অণলাইন ডেস্ক :
এক দশক পর ভারতের লোকসভায় ফিরেছে বিরোধী দলনেতার পদ। বাজেট অধিবেশনে আজ ২৯ জুলাই সোমবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকারকে এক হাত নিলেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। পৌনে এক ঘণ্টা বক্তব্যে বিজেপি-শাসিত সরকারকে তুলোধুনো করেছেন রাহুল।
রাহুল বলেন, ‘হাজার হাজার বছর আগে কুরুক্ষেত্রে ছয় জন মিলে অভিমন্যুকে চক্রব্যূহে ফাঁসিয়ে হত্যা করেছিলেন। আমিও একটু পড়াশোনা করে দেখেছি, চক্রব্যূহকে পদ্মব্যূহও বলা হয়। পদ্মের মতো সামরিক গঠনের জন্য।”
এর পরই কেন্দ্রকে বিঁধে লোকসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এক নতুন চক্রব্যূহ তৈরি হয়েছে। তাও আবার পদ্ম ফুলের আকারে। যার প্রতীক প্রধানমন্ত্রী বুকে পরে থাকেন। অভিমন্যুর সঙ্গে যা করা হয়েছিল, যেভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছিল চক্রব্যূহে, সেটাই দেশের সঙ্গে, দেশের যুব সমাজ, কৃষক, নারী এবং ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে করা হচ্ছে।’ রাহুলের যুক্তি, মহাভারতের চক্রব্যূহের রাশ ছিল ছয় জনের হাতে- দ্রোণাচার্য, কর্ণ, কৃপাচার্য, কৃতবর্মা, অশ্বত্থামা ও শকুনি। বর্তমান সময়ের যে চক্রব্যূহের কথা রাহুল বলছেন, সেখানেও ছয় জনের হাতে রাশ রয়েছে বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। রাহুলের মতে সেই ছয় জন হলেন- নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, মোহন ভাগবত, অজিত ডোভাল, আম্বানি ও আদানি।
লোকসভায় রাহুল এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আপত্তি জানান স্পিকার ওম বিড়লা। বিজেপি শিবির থেকেও হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। স্পিকার রাহুলকে জানান, যারা লোকসভার সদস্য নন, তাদের নাম ব্যবহার করা যাবে না। সাংবিধানিক পদে থেকে রাহুল যাতে সংসদীয় রীতি-রেওয়াজ মেনে চলেন, সেই বার্তা দেন স্পিকার। এর পর অবশ্য আম্বানী, আদানি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নাম প্রত্যাহার করে নেন। তবে বাকি তিনটি নামের ক্ষেত্রে নিজের বক্তব্যে অবিচল থাকেন রাহুল।
লোকসভার বিরোধী দলনেতার মতে, বর্তমান কালের এই চক্রব্যূহের নেপথ্য তিনটি শক্তি কাজ করছে। রাহুলের কথায় প্রথম শক্তি হল, ‘পুঁজির উপর একচেটিয়া অধিকারের ভাবনা, যেখানে গোটা দেশের সম্পত্তির উপর দু’জনের অধিকার থাকে।’ সরাসরি কারও নাম না করলেও রাহুলের খোঁচা যে দুই শিল্পগোষ্ঠীর দিকেই ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া রাহুলের যুক্তিতে, দ্বিতীয় শক্তি হল সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং তৃতীয় শক্তি হল রাজনৈতিক নেতারা। এই তিন শক্তিই চক্রব্যূহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বলে আক্রমণ শানান লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
এই ‘চক্রব্যূহের’ কারণে দেশবাসীর কী সমস্যা হয়েছে, সে কথাও তুলে ধরেন রাহুল। রাহুলের দাবি, যাঁরা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, তাদের উপর এই চক্রব্যূহের প্রথম কোপ পড়েছে। নোট বাতিল থেকে শুরু করে পণ্য ও পরিষেবা কর এবং ‘কর-সন্ত্রাস’-এর কথা উঠে আসে রাহুলের সোমবারের বক্তৃতায়। তিনি বলেন, “দেশে যারা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, রাতে তাদের কাছে আয়কর দফতর, পণ্য ও পরিষেবা কর দফতর থেকে ফোন যায়। তারা কর-সন্ত্রাসের শিকার হন। এই কর-সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য বাজেটে কোনও উল্লেখ নেই।”
অনলাইন ডেস্ক :
সুদানে আটকে পড়া ব্যক্তিদের সরিয়ে আনতে যাওয়া তুরস্কের একটি উড়োজাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রাজধানী খার্তুমের কাছে ওয়াদি সেইদনা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় উড়োজাহাজটি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এতে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
এক বিবৃতিতে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার শিকার হওয়ার পরও সি-১৩০ মডেলের উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করেছে। সেটির জ্বালানিব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমানবন্দরে তা মেরামতের কাজ চলছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে উড়োজাহাজটিতে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে, তা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
উড়োজাহাজটিতে হামলার জন্য সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে এ দাবি নাকচ করে এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছে, ‘মধ্যরাত থেকে আমরা যে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছি, তা মেনে চলতে আমাদের বাহিনী কঠোরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর ওয়াদি সেইদনার আকাশসীমায় আমরা কোনো উড়োজাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছি, এমন খবর সত্য নয়।’
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে আরো তিন দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় আরএসএফ। তবে এই যুদ্ধবিরতি তেমন একটা কার্যকর হয়নি। যুদ্ধবিরতির পরও গতকাল রাতভর খার্তুমে আরএসএফের নানা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে সুদানের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো। এর আগের তিন দিনের যুদ্ধবিরতির সময় সুদান থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কাজে হাত লাগিয়েছে তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সুদানের সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ১৫ এপ্রিল লড়াই শুরু হয়। এ সংঘাতের এক পক্ষে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপর পক্ষে আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। প্রায় দুই সপ্তাহের সংঘাতে দেশটিতে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার।
দুই পক্ষে সশস্ত্র এই লড়াই সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে খার্তুম ও আশপাশের এলাকাগুলোতে। লড়াই শুরুর আগে সেখানে কোটি মানুষের বসবাস ছিল। সংঘাতের মুখে অনেকেই সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। আর এখনো যাঁরা থেকে গেছেন, তাঁরা খাবার, পানি ও জ্বালানির চরম সংকটে রয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এক রেলওয়ে কর্মী। এসময় হঠাৎ এক বিষাক্ত সাপ তাকে কামড়ে দেয়। কী করবেন বুঝতে না পেরে, সেই রেল কর্মী আক্রমণকারী সাপটিকে পাল্টা কামড় দেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এই ঘটনা ঘটেছে ৩৫ বছর বয়সী সন্তোষ লোহার নামে এক রেল কর্মীর সঙ্গে। তিনি বিহারের নওয়াদার রাজৌলির একজন রেল কর্মচারী এবং ঘন জঙ্গলে রেললাইন স্থাপনকারী একটি দলের সদস্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন রাতে খাবার খাওয়ার পর ঘুমানোর সময় হঠাৎ সাপের কামড়ে আহত হন সন্তোষ। জঙ্গলের মধ্যে সাপের কামড় খেয়ে দিশেহারা হয়ে সাপটিকেই ধরে দুইবার কামড় দেন তিনি।
স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, সাপকে পাল্টা কামড় দিলে বিষের প্রভাব কমে যায়। অলৌকিকভাবে, সন্তোষ এই বিপদ থেকে রক্ষা পান। সঙ্গীরা দ্রুত তাকে রাজৌলি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে ডা. সতীশ চন্দ্র সিনহা তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেন। হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই সন্তোষ চিকিৎসায় সাড়া দেন এবং পরের দিন সকালে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ডা. সিনহা নিশ্চিত করেছেন, সন্তোষ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
তবে, সাপটি এই ঘটনায় বাঁচেনি। মানুষের কামড়ে সাপটির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাটি স্থানীয় অঞ্চলে প্রচলিত লোককাহিনীর ওপর জোর দেয়, যেখানে বিশ্বাস করা হয় সাপকে পাল্টা কামড় দিলে বিষের প্রভাব সাপের মধ্যেই ফিরে যায়। সন্তোষ লোহার ক্ষেত্রেও হয়তো এমনটাই ঘটেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস উইংয়ে মিনিস্টার (প্রেস) পদে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিবিসির ঢাকা ব্যুরোর সাংবাদিক আকবর হোসেন মজুমদারকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ নিয়োগের ব্যাপারে আজ ২৪ নভেম্বর রবিবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তার নিয়োগের মেয়াদ চাকরিতে যোগদানের তারিখ হতে দুই বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের কিয়ুশু এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য, রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১। আজ ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেলে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, মিয়াজাকির উপকূল থেকে ২০ মাইলের কম দূরত্বে এ ভূমিকম্পের উৎপত্তি।
ভূমিকম্পের পরপরই জাপানের কিয়ুশুর পূর্ব ও দক্ষিণ উপকূল এবং শিকোকুর দক্ষিণ উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সূত্র : জাপান টাইমস
অনলাইন ডেস্ক :
এ এক অভূতপূর্ব দৃশ। নিজের পাপের বোঝার কথা স্মরণ করে লাখ লাখ মুসল্লির অবিরল অশ্রুধারায় ভিজেছে ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দান। তাঁদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আরাফাত ময়দান প্রকম্পিত হয়েছে।
আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার এ ময়দানে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজ পালন করেছেন হজযাত্রীরা। এসময় হাজিদের কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও পাপমুক্তির আকুল বাসনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মহান আল্লাহর কাছে অঝোরে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন। নামাজ আদায় করার পাশাপাশি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থেকেছেন।
মহান আল্লাহর অশেষ রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় সার্বক্ষণিক জিকির করেছেন। প্রায় সারাক্ষণ তালবিয়া পড়েছেন। আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য প্রকাশ করছেন।
এর আগে, পবিত্র হজ পালনের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে সৌদি আরবে আসা বিশ্বের ২৫ লাখ মুসল্লি হজের দ্বিতীয় রুকন আদায়ের জন্য সোমবার সূর্যোদয়ের পর মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই ময়দানেই অবস্থান করেন তাঁরা। আরাফাতের দিনকে মনে করা হয় বছরের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন মহান আল্লাহ বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন।
করোনা মহামারি পেছনে ফেলে এবার হজ আবার আগের রূপে ফিরে এসেছে। বলা হচ্ছে, এবারের হজে সবচেয়ে বেশি মুসল্লি এসেছেন। এই সংখ্যা ২৬ লাখেরও বেশি।
ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানের তিন দিকে জাবাল বা পাহাড়। এই পাহাড়ের নাম রহমতের পাহাড় (জাবালে রহমত)। দোয়া কবুলের স্থান হওয়ায় কোনো কোনো হজযাত্রী জাবালে রহমত পাহাড়ে উঠেও ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল ছিলেন। কোনো কোনো হজযাত্রী আরাফাত ময়দানে যাঁর যাঁর মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে ইবাদত বন্দেগী করেছেন। আরাফাত ময়দানে একটি উঁচু পিলার রয়েছে। এই পিলারটিও দোয়া কবুলের স্থান। আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদি মা হাওয়া (আ.) আরাফাতের ময়দানে এসে পুনর্মিলনের সুযোগ পেয়েছিলেন। এ জন্য তাঁরা এই ময়দানেই মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ছিলেন।
পাকিস্তানের ২৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী উসমান আরশাদ ৬ মাস হেঁটে এবার পবিত্র হজে এসেছেন। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে পেরে বাকরুদ্ধ তিনি। আর মিশরীয় ব্যবসায়ী ইয়াহিয়া আল ঘানামের আবেগ যেন হৃদয় ছোঁয়া। তিনি চোখের পানি সংবরণ করতে পারছেন না কিছুতেই। বললেন, পবিত্র হজে এসে গত ১৫ দিনে আমি দৈনিক এক ঘণ্টার বেশি ঘুমাইনি।
আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে জোহরের নামাজের আগে মিম্বরে দাঁড়িয়ে আরবি ভাষায় হজের খুতবা পাঠ করা হয়। এবার খুতবা দিয়েছেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ। তিনি নামাজেও ইমামতি করেছেন। হজের খুতবা বাংলাসহ প্রায় ১৪টি ভাষায় অনুবাদ করে শুনানো হয়েছে।
খুতবার পর মসজিদে নামিরায় সমবেত মুসলমানরা এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আছরের নামাজ এক সঙ্গে জামাতে আদায় করেন। মসজিদে নামিরা থেকে দূরে অবস্থান করা হজযাত্রীরা জোহর এবং আছরের নামাজ আলাদাভাবে আদায় করেন নিজেদের তাঁবুতে।
তাঁরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের পর কিছু সময় পর্যন্ত অবস্থান করেন আরাফাতের ময়দানে। সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছু সময় পরে মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাত ময়দান থেকে হজযাত্রীরা প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। মুজদালিফায় গিয়ে এশার নামাজের সময় এক সঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন। পরে সেখানেই খোলা আকাশের নীচে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে রাত যাপন করেন তাঁরা। রাতে প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য সংগ্রহ করেন ৭০টি পাথর।
আরাফাত ময়দানে আসার আগে হজযাত্রীরা গত ৮ জিলহজ পবিত্র হজ পালনের প্রথম আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে দু’দিকে পাহাড় পরিবেষ্টিত এলাকা মিনায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুতে অবস্থান করেন। হজযাত্রীদের মধ্যে পুরুষরা হজের প্রথম রুকন ইহরাম (শরীরের নিচের অংশে আড়াই হাত বহরের আড়াই গজের এক টুকরা কাপড় আর গায়ে জড়িয়ে নেওয়ার জন্য একই বহরের তিন গজের এক টুকরা সাদা রংয়ের সেলাইবিহীন কাপড়) পরিধান অবস্থায় রয়েছেন। নারীরা আছেন পর্দায় আচ্ছাদিত। তাঁরা আগামী ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা ও মক্কায় অবস্থান করবেন।
বুধবার ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় অবশ্যই মুজদালিফায় অবস্থান করবেন হাজিরা। এরপর তাঁরা যাবেন মিনায়। সেখানে মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোঁড়ার স্থান) বড় শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি এবং রাসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শ অনুসরণে পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন। নারীরা চুলের অগ্রভাগ থেকে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটবেন। এরপর হাজীরা সেলাইবিহীন ইহরাম খুলে ফেলবেন এবং পশু কোরবানি দেবেন। পরে তাঁরা হজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ রুকন আদায়ের জন্য মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবহে সাদিকের পর থেকে কাবা শরীফ তাওয়াফ করবেন।
কাবা শরীফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাঈ’ (দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার ফিরে যাবেন মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে। হজযাত্রীরা ১১ জিলহজ আবার মিনার জামারায় গিয়ে জোহরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। একইভাবে ১২ জিলহজ আবারও ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে তাঁরা মিনা ত্যাগ করবেন। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে সৌদি আরবের হিজরি বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে কাবা শরীফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে।