অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, চুকনগর বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আজ ৬ জুলাই শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’ এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করতে হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও সমুন্নত করতে হবে, তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
বধ্যভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০ মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনও পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বধ্যভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মাহবুব জামান ও হেলাল ফয়েজী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এর সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দলীয় কার্যক্রম গতিশীল এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তারা দলের নেতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
দুপুরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লিখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার (প্রথম লিঙ্ক রোড), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার (দ্বিতীয় লিংক রোড) এবং বাস্তুহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার (তৃতীয় লিংক রোড) মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে। ২০২৫ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
চলারপথে ডেস্ক :
দেশে নির্মিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসমূহে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ ওজু ও নামাজের আলাদা জায়গা রয়েছে।
এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশজুড়ে ৯,৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ৫৬৪টি মসজিদের মধ্যে ২শ’ মসজিদ উদ্বোধন করেছেন।
তিনি প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১০ জুন ৫০টি মসজিদ, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় আরো ৫০টি এবং তৃতীয় দফায় ১৬ মার্চ আরো ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেন।
অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আজ ১৭ এপ্রিল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশজুড়ে আরো ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন।
ইসলাম একমাত্র শান্তির ধর্ম, এর মূল বাণী দেশব্যাপী পৌঁছে দিতেই সারাদেশে মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) চতুর্থ পর্যায়ে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্মের প্রচার-প্রসার, ইসলামী শিক্ষা যাতে আরও উন্নতমানের হয় সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা ২০১৩ সালে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছি। কওমী মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমানের মর্যাদা আমরা এনে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম ধর্ম হলো একমাত্র শান্তির ধর্ম। যে ধর্মে নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখন ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেছিলেন তখন ইসলাম ধর্ম প্রথম গ্রহণ করেন একজন নারী। তিনি ছিলেন তিনি ছিলেন বিবি খাদিজা (রা.)।
তিনি আজ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে চতুর্থ ধাপে এসব মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলাকে অনুষ্ঠানে যুক্ত করা হয় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, আলেম-উলামাসহ সাধারণ মানুষ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
এছাড়া হজযাত্রীদের জন্যে রেজিষ্ট্রেশান ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরী, অটিজম কর্ণার, দাফন পূর্ব আনুষ্ঠানিকতা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষা ব্যবস্থা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও ইসলামের দাওয়াতের জন্যে সম্মেলন কেন্দ্র, ইসলামি বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদসহ দেশি বিদেশী অতিথিদের জন্যে থাকার সুবিধা থাকবে।
ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা দেশজুড়ে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ইসলামি ভ্রাতৃত্ব ও এর মূল্যবোধ এবং সেইসাথে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা, কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।
এছাড়া এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ ঘটাবে। ক্যাটাগরি এ এর আওতায় ৬৪টি জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এলিভেটর সুবিধা ও ২,৩৬০.০৯ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসহ ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
ক্যাটাগরি বি এর আওতায় প্রতিটির ১৬৮০.১৪ বর্গ মিটার ফ্লোরস্পেসহ ৪৭৫টি মসজিদ এবং ক্যাটাগির সি এর আওতায় উপকূলীয় এলাকায় প্রতিটির ২,০৫২.১২ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসসহ ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, সনাতন ও মুসলমানের কবি ছিলেন না; তিনি ছিলেন মানব জাতির কবি। তিনি মানবতার কথা বলে গেছেন।
তাঁর সাহিত্যের মধ্যে সবকিছু পাই। তাঁর প্রতিভা উপলব্ধি করতে হলে তাঁর সৃষ্টিকে প্রত্যক্ষ করতে হবে।
২৫ মে বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত গাহি সাম্যের গান মঞ্চে ১২৪তম নজরুল জন্মজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দক্ষ কূটনৈতিকতায় ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবি নজরুলকে স্বাধীন বাংলাদেশে আনেন এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেন। বঙ্গবন্ধুই কবি নজরুলকে ধারণ করে আমাদের মুক্তির চেতনায় স্থান দিয়েছিলেন, তার প্রমাণ পাই। জাতীয় কবি নজরুলের আলোচনা করতে গেলে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম আলোচনায় আসে। সাহিত্যের মধ্য দিয়ে একটি জাতিকে কীভাবে জাগ্রত করা যায়, সেটি তাদের দু’জনের সাহিত্য কর্মে ফুটে উঠেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের চাওয়া-পাওয়াকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’-এটিকে জাতীয় সঙ্গীত এবং নজরুলের ‘চল চল চল ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল’ এটিকে রণ সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের দু’জনকেই সম্মানিত করেছেন। আমরা নজরুলের সাহিত্য চর্চাকে ছড়িয়ে দিয়ে তার প্রতি সম্মান দিতে পারব। সেই লক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিকাশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী, রেজিস্ট্রার
কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রামিম আল করিম, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম ‘নজরুলের কাব্য প্রতিভার উন্মেষ ও বিকাশ’ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ১২৪তম নজরুল জন্মজয়ন্তী-২০২৩ উদ্যাপন অনুষ্ঠানটি সদ্যপ্রয়াত কল্যাণী কাজীকে উৎসর্গ করা হয়।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে প্রতিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আম পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে দিপু মিয়া (৩৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১০ মে বুধবার বিকেলে পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দিপু মিয়া পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার নোয়াজ ব্যাপারীর বাড়ির সিরাফ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে বিনিবাজারে তার বাড়ির পাশের আম গাছে ওঠেন আম পারার জন্য। কয়েকটি আম পাড়ার পর এক ডাল থেকে অন্য ডালে পা রাখা অবস্থায় ডাল ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যান। এতে মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা শুনেছি যে আম পাড়তে গিয়ে দিপু নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কারো কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।’
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদের ১৭ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের সম্মানী ভাতা দেবে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় এই ভাতা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় দেশের ১০ শতাংশ মসজিদে এ সম্মানী চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি মসজিদগুলোকেও এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।
প্রাথমিকভাবে ইমামকে দেয়া হবে ৫ হাজার টাকা, মুয়াজ্জিন ৪ হাজার এবং খাদেম পাবেন ৩ হাজার টাকা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সারা দেশে অন্তত সাড়ে ৩ লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে ১৭ লাখের বেশি ইমাম ও মুয়াজ্জিন রয়েছেন। এর বাইরে শহরের মসজিদগুলোতে খাদেম রয়েছেন। সরকার পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দফায় দেশের ১০ শতাংশ মসজিদে এ কর্মসূচি চালু করবে। পরে ধাপে ধাপে সব মসজিদ এর আওতায় আসবে। কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি মসজিদকে ১২ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।’
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একইভাবে মন্দিরের পুরোহিত ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও এ ভাতার আওতায় আসবেন বলে।
এর আগে গত বছরের ৪ মার্চ জেলা প্রশাসক সম্মেলনের ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কর্ম অধিবেশন শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, ‘প্রতিটি জেলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন, পুরোহিত ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অন্যদের তালিকা প্রস্তুত করতে ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছে। তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে প্রায় ১৭ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিন কর্মরত। এর মধ্যে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ এবং জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে তিনজন খতিব, ছয়জন পেশ ইমাম ও ছয়জন মুয়াজ্জিনের বেতন-ভাতা রাজস্ব খাতভুক্ত।
অনলাইন ডেস্ক :
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সংগঠনগুলোর বিচার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, কিন্তু সংগঠনের বিচার এখনো হয়নি। আমার মনে হয় সেটাও সম্ভব যদি আমরা চিন্তা করি। কিন্তু মুশকিলটা হলো, এখনো বিভ্রান্ত করার সুযোগ রয়ে গেছে, অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব হলো তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।’
আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে এই স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনাসভার আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি প্রথমত তাঁকে চিনেছি আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজে অসামান্য অবদানের জন্য। দ্বিতীয়ত, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে অসামান্য অবদানের কারণে।’
ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধপদ্ধতির বিচার হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক ও দুইয়ে আজ পর্যন্ত ৫৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এই বিচারকাজে বাকি চ্যালেঞ্জগুলোও জয় করা (ওভারকাম) সম্ভব। সে জন্য ক্রমাগত চাপ ও দাবি অব্যাহত রাখতে হবে।’
যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচারে ট্রাইব্যুনালের জনবলসংকটকে ‘প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ’ উল্লেখ করে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর প্রায় ১৩ বছর পার হয়ে গেছে। প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কেউ কেউ মারা গেছেন, অনেকের বয়স হয়েছে। এখন প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থায় নতুন করে সদস্য নিয়োগ দেওয়া না হয়, তাহলে এই বিচারকাজ চালু রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’
মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি অধ্যাপক কবীর চৌধুরী ও আমাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে নানা রকম বিষোদগার করছে। বিটিসিএলের উচিত এসব ভিডিও সরিয়ে দেওয়া।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী অধ্যাপক কবীর চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সবাই ন্যায়বিচার পাইনি। যেটুকু পেয়েছি তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমার স্বামীকে (শহীদ ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী) নির্মমভাবে হত্যা করেছে আলবদররা। কিন্তু আলবদরের মতো সংগঠনগুলোর বিচার তো হয়নি। তাহলে আমি কি ন্যায়বিচার পেয়েছি? এই দুঃখ আমাদের আছে।’
অধ্যাপক কবীর চৌধুরী স্মারক বক্তৃতায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল বলেন, ‘বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি ট্রাইব্যুনালে ৩০টি মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং একটি মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এই মামলাগুলোতে আনুমানিক ২০০ জন অভিযুক্ত আসামি রয়েছেন। এই মামলাগুলোতে সাক্ষ্য প্রদান করবেন ২০০ থেকে ২৫০ সাক্ষী। তদন্ত সংস্থার কাছে আরো ৫০০ থেকে ৬০০ মামলা তদন্তের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। আসামি এবং সাক্ষী সবারই বয়স ৭০-এর বেশি। প্রাকৃতিক নিয়মেই হয়তো আর তিন-চার বছর পর এদের কাউকেই আমরা বিচারের জন্য পাব না। তাই দুটি বা প্রয়োজনে তিনটি ট্রাইব্যুনাল করে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে চলমান মামলাগুলো নিষ্পন্ন করা প্রয়োজন।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জামায়াতে ইসলামীর মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবিতে ৩২ বছর আগে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যে অভূতপূর্ব নাগরিক আন্দোলন সূচিত হয়েছিল, এর প্রধান নেতাদের অন্যতম অধ্যাপক কবীর চৌধুরী।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী বলেন, ‘স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে হিজড়াদের গল্প একটি নিয়ে বিতর্ক থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে মন্দির ভাঙচুরের মাধ্যমে আমাদের এই দেশে মৌলবাদের যে একটি ক্রমবর্ধমান উত্থান ঘটছে তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু আমরা এই দেশ গড়েছিলাম মূলত ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের মূলনীতির ভিত্তিতে। আমাদের মধ্যে যারা এখনো এই নীতিগুলোকে ধারণ করেন তারা কবীর চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বকে খুঁজে ফেরেন অনুপ্রেরণার আশায়।’