অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নেতারা এমন অনেক কিছু সামাজিক মাধ্যমে লিখছেন, যা লেখা উচিত নয় বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ ৫ আগস্ট সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কয়েক মিনিটের আলাপে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনায় সবাই উদ্বিগ্ন। কিন্তু সেটা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু বলবেন না বা লিখবেন না, যা বাংলাদেশ বা ভারতের জন্য সমস্যা হতে পারে। কারণ, বিজেপির লোকেরা এমন কিছু কথা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, যা করা উচিত নয় বলে মনে করি।’
একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দলের নেতা-কর্মীদেরও বাংলাদেশ নিয়ে কিছু লেখার বিষয়ে সাবধান করে দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাদেরও বলব, কেউ কিছু লিখতে যাবেন না। আপনাদেরও (সাংবাদিকদের) বলব। সমাজের প্রত্যেক মানুষকে বলব। প্রতিবেশীর কিছু হলে পাশের রাজ্যে তার প্রভাব পড়ে। সে ক্ষেত্রে শান্ত থেকে পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে এবং তাঁদেরও এমন কিছু লেখা উচিত নয়, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সমস্যার হয়ে উঠতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টা দেশের ওপর ছেড়ে দিন। দেশে সরকার আছে। কোনো রকম প্ররোচনামূলক বা হিংসাত্মক মন্তব্য করবেন না।
সাধারণ মানুষের কাছে মমতার আবেদন, তাঁরা যেন কোনো অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক কোনো আচরণ না করেন এবং আইন নিজের হাতে না নেন।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেকে ওখানে রয়েছেন। ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকার অবশ্যই তাঁদের দেখে রাখবে। আমাদের (রাজ্য সরকারকে) ভারত সরকার যা বলবে, আমরা সেইভাবে কাজ করব।’
তাৎপর্যপূর্ণভাবে সপ্তাহ দু-এক আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাংলাদেশে বড় কোনো সমস্যা হলে এবং সেখানকার মানুষ পশ্চিমবঙ্গে এলে তাঁদের এখানে অবশ্যই আশ্রয় দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের উল্লেখ তিনি করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই আপত্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক আচরণ কী হবে, এ প্রসঙ্গে কথাবার্তা বলার অধিকার একমাত্র ভারত সরকারের রয়েছে, রাজ্যের নেই।
রাজ্য সরকারের গোয়েন্দা আধিকারিকদের কয়েকজন ৫ আগস্ট সোমবার বলেন, ‘সোমবারের ঘটনা দেখে আমাদের মনে হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীকে আগেই বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়েছিল। তিনি হয়তো আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, সোমবার যে ঘটনা বাংলাদেশে ঘটল, তা ঘটতে চলেছে। অনেক সময় মুখ্যমন্ত্রী সব কথা চেপে রাখতে পারেন না এবং প্রকাশ্যে বলে ফেলেন। সেটাই হয়তো তিনি জুলাইয়ের সভায় বলে ফেলেছিলেন।’
রাজ্য সরকারের গোয়েন্দা সূত্র এই দিন জানায়, বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথমে আগরতলা নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে তিনি দিল্লির উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে আগরতলায় সরকারি স্তরে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। পশ্চিমবঙ্গও সরকারি স্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি।
ভবিষ্যতে দিল্লিতে শেখ হাসিনার স্থান হবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ভারতের এক সাবেক রাজ্যপাল বলেন, তিনি মনে করেন, ভারতে হাসিনার স্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর আশা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সব দিক বিবেচনা করেই তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) বন্দীদের নিয়ে মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধু প্রিজন কাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ৪ অক্টোবর বুধবার বিকালে টি-টোয়েন্টি এই টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল শেখ সুজাউর রহমান, ডিআইজি প্রিজন ঢাকা বিভাগ, এস এম ফজলুল হকসহ কারাগারের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ময়দানে মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধু প্রিজন কাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। বঙ্গবন্ধু প্রিজন কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে মোট ১০টি দল অংশগ্রহণ করবে।
এদের মধ্যে ৯টি দল কারাগারে থাকা বন্দীদের নিয়ে গঠন করা। এছাড়া আরও একটি দল কারা স্টাফদের নিয়ে গঠন করা। এই মোট ১০টি দল মাসব্যাপী এই টুর্ণামেন্ট খেলবেন। এছাড়া তিনিও এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান অতিথি মাশরাফি বিন মর্তুজা সহ আগত অতিথিবৃন্দ ঢাকার উদ্দেশ্যে সড়ক পথে কারাগার ত্যাগ করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের সব মুসলিম দেশ একসঙ্গে কাজ করলে, ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবসহ মুসলিমদের জন্য আরও ভালো অবস্থানে পৌঁছানো সহজ হতো। আজকে যদি আমাদের সকল মুসলিম দেশগুলো এক হয়ে একযোগে কাজ করতে পারতো, তাহলে আমরা এ বিষয়ে আরও অগ্রগামী হতে পারতাম।
আজ ৮ মে বুধবার রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজক্যাম্পে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘হজ কার্যক্রম ২০২৪’-এর উদ্বোধনকালে দেওয়া প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।
মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মধ্যে তিনি নিজেকে একমাত্র বোন (সরকারপ্রধান) হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার এখানে একটাই কথা- সবাই এক হন এবং এ ধরনের অন্যায় অবিচার যেন আমাদের ওপর না হয়, সেজন্য সবাইবে লক্ষ্য রাখবেন।’
আন্তর্জাতিক যে ফোরামে কথা বলেছেন সেখানেই ফিলিস্তিনিদের জন্য তার কণ্ঠ সোচ্চার ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি প্রতিটি জায়গায় এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। কারণ ফিলিস্তিনিরা আরব ভূ-খণ্ডে তাদের জায়গা পাবে, এটা তাদের অধিকার। এ অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কাজেই সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।
১৯৭৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে জাতির পিতার ভাষণেরও এখানে উদ্ধৃতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আরব ভাইদের ওপর যে নিদারুণ অবিচার হয়েছে অবশ্যই তার অবসান ঘটাতে হবে। অন্যায়ভাবে দখলকৃত আরব ভূমি অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে। জেরুজালেমের ওপর আমাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই জেরুজালেমে মুসলমানদের যে অধিকার, এটা প্রতিষ্ঠা করার কথাও জাতির পিতাই তার বক্তব্যে বলেন। আপনারা দেখছেন ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। সেখানে নারী ও ছোট ছোট শিশুদেরও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। কাজেই তাদের জন্য, বাংলাদেশের জন্য ও সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য আপনারা (হজযাত্রী) দোয়া করবেন।
প্রধানমন্ত্রী হজযাত্রীদের কাছে দেশ ও জাতির জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, তার সরকার হাজিদের জন্য যে সুযোগ-সুবিধাসহ হজ ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছে, সেটা ধরে রেখে যেন এটাকে আরও উন্নত করতে পারে, সে দোয়াটা আপনারা করবেন। দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের মানুষের জন্য গোলা ভরা ধান দেন, পুকুর ভরা মাছ দেন, সুন্দর-উন্নত জীবন দেন, সেই দোয়া করবেন।
এ সময় তার সরকার হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান বক্তৃতা করেন।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারও বক্তৃতা করেন। দুজন হজযাত্রী অনুষ্ঠানে নিজস্ব অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা প্রদর্শিত হয় এবং শেষে দেশ-জাতি ও হজযাত্রীদের সার্বিক মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ বছর মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ বাংলাদেশি হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫৬২ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮০ হাজার ৬৯৫ জন ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে হজ ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট (বিজি-৩৩০১) ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবে।
‘হজ কার্যক্রম ২০২৪’ উদ্বোধন করার সময় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটুকু বলবো যে আজকে আমরা হজ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করেছি, প্রতিবারই যারা যাচ্ছেন, যেকোনও সমস্যা হচ্ছে সেটাকে আরও উন্নত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। আর এক্ষেত্রে সৌদি সরকার সবসময় আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তিনি সৌদি বাদশাহ এবং ক্রাউন প্রিন্সকে এ জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সার্বিক বিমান পরিবহনের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি এয়ারলাইন্সে যেমন, তেমনি নিজস্ব বিমানেও আমরা এখন হজযাত্রী আনা-নেওয়া করতে পারি। আজ আমরা ই-হজ ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছি। কেননা, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এরপর আর কোনও কষ্ট করতে হবে না, আপনারা ঘরে বসেই সব ব্যবস্থা পাবেন। সোজা প্লেনে উঠবেন, চলে যাবেন। সেই ধরনের ব্যবস্থা আমরা করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মালপত্র নেওয়া বা ওখান থেকে মালপত্র নিয়ে আসা বা জমজমের পানি নিয়ে আসার সব ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। মক্কা-মদিনায় হজ অফিস স্থাপন করাসহ জেদ্দায় আলাদাভাবে টার্মিনালে জায়গা ভাড়া নিয়ে আমাদের হাজিরা যাতে সেখানে গিয়ে অবস্থান করতে পারেন সেই ব্যবস্থাটাও করেছি। আমরা যখন সরকারে এসেছি তখন থেকেই এই ব্যবস্থাটা নিয়েছি এবং প্রতি বছর টার্মিনালে এই ব্যবস্থাটা আমরা রাখি। কারণ আগে যাত্রীদের এখানে সেখানে ফুটপাতে বসে থাকতে হতো।
তিনি ১৯৮৪ সালে প্রথম ওমরাহ এবং ১৯৮৫ সালে হজ পালনে যাওয়ার পর থেকেই দেখেছেন হজযাত্রীরা ফুটপাত বা এখানে সেখানে অবস্থান করছেন। তাদের অবস্থানের কোনও জায়গা ছিল না। তখন সরকারে না থাকলেও সৌদি প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে তিনি এসব অব্যবস্থাপনা দূর করার প্রচেষ্টা নেন এবং এতে সৌদি প্রশাসন সাড়া দেয়। তিনি বলেন, পরবর্তীতে সরকারে এসে আধুনিক হজ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে তিনি পদক্ষেপ নেন। সূত্র: বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২০ এপ্রিল রাঙামাটির নানিয়ারচর বুড়িঘাটের চিংড়ি খালের ছোট দ্বীপে চির নিন্দ্রায় শায়িত থাকা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের শাহাদাৎ বার্ষিকী।
বাঙ্গালী জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের এই দিনে বুড়িঘাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হয়েছিলেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যে ৮ ই এপ্রিল থাকলেও মূলত তারিখটি হবে ২০ এপ্রিল ১৯৭১।এই দিনটি নানিয়ারচরবাসীর জন্য রক্তে ঝরা দিন।
এ মহান বীর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২০শে এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন । ২৬মার্চ যুদ্ধ শুরু হলে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে শত্রু বাহিনীর নৌযান একাই ধ্বংস করেন ।
বাঙালীর এই মহান যোদ্ধা ১৯৪৩ সালের পহেলা মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার পিতা ইমাম মুন্সি মেহেদি হাসান এবং মাতা মুকিদুন্নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন ।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ২নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। ৬টি লঞ্চে অস্ত্র গোলাবারুদ মজুদ ও মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
এই সুযোগে হঠাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য, বেশ কয়েকটি স্পীড বোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য আক্রমন করে। মর্টার আর ভারী অস্ত্র দিয়ে চালানো আক্রমণে প্রতিহতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ। এই লড়াকু সৈনিকের একসময় পাকবাহিনীর মর্টারের গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ।
বাংলার অসীম সাহসী বীর মুন্সি আব্দুর রউফ এর দেহ পরবর্তীতে বীরমুক্তি যোদ্ধা দয়ালকৃষ্ণ চাকমা উদ্ধার করে বুড়িঘাটের চিংড়ি খাল সংলগ্ন টিলায় সমাহিত করেন।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর উদ্যোগে সমাহিত স্থানটিতে নির্মিত করেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ।
মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন এবং বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফকে ল্যান্স নায়েক পদে মরোণোত্তর পদবিতে পদোন্নতি প্রদান করেন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ তার জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করেন সহযোদ্ধার জীবন এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বহু সৈন্যকে প্রতিহত করেছেন।
পার্বত্য অঞ্চলের দূর্গম নানিয়ারচর বুড়িঘাটে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া এই মহান বীরকে নিয়ে নানিয়ারচরবাসী গর্ববোধ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ময়মনসিংহের ফুলপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে ৬ মামলায় ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায় কল্লোলের নেতৃত্বে উপজেলার ভাইটকান্দি বাজার এলাকায় বুধবার এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ওজনে কম দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে ওজন পরিমাপ ও মানদণ্ড আইন- ২০১৮ মোতাবেক ৬টি মামলায় মোট ৫৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায় কল্লোলের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বিএসটিআই -এর পরিদর্শক খেলা রানী কর, ফুলপুর থানা পুলিশের সদস্যবৃন্দসহ প্রমুখ। অমিত রায় বলেন, জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।