অনলাইন ডেস্ক :
আজকাল যৌবন ধরে রাখতে, সুন্দর দেখাতে নারী-পুরুষ সবাই দারুণ আগ্রহী। কাজেই পোশাক, চুল, ত্বক ও দাড়ির স্টাইল সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে এবং নিজেকে তরুণ দেখাতে অনেক কিছুই করতে হয়। তবে কি এসবই শেষ সমাধান? মোটেও এমনটা নয়। রূপ বোদ্ধাদের মতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এবং নিজেকে চিরতরুণ রাখার জন্য ছোট ছোট কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। স্কিন কেয়ার রুটিন ও স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলই উজ্জ্বল-তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের ইচ্ছা পূরণ করবে।
প্রাথমিক স্কিন কেয়ার : ভিটেন-হ্যার্ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ উলরিকে হাইনরিশ বলেন, ‘বয়স বাড়া মানেই কোনো কিছু পরিত্যাগ করা নয়। বয়সের সঙ্গে সৌন্দর্য হারাতে হবে- এমন কোনো কথা নেই। বয়সের সঙ্গে ত্বক পাতলা এবং শুষ্ক হয়। তাই এমন ক্রিম বা কসমেটিক ব্যবহার করতে হবে যাতে ভিটামিন এ, সি এবং ই-থাকে। আর হ্যাঁ, ত্বক ভালো রাখতে প্রাথমিক স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলা প্রয়োজন। না হলে ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে। এমনকি বয়সের ছাপ পড়ে ত্বকে।
প্রাত্যহিক ত্বকের পরিচর্যা
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে প্রথমে মুখ ভালোভাবে ক্লিনজিং করুন। তারপর প্রাকৃতিক টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
সানস্ক্রিন কখনো ভুলবেন না। রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করে। ফটোএজিং ঘটায়। ফলে সময়ের আগেই ত্বক বুড়িয়ে যায়। তাই মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।
বয়স ৩০ পেরোলেই অ্যান্টি-এজিং স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করা উচিত। রেটিনল, AHA সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট ত্বকে ব্যবহার করতে হবে। সৌন্দর্যচর্চায় আগের ট্রেন্ড ফিরে এসেছে। অর্থাৎ গাছগাছালির পাতা, রস, শেকড় ইত্যাদির তৈরি ভেষজ ক্রিম, পাউডার, তেল ব্যবহার করতে পারেন।
অসময়ে ত্বকে বলিরেখা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শারীরিক সমস্যা বা পুষ্টির অভাবেও এমন হতে পারে। সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে জীবনশৈলীর দিকেও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাও জরুরি। রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। নিয়মিত ব্যায়াম করতে ভুলবেন না। এই ছোট ছোট নিয়মগুলো মেনে চললেই আপনিও পাবেন চিরতরুণ ত্বক।
লেখা : উম্মে হানি
চলারপথে ডেস্ক :
তানজিম সাকিব, শরিফুল ও সৌম্যের বোলিং তাণ্ডবে স্বাগতিকরা শতরানের আগেই অলআউট হয়ে যায়। ৯৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে সহজেই ৯ উইকেটের বিশাল জয় পায় বাংলাদেশ। ফলে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জয়ের স্বাদ পেলো টাইগাররা।
আজ ২৩ ডিসেম্বর শনিবার নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় শুরু হয় এই ম্যাচ। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল শান্ত।
টাইগারদের বোলিং তোপে ৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায় কিউইরা। ৯৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শান্তর হাফ সেঞ্চুরিতে ১৫ দশমিক ১ ওভারেই জয় তুলে নেয় টাইগাররা।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ব্যথা পান দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সৌম্য। প্রথম ওভারেই অ্যাডাম মিলনের বলে আঘাত পান তিনি। তবে তা সামলে নিয়ে খেলা চালিয়ে নিলেও হঠাত বিপত্তি বাধে চোখে। ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছেন না বলে ইঙ্গিত করেন বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের দিকে। ফিজিও এসে চোখে ড্রপ দিলেও শেষ পর্যন্ত এড়ানো যায়নি সমস্যা। মাঠ ছেড়ে উঠে যান সৌম্য সরকার। ৫ দশমিক ৪ ওভারে বিনা উইকেটে তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৫ রান।
এরপর ক্রিজে আসা অধিনায়ক শান্ত করেন হাফ সেঞ্চুরি। এরমধ্যে ইনিংসের এগারতম ওভার করতে আসা ও’রর্ককে টানা মেরেছেন চারটি ৪! তবে সেই ও’রর্কের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন এনামুল বিজয়। জয়ের জন্য যখন আর মাত্র ১৫ রান দরকার তখনই আউট হন তিনি। ৭টি চারের মারে ৩৩ বলে ৩৭ রান করেন এই ওপেনার।
এরপরে ক্রিজে আসেন লিটন। তবে তিনি শুধু সঙ্গ দেন শান্তকে। নিজেরের হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন শান্ত। ফলে স্বাগতিকদের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলো টাইগাররা।
এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ে নেমে সমান ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম সাকিব, সৌম্য ও শরিফুল। বাকি একটি উইকেট নেন মোস্তাফিজ। অবিশ্বাস্য বোলিং করেছেন এই তিন পেসার।
এরমধ্যে ৭ ওভার বল করে গড়ে ২ রান করে দিয়েছেন তানজিম সাকিব। মেডেন ও নিয়েছেন ২ ওভার আর উইকেট নিয়েছেন তিনটি। হয়েছেন ম্যান অব দ্যা ম্যাচ।
সমান ওভার বল করে শরিফুলও নিয়েছেন তিন উইকেট। তিনি ওভারপ্রতি দিয়েছেন গড়ে ৩ দশমিক ১০ রান। অলরাউন্ডার সৌম্য হাত ঘুড়িয়েছেন ৬ ওভার। উইকেট নিয়েছেন ৩টি যার মধ্যে দুটোতেই উড়িয়ে ফেলেছেন কিউই ব্যাটারের স্ট্যাম্প।
শুরুতেই আঘাত হানে তানজিম সাকিব। পাওয়ারপ্লে’র মধ্যেই তুলে নেয় দুই উইকেট। অফ স্ট্যাম্প লাইনে বল করে রাচিন রবীন্দ্রকে মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সাজঘরে। তার ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ৮ রান।
রাচিনকে ফেরানোর পরের ওভার মেডেন, এরপরের ওভারেই ফেরান হেনরি নিকোলসকে। ২২ রানেই দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে নিউজিল্যান্ডের।
এরপরে টপাটপ তিন উইকেট তুলে নেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। ২ উইকেট হারানোর পর টম ল্যাথামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন উইল ইয়াং। তবে ৩ রানের ব্যবধানে জোড়া আঘাতে দুজনকেই সাজঘরে ফেরত পাঠান শরিফুল। এরপরের ওভারে আবারও উইকেট পান তিনি। এবার তুলে নেন মার্ক চাপম্যানকে। ততক্ষণে ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে নিউজিল্যান্ড।
তবে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারেনি কিউইরা। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই ব্যক্তিগত তৃতীয় উইকেট তুলে নেন তানজিম সাকিব। ফেরান টম ব্লান্ডেলকে।
এরপরেই দৃশ্যপটে ঢোকেন সৌম্য। ক্রিজে পড়ে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে উড়ে যায় ক্লার্কসনের স্টাম্প। যেন কিছুই বুঝতে উঠতে পারেননি তিনি। ১৬ রানে ফেরেন তিনি আর ৮৫ রানে ৭ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ১ রানের ব্যবধানে আবারও অ্যাডাম মিলনের উইকেট উপড়ে ফেলেন সৌম্য। এবারও বোল্ড করেন মিলনেকে ফেরত পাঠান সাজঘরে।
৯৭ রানে আবারও উইকেট পান গত ম্যাচে দেড়শ পার করা এই অলরাউন্ডার। এবার ফেরান অদিত্য অশোককে। ১২ বলে ১০ রান করে ফিরে যান তিনি। ফলে ৯৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে কোনোমতে শতরান পার করার চেষ্টায় ছিল বিপর্যস্ত কিউইরা।
তবে কিউই শিবিরে শেষ আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। ফলে দলীয় ৯৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটাই নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর। তবে শেষ ম্যাচ জিতলেও সিরিজ ঠিকই জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
অনলাইন ডেস্ক :
ভয়াবহতম বন্যায় কবলিত দেশ। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়িসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। এই মানবিক বিপর্যয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন চলচ্চিত্রশিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। বানভাসিদের জন্য এগিয়ে এসেছেন দেশের প্রভাবশালী অভিনেতা ও প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজলও।
অভিনেতা ডিপজল বরাবরের মতো এবারও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কুমিল্লা ও ফেনীতে ট্রাকে করে তার টিম ত্রাণ বিতরণ করেছে। নৌকায় করে দুর্গম এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছে।
ডিপজলের পাঠানো ত্রাণের মধ্যে রয়েছে- বিশুদ্ধ পানি, বিস্কুট, চিড়া, গুড়, স্যালাইন, লাইটার, মোমবাতি, লুঙ্গি, শাড়িসহ প্রয়োজনীয় পণ্য। ডিপজলের এই ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় করছেন তার সহকারী ফয়সাল।
তিনি বলেন, ‘ডিপজল সাহেব আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুরো ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার। আমরা তার নির্দেশমতো দিন-রাত পরিশ্রম করে পণ্য প্যাকেট করে ট্রাকে বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।’ যতদিন প্রয়োজন ততদিন বন্যার্তদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
যেকোনো দুর্যোগে এবং সাধারণ মানুষের সমস্যায় সবসময়ই পাশে দাঁড়ান ডিপজল। প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমার সময় সময় শত শত বাস বিনাভাড়ায় মুসল্লিদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেন এই অভিনেতা। এ ছাড়া সারাবছরই চলচ্চিত্রে বেকার শিল্পী ও কলাকুশলীদের নানাভাবে সহযোগিতা করেন তিনি। ফলে চলচ্চিত্রে দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে পরিচিত ডিপজল।
এর আগে, ২০২২ সালেও সিলেটের সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার সময় দুর্গত এলাকায় দশ ট্রাক পণ্য পাঠিয়েছিলেন ডিপজল। বরাবরই দেশের দুর্যোগের সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন এবং অন্যদেরও পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এই অভিনেতা।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে আয়ারল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২৮ ওভার ১ বল খেলে সব উইকেট হারিয়ে ১০১ রান করে আইরিশরা। জবাব দিতে নেমে ২২১ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। একইসঙ্গে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেটে জয়ের কীর্তি গড়ে স্বাগতিকরা।
প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল, দ্বিতীয়টি বৃষ্টিতে হয় পরিত্যক্ত; সিরিজের ট্রফি তাই থাকছে স্বাগতিকদের কাছে। ১০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা বাংলাদেশ খেলেছে নিজেদের মতো করেই। একটি রেকর্ড অবশ্য ছোঁয়া হয়নি। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ, সেদিন জয় এসেছিল ২২৯ বল হাতে রেখে। ওই রেকর্ড ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি এদিন। কেননা জেতার সময় ২২১ বল হাতে ছিল বাংলাদেশের।
ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়া অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৫ চার ও ২ ছক্কার ইনিংসে ৪১ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়ে অপরাজিত থাকেন লিটন দাস। এতে আয়ারল্যান্ডকে একটি তেঁতো হারের স্বাদ দেয় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ১০ উইকেটে হারে আইরিশরা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুর দিকে দেখেশুনেই খেলে আয়ারল্যান্ড। বৃষ্টিতে ঢেকে থাকা পিচে সুইং ছিল স্বাভাবিকভাবেই। বাংলাদেশ প্রথম সাফল্য পায় পঞ্চম ওভারে এসে। ২১ বলে কেবল ৮ রান করা স্টেফেন দোহানি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন হাসান মাহমুদের বলে। পরের দুটি উইকেটও হাসানের।
নবম ওভারের প্রথম বলে এই পেসার ফেরান পল স্টার্লিংকে। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে আইরিশ উদ্বোধনী ব্যাটার ১২ বলে ৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান। ওই ওভারেই হাসান ফেরান হ্যারি টেক্টরকে। ৩ বল খেলে কোনো রান না করা এই ব্যাটারও হন এলবিডব্লিউ।
পরের ওভারেই আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। ১ চারে ১৮ বলে ৬ রান করে তিনি ক্যাচ দেন প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। ২৬ রানেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলা আয়ারল্যান্ডকে কক্ষপথে ফেরানো ছিল কঠিন এক কাজ।
ওই চেষ্টা করেন কার্টিস ক্যামফার ও লরকান টাকার। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৪২ রানের জুটি। কিন্তু এবারও আইরিশদের জন্য ধাক্কা হয়ে আসেন এক পেসারই। এবাদত হোসেন এলবিডব্লিউ করে ফেরান টাকারকে। সাজঘরে ফেরার আগে ৪ চারে ৩১ বলে ২৮ রান করেন তিনি।
এরপর অনেকটা সময় একাই লড়াই করেন কার্টিস ক্যামফার। নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হন তিনি। হাসান মাহমুদের চতুর্থ শিকার হওয়ার আগে ৪ চারে ৪৮ বলে ৩৬ রান করেন ক্যামফার। ইনিংসের ২৭তম ওভারে এসে যখন আইরিশরা দলীয় সংগ্রহে তিন অঙ্ক স্পর্শ করে, ততক্ষণে ৯ উইকেট নেই তাদের।
শতরান ছাড়িয়ে যাওয়ার একটু পরই সফরকারীদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকিয়ে দেন হাসান। ১৯ বলে ৩ রান করা গ্রাহামকে ফেরান এলবিডব্লিউ করে। এতে একটি রেকর্ডেও নাম লেখায় ম্যাচটি। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন সংস্করণ মিলিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পেসাররা নিলেন প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট।
৮ ওভার ১ বল হাত ঘুরিয়ে ১ মেডেনসহ হাসান মাহমুদ ৩২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট পান। এর বাইরে তাসকিন ১০ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট ও এবাদত হোসেন ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। স্পিনারদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ১ ওভারে ৩ ও নাসুম ৩ ওভারে ১১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন। বোলিং করেননি সাকিব আল হাসান।
অনলাইন ডেস্ক :
দেখতে দেখতে এসেই গেল মহেন্দ্রক্ষণ। অপেক্ষার পালা শেষে। এবার মাঠের খেলা শুরু। আজ থেকে ভারতের মাটিতে ১০ দেশের জাতীয় দলকে নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়ানাডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এবারের আসরে অংশ নেওয়া দলগুলো হচ্ছে স্বাগতিক ভারতসহ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস। ভারতের ১০টি ভেন্যুতে ৪৬ দিনে মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। লিগপর্বে প্রতিটি দলই একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। লিগপর্ব শেষে সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। দুই সেমিফাইনালের দুই জয়ী দল ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে।
আহমেদাবাদে আজ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এবারের আসরের। লর্ডসে ২০১৯ সালের স্মরণীয় ফাইনালের সুখস্মৃতি যেন ফিরে আসবে এই ম্যাচের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে উদ্বোধনী ম্যাচটি। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি দেখা যাবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টসে।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু হবে ৭ অক্টোবর, ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে। ১০ অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটিও বাংলাদেশ খেলবে এই ধর্মশালাতেই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচ দুটি সামনে রেখে বাংলাদেশ দল আসামের গোহাটি থেকে এরই মধ্যে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় পৌঁছে গেছে।
এদিকে, গুঞ্জন ছিল ভারতে অনুষ্ঠেয় ক্রিকেট বিশ্বকাপে হতে যাচ্ছে জমকালো উদ্বোধন। সময় ঘনিয়ে আসতে আসতে সেই খবরও বাতাসে মিলিয়ে গেল! দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এবারের আসরে থাকছে না কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যদিও সর্বশেষ ২০১১ সালে এই উপমহাদেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। যার জমকালো উদ্বোধন হয়েছিল ঢাকায়। এবার অবশ্য তেমন কিছু হচ্ছে না। তবে বুধবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হয়েছে ‘ক্যাপ্টেন্স ডে’ নামের পোশাকি ইভেন্ট। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১০ দলের অধিনায়ক প্রেস কনফারেন্স ও ছবি তোলার আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। এদিকে, জশ বাটলারের ইংল্যান্ড ১০ দলের এই টুর্নামেন্টে শিরোপা ধরে রাখার অন্যতম ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারকা অল-রাউন্ডার বেন স্টোকসের ফেরা ইংলিশদের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এ কারণেই এক লাখ ৩০ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশে^র সবচেয়ে বড় নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের প্রমাণে মুখিয়ে থাকবে।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারের বিশ্বাস, ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া টানা তিনবার বিশ^কাপ শিরোপা জয়ের যে রেকর্ড গড়েছিল, এরপর একমাত্র ইংল্যান্ডই পরপর দুই আসরে শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার। সহজেই তারা এবারও ফাইনালে পৌঁছতে সক্ষম হবে। এ সম্পর্কে সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টার স্টার স্পোর্টসে গাভাস্কার বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে যে পরিমাণ প্রতিভা আছে, তা অনেক দলেরই নেই। তাদের দলে দুই থেকে তিনজন বিশ্বমানের অল রাউন্ডার আছে, যারা ব্যাট ও বলহাতে যে কোনো সময় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলিং লাইন আপে রয়েছে- রেসি টপলি, ডেভিড উইলি, মার্ক উড ও ক্রিস ওকস। তাদের সঙ্গে আরও রয়েছেন স্টোকস, যিনি সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার পর আবারও ফিরে এসেছেন। তবে এবারের বিশ্বকাপে তিনি দলে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ২০১৯ সালে ইয়ন মরগানের নেতৃত্বে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের আটজন এবারের দলে আছেন। মরগানের অবসরের পর বাটলারের জন্য অধিনায়কের আসনে আসীন হওয়াটা সহজ ছিল। গত বছর তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড।
জশ বাটলার বলেন, বিশ্বকাপ শিরোপা অবশ্যই ধরে রাখতে চাই। যদিও আমরা নিজেদের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখছি না। এটা একটি নতুন টুর্নামেন্ট এবং আমরা সবাই জানি, এই আসরটা অত্যন্ত কঠিন হতে যাচ্ছে। কারণ এখানে বেশ কিছু শীর্ষ দল আছে। কিন্তু আমাদের দলও ভালো, ইংল্যান্ড একটি বিপজ্জনক দল। এই দলে বেশ কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে, যাদের ওপর অনায়াসেই নির্ভর করা যায়।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৯ সালে লর্ডসের ফাইনাল ম্যাচটি টাই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ম্যাচের ফলাফল নিষ্পত্তি না হওয়ায় বাউন্ডারি-কাউন্ট আইনে সেরা দল হিসেবে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়। চার বছর আগে বিশ^চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে দারুণ এক বেঞ্চমার্ক সেট করে চলেছে ইংল্যান্ড। গত বছর নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তারা ৪৯৮ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল।
সব সময়ের মতই এবারও আন্ডারডগ হিসেবেই মাঠে নামতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। হাঁটুর ইনজুরির কারণে প্রথম ম্যাচে দলে থাকছেন না অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গিয়ে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া সত্ত্বেও উইলিয়ামসন বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্ত হন। কঠোর পরিশ্রম করে ফিট হয়ে দলে ফিরে আসার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ম্যাচজয়ী ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছেন কিউই অধিনায়ক। ২০১৯ বিশ^কাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন উইলিয়ামসন। প্রস্তুতি ম্যাচের পর উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘পাকিস্তান অত্যন্ত ভালো একটি দল। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সবসময়ই আনন্দের। আমিও নিজেকে পরখ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। সবকিছুই ভালোভাবে এগুচ্ছে। এখন মূল আসরে নিজেদের প্রমাণের অপেক্ষায় আছি।’
উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে আজ নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিবেন টম লাথাম। এদিকে বুড়ো আঙুলের ইনজুরির কারণে বিশ^কাপের কয়েকটি ম্যাচ মিস করতে যাচ্ছেন ফাস্ট বোলার টিম সাউদি। দুই সপ্তাহ আগে তার আঙুলে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। দ্রুতই সে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন লাথাম।
এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১২টি বিশ্বকাপের আটটিতেই সেমিফাইনালে খেলা নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। ট্রেন্ট বোল্ট-সাউদির নেতৃত্বে বিশ্বমানের পেস আক্রমণের পাশাপাশি ভারতীয় টার্নিং পিচে মিচেল সান্টনার ও ইশ সোধির স্পিন ভালো সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। লাথামের নেতৃত্বে শেষ প্রস্তুত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড সাত রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা ভালোভাবে সেরে নিয়েছে। লাথাম বলেন, ‘বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে এখানে খেলতে হবে। প্রতি ম্যাচেই লক্ষ্য থাকতে হবে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার। তবে আমরা ভারতে আগামী কয়েকটি দিন দারুণভাবে উপভোগ করতে চাই। আর ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’ সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক :
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অর্ধযুগ আগে একটি ম্যাচ খেলে ৩-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। আজ ১ ডিসেম্বর শুক্রবার ঘরের মাঠে একই ব্যবধানে জিতে সেই হারের প্রতিশোধ নিয়েছেন সাবিনারা।
তহুরা খাতুনের জোড়া আর আফিদা খন্দকারের গোলে ১৪ মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ। ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর আর কোনো ম্যাচ জেতেনি সাবিনারা। এ বছর ষষ্ঠ ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেলো লাল-সবুজ জার্সিধারী মেয়েরা।
একটা ভয় ছিল সিঙ্গাপুরকে নিয়ে। র্যাংকিংয়ে এগিয়ে। তারপরও আগের একমাত্র সাক্ষাতে ৩-০ গোলে হার। অর্ধযুগ পর ঘরের মাঠে সেই সিঙ্গাপুরকে পেয়ে সাবিনারা আত্মবিশ্বাসী হলেও জিতবেই এমন কথা জোর দিয়ে বলতে পারছিলেন না।
কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে দেখা গেলো র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে কর্তৃত্ব বাংলাদেশেরই। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলে বাংলাদেশ লিড নিয়ে নেয় সিঙ্গাপুরের মেয়েরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই। আফিদা ও তহুরার গোলে বাংলাদেশ বিরতিতে যায় ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বাম দিক থেকে সাবিনা শট কর্নার করে বল দিয়েছিলেন মারিয়াকে। মারিয়া আবার বলটি সাবিনাকে ঠেলে দিয়ে গোলমুখে ক্রস নেন অধিনায়ক। ডিফেন্ডার আফিদা খাতুনের হেড ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে গোললাইন অতিক্রম করলে লিড নেয় বাংলাদেশ।
ব্যবধান দ্বিগুণ করতে বেশি সময় নেয়নি সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। ১৬ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মারিয়া মান্ডা দুইজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে ঢুকে ডিফেন্সচেরা পাস দেন তহুরা খাতুনকে। তহুরা গোল করে লিড বাড়িয়ে নেন স্বাগতিক মেয়েরা।
ব্যবধান ৩-০ হতে পারতো ২৫ মিনিটে। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ে শট নিয়েছিলেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। বল ক্রসবার উঁচিয়ে চলে যায় বাইরে।
৬০ মিনিটে তহুরা খাতুন নিজের জাত নিয়েছিলেন দারুণ এক গোল করে। নিজেদের রক্ষণভাগ থেকে লম্বা শট নিয়েছিলেন মাসুরা পারভীন। বক্সের ভেতরে উড়ে আসা সেই বল ধরে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে প্লেসিংয়ে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল করেন তহুরা।
৭৭ মিনিটে মারিয়া মান্ডা বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন সাবিনার কাছ থেকে। মারিয়া প্রথম পোস্টে বল মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। বল চলে যায় গোলরক্ষকের হাতে।
রুপনা চাকমা, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, আফিদা খন্দকার, মাসুরা পারভীন, মনিকা চাকমা (স্বপ্না রানী) , সানজিদা আক্তার (শামসুন্নাহার জুনিয়র) , মারিয়া মান্ডা, রিতু পর্না চাাকমা (শাহেদা আক্তার রিপা) তহুরা খাতুন (সুমাইয়া) ও সাবিনা খাতুন (আকলিমা।