তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ৯ বলে ১৪ রান করে হৃদয় আউট রশিদ খানের বলে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়ে।

তার আউটের পরই হুট করে বাংলাদেশের ইনেন্ট বদলে যায়। নূর আহমেদের ১০ম ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পাঁচটি ডট দেন, হাঁকান কেবল একটি বাউন্ডারি! এমনকি তার মধ্যে কতটা চেষ্টা ছিল, প্রশ্ন উঠতে পারে সেটি নিয়েও।

এরপরের ওভারে আসেন রশিদ খান। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনার শেষ তো বটেই, ম্যাচ হারের শঙ্কাও ভর করে এই ওভারে। পঞ্চম বলে রিয়াদের ব্যাট ছুয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ ইশহাকের হাতে যায়। আম্পায়ার আউট দেননি। পরে বদলি ইশহাকের কথায় রিভিউ নিয়ে সফল হয়ে যান রশিদ। পরের বলেই রিশাদ হয়ে যান বোল্ড।

বৃষ্টিতে এক ওভার কমে আস ম্যাচের দৈর্ঘ্য। একপ্রান্তে যখন উইকেট পড়ছে, তখন আরেকদিকে বাংলাদেশের জন্য ভরসা হয়ে থাকেন লিটন। তার দিকে তখন তাকিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়াও। কারণ বাংলাদেশ জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো তাদের।

কিন্তু লিটন আর স্ট্রাইকেই আসতে পারেননি। ১৮তম ওভারে তাসকিনকে বোল্ড করার পরের বলেই এলবিডব্লিউ হন মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো আফগানিস্তানের ডাগ আউট। কারো চোখে দেখা মেলে জলেরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ২০ ওভার ১১৫/৫
বাংলাদেশ : ১৭.৫ ওভার ১০৫
ফল : আফগানিস্তান বৃষ্টি আইনে ৮ রানে জয়ী ।

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুটিদাড়া খেলা

খেলাধুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 13 January 2025, 747 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমীর উদ্যোগে বিশিষ্ট রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়া সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডাঃ মোঃ ফরিদুল হুদার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১৩ জানুয়ারি সোমবার শহরের শেরপুর মাঠে এক গুটিদাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

banner

সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত খেলা উদ্বোধন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা, সোসাইটি অব নিউরোলজিস্ট অব বাংলাদেশের সদস্য সচিব মরহুম ডাঃ মোঃ ফরিদুল হুদার সুযোগ্য পুত্র ডাঃ নাজমুল হুদা বিপ্লব।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, টিভি জার্নালিস্ট সভাপতি আল আমিন শাহীন, সাধারণ সস্পাদক মফিজুর রহমান লিমন।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য একাডেমির পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আসরারুন নবী মোবারক, সাংবাদিক শাহাদত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, মোঃ আক্তার হোসেন, জামিলুর রহমান, মাঈন উদ্দিন জান্নাত, তৌফিক, ইফাজ, মোজাম্মেল, শাহালম প্রমুখ।

দিবস উপলক্ষে কামাউড়া গ্রামবাসীর উদ্যোগে এক প্রীতি ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তালশহর ইউনিয়নের মেম্বার আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাঃ নাজমুল হুদা বিপ্লব। উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেম্বার সৈয়দ আলী, আফজাল হোসেন ভূইয়া প্রমুখ।

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

খেলাধুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 6 November 2024, 943 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজকে যারা জেলা স্টেডিয়ামে ফুটবল প্রতিযোগিতা করছে আগামীতে তাদেরকে বিভাগীয় বা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতায় দেখতে চাই। তিনি বলেন আমরা তোমাদের নিয়ে ভবিষ্যৎ চিন্তা করি তোমরা যেন ভাল মানুষ হয়ে দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জল করবে। এ ক্ষুদে খেলোয়াড়রা খেলাধূলায় অংশ গ্রহন করে ক্রীড়াঙ্গনকে আরও সমৃদ্ধি করার আহবান জানান। তিনি বলেন, খেলাধূলার মান উন্নয়নে এবং নিয়মিত পরিচর্চার জন্য তৃর্ণমুল পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশের উদ্দেশ্যে জেলা ক্রীড়া অফিস যে আয়োজন করে তা প্রশংসার দাবিদার।

banner

আজ ৬ নভেম্বর বুধবার সকাল ১০টায় নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে ক্রীড়া পরিদপ্তর যুব আওতায় ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ক্রীড়া অফিস আয়োজিত বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি-২০২৪-২৫ অনুর্ধ্ব-১৫ ফুটবল প্রতিযোগিতা উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম একথা বলেন। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ক্রীড়া অফিসার মাহ্মুদা আক্তার। ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, তেলিনগর উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, পাকশিমুল হাজী শিশু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং ইউনাইটেড ফুটবল একাডেমী। এসময় প্রতিটি বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।

বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত

খেলাধুলা, 30 June 2024, 730 Views,

স্পোটর্স ডেস্ক :
৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। হাইনরিখ ক্লাসেন এক ওভারেই ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন প্রায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়। ভারতের করা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দলীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেটে ১৭৬ রানও তখন সহজ লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা তাদের সেই সহজ কাজটাকেই কঠিন করে তোলেন অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ডেথ ওভারে ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণটা কমিয়ে আনেন ১৬ রানে।

banner

হার্দিক পান্ডিয়ার করা ওই ওভারের প্রথম বলটা ছিল ফুলটস। স্ট্রাইকে থাকা ডেভিড মিলার ঠিকঠাক মেরেছিলেনও। কিন্তু লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচে নিশ্চিত ছক্কাটাই হয়ে যায় আউট। জয় তখন উল্টো ভারতের হাতের মুঠোয়, টি–টোয়েন্টি শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা আবার মাথায় উঠল বলে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া সেই সুযোগ হাতছাড়া হতে দেননি। ওভারের পঞ্চম বলে কাগিসো রাবাদাকে আউট করলেন। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ৭ রানের জয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। প্রথম শিরোপা ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে।

ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য চোখজোড়া দেখে মনের কথাগুলো আন্দাজ করা যায় এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে এখন প্রবাদটা বেশ পরিচিত।
দেশটির রেসলার ড্রিসুস ডু প্লেসিস কথাটা জনপ্রিয় করেছেন সম্প্রতি, অবশ্যই নিজেদের যন্ত্রণা বোঝাতে।

কিন্তু সূর্যকুমার যাদব কী ভাবছিলেন? শেষ ওভারে যখন ১৬ রান দরকার, অসহনীয় চাপ তখন ঘিরে থাকার কথা। এর মধ্যে বলটা ধরে ভেতরে রাখলেন সূর্য, নিজে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ফিরে এসে নিলেন ক্যাচটা। আউট হলেন মিলার, নিশ্চিত হলো ভারতের বিশ্বকাপও।

অসহনীয় চাপ, বহুবার কাছে গিয়েও শিরোপা না জিততে পারার আফসোস, এত এত প্রত্যাশার শেষে দুঃখের কান্না; ভারতও কি কম ভুগেছে একটি বিশ্বকাপের জন্য? এক দশক অথবা তারও বেশি সময় আগে বিশ্বকাপ জেতা হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে ‘ফিনিশেস থিংস অব ইন স্টাইল’ করে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এবার। মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া নেই আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপাও। ক্রিকেট প্রায় ধর্ম যেখানে, তাদের জন্য কতটা হতাশার, ওই যন্ত্রণাই বা কে জানতে চেয়েছে এতদিন!

শনিবার রাতে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে ভারত। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম আট বলের পাঁচটিতেই বাউন্ডারি পায় ভারত। মার্কো ইয়ানসেনের করা প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি, আসে ১৫ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে খরুচে প্রথম ওভার করেন ইয়ানসেন।

পরের ওভারে স্পিনার কেশভ মাহারাজকে নিয়ে আসেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তাকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান রোহিত। এক বল ডট দেওয়ার পরেরটিতেই উইকেট এনে দেন মাহারাজ। তাকে সুইপ করতে গেলে বল কিছুটা শূন্যে ভেসে ছিল, স্কয়ার লেগে নিচু হওয়া ক্যাচ দারুণভাবে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৫ বলে ৯ রান করে ফিরতে হয় রোহিতকে।

মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান ঋষভ পান্তও। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের আগায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, সহজ ক্যাচ নেন কুইন্টন ডি কক। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হন পান্ত। ভালো শুরুর পর হুট করেই খেই হারায় ভারত।

তাদের বিপদ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে সূর্যকুমার যাদব আউট হলে। কাগিসো রাবাদার বলে ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরত যান সূর্য। এরপর পাঁচে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠায় ভারত। তাদের এই কৌশল কাজে লাগে ভালোভাবেই।

বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানেন অক্ষর। সুযোগ পেলেই ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাকাও সচল রাখেন। কোহলির সঙ্গে তার জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ রান। কিন্তু নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুতে পারেননি তিনি। অক্ষরের অলসতা ও কুইন্টন ডি ককের চতুরতায় কোহলির সঙ্গে তার জুটি ভাঙে।

রাবাদার বলে ফ্লিক করতে যান কোহলি। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি, বল থাকে উইকেটরক্ষকের কাছাকাছি। এর মধ্যে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর, কিন্তু কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেও দ্রুততা ছিল না অক্ষরের। উইকেটরক্ষকের জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙেন ডি কক। ৩১ বলে ১টি চার ও চারটি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর।

তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আগের সাত ইনিংসে স্রেফ ৭৫ রান করেছিলেন, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি।

ফিফটি পাওয়ার পর কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ১১ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মার্কো ইয়ানসেনের আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরেরটি একটু স্লো করেন তিনি, এবার পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন রাবাদার হাতে।

কোহলির সঙ্গে পরে পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়েছিল দুবেরও। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ বলে জাদেজাও আউট হন। তবে ততক্ষণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান টপকে তারা করে ১৭৬ রান।

রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই স্বস্তি উবে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের হয়ে কাজটি যার করার কথা ছিল, করেছেন তিনিই। দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে রেজা হেনরিকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা।

দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতকে। আর্শদ্বীপের করা পরের ওভারে মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ডি কক, তার সঙ্গী হন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। পাওয়ার প্লের শুরুতে চাপে পড়া দলকে ছয় ওভারে ৪২ রান এনে দেন তারা।

যখন মনে হচ্ছিল স্টাবস-ডি কক জুটি জমে গেছে নবম ওভারে গিয়ে তখনই দুজনের জুটি ভাঙে। অক্ষরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ২১ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি, ভাঙে ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি। তার আউট হওয়ার পর হতাশায় নিজের ব্যাটে ঘুষি মারেন ডি কক।

কিন্তু তার পরের সঙ্গীকে নিয়েও দারুণভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। ভারতের ভয়ও বাড়তে থাকে। স্পিনের বিপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্লাসেন নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে শুরু করেন। কিন্তু এর আগেই সাজঘরে ফেরেন ডি কক। আর্শদ্বীপ সিংয়ের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে কুলদ্বীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। ওই বলের আগেই তাকে নেওয়া হয়েছিল পেছনে।

এরপর উইকেটে এসে ক্লাসেনের সঙ্গী হন ডেভিড মিলার। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসকে নতুন প্রাণ দেন তিনি। এমনকি ম্যাচটাও নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। শুরুটা হয় কুলদ্বীপের করা ১৪তম ওভারে। শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান মিলার।

পরের ওভারে আসা অক্ষরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন ক্লাসেন। এরপর ওই ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান। এই ওভারের আগে ৬ ওভারে দরকার ছিল ৫৪ রানের। অক্ষরের ওভারের পর সেটি হয়ে যায় ৩০ বলে ৩০ রান।

কিন্তু এই জায়গা থেকেও ম্যাচ আরও একবার মোড় নেয় উল্টোপথে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে প্রাণ ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। তার করা ১৭তম ওভার শুরুর আগে কিছুটা সময় ব্যয় করে ভারত। মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটি তারা পারেনও। পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্লাসেন। ২৭ বলে ২ চার ও ৫টি ছক্কায় ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।

ক্লাসেনের বিদায়ের পর অনুমিতভাবেই কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচ। ১৮তম ওভারে এসে দুই রান দিয়ে ইয়ানসেনের উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। পরের ওভারে ৪ রান দেন আর্শদ্বীপ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে।

তাদের জন্য তখনও সবচেয়ে বড় ভরসা মিলার। ৩০ বলে ৩০ থেকে ৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণে চলে আসা ম্যাচেও তাদের একমাত্র আশা। কিন্তু প্রথম বলেই সেটি শেষ হয়ে যায়। হার্দিকের ফুলটস এগিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন মিলার। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে তখনই ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সূর্যকুমার।

এরপর বাকি পাঁচ বলে কেবল ৯ রানই করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরও একবার ‘এত কাছে তবুও কত দূরে’র গল্প লেখা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভারতের বহু বহু অপেক্ষার ইতি ঘটেছে এক জয়ে। হয়তো সরেছে শত কোটির চাপিয়ে দেওয়া ভীষণ এক চাপও, শিরোপা না জেতার; দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বলতে পারে ‘আমরা যা জানি, তারা তো জানে না’!

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরকে হারাল ব্রাজিল

খেলাধুলা, 7 September 2024, 639 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইকুয়েডরের বিপক্ষে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে জয়ের দেখা পেল ব্রাজিল। বাংলাদেশ সময় আজ ৭ সেপ্টেম্বর সকালে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ঘরের মাঠে ইকুয়েডরকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।

banner

ব্রাজিল জয়সূচক গোলটি পেয়েছে ম্যাচের ৩০ মিনিটে। প্রথমার্ধে গোল হজমের পর ইকুয়েডর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই গোলকে পুঁজি করেই জয় পেয়েছে ব্রাজিল। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকার পর এটাই ছিল ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলে চারে উঠল ব্রাজিল। ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পেয়েছে দরিভালের দল। সমান ম্যাচ খেলে তাদের চেয়ে ৮ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টিনা। ৭ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় উরুগুয়ে। তৃতীয় কলম্বিয়ার সংগ্রহ ৬ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট।

ভারতকে ৩-১ হারিয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

খেলাধুলা, 23 October 2024, 531 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালীয় ভারত। দু’বছর আগে যাদেরকে ৩-০ গোলে তারা হারিয়েছিল। এবার আবারও তাদের উড়িয়ে দিয়েছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। আজ (নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।

banner

আজ ২৩ অক্টোবর বুধবার ম্যাচে বাংলাদেশের ড্র প্রয়োজন ছিল সেমিফাইনাল খেলতে। এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে সাবিনারা ৩-১ গোলের দাপুটে জয় আদায় করে নিয়েছেন। পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। আজ মাঠের পারফরম্যান্সে অবশ্য সেই প্রভাব পড়েনি। তিন গোলের দুটি তহুরা খাতুনের, আরেকটি আফিদা খন্দকারের। ভারতের গোলটি করেন অধিনায়ক বালা দেবী। ম্যাচের চারটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে।

এর আগে শুরুর একাদশে দুই পরিবর্তন করে মারিয়া মান্দা ও মাসুরা পারভীনকে সুযোগ দিয়েছিলেন কোচ পিটার বাটলার। ১৫ মিনিটে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের কর্নার ভারতীয় গোলরক্ষক ঠিকমতো গ্রিপ করতে পারেননি। বল এসে পড়ে বাংলাদেশের আফিদার কাছে। ভারতীয় ডিফেন্ডাররা ব্লক করার আগেই তিনি শট নেন। ভারতীয় গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে গোললাইন অতিক্রম করে তার শটটি। এরপরই বাংলাদেশ গোল উৎসবে মাতে।

গোলের পর বাংলাদেশ আরও সুন্দর ফুটবল খেলা উপহার দেয়। অল্প সময়েই তারা বেশ কয়েকটি আক্রমণ শাণায়। ২৮ মিনিটে ভারতের ডিফেন্ডারের ভুলে আরেকটি গোল পায় বাংলাদেশ। বাম প্রান্ত থেকে আসা ক্রস ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি ভারতীয় ডিফেন্ডার। তার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড তহুরার গায়ে লেগে সেই বলটি জালে জড়ায়।

৪২ মিনিটে তৃতীয় দফায় ব্যবধান বাড়ায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শামসুন্নাহার সিনিয়র ও জুনিয়র বল দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে বক্সের ওপর বল পান তহুরা খাতুন। জোরালো শটে গোল করেন বাংলাদেশের এই ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটে ভারত এক গোল পরিশোধ করে। ভারতের আক্রমণে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা গ্রিপ করতে পারেননি। গোলরক্ষকের হাত ফসকে যাওয়া বলে হেড দিয়ে জালে পাঠান ভারতীয় অধিনায়ক বালা দেবী।

বিরতির পর ভারত গোলের কয়েকটি সুযোগ পায়। প্রতিবারই বাধা হয়ে দাড়ান গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা। রুপ্নার পারফরম্যান্সে ভারত দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল পায়নি। বাংলাদেশের কোচ পিটার বাটলার দ্বিতীয়ার্ধে স্বপ্না রাণী, সানজিদাকে নামান। অবশ্য বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে তেমন গোলের সুযোগ পায়নি। ফলে প্রথমার্ধের একই ব্যবধান নিয়েই দুই দল মাঠ ছাড়ে।