বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 10 July 2024, 918 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত ও ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সংসদের নেতৃবৃন্দ।

banner

আজ ১০ জুলাই বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার মাজার প্রাঙ্গনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজি হেলাল উদ্দিন, কামরুজ্জামান আনসারী, অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, সৈয়দ মিজানুর রেজা, কাজী হারিসুর রহমান, গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, জাতীয় পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঞা, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, আজিজুল হক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এড. মাহবুবুল আলম খোকন, আবদুল হান্নান রতন, এড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, তানজিন আহমেদ, সৈয়দ এখতেশামুল বারী তানজিল, কোষাধ্যক্ষ মহসিন মিয়া, আইন সম্পাদক এড. মফিজুর রহমান বাবুল, ত্রাণ সমাজকল্যাণ সম্পাদক আবদুল খালেক বাবুল, বন ও পরিবেশ সম্পাদক শাহআলম আলম, মহিলা সম্পাদিকা ফারহানা সিদ্দিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, শিল্প বাণিজ্য সম্পাদক স্বপন রায়, যুব ক্রীড়া সম্পাদক এড. শাহানুর ইসলাম, শিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক নুরুন্নাহার বেগম, ধর্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল কালাম, কৃষি সমবায় সম্পাদক এমবি কানিজ, শ্রম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ভূঞা, বিজ্ঞান প্রযুক্তি সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, উপপ্রচার সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, কার্যকরী সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ, এড. শিব শঙ্কর দাস, আলহাজ¦ নাজির মিয়া, জহিরুল ইসলাম ভূঞা, রফিকুল ইসলাম, কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল, এড. লোকমান হোসেন, আলামিনুল হক আলামিন, হাজি বাবুল মিয়া, বাবুল মিয়া, আবুল হোসেন, সাইদুজ্জামান আরিফ। এছাড়া জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শোভন, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আল জাবের উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টুর নেতৃত্বে কার্যকরী সংসদের নেতৃবৃন্দ ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 10 April 2023, 1493 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা গতকাল রবিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

banner

জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হেলেনা পারভীনের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, বিশিষ্ট নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হানিফ, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান তানিম, খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর দেবব্রত কর প্রমুখ।

সভায় আজ ১০ এপ্রিল থেকে হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেলে ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনে কোন পাম্প থেকে জ্বালানী তেল সরবরাহ না করা, লাইসেন্সবিহীন ও খুচরা জ্বালানী তেলের দোকানগুলো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।

সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে টিকেট কালোবাজারী বন্ধে রেলওয়ে স্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও রেলওয়ে স্টেশনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সভায় রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী ছাড়া অহেতুক কাউকে ঘুরাফেরা না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।

সভায় পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে জেলায় কোন অবস্থাতেই যেন বাসের টিকেটের দাম বৃদ্ধি না করা হয়, মহাসড়কে কোন ধরনের চাঁদাবাজী যেন না করা হয় সে ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।

সভায় পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে কোন অবস্থাতেই যেন মহাসড়কে যানজট না হয়, এবং কোন যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হলে তা সাথে সাথে অপসারণ করার জন্য প্রয়োজনীয় রেকার প্রস্তুত রাখার জন্য হাইওয়ে থানাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।

সভায় পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কের খনাখন্দ অবিলম্বে সংস্কার করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। ঈদের সময় মহাসড়কে যেন ট্রাকে করে যাত্রী পরিবহন না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপকে খেয়াল রাখার দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

সভায় ঈদের আগে তিনদিন ও ঈদের পরে ৩দিন মহাসড়কে কোন অবস্থাতেই যেন সিএনজিচালিত অটোরিকসা চলাচল না করে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়।

সভায় জেলায় কোন অবস্থাতেই যেন মালবাহী পাওয়ার ট্রিলার রাস্তায় চলাচল করতে না পারে সেজন্য পাওয়ার ট্রিলার চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। সভায় পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে বাজার মনিটরিং জোরদার করার জন্য জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। এছাড়াও শহরের যানজট নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।

সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগন,বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যানগন, নির্বাহী অফিসারগণ, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রগনসহ আইন-শৃংখলা রক্ষা কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

পুরোপুরি চালু হলে মালয়েশিয়ায় যাবে ১৫-১৬ লাখ কর্মী: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী

জাতীয়, 13 December 2022, 1508 Views,

স্টাফ রিপোর্টার :

banner

বাংলাদেশের কর্মীদের অনেকই মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে গিয়ে কাজ পাচ্ছে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন দেশে সর্বনিম্ন কত বেতনে বাংলাদেশি কর্মীরা যাবে, সেটির একটি চাহিদাপত্র তৈরির বিষয়ে কাজ করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সেমিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর যৌথভাবে আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইওএম ও ব্র্যাক।
ইমরান আহমদ বলেন, এ বছর (২০২২ সাল) আমাদের বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ১১ লাখ হয়ে গেছে। অর্থবছর হিসেব করলে এবং মালয়েশিয়ায় ভালোভাবে যাওয়া শুরু হয়ে গেলে ১৫ থেকে ১৬ লাখ কর্মী হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় থেকে অ্যাসেসমেন্ট করা হচ্ছে, কোন কোন দেশে মিনিমাম কত স্যালারি হলে ডিমান্ড নোট গ্রহণ করব। আমরা একটা ফিগারে আসব।
এ সময় মন্ত্রী সৌদিতে বাংলাদেশিদের সঙ্গে অন্য দেশের কর্মীদের বেতনের যে পার্থক্য তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সৌদিতে আমাদের ওয়ার্কাররা পায় ৮০০ রিয়াল আর অন্যান্য দেশের ওয়ার্করা পায় ১ হাজার থেকে ১২শ রিয়াল। এখানে একটা বিষয়ে আমাদের গুরত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের ওয়ার্কারদেরও দক্ষতা বাড়াতে হবে, এটা বিরাট দায়িত্ব।
অভিবাসন ব্যয় প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, অভিবাসনটা ওয়ান ওয়ে প্রসেস না। দু’পক্ষ থেকে এটা হয়। কর্মী পাঠানো দেশ হিসেবে আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যে দেশে কর্মী পাঠাচ্ছি, সেদেশে কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। আমাদের লক্ষ্য মানুষ পাঠানো, অনেক ক্ষেত্রে রিজেনেভল না হলেও আমাদের হজম করে নিতে হয়। তাহলে কী সরকার বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় মেনে নিচ্ছে? -এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমেদ বলেন, বাধ্য হয়ে না। এটা ওই দেশের যে সিস্টেম আছে, সেটা আমাদের এগ্রি করতে হচ্ছে। এর মধ্যেই অন্যায় যেন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।
মন্ত্রী মালয়েশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মালয়েশিয়াতে আমাদের এমওইউ মোতাবেক খরচ প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি শুনতেছি, মালয়েশিয়ায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা নিচ্ছে। মালয়েশিয়ায় যে পরিমাণ কর্মী যাচ্ছে তার চেয়ে প্রায় ২০ গুন কর্মীকে ভুয়া মেডিকেল করানো হচ্ছে- এ ব্যাপারে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না?, জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে যেসব রিক্রুট এজেন্সি ভুয়া মেডিকেল ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি সব লাইসেন্স বন্ধ করে দেব।
অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকায় নিযুক্ত ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন ড. ব্রেন্ড স্পেনিয়ের বলেন, প্রবাসীদের দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী অবদান রয়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশি প্রবাসীরা ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। তবে আমরা নিরাপদ অভিবাসন প্রত্যাশা করি। সে লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে। ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক সাফি রহমান খান বলেন, প্রবাসীদের অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। কোভিড-১৯ কালেও প্রবাসীরা উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসীদের বিদেশের যাওয়ার পাশাপাশি ফিরে আসার পরেও কাজে যুক্ত করতে চাই আমরা। প্রবাসীদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্র্যাকের অনেক উদ্যোগও রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে আইওএম চিফ অব মিশন আব্দুস সাত্তার ইসব বলেন, নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে প্রত্যাশা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। গত ৫ বছরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার সহযোগিতা করছে বলে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন

জাতীয়, 22 January 2023, 1292 Views,
বঙ্গভবন

ডেস্ক :
আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সাক্ষাতের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। ইসি সচিব সন্ধ্যায় স্পিকার দপ্তরকে ফোন দিয়ে সময় চেয়েছেন। দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।

banner

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সন্ধ্যায় জানান, সিইসির সাক্ষাতের জন্য ইসি সচিবালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান স্পিকার।

জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সংসদের অধিবেশন বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৯ ফেব্রুয়ারিই শেষ হবে এই অধিবেশন। এ প্রসঙ্গে আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে স্পিকার বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কোনো অধিবেশনের প্রয়োজন পড়বে না। সংসদের একটি বৈঠকের প্রয়োজন পড়েবে।

তিনি বলেন, তার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিলের বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা হবে। যেদিন ভোটের তারিখ হবে ওই দিন একটি বৈঠকের সময় ঠিক করা হবে। ওই বৈঠকে নির্বাচনী কর্তা (সিইসি) সভাপতিত্ব করবেন। যদি রাষ্ট্রপতি পদে একাধিক প্রার্থী থাকেন তাহলেই কেবল ওই বৈঠকটি বসার প্রয়োজন পড়বে। আর একক প্রার্থী হলে সেটার দরকার হবে না। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী একক প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করবে।

এর আগে রবিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাকিদের বলেন, আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আইনটি হচ্ছে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অবশ্যেই ৬০ দিনের আগে। ৯০ দিনের হিসেব শুরু হবে ২৪ এপ্রিল থেকে (পূর্ববর্তী) ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। সে হিসেবে ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করতে হবে।

২০১৮ সালে সর্বশেষ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল ওই বছর ২৫ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি এবং ভোট গ্রহণের সময় রাখা হয়েছি ১৮ ফেব্রুয়ারি। সে সময় ২২ দিনের মধ্যে পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে সে সময় বর্তমান রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

‘প্রাক্তন’ রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ থেকে মো. আবদুল হামিদ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর ২০ মার্চ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে মো. আবদুল হামিদ সেদিন থেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২২ এপ্রিল তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ওই বছর ২৪ এপ্রিল ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সংবিধান অনুযায়ী, দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি আর এ পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা শুরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 14 June 2023, 1307 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আজ ১৪ জুন বুধবার থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা শুরু হয়েছে। শুরুর দিনে আটজন রোগী এই সেবা নেন। তবে জানাজানি হলে দু’একদিনের মধ্যে রোগী আরো অনেক বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

banner

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিকেল তিনটায় সেবা কার্যক্রম শুরু হলেও রোগী আসেন সাড়ে তিনটার পর।

পৌর এলাকার ফুলবাড়িয়ার মোঃ সেলিম এই সেবা কার্যক্রমের প্রথম রোগী। যিনি মাত্র ২০০ টাকা ভিজিট দিয়ে অর্থোপেডিক চিকিৎসককে দেখান এবং এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ি শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ছয়দিন হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। রোগীরা চিকিৎসকের সেবা নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষাও করাতে পারবেন। বুধবার প্রথমদিন আটজন রোগী এ সেবা নেন। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

সূত্র মতে, রোগীদেরকে সিনিয়র কনসালটেন্ট দেখাতে চারশ’ টাকা, জুনিয়র কনসালটেন্ট ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে তিনশ’ টাকা এবং মেডিকেল অফিসার দেখাতে দু’শ টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাও করা হবে নির্ধারিত ওই সময়ে। বুধবার নয়জন চিকিৎসক সেবা দেয়ার কথা থাকলেও দু’জনকে পাওয়া যায়নি।

চর্ম ও যৌন রোগের চিকিৎসক ধীমান দেবনাথ বলেন, ‘হাসপাতালে বসে রোগীকে বাড়তি সেবা দিতে পারলাম এটাই তো বড় কথা। এমন উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তবে একই জায়গায় সকালে যেখানে পাঁচ টাকায় রোগী দেখা হয় সেখানে বিকেলে দুই থেকে চারশ’ টাকায় রোগীরা দেখাতে চাইবেন কি-না সে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।

অর্থোপেডিক চিকিৎসক চিকিৎসক সোলায়মান মিয়া বলেন, ‘সকালে দু’শর মতো রোগী দেখতে হয়। অনেকেই আছেন ভীড় দেখে চলে যান। তিনি আবার বেশি টাকা দিয়ে বাইরে দেখানোর মত সামর্থবান নন। এমন মধ্যবিত্ত যারা তাদের জন্য এ উদ্যোগ খুবই কাজে দিবে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে পুরোদমে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। তবে রোগীর সংখ্যা বাড়তে একটু সময় লাগবে। প্রচারণার পর ঠিকই রোগীরা এ সেবা নিবেন।

ব্যয় বৃদ্ধির চাপে ব্যবসা গোটাতে চান উদ্যোক্তারা

জাতীয়, 13 January 2025, 268 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বর্তমানে ব্যবসায়ীরা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির চাপে আছেন। এই সময় উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে পণ্য ও সেবা বিক্রি কমে যাওয়ায় বিপরীতমুখী চাপে আছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে তাঁদের নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ নেই। বরং এখন কঠিন বাস্তবতার মুখে রুগ্ণ ও সংকটে থাকা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সরকারের কাছে নীতিমালা চান ব্যবসায়ীরা।

banner

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বিনিয়োগবান্ধব হতে পারেনি দেশ। এখনো একজন বিনিয়োগকারীকে দেশে বিনিয়োগ করতে হলে ২৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪১টি ছাড়পত্র নিতে হয়। এই জটিলতার পরও সরকারের দেওয়া সেবার মূল্য ও কর বৃদ্ধি অব্যাহত। গত তিন বছরে গ্যাসের দাম ২৫০ শতাংশ থেকে প্রায় ৪৫০ শতাংশ বেড়েছে।

যদিও আবার দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। এসবের সঙ্গে আছে উচ্চ সুদের হার, ঋণপত্রে জটিলতা, বেতন-বোনাস, উচ্চ উৎপাদন ব্যয় ও ডলার দর বৃদ্ধিতে এখন নাজেহাল অবস্থা।

রবিবার বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সংগঠনের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করে এমন দবি করেছে। এ বৈঠকেই তারা এখন বিনিয়োগ করতে আগ্রহ পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে।

একই সঙ্গে তারা সামনে আর যাতে লোকসানে না পড়তে হয়, সে জন্য কিছু কিছু ব্যবসাও গুটিয়ে নিতে চায়।
জানা যায়, ২০২১ সালের পর থেকেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসায় ভাটা পড়েছে। এমনকি সরকার পরিবর্তনের পরও বিনিয়োগে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে এক হাজার ৮৩টি ব্যবসা প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৩৩৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। পরের বছর এক হাজার ৮১টি ব্যবসা প্রকল্প নিবন্ধনের মাধ্যমে এক হাজার ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল।

২০২৩ সালে আরো কমে ব্যবসার ৯৯৮টি প্রকল্পে ৮৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলার হয়। আর চলতি বছরে ব্যবসার ৭৪২টি প্রকল্পে এক হাজার ১৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ নিবন্ধন হলেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকেই ২৫৪টি প্রকল্পে ৬৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনকালীন জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তা কমে ১৮৬টি প্রকল্পে মাত্র ১৮৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার হয়েছে।

রিজার্ভের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বিদেশি বিনিয়োগ। রিজার্ভ যেমন কমছে, বিদেশি বিনিয়োগও কমছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৮.৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে নিট বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ১৪৭ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে যা ছিল ১৬১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পাঁচ মাস পার হতে চললেও দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক পরিবেশ এখনো ফেরেনি। বরং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এবং সংস্কার ও নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতায় নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ও উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অর্থনৈতিক মন্দায় ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, ‘দেশে বর্তমানে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে সব প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে, ঋণের উচ্চ সুদহার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি—সব কিছু মিলিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান তার পূর্ণ সক্ষমতায় চলতে পারছে না। উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। চাহিদা মতো ঋণপত্র (এলসি) খোলা যাচ্ছে না, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৭.৬৬ শতাংশ। নতুন গ্যাস সংযোগে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আবার আইএমএফের সুপারিশে বিভিন্ন পণ্যের ওপর কর-মূসক বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের টিকে থাকাই এখন চ্যালেঞ্জ। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, আমাদের বর্তমান শিল্পগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে। আর শিল্প টিকে থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার কোনো সমস্যা হবে না।’

বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমাদের কোনো এক্সিট বা ব্যবসা গোটানোর পলিসি নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের এক্সিট পলিসি থাকা দরকার। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, আমরাও মনে করি এক্সিট পলিসি থাকা দরকার। আর এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হবে।’

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির দায় অন্য ব্যবসায়ীদের না। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোরও এই দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। ক্যাশ ইনসেনটিভ না পেলে ইন্ডাস্ট্রিগুলো মরে যাবে।

বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের নগদ সহায়তা পেতে আবেদনের পর ৯ মাস থেকে এক বছর সময় লাগছে। যার ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের সময় মতো তাদের অপারেশন কস্ট মেটানো, তাদের কর্মীদের বেতনাদি পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা মনে করি, নগদ সহায়তা প্রদানের সময়সীমা দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আমার মনে হয়, এটা আগের মতো ৩৫ শতাংশে উন্নীত করা উচিত। আমরা ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। কারণ মার্চ থেকে কোনো গ্রাহক তিন মাস কিস্তি না দিলে খেলাপি হয়ে যাবে। তাই এটাকে তিন মাসে না এনে ছয় মাস রাখার প্রস্তাব করেছি।’

বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বিদ্যমান বড় শিল্প খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন রুগ্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক বছরের মনিটরিয়াম সুবিধাসহ আগামী ১২ বছরে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের এক্সিট পলিসির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যাংক দায়ের ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট, ১ বছরের মনিটরিয়ামসহ ১৫ বছর মেয়াদে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি।’

একটি প্রতিষ্ঠান এক্সিট সুবিধা নিয়ে পরে কিভাবে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার-উল আলম সাংবাদিকদের বলেন, একজন ব্যক্তির একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকে। সব প্রতিষ্ঠানই একসঙ্গে খারাপ হয়ে যায় না। যে প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ হয়েছে তার দায় পরিশোধের জন্য তাঁর অন্য ভালো প্রতিষ্ঠানের আয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএপিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর নতুন সূর্য সবার গায়ে লেগেছে। আমরা চাই সবাই দেশের জন্য কাজ করব। কিন্তু বর্তমান সরকারের সময় আমরা যেটা দেখছি তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে ৭৫ টাকা করা হবে। অথচ আমরা অনেক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা তৈরির কথা বলছি। কিন্তু ঢাল-তলোয়ার ছাড়া নিধিরাম সর্দারের মতো কিভাবে দেশের জন্য করবে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ববাজারে টিকতে পারব না।’

গভর্নরকে অবহিত করেছেন এমন তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প খাতের প্রণোদনা কেটে দেবেন। অথচ হোগলা পাতা রপ্তানি করলেও তারা প্রণোদনা পায়। দেশের শিল্প এখন ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ ঋণের সুদ দেয়। এর পরও শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি। অথচ শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নেই। ডলারের সংকট চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগে যাবেন না। পরীক্ষিত ব্যবসায়ীরা এখন ঝুঁকি নেবেন না।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের শর্ত অনুযায়ী ঋণ শ্রেণিকরণে নতুন নিয়ম চালু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুসারে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তিন মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার পর সব ধরনের ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণিকরণ করা হবে। বর্তমানে এ সময়সীমা ছয় মাস।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সিএমএসই খাত সব থেকে ক্ষতির মুখে পড়েছে। আমাদের সিএমএসই খাতকে টিকিয়ে রাখতে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা মনে করি, সিএমএসই খাতের বিশেষ তহবিল এবং নিম্ন সুদের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ খাতে একটি জেলা বা একটি ক্লাস্টারকে পাইলট ধরে ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে অর্থায়ন করা যেতে পারে।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এপ্রিলে খেলাপি ঋণের নতুন নিয়ম চালু হলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। তার ওপর নতুন করে ভ্যাট আরোপ, শ্রমিকের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিকে ব্যবসার অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, এলসি জটিলতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি কমাতে হবে সুদের হারও।

ব্যাংক রিফর্ম কমিটিতে ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্তি এবং অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিকে গুরুত্ব দিয়ে সরবরাহব্যবস্থা ঠিক করার দাবিও জানান ব্যবসায়ী নেতারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের বক্তব্য শোনেন এবং বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য এখন মুদ্রাস্ফীতি কমানো। আমরা আশা করি আগামী জুন নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ৭-৮-এর মধ্যে নেমে আসবে। আমাদের বেসরকারি খাতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমরা সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য সুপারিশ করছি। যাতে বেসরকারি খাতে অর্থ প্রবাহ বাড়াতে পারি। কিন্তু ডিপোজিট বাড়ছে না। ডিপোজিট গ্রোথ ৭ শতাংশ। অর্থ প্রবাহ বাড়াতে হলে ডিপোজিট বাড়াতে হবে। বর্তমানে ডলারের ক্রাইসিস নেই। অর্থনীতি স্বাভাবিক হচ্ছে, কিন্তু একটু সময় লাগবে। আগামী রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের সরবরাহব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ আছে এবং আমরা সে লক্ষে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি মনে করি, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য বন্ড মার্কেটে যেতে হবে। আমাদের করপোরেট বন্ডের জন্য কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করবে।’

সভায় উপস্থিত থেকে নিজ নিজ সেক্টরের সমস্যাসমূহ তুলে ধরে বক্তব্য দেন সিনিয়র সহসভাপতি, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি নাজমুল হাসান সোহেল, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান, উত্তরা মোটর করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, বারভিডা সভাপতি আব্দুল হক, পরিচালক বিসিআই ও চেয়ারম্যান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ আহসান খান চৌধুরী, কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাদাব আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিসিএমইএ ও ভাইস চেয়ারম্যান মন্নু গ্রুপ মঈনুল ইসলাম স্বপন, বিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, বিসিআই সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউনুস, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন