অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে থাকা ফরাসি নাগরিক এবং সে দেশের যেসব নাগরিক এ দেশে আসতে চান, তাদের সতর্ক করে দিয়েছে ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাস। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে যাতে নতুন করে আর সহিংসতা না ছড়ায়, সে জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
আজ ২৮ জুলাই রবিবার ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় বলেছে, ‘সবাইকে শান্ত, সংযমী থাকার আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে নতুন করে যাতে সংঘাত না ঘটে, এর জন্য সংলাপের আহ্বান জানাই।’
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশে ফ্রান্সের যেসব নাগরিক থাকেন, তাদের এবং যেসব নাগরিক বাংলাদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।’
অনলাইন ডেস্ক :
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-এ সরকারের সমালোচনা করায় মোহাম্মদ আল-গামদি নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরব। একই অভিযোগে এর আগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই সাজা বাতিল করেন আদালত। এরপর দুই মাসের কম সময়ের ব্যবধানে সৌদি আদালত নতুন সাজা ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছেন অভিযুক্তের ভাই সাঈদ আল-গামদি।
সৌদি আরবের বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনামলে দেশটিতে বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মোহাম্মদ আল-গামদির সাজাও ভিন্নমত দমনের অংশ বলে মনে করছেন সমালোচকরা। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এর প্রতিবাদ করে আসছে।
এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বিন সালমান এই মামলাটি নিয়ে মন্তব্য করেন। সরকার এতে ‘লজ্জিত’ উল্লেখ করে রায় পরিবর্তনের আশা ব্যক্ত করেন সালমান।
সাঈদ আল-গামদি বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, গত আগস্ট মাসে মোহাম্মদ আল-গামদির মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়। তবে আপিল আদালত তাকে একই অভিযোগে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী ইসলামিক স্কলার সাঈদ আল-গামদি বলেন, সৌদি আরবে সরকারের সমালোচকদের ওপর কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই সাজা দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ৫০ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আল-গামদিকে ২০২২ সালের জুন মাসে গ্রেফতার করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
তুরস্কে আবারও ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে তুরস্কের মধ্য আনাতোলিয়া অঞ্চলের নিগদে প্রদেশে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে বলে দেশটির ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকারী কেন্দ্র কানদিলি জানায়। ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫ দশমিক ৫ ছিল বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান-মেডিটারিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এএফএডি জানায়, এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভূমি থেকে সাত কিলোমিটার গভীরে।
দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে বলেন, কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তা দেখতে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল রয়েছে। তিনি টুইটারে বলেন, ‘এ মুহূর্তে খারাপ কোনো খবর নেই। আল্লাহ আমাদের সব ধরনের দুর্যোগ থেকে রক্ষা করুন।’
৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে দুই দেশে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা
চলার পথে অনলাইন ডেস্ক:
পিরোজপুরের নাজিরপুরের সফিকুল ইসলাম ওরফে শফিউল্লাহ শেখ। ভাগ্য বদলাতে ১৩ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার জন্য চুক্তি করেন। প্রথমে সাত লাখ টাকা দেন; পরবর্তীসময়ে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। ইতালি যাওয়ার কথা বলে প্রথমে দুবাই, পরে সিরিয়া হয়ে লিবিয়ার ‘গেম ঘর’ নামক টর্চাল সেলে নিয়ে শফিউল্লাহকে নির্যাতন করতো একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র। চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (তেজগাঁও) বিভাগ। একই সঙ্গে অপহৃত শফিউল্লাহকে লিবিয়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রাজধানীর গুলিস্তানে নুরুজ্জামান রাজুর একটি মোবাইল ফোন মেরামতের দোকান ছিল। ইউরোপে একটি উন্নত জীবন শুরুর আশায় ২৯ বছর বয়সী এই তরুণ তার দোকান প্রায় ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। চলতি বছরের মার্চে দেশ ছেড়ে চলে যান স্বপ্নের দেশ ইতালি। মানবপাচারকারী চক্র তাকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়ায় পাঠায়। কিন্তু রাজু লিবিয়ার বেনগাজিতে পৌঁছানোর পর তার যাত্রা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে তিনি গত আট মাস ‘গেম ঘরে’।
এভাবেই রাজুর বাবা আমিনুল ইসলাম তার ছেলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার করুণ বর্ণনা দেন। আমিনুল বলেন, ‘আমি প্রতি দু-তিনদিন পরপর আমার ছেলের কাছ থেকে ফোন পাই। গেম ঘরের লোকরা মুক্তিপণের জন্য রাজুকে নির্যাতন করছে। সে সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করে কিন্তু আমি অসহায়।’
রাজুর বাবা আরও বলেন, ১০ লাখ টাকা চেয়ে ছেলের নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়েছে। যখন আমি বলেছিলাম আমার কাছে এতো টাকা নেই, তখন একজন বাংলাদেশি নিজেকে শরীফ বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করে ৭ লাখ টাকায় চুক্তি করা হয়েছে বলে জানান।
পরে সম্পত্তি বিক্রি করে ও ঋণ নিয়ে আমিনুল ইসলাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করে শরীফের মাধ্যমে। এরপর নভেম্বর মাসে তিনি দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও একটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। টাকা দেওয়ার পরেও আমিনুলের ছেলে রাজুর কপালে মুক্তি মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার শরীফ হোসেন। এই মানবপাচার চক্রের মূলহোতা। তিনি থাকেন লিবিয়ার বেনগাজিতে। লিবিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশি লোকজন তাকে সমীহ করেন। কারণ, তিনি সেখানে ‘মাফিয়া শরীফ’ নামে পরিচিত। এই শরীফ সেখানে বসে ‘গেম ঘর’র মালিক। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে শরীফের চক্র লোকজনকে লিবিয়া নিয়ে ‘গেম ঘর’ এ আটকে রেখে নির্যাতন চালায় এবং বাংলাদেশে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। তবে সেই গেম ঘরের চাবি থাকে মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা তাজনাহার রিক্তা নামে এক নারীর কাছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) মানবপাচারের একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই গেম ঘরের তথ্য পেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে সেই ‘গেম ঘর’ এ নির্মম নির্যাতনের শিকার কয়েকশ বাংলাদেশি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, মাদারীপুরে অবস্থানকারী রিক্তার হাতে শরীফ মাফিয়ার চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিলেই গেম ঘর থেকে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি মেলে। লিবিয়ার গেম ঘর থেকে মুক্তি পাওয়ার সেই চাবি আগে থাকতো শরীফের স্ত্রী সুমি আক্তারের কাছে। এই সুমি গত নভেম্বরে লিবিয়ায় মাফিয়া স্বামীর রাজ্যে চলে গেছেন। এরপর সেই দায়িত্ব পান রিক্তা। সম্পর্কে সুমির ভাবি রিক্তা।
সিটিটিসি জানায়, বাংলাদেশ থেকে অবৈধপথে ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ার গেম ঘরে আটকে রাখার চক্রগুলোর মধ্যে শরীফ হোসেন অন্যতম। তাকে বেনগাজিতে সবাই মাফিয়া হিসেবে চেনে। ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই চক্র ছড়িয়ে রয়েছে। তাদের চক্রে নারী সদস্যও রয়েছে।
সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শরীফ ও রিক্তা চক্রের মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ব্যাংকে শতাধিক অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে ৭০টি অ্যাকাউন্ট তারা যাচাই করে দেখেছেন।
এতে দেখা গেছে, ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে গত দুই বছরে অন্তত ৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে লিবিয়ায় পাচার, সেখানে গেম ঘরে আটকে ও জিম্মি নাটক সাজিয়ে ভিকটিম পরিবারগুলো থেকে এই টাকা আদায় করে শরীফ চক্র।
সিটিটিসির আরেক কর্মকর্তা বলেন, লিবিয়ায় মাফিয়া শরীফের গেম ঘরে কয়েক মাস ধরে তিন শতাধিক বাংলাদেশি বন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি নেওয়ার কথা বলে সেখানে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তবে অবৈধ অভিবাসী অনুপ্রবেশে দেশটির নৌ সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে কেউ যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় শরীফ জিম্মির নাটক সাজিয়ে বাংলাদেশে থাকা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গেম ঘরে আটক থাকা লোকদের খাওয়ার খরচও তাদের স্বজনরা বাংলাদেশ থেকে পাঠান। মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খাওয়া খরচ হিসেবে শরীফের লোকদের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে।
এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত নভেম্বরে শরীফ দেশেই ছিলেন। তার বিষয়ে তথ্য পেয়ে তাকে গ্রেফতারে উদ্যোগও নেওয়া হয়। তবে ৩০ নভেম্বর দুই স্ত্রী সুমি আক্তার ও হালিমা বেগমকে নিয়ে তিনি দেশ ছাড়েন। এরপরই রিক্তা শরীফের হয়ে দেশে সমন্বয়কের দায়িত্ব পান। তবে শরীফের পুরো পরিবার, তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও এই পাচার চক্রে জড়িত। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে চক্রের কার্যক্রম নিয়ে বেশকিছু তথ্য মিলেছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, শরীফের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) শাখায় তারা চিঠি লিখবেন, যাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানো যায়। তার গেম ঘরে থাকা বন্দিদের কীভাবে মুক্ত করা যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ করা হবে।
দেশ থেকে যেভাবে যে রুটে পাচার ॥ সিটিটিসি কর্মকর্তারা বলছেন, শরীফ চক্রের দালালরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে। দালালরা ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে খুঁজে বের করে। এরপর তাদের কাছ থেকে প্রথম দফায় ৩ থেকে ৪ লাখ করে টাকা নেয়। প্রলোভন দেখানো হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে বৈধভাবে বড় জাহাজে করে ইতালি পাঠানো হবে। এরপর ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে প্রথমে বৈধভাবে (ভ্রমণ ভিসায়) দুবাই, মিশর বা তুরস্ক পাঠানো হয়। এসব দেশেও শরীফের চক্রের লোকজন রয়েছে।
তারা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো লোকজনকে রিসিভ করে নিজেদের কাছে রাখে। এরপর সুযোগ মতো লিবিয়ার বেনগাজিতে পাঠানো হয়। সেখানে শরীফ ও তার দুই স্ত্রীসহ তাদের মাফিয়া চক্রের লোকজন রিসিভ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। এরপর শুরু হয় গেম ঘরের খেলা।
সিটিটিসির কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে, নভেম্বরে শরীফ দুই স্ত্রীকে নিয়ে লিবিয়ায় নিজের ডেরায় চলে গেলেও প্রথম স্ত্রী হালিমা বেগম সেখানে মারা যান। শরীফ তার পরিবারের কাছে দাবি করেছেন, হালিমা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তবে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শরীফকে দেশে ফেরাতে পারলে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
শরীফ চক্রের স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গেছেন, বর্তমানে লিবিয়ায় শরীফের গেম ঘরে রয়েছেন- এমন অন্তত ছয় ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের মধ্যে শরীয়তপুর জেলার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন গেম ঘর থেকে লিবিয়া যাওয়ার পথে নৌকাডুবির পর আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার মাধ্যমে উদ্ধার হয়ে দেশে ফেরেন। তিনি বলেন, তারা স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে প্রথমে ৪ লাখ টাকায় লিবিয়া যান। সেখানে তাদের একটি বাসায় রাখা হলেও কয়েকদিন পর জাহাজে তুলে দেওয়ার কথা বলে সমুদ্রের অদূরে একটি গুদামঘরের মতো বাসায় নেওয়া হয় তাকেসহ কয়েকজনকে। সেখানে তার মতো আরও কয়েকজনকে দেখতে পান। এটিই গেম ঘর নামে পরিচিত। এখান থেকেই সাগরে ছোট ছোট নৌকায় তুলে দেওয়া হয়, তাকেও একইভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাকে বলা হয়েছিল, বড় জাহাজে ইতালি নেওয়া হবে। সেই কথা বলে তার পরিবারের কাছ থেকে আরও ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়। তবে স্থানীয় দালাল চক্রটি তার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি নাম বলতে রাজি হননি।
শরীফের গেম ঘরে জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার হয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশে ফেরা লোকজন পুলিশকে বলেছে, তাদের বাসা থেকে গেম ঘরে নেওয়ার সময়ে লিবিয়ার স্থানীয় পুলিশ বা দেশটির সন্ত্রাসী চক্র তুলে নিয়ে যায়। অনেককে গেম ঘর থেকেও তুলে নেওয়া হয়। এরপর শরীফ ও তার লোকজন দেশে থাকা দালালদের মাধ্যমে পরিবার ও স্বজনদের জানিয়ে দেন এবং তাদের মুক্ত করতে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা দাবি করেন।
মাদারীপুরের শিবচরের একজন বাসিন্দা রহিম শেখ গত জুলাইয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছতে পেরেছেন। তিনি ইমো অ্যাপসে সম্প্রতি এই প্রতিবেদককে বলেন, তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে বড় জাহাজে ইতালি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ছয় মাস লিবিয়ায় থাকেন। এর মধ্যে মাফিয়াদের হাতে একবার জিম্মি হন। কিন্তু নিজের এলাকায় টাকা দেওয়ার পর মুক্ত হন। যদিও তার জিম্মি বা অপহরণ হওয়ার বিষয়টি পরিবারকে তিনি জানাতে পারেনি। যারা জিম্মি করে, অপহরণ করে তারাই ভুক্তভোগীদের পরিবারকে বলে, ভয় দেখিয়ে ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
লেনদেন ইতালিতে, হুন্ডি হয়ে আসে দেশে ॥ সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইতালিতেও মাফিয়া শরীফের একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা অবৈধভাবে ইউরোপে লোক পাঠিয়ে অন্তত ৫ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেলেও এর বাইরে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেন হয় ইতালিতে। পরে সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে আসে দেশে। মূলহোতা শরীফের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) শাখায় চিঠি পাঠানো হবে। যাতে গেম ঘরে থাকা বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা যায়।
বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি তরুণ-যুবকদের উদ্দেশ্যে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, উন্নত জীবন-যাপনের জন্য দালালরা ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে টার্গেট করে। প্রলোভন দেখানো হয়, বৈধভাবে বড় জাহাজে ইতালি পাঠানো হবে। এরপর ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে প্রথমে বৈধভাবে (ভ্রমণ ভিসায়) দুবাই, মিশর বা তুরস্ক পাঠানো হবে। এসব প্রলোভন থেকে নিজেকে ও পচিরিতদের সতর্ক করতে হবে। অন্যথায় মাসের পর মাস গেম ঘরে থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে থাকা পরিবারের কষ্টার্জিত সম্পদ বিনষ্ট হবে।
সূত্র : জাগো নিউজ ২৪.কম
অনলাইন ডেস্ক :
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশের সম্মিলিত উদ্ধারকারী দল। এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে এক তরুণীকে জীবিত উদ্ধার করেছে তারা। এ ছাড়া তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশের সম্মিলিত উদ্ধারকারী দল বুধবার তুরস্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ে। পরদিন তারা দেশটির আদানা মিলিটারি এয়ার বেইস-এ পৌঁছায়। সেখান থেকে তারা আদিয়ামান শহরে পৌঁছে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিস এ তথ্য জানায়।
এদিকে ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত সিরিয়ায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। ত্রাণ সহায়তা হিসেবে বড় তাবু, ছোট তাবু, কম্বল, সোয়েটার, শুকনা খাবার ও ওষুধ পাঠানো হচ্ছে। ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০ উড়োজাহাজের সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা।এই মিশনের নেতৃত্বে আছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন জামিল উদ্দিন আহমেদ। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান হয়।
এর আগে বুধবার রাতে উদ্ধার ও ত্রাণকাজে অংশ নিতে তুরস্কে গেছে বাংলাদেশের একটি ‘সম্মিলিত সাহায্যকারী দল’। ৬০ সদস্যের দলটিতে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৪ জন এবং ১০ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করে বাংলাদেশ। সেদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হয় বিশেষ প্রার্থনা। বাতিল করা হয় প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি।
ডেস্ক রিপোর্ট :
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম। এছাড়াও তার আরেকটি পরিচয় তিনি দুবাইয়ের শাসক। বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য তার কন্যা মাহরা পরিচিত। তিনি বরাবরই তার জীবন যাপন নিয়ে মানুষকে জানাতে পছন্দ করেন।
ঘোড়া ও গাড়িপ্রীতি রয়েছে এই রাজকন্যার। পৃথিবীতেই বিলাসী জীবনের স্বর্গ বানিয়েছেন তিনি। তার বাবাও ব্যাপক ঘোড়া পছন্দ করেন। ফ্যাশন সচেতন মাহরা সংযুক্ত আরব আমিরাতে নতুন নতুন পোশাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ফ্যাশন শিল্পের প্রতি মাহরার ভালোবাসা বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ পেয়েছে। ক্রমবর্ধমান ফ্যাশন শিল্পের আঞ্চলিক ডিজাইনারদের তিনি ব্যাপক সমর্থন দেন।
ঘোড়ায় চড়া মাহরার অন্যতম শখের একটি। জানা যায়, তার ব্যয়বহুল অনেক ঘোড়া রয়েছে। যেগুলোর পেছনে বছরে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেন তিনি। এছাড়া তার বাড়িতে রয়েছে দুইটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারও।
বর্তমান সময়ে দুবাইয়ের সবচেয়ে বিলাসবহুল বিল্ডিং প্রিন্সেস টাওয়ার এর নিচতলায় তার জন্য স্পেশাল কমপ্লেক্স করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা। ল্যাম্বরগিনি ফেরারি বিএমডব্লিউসহ বিশ্বের নামীদামী গাড়ি তার গ্যারেজে রয়েছে।
১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন মাহরা। ৫.৭ ইঞ্চি লম্বার এই রাজকন্যা হাসি দিয়ে যে কারও মন জয় করে নিতে পারেন। বিলাসী জীবন যাপন ছাড়াও উদ্যোক্তা হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।
এছাড়া মানবিক কাজের অনেক সময় ব্যয় করেন মাহরা। তিনি এখনও অবিবাহিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাখ লাখ ফলোয়ার রয়েছে তার।