অনলাইন ডেস্ক :
মোবাইল ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আবারও চালু হয়েছে। আজ ২ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার পর ফেসবুক ও মেসেঞ্জার সচল হতে শুরু করেছে। তবে তা সবার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হতে সময় লাগছে। এর আগে দুপুর থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পাচ্ছিলেন না গ্রাহকরা।
তবে বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানায়নি সংশ্লিষ্টরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ-সংঘাতে নিহত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে আজ শুক্রবার গণমিছিল কর্মসূচি দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচি সামনে রেখে গুজব এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে আজ বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ঠেকাতে ব্যর্থ এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহতের বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতা এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার সব দায়ভার আমার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে বন্ধ হয়ে যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। দীর্ঘদিন পর ২৮ জুলাই রবিবার বিকেল ৩টার দিকে ফোরজি সেবা চালু হয়।
এর আগে পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৩ জুলাই মঙ্গলবার রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়।
৩১ জুলাই ফেসবুকের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী। ই-মেইলে ব্যাখ্যা দেয় ইউটিউব। ব্যাখ্যা দিয়েছিল টিকটকও। এরপর খুলে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনার ঈশ্বরদীতে হাসপাতালে আসার পথে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় রোজিনা আক্তার রোজী (৩৭) নামে এক নার্স নিহত হয়েছেন। তিনি সাঁড়া ইউনিয়নের আড়ামবাড়িয়া গ্রামের আফজাল মালিথার মেয়ে ও শহরের একটি হাসপাতালের সিনিয়র নার্স। এ সময় দুর্ঘটনায় সোলাইমান হোসেন নামে হাসপাতালের এক স্টাফ গুরুতর আহত হয়। তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় বিমানবন্দর সড়কের ঈশ্বরদী গালর্স স্কুল এ্যান্ড কলেজ মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের ম্যানেজার সুমন আলী বলেন, হাসপাতালের স্টাফ সোলাইমান হোসেনের স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠায় নার্স রোজিনাকে তার আরামবাড়িয়া বাড়িতে মোটরসাইকেলে আনতে যায়। আসার পথে দ্রুতগামী মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গালর্স স্কুল মোড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই রোজিনা মারা যায় ও সোলাইমান আহত হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আসমা খানম জানান, রোজিনা আক্তারকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে। সোলাইমান হোসেনকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি। কারো কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই মরদেহ স্বজনদের দাফন কাফনের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে বিজয়ীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার নারী আসনে বিজয়ীদের নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিজয়ী প্রার্থীদের নামে গেজেট প্রকাশের পর তা জাতীয় সংসদের সচিবালয়ে পাঠানো হবে। এরপর সংসদ সচিবালয় এই সদস্যদের শপথ গ্রহণের আয়োজন করবে।
নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিলের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ/জোটের মনোনীত ৪৮ জন এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত দুইজন অর্থাৎ মোট ৫০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
তিনি আরো জানান, দাখিল করা মনোনয়নপত্রসমূহ পূর্ব ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে বাছাইপূর্বক ৫০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্রই বৈধ ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময় ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কোনো প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। ফলে জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত নারী আসন) নির্বাচন আইন, ২০০৪ এর ধারা ১২ এর উপধারা (১) অনুসারে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হলো।
নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। জোট শরিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থনে ৪৮টি সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মনোনয়ন দিয়েছে ২টি আসনে।
সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের এমপিরা হলেন-
১. রেজিয়া ইসলাম (পঞ্চগড়), ২. দ্রোপদী দেবি আগরওয়াল (ঠাকুরগাঁও), ৩. আশিকা সুলতানা (নীলফামারী), ৪. রোকেয়া সুলতানা (জয়পুরহাট) – আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য সম্পাদক, ৫. কোহেরী কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর), ৬. জারা জেবিন মাহবুব (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), ৭. রুনু রেজা (খুলনা), ৮. ফরিদা আক্তার বানু (বাগেরহাট), ৯. ফারজানা সুমি (বরগুনা), ১০. খালেদা বাহার বিউটি (ভোলা), ১১. ফরিদা ইয়াসমিন (নরসিংদী), ১২. উম্মে ফারজানা সাত্তার (ময়মনসিংহ), ১৩. নাদিরা বিনতে আমির (নেত্রকোনা), ১৪. মাহফুজা সুলতানা মলি (জয়পুরহাট), ১৫. পারভীন জামান কল্পনা (ঝিনাইদহ) – আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, ১৬. আরমা দত্ত (কুমিল্লা), ১৭. লায়লা পারভীন (সাতক্ষীরা), ১৮. মুন্নুজান সুফিয়ান (খুলনা) – সদ্য সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, ১৯. বেদৌড়া আহমেদ সালাম (গোপালগঞ্জ), ২০. শবনম জাহান (ঢাকা), ২১. পারুল আক্তার (ঢাকা), ২২. সাবেরা বেগম (ঢাকা), ২৩. শাম্মী আহমেদ (বরিশাল) – আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক, ২৪. নাহিদ ইজহার খান (ঢাকা), ২৫. ঝর্ণা আহসান (ফরিদপুর), ২৬. ফজিলাতুন নেছা (মুন্সীগঞ্জ) – সদ্য সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, ২৭. সাহেদা তারেক দিপ্তী (ঢাকা), ২৮. অনিমা মুক্তি গোমেজ (ঢাকা), ২৯. শেখ আনার কলি পুতুল (ঢাকা), ৩০. মাসুদা সিদ্দিক রোজি (নরসিংদী), ৩১. তারানা হালিম (টাঙ্গাইল) – আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, ৩২. শামসুন নাহার (টাঙ্গাইল) – আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক, ৩৩. মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর)- নির্বাচনে পরাজিত, ৩৪. অপরাজিতা হক (টাঙ্গাইল), ৩৫. হাসিনা বারী চৌধুরী (ঢাকা), ৩৬.নাজমা আক্তার (গোপালগঞ্জ), ৩৭. ফরিদুন্নাহার লাইলী (লক্ষ্মীপুর) – আওয়ামী লীগের কৃষি সম্পাদক, ৩৮. আশরাফুন নেছা (লক্ষ্মীপুর), ৩৯. কানন আরা বেগম (নোয়াখালী), ৪০. শামীমা হারুন লুবনা (চট্টগ্রাম), ৪১. ফরিদা খানম (নোয়াখালী), ৪২. দিলারা ইউসুফ (চট্টগ্রাম), ৪৩. ডরথি তঞ্চঙ্গা (রাঙামাটি), ৪৪. সানজিদা খানম (ঢাকা) – আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, নির্বাচনে পরাজিত, ৪৫. নাছিমা জামান ববি (রংপুর), ৪৬. নাজনীন নাহার রোশা (পটুয়াখালী), ৪৭. ওয়াসিকা আয়শা খান (চট্টগ্রাম) – আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক, ৪৮. রুমা চক্রবর্তী (সিলেট)। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে আগেরবারের সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন নাহার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু আইনি জটিলতা থাকলেও বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আজ ২৬ জুন বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি। প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারিমন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা রয়েছে। তবে, সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়ায় নিরসন করে এই অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ও তাকে প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ উদ্দেশ্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলছে।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলমান রয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বিদেশে পলাতক আসামি মওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ বাংলাদেশের মাটিতে মারা গেছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টাপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে।
তিনি জানান, এছাড়াও পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছে সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন বলে সংসদকে জানান। তিনি আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের সঙ্গে স্বাক্ষাতে তাদের ব্যক্তিগত সহযোগিতাও কামনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে খুনিদের অবস্থানের বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় এ বিষয়ে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদেশগুলোর আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার লক্ষ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে মেজর (অব.) নূর চৌধুরী বর্তমানে সপরিবারে কানাডায়, আব্দুর রশিদ ও মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল ইসলাম ডালিম পাকিস্তান বা লিবিয়ায়, লে, কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী আমেরিকা এবং রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান ভারতে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। এছাড়া লে. কর্নেল (অব.) আজিজ পাশা জিম্বাবুয়ে অবস্থানকালে মারা যায় বলে জানা যায়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত ১২ জন আসামির মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলেও জানান সরকার প্রধান।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের লিখিত জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবহার ও সঠিকভাবে রিসাইক্যাল করার লক্ষ্যে সরকার একটি কার্যকর নীতিমালা গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান ও পরবর্তীতে অংশীজনের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। ই-বর্জ্য রিসাইকেলের জন্য প্লান্ট তৈরি করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
ভোলা-২ আসনের আলী আজমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ৫৭৫টি ইউনিটের মাধ্যমে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ২৭৪ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্ত করে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র (সুবর্ণ নাগরিক কার্ড) প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী প্রতিবন্ধী ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫৯৪ জন।
ফরিদা ইয়াসমিনের অপর এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে সংসদ নেতা জানান, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে এ পর্যন্ত কল্যাণ অনুদান ও করোনাকালীন আর্থিক সহায়তা হিসেবে সারাদেশে ১৩ হাজার ৫৮২ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনে বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও আমি প্রস্তুত।
আজ ১১ নভেম্বর শনিবার বিকেলে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংলগ্ন টাউনশিপ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি যেদিন বাংলাদেশে ফিরে এসেছি, সেদিন আমার কেউ ছিল না। যাদের রেখে গিয়েছিলাম এসে পেয়েছি সারি সারি কবর। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ।
‘কাজেই আপনাদের কল্যাণের জন্য, আপনাদের উন্নয়নের জন্য আমি যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। প্রয়োজনে বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও আমি প্রস্তুত। শুধু আপনাদের কল্যাণ করাটাই আমার একমাত্র কাম্য। আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি। আমাদের হারাবার কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। শুধু একটাই কাজ- বাংলাদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে। যেভাবে আমার বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা, সেই বাংলাদেশই আমি গড়ে তুলতে চাই। আমার বাবার স্বপ্নটাই আমি পূরণ করতে চাই।
বিএনপি-জামায়াত থেকে জনগণকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কোনো মানুষের মধ্যে যদি মনুষত্ববোধ থাকে তাহলে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে না। বিভিন্ন জায়গায় জীবন্ত মানুষগুলোকে ওই বিএনপি-জামায়াত পুড়িয়ে হত্যা করছে। গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, সম্পদ পুড়িয়ে নষ্ট করা এটাই তাদের কাজ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন। তার আদর্শ বুকে নিয়ে ও পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করেছি। সেটা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকেই জয়ী করতে হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা উন্নয়ন করি, আমরা সৃষ্টি করি, ওরা ভাঙে, ওরা নস্যাৎ করে। ওরা ধ্বংস করতে জানে, জনগণের কল্যাণ করতে জানে না। কাজেই ওদের থেকে জনগণকে সাবধান থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে সাজ সাজ রব উঠেছিল সমুদ্রের কোলঘেঁষা প্রত্যন্ত জনপদ মাতারবাড়ী এলাকায়। সেখানে এক জনপদের বদলে যাওয়ার সাক্ষী সাগরপাড়ের অগণিত মানুষের দলে দলে যাত্রা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন আর জনসভা কেন্দ্র করে সকাল থেকে ছিল মানুষেল স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি।
উপচেপড়া আবেগের বহিঃপ্রকাশ জনসভা মাঠে মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। নজিরবিহীন গণজমায়েতে পূর্ণ মাতারবাড়ী টাউনশিপ মাঠ। প্রায় তিন দশক পর মাতারবাড়ী আসা শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেন সব শ্রেণি-পেশা আর বয়সী মানুষ। তারা বলছেন, ১৯৯৫ সালে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মাতারবাড়ীবাসীকে, তা বাস্তব করেন সরকারপ্রধান হিসেবে।
এর আগে সকালে দোহাজারী-কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের গ্যাস বহির্বিশ্বের কাছে বিক্রি করতে রাজি হইনি, তাই আমাকে পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি একটি চক্র। আমি ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কারও হাতে তুলে দিতে রাজি ছিলাম না।
রিরোধীদলকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা উন্নয়ন চোখে দেখে না। তাদের বলবো, ঢাকায় খুবই উন্নতমানের আই ইনস্টিটিউট করা আছে, সেখানে মাত্র ১০ টাকা টিকিট কেটে চক্ষু পরীক্ষা করে নেবেন।
তিনি আরও বলেন, আজ দিনটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গর্বের দিন। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। একটা কথা দিয়েছিলাম, কথাটা রাখলাম।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না। গত ১৫ বছরে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যেসব বিরোধী দলীয় নেতাদের চোখে পড়ে না, তাদের ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি যে আমাদের বিরোধী দল, তারা আমাদের উন্নয়নটা চোখে দেখে না, এগুলো বলার কিছু নাই। চোখ থাকতে যারা অন্ধ হয় তাদের আর কী বলব।
‘তাদের একটা পরামর্শ দিতে পারি- আমি কিন্তু ঢাকায় খুব আধুনিক আই ইনস্টিটিউট করেছি, চোখ থাকতেও যারা অন্ধ তারা সেই আধুনিক আই ইনস্টিটিউটে যেয়ে চোখটা দেখিয়ে আসতে পারেন। মাত্র ১০ টাকার টিকিট লাগে, বেশি লাগে না। আসলে তাদের চোখের দোষ না, মনের দোষ।
এদিন প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে ১৪টি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আজ ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে জামিন পান তিনি।
এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর রোববার এ মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওইদিন মামলায় আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
জানা যায়, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভূইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরো একমাসের কারাভোগ করতে হবে। এ ছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।