অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, চুকনগর বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আজ ৬ জুলাই শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’ এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করতে হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও সমুন্নত করতে হবে, তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০ মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বধ্যভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাহবুব জামান ও হেলাল ফয়েজী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দলীয় কার্যক্রম গতিশীল এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তারা দলের নেতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
দুপুরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লিখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার (প্রথম লিঙ্ক রোড), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার (দ্বিতীয় লিংক রোড) এবং বাস্তুহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার (তৃতীয় লিংক রোড) মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে। ২০২৫ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থেকে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ১৪ কেজি বন্যহাতির দাঁত ও হরিণের চামড়াসহ আবদুল মালেক নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ ২৭ মে শনিবার তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
মালেক মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানার দীতেশ্বর এলাকার মৃত হাজী আবদুল আলীর ছেলে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরের শুলকবহরের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, শুলকবহর এলাকার একটি বাড়ির তৃতীয় তলায় হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া বিক্রি হচ্ছে- এমন খবরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে আবদুল মালেককে আটক করা হয়। এ সময় তার রুমের খাটের নিচে প্লাস্টিকের বস্তায় চারটি হাতির দাঁত, ছোট বড় ও মাঝারি আকারের ২০টি হাতির দাঁতের খণ্ডাংশ পাওয়া যায়, যার ওজন ১৪ কেজি। এ ছাড়া একটি হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মো. নূরুল আবছার জানান, দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া সংগ্রহ করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিলেন আবদুল মালেক। তার কাছ থেকে উদ্ধার মালামালের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
র্যাব জানায়, ১৯৭৬ সালে বাবার সঙ্গে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি এলাকায় হাতির দেখভাল করার জন্য যান তিনি। তার বাবার কয়েকটি হাতি ছিল। ১৯৯৮ সালে তার বাবা মারা গেলে হাতির ব্যবসা দেখভাল করার জন্য তিনি ছয় বছর ধরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির মারিশ্যা এলাকায় থাকতেন। তিনি একজন লাইসেন্সধারী হাতির পালক। ২০১০ সালের পরে লাইসেন্স প্রভিশন হলে তিনি পুনরায় লাইসেন্স করেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে তখন বাঘাইছড়ি থাকতেন না। দু’চার দিন থেকে আবার মৌলভীবাজার চলে যেতেন। তার বৈধভাবে ছোট বড় ১২টি হাতি আছে। তবে স্থানীয় তথ্যানুযায়ী তার আরো ২৪/২৫টি রেজিস্ট্রেশনবিহীন হাতি রয়েছে, যা দিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে ভাড়াসহ পাহাড়ি এলাকায় গাছ টানার কাজ করেন। পাহাড়ি এলাকা থেকে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন বন্যপ্রাণির চামড়া, হাতির দাঁত সংগ্রহ করে অবৈধভাবে বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করে আসছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যে হবিগঞ্জে বৃক্ষরোপন অভিযান ও জেলা বৃক্ষমেলা ২০২৩ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ১৮ জুলাই মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের নিমতলায় হবিগঞ্জ বন বিভাগের আয়োজনে মেলার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবু জাহির।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মাঝে পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, সিলেট বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারেক রহমান বক্তব্য দেন। পরে শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
এর আগে অতিথিরা মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। মেলায় ফুল, ফল, ওষুধিসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা প্রদর্শন করা হয়েছে। এতে ২০ স্টল স্থাপন করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আজ ৩১ আগস্ট শনিবার বিকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব দাবি উপস্থাপন করে দলটি। সভা শেষে সাংবাদিকদের এমনটা জানান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিহতসহ সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছি। ৫ মে ও পরবর্তী সময়ে হেফাজতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলাগুলো এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার দাবি জানিয়েছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তার সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে মামুনুল বলেন, আমরা সহযোগিতা করার প্রত্যয় জানিয়েছি। নির্বাচন ও প্রশাসনসহ প্রতিটি খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছি।
সভায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে লিখিত আকারে যে দাবিগুলো প্রস্তাব করা হয়েছে, তা হলো :
১. প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করাক. নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার: জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগকারীদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সে জন্য আসনভিত্তিক বিজয়ী সংসদ সদস্যদের বাইরে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা।
খ. নির্বাচনবিধি সংক্রান্ত সংস্কার: প্রার্থীদের নিজস্ব প্রচারণার পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার ও প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। যোগ্য, সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
২. সাংবিধানিক সংস্কার
ক. বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া একচ্ছত্র ক্ষমতা স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেয়। তাই এ ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ভারসাম্য সৃষ্টি করা।
খ. দুই মেয়াদের বেশি একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা বন্ধ করা।
গ. প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের বিধান করা।
ঘ. সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা।
৩. বিচারব্যবস্থা
ক. বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করা। বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত রাখার স্বার্থে বিচারপতি নিয়োগ ও বিয়োগের জন্য জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা।
৪. শিক্ষাব্যবস্থা
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিতর্কিত বিষয়গুলো বাদ দিয়ে ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা সংযোজন করা।
৫. পুলিশ ও প্রশাসন
পুলিশ ও প্রশাসনকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহারের পথ বন্ধ করা।
৬. ধর্মীয় আইন
কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী আইন ও নীতি প্রণয়ন না করা।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে অটোরিক্সার চালকসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত চারজনের মধ্যে দু’জনের পরিচয় জানা গেছে। বাকি দুজনের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
আজ ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসেনপুর-কিশোরগঞ্জ সড়কের আদু মাস্টার বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কামালিয়াচর গ্রামের অটোরিক্সা চালক মো. আলম মিয়া (৪২) ও হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের বীর হাজীপুর গ্রামের মিজানুর রহমান (২৪)। সম্পর্কে তারা দাদা-নাতি। বাকি দুজনের পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, কিশোরগঞ্জ থেকে আসা অটোরিক্সার সঙ্গে বিপরীতমুখী বালুবাহী একটি ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে।
এতে অটোরিক্সাটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে চালকসহ দুজনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা আহত আরো দুজনকে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঠায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক তাদের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন ওই দুজনেরও মৃত্যু হয়।
হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানে হানাদারদের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান এবং দিল্লি হয়ে ঢাকা ফেরেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এতে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার কিছুক্ষণ পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তবে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধুকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তিনি পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। ব্রিটেনের বিমানবাহিনীর একটি বিমানে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন বঙ্গবন্ধু। ১০ জানুয়ারি সকালে তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, সরকারি দল কংগ্রেসের প্রথমসারির প্রায় সব নেতা, দেশটির তিন বাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য অতিথি এবং সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর স্বদেশের পথে রওয়ানা দেন তিনি। এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে বঙ্গবন্ধু আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসাবে।’
জাতির পিতা এদিন দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে ঢাকায় এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন।